An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

স্ক্যালপেল-৩

FB_IMG_1576317535305
Dr. Anirban Ghosh

Dr. Anirban Ghosh

Surgeon
My Other Posts
  • June 25, 2020
  • 6:26 am
  • No Comments

আমাদের সবার জীবনেই এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁদের আমরা কোনদিন ভুলতে পারি না। যেমন পাড়ার নাপিত, স্কুলের শিক্ষক, যে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার লোন পাইয়ে দিয়েছিলেন, এঁদেরকে। তেমনই সেই ডাক্তারদেরও ভুলতে পারি না যাঁরা আমাদের চিকিৎসা করেছিলেন। খুব স্বাভাবিক কারণে, এই সব কটা পেশাতেই ভিন্ন জনস্রোত এসে বয়ে যায় একটা মানুষের চারিদিকে। স্রোত ভোলে না তার ছুঁয়ে যাওয়া মানুষকে। কিন্তু মানুষটার পক্ষে তো মনে রাখা সম্ভব নয় তার প্রত্যেকটি জলকণাকে। তেমনই আমাদেরও সব রুগী নাম, মুখ মনে থাকে না। আবার কারোর কারোরটা মনে থেকেও যায়। সেই সব মানুষগুলোকে নিয়েই আমার স্ক্যালপেল লেখার শুরু। সার্জেনের গ্ল্যামারাস জীবন নয়। একটা বাড়িতে বারমুডা পড়া, ভুতে ভয় পাওয়া, সময় পেলে দু’কলম লেখা ডাক্তারকে ছুঁয়ে যাওয়া কয়েকটা রুগী আর রোগের গল্প স্ক্যালপেল।

আজকের গল্পটা বছর বছর ছয়েকের পুরনো। আমি তখন আর জি করের সেকেন্ড ইয়ারের পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েট ট্রেনি। সার্জারিতে ভালই হাত পাকছে। আমার সাথেই আমার ইয়ারে আরেকটি যে ছেলে ছিল তার নাম মনীশ গুপ্তা। রাজস্থানী, ডিম ছাড়া আর কোন আমিষ জিনিস সে ছুঁত না। আমিই ওকে ধরে নিয়ে গিয়ে আরসালানের বিরিয়ানি, ভজহরি মান্নার চিতল পেটি খাইয়েছিলাম। থার্ড ইয়ারে কলেজ ছাড়ার সময় মনীশ মানুষের মাংস ছাড়া আর বাকি সবকিছু খেয়ে ফেলেছিল। সে অন্য এক গল্প।

আর জি করের এমার্জেন্সি থিয়েটার কমপ্লেক্সটা কেমন ছিল সেটা প্রথম গল্পেই বলেছি। স্বাচ্ছন্দ্য একদমই ছিল না। দুটো থিয়েটারের মাঝের একফালি ঘর ছিল আমাদের বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা। প্রতি বুধবার ২৪ ঘন্টা কাটত ওখানেই। সারাদিনে হয়ত এক-দু ঘন্টা বিছানায় গা এলিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু তাতে আমাদের ক্লান্তি ছিল না শরীরে মনে। প্রতি বুধবার নিজের হাতে জটিল জটিল অপারেশন করছি। একটা মানুষ আমার ইচ্ছায় বেঁচে যাচ্ছে। এর নেশাটা মারাত্মক।

তেমনই একটা বুধবারের কথা। রাত তখন প্রায় সাড়ে এগারোটা। কয়েকজন পুলিশ দেখলাম একজনকে ধরে নিয়ে এলেন আমাদের কাছে। গা দিয়ে উৎকট গন্ধ বেরোচ্ছে। রাস্তার পাশে, ফুটপাতে পড়ে থাকা অনেক অবাঞ্ছিত মানুষেরই জায়গা হত সার্জারি বা অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে। অধিকাংশই ভিখারি বা পাগল, রাতের অন্ধকারে বিদ্যুতের মত ছুটে চলা গাড়ির গুলোর কাছে খুব একটা দাম নেই এদের। তাই এরা আসত ফাটা মাথা, ভাঙা হাত,পা অথবা পেটে চোট নিয়ে।

