Madison Area Lyme Support Group – এরকম নামের কোন গ্রুপের নাম শুনেছেন কখনও? আমরা আমজনতা। কত কিছুইতো জানিনা, বা বলা ভালো খুব কমই জানি – যদিও বলি অনেক কথা। আবার নিজেদের অজান্তেই বলে ফেলি – বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি? তা, থাক এসব কথা। গুজবে ভেসে, গুজব গিলে, গুজব উগরে দিয়ে আমাদের দিব্যি চলে যায়। বিজ্ঞানের দিব্যি গেলে কত কথাই না বলি। এমনকি রাষ্ট্র নিয়েও দু-এক কথা বলে ফেলি। এইতো হাথরাস আর দিল্লিতে কি যেন সব হচ্ছে। কিন্তু যখনই রাষ্ট্র পিঠে টোকা মেরে মিহি গলায় বলে – কি হচ্ছে ভাই এসব দেশদ্রোহী কাজকম্মো? আমরা মাখনের মতো গলে গিয়ে সাথে সাথে বলে ফেলি – না না, কি যে বলেন! আমরা এসবের মধ্যে নেই। মেয়েরা যদি নিজেদের সংযত রাখতে না পারে তাহলে এমনতো হবেই। অবশ্য আমাদের বাড়িতেও হাথরাস ঘটে যাবার মতো মেয়ে আছে।
আমরা তখন আবার ডুব দিই গুজব-সাগরের অপার ভুবনে। এখানে রাষ্ট্র কিছু বলবেনা। আবার আমরা আমাদের ছায়াযুদ্ধে একটি প্রতিপক্ষও পেয়ে যাবো – আমাদের জন্য নিরাপদ, ঝামেলা করবেনা, তারচেয়েও বড়ো কথা রাষ্ট্র খুশি হবে আমরা এসবে মেতে আছি জানলে। রাষ্ট্রকে খুশি করতে কে না চায় বলুন? অন্তত আমিতো চাইই চাই।
এজন্যই ঘনাদার গল্পের মতো Madison Area Lyme Support Group-এর কথা তুলেছিলাম। যদি আপনাদের চেনা থাকে! করোনাভাইরাসকে নিয়ে অনেক গণ্ডগোলে পড়া গেছে। লকডাউন, “স্থানান্তরী” শ্রমিকদের লাঠি-গুলি চালানো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় পূর্ণত লাটে উঠে যাওয়া, অর্থনীতির দুরবস্থা – এসব তো আছেই। তার সাথে আরেকটা গুরুতর ব্যাপার আছে। “ঠাণ্ডা যুদ্ধ” পরবর্তী সময়ে যে একমেরু বিশ্ব তৈরি হয়েছে, যার একচ্ছত্র “বড়দাদা” আমেরিকা সেই একমেরু বিশ্ব করোনার গুঁতোয় এখুনি ভেঙ্গে না গেলেও বেসামাল হয়ে পড়েছে। আরেক নতুন ধরনের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ক্ষমতা বিন্যাস হচ্ছে। এমনকি ইয়ুভাল হারারির মতো রাষ্ট্রপন্থী বিখ্যাত মানুষও বলে ফেলছেন – এবারের করোনা সংকটে বিশ্বে নেতৃত্বের শূণ্যতা তৈরি করেছে। টাইম পত্রিকার মতো নামী পত্রিকায় (১৫.০৩.২০২০) লিখে ফেললেন – In the Battle Against Coronavirus, Humanity Lacks Leadership। এতদূর অব্দি বললেন – “আজকের পৃথিবী এক হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়া সংকটের মুখোমুখি। এ সংকট শুধুমাত্র করোনাভাইরাসের জন্য নয়, বরঞ্চ আরও বেশি করে মানুষে-মানুষে পারস্পরিক বিশ্বাস (trust) হারিয়ে যাওয়া। একটি মহামারিকে পরাজিত করতে হলে মানুষের প্রয়োজন পড়ে বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস করা, নাগরিকদের প্রয়োজন পড়ে জননেতা এবং আধিকারিকদের বিশ্বাস করা, দেশগুলোর প্রয়োজন পড়ে পরস্পরকে বিশ্বাস করার। বিগত কয়েক বছর ধরে দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনীতিবিদরা ইচ্ছাকৃতভাবে বিজ্ঞানের ওপরে বিশ্বাস করার পরিসরটিকে ভিতরে ভিতরে ক্ষইয়ে দিয়েছে, জননেতৃত্বের ওপরে বিশ্বাসের ভিত ক্ষয়ে গেছে এবং ক্ষয়ে গেছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রটি। এর ফল হিসেবে, আমরা আজকের সংকটের মুখোমুখি হয়েছে যেখানে বিশ্বনেতৃত্ব অনুপস্থিত, যারা অনুপ্রাণিত করতে পারে, পারে সংগঠিত করতে এবং আন্তর্জাতিক আকাঙ্খাকে অর্থনৈতিক ও সহযোগিতার সুতোয় বাঁধতে।”
