Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

গাড়ি বিক্কিরি

Screenshot_2024-03-24-08-55-01-93_680d03679600f7af0b4c700c6b270fe7
Dr. Aniruddha Deb

Dr. Aniruddha Deb

Psychiatrist, Writer
My Other Posts
  • March 24, 2024
  • 8:55 am
  • One Comment

এই লেখাটা অবধি গাড়ি বিক্কিরি করেছি এক বারই। মারুতির কাছ থেকে কিনে, মারুতির কাছেই বেচেছিলাম, মনে হয়েছিল, ওরাই যা করার করবে, নতুন মালিককে কাগজপত্র করে দেবার ঝামেলা সামলাবে। এক বন্ধু গাড়ি বিক্রি করার বছর দুয়েক বাদে পুলিশ এসেছিল – মালদায় গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। সে গাড়ি আর ওনার না, সে শুনেও পুলিশের কী রাগ! মিছিমিছি মালদা থেকে এলাম। কেন আপনারা গাড়ির মালিকানা চেঞ্জ করেন না?

এ সবের ভয়ে মারুতিকে দিলাম গাড়ি, দেবার মাস খানেকের মধ্যে আমার লেটারবক্স ভরে গেল ট্র্যাফিক ভায়োলেশনের চালানে। রেগেমেগে নিয়ে গেলাম মারুতির কাছে। বললাম, আচ্ছা, বারো বছর গাড়ি চালিয়ে ৩টেও ভায়োলেশন হয়নি, আর আজ এক মাস তিন দিন, এর মধ্যেই আটটা?

ওরা, স্যরি স্যার-ট্যার বলে নিয়ে নিল। মানতে হবে, এখনও আর কোনও সমস্যা হয়নি।

*

শুনে অরিন্দম বলল, ন্যাকামিরও একটা সীমা আছে, মাইরি। দুটো ট্র্যাফিক ভায়োলেশনের চালান এলো কি না এলো, দাঁত বের করে কেলিয়ে পড়লি! হতো যদি নিকির মতো…

আমি গল্পের গন্ধ পেলে ছাড়ি না, বললাম, নিকির গাড়ির কী হয়েছিল?

অরিন্দম মাথা নেড়ে বলল, আরে সে অনেক কিছু। বলে যে কাহিনী বলেছিল তার সামারি হল এমন –

নিকির প্রথম গাড়ি কেনা হয়েছিল অফিস থেকে লোন নিয়ে। ফার্স্ট অ্যামেরিকান সিটি ব্যাঙ্কের যে শাখায় অফিসের অ্যাকাউন্ট ছিল সেই শাখা থেকেই লোন ডিসবার্স হয়েছিল। তিন না পাঁচ বছরে লোন শোধ হয়েছে, নাম বদলে গাড়ি যে নিজের নামে করতে হয়, ওরা জানেও না, কেউ বলেওনি। বছর দশেক গাড়ি চালানোর পরে নতুন কিনবে, বেচতে গিয়ে জানা গেল ব্যাঙ্ক থেকে লিখিয়ে আনতে হবে যে লোন শোধ হয়ে গিয়েছে।

বললাম, তো কী হল, দশ বছর পরে ব্যাঙ্ক লিখে দেবে না?

অরিন্দম বলল, আরে ধুর ঘণ্টু, ব্যাঙ্কই নেই তো আর! দু’বার বিক্রি হয়ে নাম বদলে এখন তার নাম ডয়েচব্যাঙ্ক না কী ছাতার মাথা – ওরা নিজেরাই উচ্চারণ করতে পারে না। তার ওপর যে ব্রাঞ্চ থেকে লোন দিয়েছিল, সেও উঠে গেছে প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেল।

নিকি বলল, তাও আমরা ছাড়িনি, দিনের পর দিন ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখুন না, একটু খুঁজে দেখুন না বলে কী বোর করেছি, ভাবতে পারবি না! শেষে ওরা বলেই দিল, দশ বছর পুরোনো কাগজ আর নেই। তাও আবার এমন একটা ব্রাঞ্চ যার অস্তিত্বই নেই পাঁচ-ছ’ বছর। যদি লোন শোধ না হতো একটা চান্স ছিল, কিন্তু শোধ হয়ে যাওয়া লোন, ওই, কী বলে, ফাইল ক্লোজড, শ্রেডেড।

আমি বললাম, তার মানে বিক্কিরি হবে না?