এর অবশ্য বড় সড় অ্যাক্সিডেন্ট কিছু হয়নি। লেকটাউনের কোন এক গলিতে ওকে পড়ে থাকতে কিছু পথচলতি লোক। তারাই পুলিশকে খবর দেয়। লোকটার নাম নির্মল জানা। সাথে থাকা ফাঁকা মানিব্যাগে একটা পাসপোর্ট সাইজ ফোটো পাওয়া গেছে। তার উল্টোদিকে নাকি নামটা লেখা ছিল। যদিও ছবির সাথে মানুষটা প্রায় কোন মিল নেই দেখলাম। সারা মুখে দাড়ি। বয়স ওই পঞ্চাশ পঞ্চান্ন’র আশে পাশে। গায়ের চামড়া ময়লা, কালো। পরণের জামাটা জায়গায় জায়গায় ছিঁড়ে গেছে। মুখে কোন শব্দ নেই। চোখ বুজে শুয়ে আছে আর গোঙাচ্ছে। আর সেই বোঁটকা গন্ধ। গন্ধটা যদিও আমাদের খুব চেনা। প্যান্টটা কয়েক জন মিলে খুলতেই উৎসটাও দেখা গেল। ডান পায়ের গোড়ালি থেকে হাঁটুর কাছ অবধি একটা বিশ্রী ক্ষত। সেখানে কিলবিল করছে ম্যাগট।

যে কোন নোংরা আ-ঢাকা ক্ষততেই মাছি ডিম পাড়তে পারে। সেই ডিম থেকেই যে লার্ভাগুলো বেরোয় তাকে ম্যাগট বলে। ক্ষতর স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ ওদের বেড়ে ওঠার জন্য আদর্শ। পচে যাওয়া চামড়া আর মাংসই ওদের খাদ্য। এহেন অবস্থায় কোন রুগী এলে প্রথম কাজ থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে ক্ষতটা ভাল ভাবে পরিষ্কার করা। না, সার্জেন মানেই সবুজ জামা, ক্যাপ, মাস্ক পরে থাম্বস আপ দেখানো হয়। অনেক নোংরা আমাদের ঘাঁটতে হয়। নির্মলও ছিল তেমনই একজন রুগী।

সত্যি কথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, সেইদিন আমি বেশ বিরক্তই হয়েছিলাম। কোথায় ঘ্যাচাং করে পেট কেটে ফেটে যাওয়া অন্ত্র জুড়ব। রক্তক্ষরণ হতে থাকা আর্টারি সেলাই করব, নিদেন পক্ষে একটা ঘেঁটে যাওয়া অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন করব, তা নয়, এই রাত বারোটায় পোকা বাছতে বসতে হবে। ব্যাজার মুখে আমি আর মনীশ মিলে ফার্স্ট ইয়ারের একজন জুনিয়রকেও নিয়ে তাই করলাম। ক্ষতস্থানটা ভাল করে ধুয়ে সব ম্যাগট বার করে পচে যাওয়া টিস্যু বাদ দিয়ে একটা মোটামুটি ভদ্রস্থ জায়গায় নিয়ে আসা হল। এবারে ব্যান্ডেজ করে ওয়ার্ডে পাঠানো। তবে লোকটার শরীর জল না পেয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। বাঁচলে হয়। এদিকে চোখও খুলছে না। বুকের ওঠানামাটুকু বলছে বেঁচে আছে। অতএব স্যালাইন দিয়েই পাঠানো হল ওয়ার্ডে। এমন রুগী প্রথম নয়। এই ভাবেই অনেকের ঠাঁই হয় ওয়ার্ডের একটা কোণে। কেউ বাড়ি ফেরে,কেউ ফেরে না।

পরেরদিন সকালে স্যারের সাথে যখন ওয়ার্ডে ঢুকছি তখন দেখি জমজমাট অবস্থা। সারারাত ধরে স্যালাইন পেয়ে নির্মল জানা চাঙ্গা হয়েছে। হয়েই  বেডে শুয়েই গান ধরেছে,

‘চিরদিনই তুমি যে আমার, যুগে যুগে..’

আর সেই বেডের চারিদিকে ভীড় করে আছে ওয়ার্ডেরই কয়েকটা রুগী আর তাদের বাড়ির লোক। আমাদেরকে দেখেই ত্রস্ত হয়ে সিস্টার ছুটে এলেন।

– দেখুন না, ভোর ছটা থেকে একের পর এক গান গেয়ে যাচ্ছে। থামাতেই পারছি না। ওয়ার্ডের বাকি রুগীরাও তো আছে। তাদের তো অসুবিধা হচ্ছে। একটা সিডেটিভের ব্যবস্থা করুন না।

– কাল রাতেই লোকটা খাবি খাচ্ছিল, এখন সিডেটিভ দেওয়াটা বোকামি হয়ে যাবে। বাড়ির ঠিকানা কিছু বলেছে? কে কে আছে বাড়িতে?

