পুনম পাণ্ডে। নামটি গোলমেলে কারণে বিখ্যাত। অনেকে নামটা শোনেনওনি। প্রথমে জানা যায়, তিনি মারা গিয়েছেন। মৃত্যুর কারণ, জরায়ুদ্বারের (সার্ভাইকাল) ক্যানসার। ব্যাপারটা বিস্ময়কর। যে কয়েকটি ক্যানসার, এমনকি থার্ড স্টেজে ধরা পড়লেও, সারিয়ে তোলার কথা – অন্তত দীর্ঘ মেয়াদে নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা – ভরসা করে বলা যায়, তার মধ্যে সার্ভাইকাল ক্যানসার অন্যতম। তদুপরি জরায়ুদ্বারের ক্যানসারে মৃত্যুর সঙ্গে অন্য ক্যানসারে মৃত্যুর ফারাক রয়েছে – এক্ষেত্রে সাধারণত রোগীর মৃত্যু হয় মূত্রতন্ত্রের সমস্যায়, রক্তে দূষিত বর্জ্য জমে যাওয়ার কারণে (জরায়ুমুখের ক্যানসার মূত্র নিষ্ক্রমণপথে বাধা ঘটায়) – মৃত্যু মোটেই আচমকা ঘটে না। ক্যানসার শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে মৃত্যু ঘটলেও তা আপাত-সুস্থদেহে আকস্মিক ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। এদিকে পুনমজি-কে নাকি কয়েক সপ্তাহ আগেও দিব্যি সুস্থ শরীরে দেখা গিয়েছে। তদুপরি মৃত্যুর পরেও মৃতদেহ দেখা গেল না – মৃতের বাড়িতেও প্রবেশ নিষেধ!
মারা যাওয়া বিষয়ে এই সংশয়ের মধ্যেই শোনা গেল, স্বয়ং ‘মৃত ব্যক্তি’-র সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণার মাধ্যমে, পুনমজি আদপেই মারা যাননি – সার্ভাইকাল ক্যানসার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির স্বার্থেই এমন মৃত্যুর গল্প ফাঁদা হয়েছিল।
প্রথমদিকে কিছু অবিশ্বাস থাকলেও পরে জানা যায়, দ্বিতীয় খবরটিই সত্য। পুরো বিষয়টা হকচকিয়ে দেওয়ার মতো। চালাকির দ্বারা কোনও মহৎ উদ্দেশ্য সাধিত হয় না, একথা গুণীজনেরা বলে গেলেও আমাদের সময়টা যে মোটের উপর চালাকির, এবং চমকের, তা অনস্বীকার্য। পুনম পাণ্ডে-দের জীবনই তার অন্যতম প্রমাণ। সারা বিশ্বেই বলুন বা এদেশে, মহিলাদের মধ্যে সবচাইতে কমন ক্যানসারগুলোর মধ্যে সার্ভাইকাল ক্যানসার একেবারে প্রথম সারিতে – সময়ে ধরা পড়লে এই ক্যানসারের নিরাময় সম্ভব, বড়সড় জটিলতা ছাড়াই – সংশয়াতীতভাবেই এবিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা বলে এই ভাবে?
এবং এই আশ্চর্য স্টান্টবাজিকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছানোর ‘মিডিয়াম’ ঠাউরালে, ‘মেসেজ’-টি হারিয়ে যাওয়া সম্ভাবনা যে ষোলআনা – সেকথা কি পুনমজি-রা বুঝবেন!