খুব বেশিদিন আগের কথা নয় আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিজিটি, জুনিয়র ডাক্তার এবং মেডিকেল ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন স্টুডেন্টস কাউন্সিলের মনোনয়নে স্বচ্ছতা, হোস্টেল সমস্যার সমাধান, লেডিস কমন রুমের ব্যবস্থা, হাউসস্টাফশিপ সিলেকশনে স্বচ্ছতা ইত্যাদি দাবি নিয়ে। অনুভূতিহীন এক প্রিন্সিপাল যখন দিনের পর দিন তাদের দাবিগুলোকে অবহেলা করতে থাকেন, তখন প্রথমে অবস্থান, তারপর ঘেরাও, ঘেরাও ছেড়ে প্রিন্সিপাল পালিয়ে গেলে আমরণ অনশন ও কর্মবিরতি। তাদের এই আন্দোলনের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন সিনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনগুলোও।
কর্ম বিরতি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্ট ডাক্তারদের কাজে ফিরতে বলে এবং প্রশাসনকে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের সমস্যার সমাধান করতে। ডাক্তাররা কাজে ফিরে যায়। প্রশাসন কিন্তু কথা রাখেনি। বরং আন্দোলন স্তিমিত হওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করতে থাকে কলেজ প্রশাসন।
আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল শিক্ষকদের বদলি করা হয়। আন্দোলনে যারা নেতৃত্বে ছিল এমন ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় ফেল করানো হয়। ইন্টার্নরা কর্মবিরতির সময়টা পূরণ করতে অতিরিক্ত ডিউটি করেছিল। তাদের ইন্টার্নশিপ কম্প্লেশন সার্টিফিকেট বিভাগীয় প্রধানদের সই করা হয়ে যায়। শোনা যায় অধ্যক্ষের নির্দেশে সইয়ের উপর সাদা কালি পরে। মানসিকভাবে দুর্বল ইন্টার্নদের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। তাদের সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রেসের সামনে বলতে বাধ্য করা হয় যে বহিরাগত কয়েকজন চিকিৎসক নেতার প্ররোচনায় তারা আন্দোলন করেছে।
অল্প কয়েকজন ইন্টার্ন শিরদাঁড়া সোজা রেখে মাথা না নুইয়ে আছে আজও। অতিরিক্ত কাজ করার পরেও তাদের ইন্টার্নশিপ কম্প্লেশনে সই করেননি অধ্যক্ষ। ফলে পার্মানেন্ট রেজিস্ট্রেশন নাম্বার পাওয়ার জন্য মেডিকেল কাউন্সিলে আবেদন করতে পারছে না তারা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রশাসনের কাছে আবেদন যে কলেজ প্রশাসনকে তাঁরা বাধ্য করুন প্রতিহিংসাপরায়ণতা ছাড়তে।