– ধুর, সেসব কিচ্ছু বলেনি। কোন কথারই তো উত্তর পাচ্ছি না।

নির্মলের স্মৃতিভ্রংশ হয়েছে বোঝা গেল। কিন্তু গানের গলাটা চমৎকার! যতক্ষণ আমরা ওয়ার্ডে অন্য রুগী দেখলাম ততক্ষণ ধরে একের পর এক হিন্দি আর বাংলা সিনেমার গান গেয়ে গেল। অবশ্য একটু নিচু গলায়। অনেক অনুরোধের পর এইটুকু সে শুনেছে।

ওয়ার্ডের বাঁদিকের একটা বেডেতেই নির্মল থেকে গেল। ওকে নিয়ে তো খুব বেশি খাটতে হয় না আমাদের। ওয়ার্ডের ড্রেসাররাই ড্রেসিং করে ঘায়ের। একদিন অন্তর আমাদের খুলে দেখায়। আমরাও দেখি একটু একটু করে কালচে বাদামী ক্ষতটা লাল গোলাপী হচ্ছে। ছোট হয়ে আসছে। কিন্তু তাও সেটা লম্বায় প্রায় পাঁচ ইঞ্চি, চওড়ায় ইঞ্চি দুয়েক। সারতে সময় লাগবেই। আমরা রোজ ওর নোটে ‘পেশেন্ট ডুইং ওয়েল, কন্টিনিউ ড্রেসিং’ লিখে চলে আসতাম।

ধীরে ধীরে আমাদের অজান্তেই নির্মল আমাদের অভ্যেসে পরিণত হল। নির্মল জানা থেকে কখন নির্মলদা হয়ে গেল বুঝতে পারিনি। সপ্তাহর তিনটে দিন আমি হোস্টেলে থাকতাম। রাতে আমি আর মনীশ শুনতাম নির্মলদা গাইছে,

‘কুছ তো লোগ কাহেঙ্গে….

ম্যায়নে তেরে লিয়ে হি…

তুহি রে..’

মনীশ বলত, বড়িয়া গাতা হ্যায় না ইয়ে বান্দা!

বাংলা গান গুলো ও বুঝতো না। আমি মোটামুটি একটা মানে করে বুঝিয়ে দিতাম।

নির্মলদার ওপরে একটা মায়া পড়ে গিয়েছিল, আমরাই মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভদের থেকে পাওয়া দামী মলম দিতাম ওকে। সপ্তাহের একটা ড্রেসিং নিজেরাই করতাম থিয়েটারে নিয়ে এসে। ওর স্মৃতিও একটু একটু করে ফিরে আসছিল। লেক টাউনের এস কে দেব রোডের ওপরে যে গোপালের মন্দিরটা আছে, তার গায়েই একটা বাড়িতে ভাড়া থাকত। তিনকুলে কেউ নেই। জুয়োর নেশায় সব হারিয়ে পথে নেমে আসতে হয়েছিল। দাড়ি গোঁফ কামানোর পরে সেই পাসপোর্ট সাইজ ছবির নির্মলই মনে হত ওকে। রুগীর বাড়ির লোকেদের থেকে চেয়ে চিনতে কয়েক জোড়া জামা প্যান্ট ও জোগাড় করেছিল।

মাস দুয়েক পরের একটা দিন, আমি আর মনীশ নির্মলদার ড্রেসিং করছি, এমন সময় মনীশ বলল,

– আনির্বান মুঝে নেহি লাগতা ইয়ে উন্ড আভি সির্ফ ড্রেসিং সে সাহি হোগা। আভি ভি কিতনা বাড়া হ্যায় দেখ।

– তো কেয়া করে?

– স্কিন গ্রাফট কারেগা !?

মনীশের তখন প্লাস্টিক সার্জারিতে রোটেশন চলছে। সদ্য সদ্য শিখেছে গ্রাফটিং। যে ঘা গুলো সহজে সাড়ে না তার ওপরে শরীরের অন্য অংশ থেকে চামড়া তুলে এনে বসিয়ে দেওয়া। এবারে এই চামড়া ওই ঘায়ের রক্ত জালিকাগুলোর থেকে খাবার নিতে থাকবে, আর একটু একটু চারপাশের চামড়ার সাথে মিশে যায়। খুব ভাল প্রস্তাব নিঃসন্দেহে। আমাদের একটা নতুন অপারেশনে হাত মকসো করা যাবে! স্যারের পারমিশন নিতে কোন অসুবিধা হল না। একটা বুঝবারে সন্ধ্যেবেলায় নির্মলদাকে নিয়ে আমরা ওটি তে ঢুকলাম।