এরকম এক পারস্পরিক বিশ্বাসহীনতার বাতাসে Madison Area Lyme Support Group-এর আবির্ভাব। বক্তব্য কি এদের? খুব সরল এবং প্রাঞ্জল ইংরেজিতে জানিয়েছে – “Proof That the Pandemic Was Planned & With Purpose Published on September 30, 2020 Written by Dr James Fetzer”। স্বপক্ষে যুক্তি? জার্মানির অনামা এক ডাক্তারদের সংগঠন (এদের ভাষায় ৫০০ জন আছে) “Doctors for Information” তারা প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে কয়েকবছর ধরে “সুপরিকল্পিতভাবে” বিভিন্ন টেকনিক্যাল যন্ত্রপাতি বিক্রী করার জন্য করোনাভাইরাস অতিমারির গল্পটি ফাঁদা হয়েছে। এদের বয়ানে – “in 2017 and 2018 – two years before COVID-19 – hundreds of millions of test kits for COVID-19 were distributed worldwide.” এদের আবার একটি সাপ্তাহিক মেডিক্যাল সংবাদপত্র আছে যা সপ্তাহে না কি ৫০০,০০০ কপি বিক্রী হয়। এবার আমরা একটু সামান্য যুক্তি দিয়ে ভাবি। সাদা চামড়ার এবং জার্মানির মতো দেশ বলে কি আন্তর্জাতিক জগতে মান্যতা পাবার অতিরিক্ত কোন কারণ আছে? আমাদের এখানে বালক ব্রহ্মচারী মরে হেজে গেলেও তার অনুগামী সংখ্যা হয়তো কয়েক হাজার। এ দিয়ে কি কিছু প্রমাণ হল? রামদেববাবার কোন বুলেটিন থাকলে সেটাও অন্তত কয়েক লক্ষ কপি বিক্রী হবে ধরে নেওয়া যায়। জার্মানি একদিকে যেমন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানচর্চার পীঠস্থান তেমনি অন্যদিকে আবার ইউজেনিক্সের রাষ্ট্রিক প্রবক্তাও বটে, যার জন্য কয়েক লক্ষ মানুষের জীবন কিংবা অঙ্গহানি হয়েছে একস্ময়ে। ফলে যুক্তি দিয়ে ভাবলে এগুলো কিছু দাঁড়ায়না।
নেচার-এর মতো বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানের গবেষণা পত্রিকায় ৬ অক্টোবর, ২০২০-র একটি প্রবন্ধের শিরোনাম “The COVID-19 social media infodemic”। এখানে বলা হল – “The case of the COVID-19 epidemic shows the critical impact of this new information environment. The information spreading can strongly influence people’s behavior and alter the effectiveness of the countermeasures deployed by governments… Social media platforms such as YouTube and Twitter provide direct access to an unprecedented amount of content and may amplify rumors and questionable information… This shift from the traditional news paradigm profoundly impacts the construction of social perceptions and the framing of narratives; it influences policy-making, political communication, as well as the evolution of public debate, especially when issues are controversial”।
