পুজোর আগেই আমরা (৪ অক্টোবর, ২০২১) রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন রেখেছি পুজোর হৈ-হল্লা আর জন সমাগম থেকে বিরত থাকার জন্য। সরকারের কাছেও চিকিৎসকরা বার বার আবেদন জানিয়েছিলেন কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধে শিথিলতা না আনার জন্য। আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, শিথিলতার ফলশ্রুতি হিসাবে সংক্রমণ বাড়বে, সাধারণ মানুষকে অসংযমী হতে উৎসাহ দেওয়া হবে। অভিযোগ ছিল, সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র ও সরকারি হিসাবে গরমিল রয়েছে। কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া সত্বেও, ইতিমধ্যেই সংক্রমণের আনুপাতিক হার উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে আমাদের আশংকাকে সত্যি প্রমাণিত করেছে।
সমস্ত রকমের বৈজ্ঞানিক বিধিকে অগ্রাহ্য করে রাজনৈতিক দলের নেতাদের মদতে, প্রশাসনের সহায়তায় পুজোর আড়ম্ভর, উদ্বোধনের আতিশয্য আমাদের হতবাক করল, বিস্মিত করল, পুনরায় হতাশ করল। আমরা গভীর ভাবে আশঙ্কিত। আশঙ্কিত আমাদের অনতি অতীত অভিজ্ঞতা থেকে। অতি অল্প সময়ে আনেক মানুষকে কি ভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যাবে এটা ভেবে। আমরাই সবচেয়ে সুখী হব, আমাদের এই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত না হলে। আর আমাদের আশঙ্কা সত্যি হলে তার দায় নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে, প্রশাসনকে, সরকারকে, যাঁরা এই উন্মাদনাকে উৎসাহ দিলেন, যাঁরা আমাদের সাবধান বাণীকে উপেক্ষা করে নির্বিকার, নিশ্চুপ থাকলেন, সবাইকে। এর দায় তাঁদের নিতেই হবে। চিকিৎসকদের, চিকিৎসা সংগঠনের উপর কোনরূপ দোষারোপ করার নৈতিক অধিকার তাঁদের থাকবে না।
অনেক দেরী হয়ে গেছে। তবু পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে আমাদের অতি বিনীত অনুরোধ:
প্রশাসনের তরফ থেকে অবিলম্বে সমস্ত বিধিনিষেধের শিথিলতা প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক।
এখনই কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হোক, করোনা মহামারীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সংস্থাকে সম্পূর্ণ মান্যতা দিয়ে। প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশিত হোক– জনগণকে যথাযথ সতর্ক করার জন্য।
রাজ্যবাসীর কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ আপনারা পূজোর, বিসর্জনের হুল্লোড়, জমায়েত থেকে বিরত থাকুন। আত্মঘাতী হবার, প্রিয়জনকে বিপদে ফেলার, প্রিয়জনদের চিরবিচ্ছেদের পথ দেখানোর কাজে বিরত থাকুন।
জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল
(এসোশিয়েসন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম, শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ, ডক্টরস ফর ডেমোক্রাসি, হেলথ সার্ভিস এসোশিয়েসন)