আপনি তো নাক কান গলার ডাক্তার অর্জুনবাবু। নমস্কার।
বুঝলেন, লোকজন ঘুমিয়ে পড়লে নাক ডাকে,
আর আমি স্বপ্ন দেখি!
স্বপ্নের মধ্যেই আমার
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে- দুই হাতে গলা টিপে ধরি!
পারলে একবারে শেষ করে দিই!
আমার এমনটা কেন হয় বলতে পারেন?
অত্যাচারিত হলে মানুষকে তো কাঁদতেই হবে, তাই না?
মানুষ কি পচা গন্ধও নিতে পারবে না জীবিত এবং মৃতদেহের?
আপনি কি নাক কাটার সাজেশন দিয়েছেন কখনো?
আচ্ছা, সে না হয় বাদ দিলাম,
এই থালা বাটি শঙ্খ ঘন্টা শ্মশানযাত্রার হরিবোল ইত্যাদি ইত্যাদি শব্দদূষণে ভরা পৃথিবীতে কে পারে কানে তুলো দিয়ে রাখতে?
অথচ, স্বপ্নে আমার ইচ্ছে করে
লোহা গলিয়ে ঢেলে দিই কানের ফুটোয়!
বিকল্প কিছু …. ?
শুনুন অঙ্কোলজিস্ট ডাঃ বিষাণ স্যার,
আমি স্বপ্নের ভেতরে দেখতে পাই
ক্যান্সার ছড়িয়ে যাচ্ছে …
জন্ম থেকেই নিশ্চিত শরীরে ক্যান্সারের জিন ছিল,
অথচ একবার ও টের পাইনি!
আমি দেখতে পাই- অবচেতনে নতুন নতুন কোষে ছড়িয়ে পড়ছে ক্যান্সার – খিদের, কুশিক্ষার, কুসংস্কারের, অন্ধ ধর্মবিশ্বাসের, নীতিহীনতার …
ইচ্ছে করে রেডিক্যাল সার্জারি করে মগজটা আলাদা করে ফেলি!
কি বলেন? কেমো না রেডিও?
প্যালিয়েটিভ কাজ করবে?
নমস্কার ডাঃ কৌশিক লাহিড়ী।
শুভ সন্ধ্যা।
জানেন তো, বড্ড ঝামেলায় পড়েছি এই চামড়া নিয়ে!
রং তো জন্ম থেকেই ছিল চাপা!
ভগবানের ক্লারিক্যাল মিসটেক বলে সেটুকু যাও বা মেনে নিয়েছিলাম,
এখানে দেখছি মেলানোসাইট মেলানো নিয়ে বেজায় ঝামেলা!
ঢাকার ঝামেলা, না ঢাকার ঝামেলা,
থাকার এবং না থাকার ঝামেলা,
রাখার কিংবা না রাখার ঝামেলা!
তার উপর চামড়ার জন্য জাত পাত ধর্ম বর্ণ, ঘামাচি দাদ চুলকানি একজিমা অ্যালার্জি এবং সর্বোপরি যেখানে সেখানে নেতা মন্ত্রী স্বামীজি বাবাজী কোয়াকদের মতো গজিয়ে ওঠা চুল- পারা যায়?
আচ্ছা, এই যে আমি স্বপ্নের ভেতরে দেখতে পাই- শেকলের দাগ, চাবুকের দাগ, জোয়ালের ঘা, গুলির ফুটো,
ইচ্ছে করে ব্রয়লার মুরগির মতো কেটে ছাল ছাড়িয়ে ফেলি,
বিকল্প কি আছে?
ট্রান্সপ্ল্যান্ট? এক রাতে এটা সম্ভব?
বক্ষ বিশেষজ্ঞ অরুণাচল দত্তচৌধুরী, নমস্কার।
সংক্ষেপে বলি- আমি স্বপ্ন দেখি বলে ঘুম হয় না,
ঘুম নেই বলে সুখ নেই,
সুখ নেই বলে ভাঙা বুকের কথা তেমন ভাবি না।
শুধু ইচ্ছে হয়- একদিন সোজা বুকের বাম দিকে ফিফথ ইন্টারকস্টাল স্পেসে …
কি বলেন? কতটা ফিজিবল?
প্রিয় স্যার আর্যতীর্থ, অর্থোপেডিক সার্জন।
হাড় নিয়ে কারবার।
বলি কি – দু’শো ছ’খানা হাড়ের মধ্যে তেত্রিশ খণ্ড অবশিষ্ট আছে বলে ঘুমাতে পারি না!
স্বপ্ন দেখি।
মাঝে মাঝেই ইচ্ছে করে- হাতুড়ি দিয়ে….
সবাইকে দেখি হামাগুড়ি দিচ্ছে ..
আমার কি অ্যান্কাইলোসিস হয়ে গেছে?
নাকি হাড়ের দোকানে সব কশেরুকা বেচে দেব?
কি বলেন?
না হয় বলে দেব- আমার বিবর্তন হয়নি মোটেই!
ডাঃ ইন্দ্রনীল সাহা,
আপনাকে লোকে বলে গাইনিকোলজিস্ট ,
আমি জানি- আইভিএফ বিশেষজ্ঞ!
সেই যাই হোন না কেন- আমার প্রশ্ন শুনুন-
স্বপ্নে, হ্যাঁ জেগে থেকে দেখা স্বপ্নে আমার ইচ্ছে হয়- একবার অন্ততঃ টাইম ট্রাভেল করবো!
ঠিক ওভাম আর স্পার্মের নিষেক হয়েছিল যখন, সেই সময়ে ফিরতে চাই।
তারপর ঢেলে দেব বিষ! গড়ে তুলবো অভেদ্য পাঁচিল!
সব প্রেম ভালোবাসা পাপ পুণ্য চিত্রগুপ্ত যমরাজ স্বর্গ নরকের হিসেব খতম!
কোন জন্ম হবে না! কোন শাস্তি হবে না!
সম্ভব কিনা বলুন?
আপনারা এক এক করে আমাকে কেন রেফার করে দিচ্ছেন মনোবিদের কাছে?
আমি ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারি না বলে কি-
নিজেকে হত্যা করার অধিকার ও আমার নেই?
জবাব দিন!
(বিঃ দ্রঃ আমার পরিচিত এবং শ্রদ্ধেয় অনেককেই উৎসর্গ করা যেত এই লেখাটি। খুব বড় হয়ে যাবার কারণেই খানিকটা বেছে নিতে হলো আমার পরিচিত স্যারদের থেকে । দুঃখিত। ??)