মাথা নাড়ল অরিন্দম। হবে না।

বললাম, সে গাড়ি এখনও আছে?

বলল, আরে না রে, সেটাই তো গল্প! গাড়িটা বছরের পর বছর পড়ে ছিল আমাদের বাড়ির নিচে একটা পার্কিং স্পেস দখল করে – চালানো হয় না, টায়ারগুলো গেছে, সিট-ফিট একেবারে গন কেস… এমন সময় নিকির সেকেন্ড গাড়িটা, ওটাও ওই একই কম্পানির ছিল, সারাতে এসেছে কম্পানির মিস্তিরি। বাড়িতেই সার্ভিস করে ওরা। মিস্তিরি ওই পুরোনো গাড়িটা দেখে বলেছে, একটু সারিয়ে সুরিয়ে বিক্রি করে দিন না?

নিকি বলল, দাম কি পাবো কিছু?

মিস্তিরি বলল, আলবাত পাবেন। জাঙ্কেরও দাম হয়। দাঁড়ান, আমি একটা অর্ডার ফর্ম নিয়ে আসি, কম্পানির হয়েই একটা সার্ভিসিং করে দিই অফিশিয়ালি। তার পরে দেখা যাবে।

নির্দিষ্ট দিনে মিস্তিরি একটা পাঁচ লিটার জেরিক্যান ভর্তি পেট্রোল নিয়ে এসে হাজির সক্কালবেলা। নিকির ড্রাইভার ছিল নিচে, ওকে বলল, আমি এই জেরিক্যান থেকে পেট্রোল নিয়ে গাড়ি চালাব। আপনি গাড়িটা স্টার্ট দেবেন।

বলে কার্বুরেটর না কী খুলে গাড়ির ছাদে জেরিক্যান রেখে, জেরিক্যান থেকে একটা পাইপ কার্বুরেটরের মধ্যে দিয়েছে। তার পরে ড্রাইভারকে বলেছে, গাড়িতে স্টার্ট দিন দেখি।

আমি বলেছি, কেলো করেছে! রুমাল পেট্রোলে ভিজিয়ে কার্বুরেটরের ওপর দুলিয়ে দিলেই স্টার্ট হয়।

অরিন্দম বলেছে, বটেই তো! ভাগ্যিস নিকির ড্রাইভারের কী মনে হয়েছে, ও আর গাড়িতে ঢুকে স্টার্ট দেয়নি। ও বাইরে থেকেই হাত ঢুকিয়ে চাবিটা ঘুরিয়েছে।

নিকি বলল, আর সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত জেরিক্যানটা দাউদাউ করে জ্বলতে লেগেছে! দেখতে দেখতে বাড়ির নিচে একেবারে খান্ডববন!

অরিন্দম বলল, ভাব, সকাল আটটা বাজে! কারওর গাড়িই বেরোয়নি। পাশের গাড়িটা হয়তো পাঁচ ফুটের মধ্যেই!

নিকি বলল, আর আমাদের গাড়ির অন্য দিকেই সারা বাড়ির মিটার বক্স। সব মেন সুইচ, মিটার, সব!

আমি জানতে চাইলাম, কী হল?

অরিন্দম বলল, কপাল ভালো, কিছুই হয়নি। আমাদের দারোয়ানটা চালাক, চটপট ধাক্কা দিয়েই পাশের দুটো গাড়ি রাস্তায় বের করে দিয়েছে, আর অন্য গাড়িগুলো অতো কাছে ছিল না, ওগুলো চাবি এনে বের করা হয়েছে, আর দমকলও এসে গিয়েছে। তবে তার মধ্যেই দেওয়াল ছাদ, পুড়ে কালো, আর ওপরের বাড়িটা তো ঠিক আগুনের ওপরে, ওদের কাচের জানলা ফেটে গেছে, পর্দা পুড়ে গেছে…

আমি বললাম, খুব হ্যাপা হলো?