আমি বিভিন্নভাবে জার্মানির ডাক্তারদের যে সংগঠনটির কথা বলেছে শুরুতে উল্লেখিত রিপোর্টে সে সংগঠনটির ব্যাপারে সার্চ করে কিছু পাইনি। কোন অস্তিত্বই দেখাচ্ছেনা। তবে এর চাইতে গুরুতর অভিযোগ এসেছে চিন থেকে পালিয়ে আসা ডাক্তার লি-মেং ইয়ান-এর অভিযোগ। এই মহিলা চিকিৎসক এবং তাঁর সঙ্গীসাথীরা একটি “গবেষণাপত্র”-ও লিখে ফেলেছিলেন এটা প্রমাণ করার জন্য যে করোনাভাইরাস চিনের ল্যাবরেটরিতে তৈরি করে পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। Hearst Television ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০-তে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে – “Report resurrects false claim that coronavirus was bioengineered”। এতে দেখানো হয়েছে এই “কন্সপিরেসি থিওরি” এবং গুজবের তত্ত্বের ইউটিউবে দর্শকের সংখ্যা ২০,০০,০০০-র কাছাকাছি এবং এই লিংকটি ফেসবুকে ৫০,০০০ বার শেয়ার করা হয়েছে। লি-মেং ইয়ান-এর তৈরি করা পেপার একটি ওপেন-অ্যক্সেস ওয়েবসাইটে সেপ্টেম্বর ১৪-তে আপলোড করা হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে “Rule of Law Society & Rule of Law Foundation”-এর তরফে। এর দুটি সংগঠন আবার স্টিভ ব্যাননের (যিনি একসময়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপদেষ্টা ছিলেন) সাথে যুক্ত। এ দুটি সংগঠনের আরেকজন কর্তাব্যক্তি গুয়ো ওয়েংগুই (চিন থেকে পলাতক বিলিওনেয়ার)। Hearst Television-এর তথ্য অনুযায়ী – “Guo’s work in the U.S., including consulting services from Bannon, has drawn the interest of federal investigators, The Wall Street Journal has reported.” আবার জুলাই ৯, ২০২০-তে প্রকাশিত একটি সংবাদপত্রের (Distinct Today) খবরের শিরোনাম – “Billionaire Chinese fugitive is being investigated by the FBI over the funding of his media activities in the US and his ties to Steve Bannon”। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর (আগস্ট ১৯, ২০২০) অন্য একটি খবরের শিরোনাম – “Fundraising at Company Tied to Steve Bannon and Guo Wengui Faces Probe”।
ব্যাপারটা এতদূর গড়িয়েছে যে আমেরিকায় সরকারিভাবে “Coronavirus Rumor Control” নামে একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে Federal Emergency Management Agency (FEMA)-র তরফে।
এবার কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য দেখা যাক। নেচার-এ ১৭ মার্চ, ২০২০-তে প্রকাশিত একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্রের শিরোনাম ছিল – “The proximal origin of SARS-CoV-2”। এখানে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হল – “We offer a perspective on the notable features of the SARS-CoV-2 genome and discuss scenarios by which they could have arisen. Our analyses clearly show that SARS-CoV-2 is not a laboratory construct or a purposefully manipulated virus.” বলা হল – “Irrespective of the exact mechanisms by which SARSCoV-2 originated via natural selection, the ongoing surveillance of pneumonia in humans and other animals is clearly of utmost importance.”