বাঁ পায়ের থাই থেকে চামড়া তোলা হল। সেই চামড়া বসালাম নির্মলদার ক্ষতর ওপরে। ছোট ছোট সেলাই করে সেই চামড়া জুড়ে দেওয়া হল ঘায়ের পাশের ভাল চামড়ার সাথে। এরপরে আবার ড্রেসিংয়ের পালা।

দিন পাঁচেক পরের কথা। নির্মলদার ঘা-টা দেখে স্যারও মনীশের পিঠ চাপড়ে দিলেন। আমাদের বসানো চামড়ার টুকরোটা নিজেকে দিব্বি মানিয়ে নিয়েছে নতুন জায়গাতে! আরো সপ্তাহ তিনেক ড্রেসিংয়ের পরে নির্মলদার ক্ষতটা একদম সেরে গেল। একদিন বিকেলে ওয়ার্ডে ঢুকে দেখলাম ও আর নেই বিছানাতে। আমার জুনিয়ররাই ওকে ছুটি দিয়ে দিয়েছে। ব্যাস কয়েক দিনের মধ্যে নির্মলদাও আমাদের মন থেকে মুছে গেল। ওই যে বললাম না, চারপাশের অন্য মানুষদের স্রোতে ধুয়ে গেল মুখটা। আরো অনেক বুধবার এল। আমরাও ব্যস্ত হয়ে গেলাম অন্য রুগী নিয়ে।

মাস আষ্টেক পরের কথা, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাস।

আমি আর মনীশ দু’মাস হল থার্ড ইয়ারে উঠেছি। কাজের চাপ একটু কমেছে। এখন অনেকটা সময় পড়ার বই মুখে নিয়েই কাটে। কিন্তু কাঁহাতক আর পড়া যায় একটানা? তাই একটা শনিবার সন্ধ্যেবেলায় হাজির হয়ে গেলাম লেক টাউনের জয়া সিনেমা হলের সামনে।

কি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম শুনলে ফিচ করে হাসবেন জানি।

সলমান খানের দাবাং ২!!

মনীশ সাল্লু ভাইয়ের বিশাল ফ্যান। ওই টানতে টানতে নিয়ে গেল।

শনিবার সন্ধ্যেবেলার শো। টিকিটের লম্বা লাইনে আধঘন্টা দাঁড়িয়ে ফাইনালি কাউন্টারের সামনে এলাম। তারের জাল দেওয়া জানলার ফাঁকে বললাম,- দাদা দুটো ব্যালকনির টিকিট দেবেন।

– আরে অনির্বাণ স্যার যে!! এই কার্তিকদা এনার টিকিট কেটো না। আমি দেখছি।

কথাগুলো এল টিকিট কাউন্টারে বসে থাকা কার্তিকদা নামের ভদ্রলোকের পিছন থেকে। আমি কাউন্টার থেকে সরে এসে বোকার মতো ভাবছি কি হল এমন সময় দেখি, নির্মল দা!

প্রথমে দেখেই চিনতে একটু অসুবিধা হয়েছিল। কাঁচা পাকা চুলে কলপ করেছে বলেই হয়ত। একটা সবুজ স্ট্রাইপ দেওয়া জামা আর খয়েরি প্যান্ট পরে আছে। আমার সামনে এসে বলল, – প্লিজ টিকিট কাটবেন না স্যার আপনারা। আমার সাথে আসুন।

নির্মলদা আমাদের সিনেমা হলের পাশের একটা ছোট দরজা দিয়ে ঢোকালো। তারপরে সরু একটা সিঁড়ি বেয়ে দোতলায়। সেখানের আরেকটা দরজা খুলেই দেখি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছি।

– তিরিশ বছর ধরে এই হলেই কাজ করি স্যার। শুধু ওই একবছর জুয়োতে আটকে সব খোয়ালাম। তবে এখন সব ছেড়ে দিয়েছি জানেন। মন দিয়ে কাজ করছি। আপনারা এই দুটো সিটে বসুন। হলের সেরা জায়গা একদম। এখানে সবাই আমাকে চেনে। কেউ কিছু বলবে না। সিনেমা শুরু হতে এখনো কুড়ি মিনিট বাকি আছে। আপনারা বসুন, আমি এক্ষুনি আসছি।

বসে আছি। কিছুক্ষণ পরে দেখি নির্মলদা দুটো ঠোঙা নিয়ে হাজির। আমাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, – নিন স্যার, একদম গরম আছে, খেতে খেতে সিনেমা দেখুন।

ঠোঙা খুলে দেখলাম তাতে একটা করে সিঙাড়া আর ভেজিটেবল চপ রাখা আছে। ততক্ষণে নির্মলদা ব্যালকনির অন্যদিকটায় চলে গেছে। হাতের টর্চটা জ্বেলে সবাইকে পথ দেখাচ্ছে,

দেখি টিকিটটা…১৮র সি…ওই যে সামনে এগিয়ে ডান দিকে, দুটো ছেড়ে বসবেন..