অরিন্দম বলল, হ্যাপা তো হলো মিস্তিরির আর গাড়ি কম্পানির। আগুন নেভাবার আগেই গাড়ি পুড়ে ছাই। ওরা মিস্তিরিকে এই মারে কী সেই মারে। তার পরে গাড়ি কম্পানির ইঞ্জিনিয়ার এসে আর এক হাত নিল মিস্তিরিকে।

নিকি এক গাল হেসে বলল, এ দিকে কাজ অফিশিয়ালি কম্পানি করেছে, ওরাও ঘাড় থেকে দায়িত্ব নামাতে পারছে না। ফলে কম্পেনসেশন দিয়ে পোড়া গাড়িটা ভাগাড়ে টেনে নিয়ে গেল।

আমি বললাম, ভাগ্যিস মালিকানার কাগজ দেখতে চায়নি!

অরিন্দম বলল, চায়নি আবার! বলল, অফিশিয়ালি তো গাড়িটা আমরা কিনছি, কাগজ তো লাগবে! কিন্তু কাগজ তো গাড়ির মধ্যেই ছিল, যাবতীয় কাগজ নিয়েই তো আমরা ব্যাঙ্ক যেতাম আসতাম, আর বেরই করতাম না। সে তো গাড়ির সঙ্গে সব পুড়ে ছাই। তাই আর কাগজ দিতে হলো না!

*

এসব শুনে শুভ্র বলল, তোরা বাচ্চা। আমার কী হয়েছিল জানিস? আমার গাড়ি চুরি হয়েছিল।

টালিগঞ্জ থানার কাছেই থাকে, সে পাড়াতেই কোথাও রাস্তায় গাড়ি রেখে শুভ্র রোগি দেখতে গিয়েছিল। ফিরে এসে যখন দেখল গাড়ি আর নেই, পরিচিত ওসি যখন বললেন, ডাক্তারবাবু, কোনও চিন্তা নেই, তখন শুভ্র নিশ্চিন্তে বাড়ি গেল। দু’চার দিন ট্যাক্সিতে যাতায়াত করল, দিনে তিন বার থানায় চক্কর কাটল, তার পরে, পুলিশের রিপোর্টের ভিত্তিতে ইনশিওরেন্স যখন টাকা দিয়ে দিল, তখন বুঝল, আর আশা করে বসে থেকে লাভ নেই, নতুন গাড়ি কেনাই শ্রেয়ঃ।

নতুন গাড়ি কয়েক মাস চলেছে, এমন সময় এক বন্ধু মুকুটমণিপুর থেকে বেড়িয়ে ফিরে বলল, শুভ্র, তোর গাড়িটার নম্বর কতো ছিল যেন?

শুভ্র নম্বর বলল, বন্ধু একটা কাগজের লেখা মিলিয়ে বলল, অ্যাঃ, পেয়েছি। তোর গাড়ি দেখে এলাম। মুকুটমণিপুরে। থানার ওসি চালাচ্ছে!

শুভ্র বলল, ধ্যার, তাও হয় নাকি?

বন্ধু বলল, মাইরি বলছি। তোর সেই বিশ্রি হলদেটে বিস্কুট রঙের গাড়ি, নম্বর এই এক – দেখ আমি লিখে এনেছি, মায় বাঁদিকের পেছনের দরজাটা যে ধাক্কা লেগে সামান্য তেবড়ে গিয়েছিল, সেটাও তেমনই রয়েছে।

শুভ্রর হাঁ-টা হাত দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বন্ধু আরও বলল, ‘ডাক্তার’ স্টিকারটাও সামনে পেছনে চকচক করছে। ওই দেখেই তো চোখে পড়ল। এক পুলিশ কেন ডাক্তার-মার্কা গাড়ি থেকে বাজার করতে নামে?