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এর মতো পত্রিকায় প্রকাশিত হল (এপ্রিল ২, ২০২০) “Escaping Pandora’s Box – Another Novel Coronavirus”। এ প্রবন্ধে বলা হল – “বিজ্ঞানীরা আমাদের জানিয়েছেন যে সার্স-কোভ-২ কোন ল্যাবরেটরির জার থেকে পালিয়ে যায়নি। এতে আরএনএ-র যে সিকোয়েন্স আছে সেটা সেসমস্ত ভাইরাসের মতো যারা নিঃশব্দে বাদুড়ের মাঝে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং এপিডেমিওলজির তথ্য বলে বাদুড়ে উৎস এমন একটি ভাইরাস ইয়ুহানের বাজারে বিক্রী হয় এরকম মধ্যবর্তী কোন প্রাণীর মাঝে আশ্রয় নিয়েছিল।”
ডঃ ফ্রান্সিস কলিন্স আমেরিকার বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ-এর “ডিরেক্টর’স ব্লগ”-এ (২৬.০৩.২০২০) লিখলেন – “No matter where you go online these days, there’s bound to be discussion of coronavirus disease 2019 (COVID-19). Some folks are even making outrageous claims that the new coronavirus causing the pandemic was engineered in a lab and deliberately released to make people sick. A new study debunks such claims by providing scientific evidence that this novel coronavirus arose naturally.”
কর্পোরেট পুঁজি শুধু পুঁজির বিস্তার ঘটায় না, পণ্য এবং গুজব-নির্ভর একটি বিশেষ সামাজিক মানসিকতা প্রতিমুহূর্তে নির্মাণ করে। বিশেষ করে অতিমারির এই সংকট সময়ে যখন মানুষ যাকিছু হাতের কাছে পাচ্ছে আঁকড়ে ধরতে চাইছে তখন এই social psyche তথা সামাজিক মনস্তত্ত্ব বিশেষভাবে কাজ করে। আমরা এক অদ্ভুত সময় অতিক্রম করছি যখন অবদমিত আতঙ্ক এবং ভেবে-নেওয়া মৃত্যুভয়ের সমাপতনে হাইড্রোক্সক্লোরোকুইনের মতো চিকিৎসার গুজব, অতিকথা এবং গল্পগাছায় বিশ্বাস করতে শুরু করেছি। ভারতে রামদেব বাবাও ঢুকে পড়েছে, হোমিওপ্যাথির অব্যর্থ ফললাভের গল্প শুরু হয়েছে। এমনকি কিছুক্ষেত্রে চিকিৎসকেরাও হয়তো ব্যতিক্রম নয়। নেচার-এ (২৭.০৪.২০২০) প্রতিবেদন লেখা হয় – “Pseudoscience and COVID-19 — we’ve had enough already”। সে প্রতিবেদনে বলা হয় – “Cow urine, bleach and cocaine have all been recommended as COVID-19 cures — all guff… And countless wellness gurus and alternative-medicine practitioners have pushed unproven potions, pills and practices as ways to ‘boost’ the immune system.” নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল-এ বিশেষ প্রবন্ধ লেখা হয় – “Covid-19 – A Reminder to Reason” (এপ্রিল ২৯, ২০২০)। এখানে বলা হল – “এমনকি চিকিৎসকেরাও যারা বিজ্ঞানী হিসেবে প্রশিক্ষিত হয়েছেন, যাদের কাছে প্রত্যাশিত যে তারা একটি হাইপোথিসিস-অনুসৃত, যৌক্তিক, এভিডেন্স-নির্ভর একটি দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করবেন ক্লিনিক্যাল সিদ্ধান্তের ব্যাপারেও তারাও এরকম সংকটের চাপে বিভিন্ন গল্পগাছায় ভেসে যেতে পারেন।”