————————————————————

এখন দেখি অসুরের মুখে ডাক্তার বসছে। প্রতিদিন কোনও না কোনও ডাক্তারের চামড়া গুটিয়ে হাতের সুখ খুঁজছে মানুষ। আমরা নাকি মানুষ মারার কল। এই সময়গুলোতে যখন প্রবল হীনমন্যতায় ভুগি তখন ভাবি এখনও তো আর জি করের থিয়েটারে কোন নির্মলদার পায়ে চামড়া বসাচ্ছে কোন এক অনির্বাণ আর মনীশ। কোন এক নির্মলদার হাসি মুখ বলছে, অনেক ধন্যবাদ।

ঘটনাটা সত্যি ঘটেছিল তো আমাদের সাথে? নাকি স্বপ্ন দেখেছিলাম। নাকি গত ছ’বছরে মানুষের দারুণ বিবর্তন হয়েছে। হাতের নখ বেড়েছে আর বড় বড় দাঁত গজিয়েছে। সুযোগ পেলেই আঁচড়ে কামড়ে রক্তাক্ত করবে।

মাঝে মাঝে গুলিয়ে যায় সব।

PrevPreviousমেডিকাল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের আবেদন
Nextঘর ফেরানোর অক্ষর-২Next

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

মনে রবে কিনা রবে আমারে…

January 21, 2021 No Comments

অধ্যাপক ডা যাদব চট্টোপাধ্যায়ের গাওয়া। ফেসবুক থেকে নিয়ে পাঠিয়েছিলেন ডা দীপঙ্কর ঘোষ। সত্যজিত ব্যানার্জীর ওয়ালের ভিডিও তার অনুমতি নেওয়া হয়নি তাড়াতাড়িতে। ক্ষমাপ্রার্থী।

একদম চুপ তারা

January 21, 2021 No Comments

আমার স্কুলে একটি ভীষণ দুর্দান্ত আর ভীষণ মিষ্টি বাচ্চার গল্প বলি আজ| ডাক্তারি পরিভাষায় সে হলো ডাউন সিনড্রোম ও intellectually challenged বাচ্চা| ভাবগতিক দেখে অবশ্য

ঊনিশ শতকের বীর চিকিৎসক-নারী – আনন্দবাই ও অন্যান্যরা

January 21, 2021 4 Comments

আমরা এর আগে বাংলার তথা ভারতের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট কাদম্বিনী গাঙ্গুলিকে নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছি। সমসাময়িক কালে আনন্দবাই যোশী, রুক্মাবাই, হৈমবতী সেনের মতো আরও কয়েকজন

করোনায় গন্ধ না পেলে কি করবেন?

January 20, 2021 No Comments

ডা স্বপন কুমার বিশ্বাসের ইউটিউব চ্যানেল থেকে অনুমতিক্রমে নেওয়া।

শেষ কবিতাঃ একাকীত্বে হেঁটে যাওয়া

January 20, 2021 1 Comment

মেডিকেল কলেজের এনাটমি বিভাগের প্রধান ডা যাদব চট্টোপাধ্যায় Covid19-এ আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকাকালীন ওঁর কবিতাঃ একাকীত্বে হেঁটে যাওয়া একাকীত্বে হেঁটে যাওয়া

সাম্প্রতিক পোস্ট

মনে রবে কিনা রবে আমারে…

Doctors' Dialogue January 21, 2021

একদম চুপ তারা

Dr. Mayuri Mitra January 21, 2021

ঊনিশ শতকের বীর চিকিৎসক-নারী – আনন্দবাই ও অন্যান্যরা

Dr. Jayanta Bhattacharya January 21, 2021

করোনায় গন্ধ না পেলে কি করবেন?

Dr. Swapan Kumar Biswas January 20, 2021

শেষ কবিতাঃ একাকীত্বে হেঁটে যাওয়া

Doctors' Dialogue January 20, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

291661
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।