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল-এর সাম্প্রতিকতম সম্পাদকীয়তে (৮.১০.২০২০) বলা হল যে কোভিড-১৯ বিশ্ব জুড়ে সংকট তৈরি করেছে। এবং এ সংকট দেশের নেতৃত্বকে বুঝে নেবার একটা পরীক্ষা। আমেরিকাতে নেতৃত্ব এ পরীক্ষায় পূর্ণত বিফল হয়েছে। ২০০,০০০ মানুষের উপরে জীবনহানি হয়েছে, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, অসংখ্য বেকার তৈরি হয়েছে। সম্পাদকীয়টির সিদ্ধান্ত – সম্পাদককীয়র শিরোনাম “Dying in a Leadership Vacuum – “নেতৃত্ব ছাড়া অন্য কেউ এভাবে হঠকারীভাবে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেললে কিংবা টাকা তছনছ করলে বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হত। এরপরেও আমাদের নেতৃত্ব তাদের কৃতকর্মের জন্য আমাদের কাছে অব্যাহতি দাবী করেছে। কিন্তু এই নির্বাচন আমাদের হাতে বিচারের ক্ষমতা দিয়েছে। যৌক্তিক মানুষেরা আমাদের প্রার্থীদের বিভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আপত্তি জানাবে নিশ্চয়ই। কিন্তু সত্য কখনো ‘লিবারাল’ বা ‘কনজারভেটিভ’ নয়। কিন্তু আমাদের জীবদ্দশার সবচেয়ে বড়ো জনস্বাস্থ্যের সংকটের প্রশ্ন যখন আসে তখন পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা বিপজ্জনকভাবে অকর্মণ্য। আমরা এদেরকে আর উৎসাহ কিংবা সামর্থ্য জোগাতে পারিনা যাতে তারা আবার নেতা হিসেবে ফিরে আসে এবং হাজার হাজার আমেরিকানের মৃত্যু ঘটে। আমরা এদের আর ফেরার অনুমতি দিতে পারিনা।”
পৃথিবীর সবচেয়ে মান্য মেডিক্যাল জার্নালে (ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর ৭৮-এর বেশি) আমেরিকার নির্বাচনের প্রাক্কালে এরকম সম্পাদকীয় লেখা হচ্ছে। আমরা এখানে এ কাজটি করতে কবে পারবো? সময় উত্তর দেবে।
যাহোক, বর্তমানের গুজব-যাপিত জীবনে, মাটিতে দাঁড়ানোর বদলে স্রোতে ভেসে থাকার সময়ে, রাষ্ট্রের নির্মিত পোস্ট-ট্রুথ দুনিয়ায় যেখানে মিথ্যে কথাকে আপ্তবাক্য ধরে নেওয়া হয়, যখন বিজ্ঞান-যুক্তি বনাম বিশ্বাস-গুজবের দ্বৈরথে দ্বিতীয়টি সাময়িকভাবে প্রাধান্যকারী অবস্থানে থাকে তখন এরকম আরও অনেক ভয়াবহ গুজবের মুখোমুখি আমরা হবো। অবলিঘি জমায়েত যে ভারতের করোনা সংক্রমণ বাড়িয়ে দিয়েছিল সেটা আমাদের কাছে প্রায় বিশ্বাসের পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল। কেবল মহারাষ্ট্রের – কোন ধরনের জমায়েতহীন রাজ্যে – সংক্রমণ হুহু করে বেড়ে বিষয়টাকে পেছনে ফেলে দিল।
ফলে এটা চিনের ল্যাবরেটরিতে “তৈরি” “সুপরিকল্পিত” অতিমারি শুধু নয়। শুরুতেই যে আলোচনা করেছি বিশ্ব রাজনীতি-অর্থনীতি-সামরিক-সামাজিক কর্তৃত্বের প্রশ্ন এর সাথে জড়িয়ে আছে। একমেরু বিশ্বের ধরনে কিছুমাত্র পরিবর্তনের ইঙ্গিত মেনে নেওয়া কর্পোরেট পুঁজির পক্ষে মুশকিল। ফলে এরকম “গুল্পসংগ্রহের” মধ্য থেকে যুক্তি-নির্ভর বিষয়কে ধরে বেঁচে থাকা এটাও অতিমারিকালের এক পরীক্ষা।
It’s an excellent writing…
ভীষণ প্রাসঙ্গিক এবং ভালো লেখা।
অসাধারণ লাগলো,,,প্রতিটা কথাই যেন বর্তমান পরিস্থিতির রূপরেখা,,,,????????
We in our place are not free from “Rumer Virus”. It is more damaging and paralysing our commonsense reactions — perhaps to last longer than pandemic. … dada
Khub valo laglo sir
Khub bhalo laglo..chinta bhabna guloke sojib rakhe..somoier poristhike bujhte sahayo kore.
চমৎকার যুক্তিসঙ্গত লেখা
খুউব প্রয়োজনীয় লেখা। চিকিৎসক-গবেষক-স্বাস্থ্যকর্মীদের পড়া আরও জরুরী।
It delves into the mechanism that nurtures gossip & rumor which corrodes the social psyche.
এই সময়ে খুব প্রয়োজনীয় লেখা। আপনার সব লেখাই পড়ি। ভালো লেখা।
Khubi valo lekha,ajker poristhitite ei lekhata vishon vabe darkar chhilo.
আজকের পরিস্থিতিতে খুবই প্রয়োজনীয় লেখা… ধন্যবাদ
অনেক দিন পর এত ভালো লেখা পড়লাম———সমৃদ্ধ ও হলাম।
এই সময় খুব প্রয়োজনীয় লেখা তোমার লেখা পড়ে সমৃদ্ধ হই।
Excellent….and too relevant…this pandemic has taken away our logical sense of reasoning
অত্যন্ত সময়োপযোগী ও জরুরি লেখা।
Superb write up.
গুজব এবং গুলগল্প আমাদের বোধ আক্রান্ত করছে, পিছিয়ে যাচ্ছে সংগঠিত লড়াইয়ের প্রচেষ্টা।
চমৎকার লেখা।
ধন্যবাদ ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্যকে।
খুব ভালো লাগলো…. খুবই প্রাসঙ্গিক
ডাক্তার জয়ন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়ের বিশ্লেষণাত্মক প্রবন্ধটি পড়তে পড়তে হরপ্রসাদশাস্ত্রী- র বেণের মেয়ে উপন্যাসের সেই বিখ্যাত উক্তিটি প্রাসঙ্গিক মনে হয়, ” ঝড়ে আমাদের বড়ই উপকার করিয়াছে——– ।” কী উপকার করেছে? ৭\৮ দিনের পথ একবেলাতেই অতিক্রম করেছে।
কোভিড–১৯ বিশ্ববাসীর কাছে অতিমারি হলেও করপোরেট পুঁজির কাছে তা ঘোলা জল। এই তো সময় ।খাবি খাওয়া মাছেদের টপাটপ ঝোলায় পোড়ার। ইনিয়ে বিনিয়েএই পোড়া সময়ে ও রাষ্ট্র যে তার ই হাত ধরবে এটাও বাস্তব। আমজনতার বেরোজগারি অনাহার ইত্যাদি ঢাকা পড়ে যাবে অতিমারির ঢালের তলায়।
ডাক্তার জয়ন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়কে অনেক ধন্যবাদ এধরনে একটি প্রবন্ধ লেখার জন্য।
Ekdom thik kotha. Khub sundor vabe lekha somoyopojogi kotha.
ভালো লেখা
খুব ভালো লাগলো.
খুব ভালো লিখেছেন
খুব ভাল এবং প্রাসঙ্গিক লেখা। আমি লেখক কে অনুরোধ করবো করোনা অতিমারিতে অপবিজ্ঞান নিয়ে বিস্তারিত লেখার জন্য। Pseudoscience এই সময়ে যে উচ্চতায় গেছে তা আজ কল্পনার অতীত। তাই দায়িত্ব বর্তায় সেই জায়গায় আঘাত হানার, জনগন কে সঠিক বার্তা দেওয়া।
করোনায় একটা বিরাট অসাধু ব্যবসা তো চলছেই ।সময়োপযোগী একটা লেখা??
God knows what is the trutth…
লেখাটা পড়লাম৷ প্রচুর তথ্য সমৃদ্ধ লেখা খুব ভালো লাগলো। নানারকম ভূলতথ্য দিয়ে আসলকে বিকৃতির চেষ্টা হচ্ছে এটা বোঝা যাচ্ছে।
সহমত। এসব গুজব ও সুযোগসন্ধানী দের ঘোলা জলে মাছ ধরা চলেই আসছে। কি করার জানি না!
আপনি pseudo science নিয়ে লিখুন, লিখুন না! কেউ একজন বলেছেন দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার ডাঃ আঞ্জেলিকা কোয়েটজি সমন্ধেও বলুন না ! তিনিই ওমিক্রণ ভ্যারিয়েন্টের আবিষ্কার করেছেন। তিনি ওমিক্ষণ সম্পর্কে কী বলেছেন একটু ঠিকঠাক ব্যাখ্যা করে আমাদের ঋদ্ধ করুন না ! আপনি একটু পীটার দোষি সম্পর্কেও বলুন। Risk benifit ratio সম্পর্কে দুটো ভ্যাক্সিন নেবার পরও ইজরায়েলে বেনিফিট কী হয়েছে ! নিউ জার্নাল অফ মেডিসিনের উনি সহ সম্পাদক। উনি কী বলেছেন একটু বিশদে ও ঠিকঠাক বলুন না ! একটু বলুন না কেন CDC ভ্যাক্সিনের definition টা পাল্টে দিল সেপ্টেম্বর,২০২১ থেকে? একটু বিশদে বলুন। যারা , ডাক্তাররা লড়াই করছেন তারা অবশ্যই মানবিক কাজই করছেন, করেছেন।
তাছাড়াও এটা তাদের কাজ। সীমান্তে শত্রুর গুলিতে দেশের নিহত সৈনিক কে শহীদ বলে সম্মানিত করা হয় কিন্তু দেশপ্রেমিক বলা হয় না যেহেতু সেটা তাদের চাকরি। আর যারা প্রশ্ন তুলছেন, তারা? অমানবিক? তা কি করে হয় ! যেকোন বায়ো মেডিক্যাল রিসার্চ ও মানুষের শরীরে ওষুধের ট্রায়ালের রে কালজয়ী সনদ গুলি বিবৃত আছে সেই নোরেমবার্গ, হেলসিঙ্কি , ইউনেস্কোর সনদ থেকে তা কি পালন হয়েছে? যদি হয় কীভাবে? যদি না হয় , কেন?
এটি সারা বিশ্বে স্বীকৃত হয়েছে যে মানব বিষয়ের উপর যেকোন অধ্যয়ন ও চিকিৎসার হস্তক্ষেপের জন্য অবহিত সম্মতির (ইনফর্মড কনসেন্ট) বিধানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অলঙ্ঘনীয়।স্বাস্থ্য “জরুরী বা সম্প্রদায়ের” স্বার্থের উদ্ধৃতি দিয়ে এই বিধানটি দূর করতে এবং ব্যক্তির অধিকার এবং “সম্প্রদায়ের ভালো”র মধ্যে একটি বাইনারি এবং তাদের পারস্পরিক বিরোধী সম্পর্ককে দেখানো একটি ফাসিস্ত নকশা যা চিকিৎসা- রাজনীতির অভিজাত কমপ্লেক্স দ্বারা পরিকল্পিত।
এসব নিয়ে আপনার ঠিকঠাক জ্ঞানী মতামত চাই ও ঋদ্ধ হতে চাই । অনুরোধ তো করতেই পারি , সে সুযোগ দিয়েছেন বলেই বললাম। একটা তথ্যও ভুল বললে অকপটে জানাবেন।
উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায়
পিটার দোশি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল এর সহযোগী সম্পাদক। আমার লেখায় ভ্রম টি তাই একটু সংশোধন করলাম।
ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য করোনা, গুজব আর দানবিক ওষুধ কোম্পানীদের বেচুবাবুদের পরস্পরবিরোধী বাণিজ্যবাণী যে ভয়ানক অসহায় অবস্থা ফেলেছে সাধারণ মানুষকে, তা নিয়ে অসামান্য লেখা আমাদের উপহার দিয়েছেন। তবে গুজব বন্ধ করা যাবে না। ওটা তৈরী হবেই ব্যবসায়িক বাণিজ্যে বা রাজনৈতিক বাণিজ্যে ফয়দা তোলার জন্য।