শুনে বন্ধুমহলে হইচই পড়ে গেল, পরের সপ্তাহেই শুভ্র, সঙ্গে দু চার জন ডাক্তার বন্ধু, তিনটে গাড়ি করে হাজির হল মুকুটমণিপুর। থানার হাতায় চুরি যাওয়া গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে, শুভ্র গিয়ে বলল, ওই গাড়িটা আমার।

ওসি প্রথমে একটু রেগে গেলেও চট করেই বুঝে গেলেন সামনে যারা দাঁড়িয়ে রয়েছে তারা বখাটে মস্তান নয়। শহুরে গণ্যমান্য ব্যক্তি লাগছে। তিন তিনটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থানায়, সবকটাতেই ডাক্তারের সিম্বল। বললেন, কিন্তু আমি যে ওই গাড়ি কিনেছি।

শুভ্র বলল, কিনে থাকতে পারেন, কিন্তু কোত্থেকে কিনেছেন, সে ডিটেল আছে কি? গাড়ি যে আমার সে প্রমাণ আমি নিয়ে এসেছি, ডায়েরির কপিও আমার কাছে আছে।

টালিগঞ্জ থানার কাগজপত্র দেখে ওসি-র অবস্থা খারাপ। শুভ্র বলল, জীবনে প্রথম একজন পুলিশ অফিসারকে অতো কাঁচুমাচু দেখলাম। বললেন, ডাক্তারবাবু, কী বলব, গাড়ি আমি সত্যিই কিনেছি।

শুভ্র বলল, বেশ তো, আমি শুধু বলতে এসেছি আমার চুরি যাওয়া গাড়ি আপনার থানার চৌহদ্দিতে দাঁড়িয়ে আছে।

ওসি ঘেমে একাকার, বললেন, গাড়ি আপনি নিয়ে যান।

শুভ্র অবাক! নিয়ে যাব?

হ্যাঁ, নিয়ে যান। আরে মশাই, আপনারই তো গাড়ি। মনে করুন রিকভারি হয়েছে… শুধু ইয়ে, একটা কথা বলব, ডাক্তারবাবু?

কী কথা?

ওসি অত্যন্ত কিন্তু-কিন্তু করে বললেন, ইয়ে, আপনার টায়ারগুলো পুরোনো ছিল। আমি নতুন লাগিয়েছি। যদি…

গাড়ি পরীক্ষা করে দেখা গেল, সত্যিই, টায়ার নতুন। শুভ্র বলল, কতো দেবো?

ওসি টুপি না খুলেই মাথা চুলকে বললেন, ইয়ে ফিফটি পারসেন্ট দিলেই হবে। আমিও তো চালিয়েছি কয়েক মাস।

শুভ্র আর বন্ধুরা পকেট হাতড়ে পাঁচটা নতুন টায়ারের দামের অর্ধেক দিয়ে বলল, আমরা তাহলে আসি?

পুলিশ অফিসার পকেট থেকে রুমাল বের করে ঘাম মুছে বললেন, হ্যাঁ হ্যাঁ, স্যার, ইয়ে পেট্রোল বেশি নেই।

শুভ্র বলল, সে ভরে নেবো। আপনি আপনার কাগজপত্র বের করে নেবেন না?

অফিসার বিষম খেয়ে বললেন, না, মানে, আসলে কাগজপত্র গাড়িতে নেই, থানায় আছে। আপনারা বেরিয়ে পড়ুন। অনেকটা যেতে হবে।

গাড়িতে উঠে কাগজ রাখার জায়গা খুলে দেখা গেল কিছুই নেই। শুভ্রর এক বন্ধু বলল, থানায় কাগজ আছে না ঘণ্টা। ব্যাটা চোরাই গাড়ি উদ্ধার করে রিপোর্ট না করে চালাচ্ছিল।

আর এক বন্ধু বলল, এখানে আর দাঁড়িয়ে লাভ নেই। কেটে পড়ি। থানার বাইরে বেরোলেই কিন্তু ও বলতে পারবে ওর কাছে এ গাড়ি কোনও দিন ছিলই না। ফলে ওর থানা এলাকা থেকে বেরিয়ে অন্য কথা। নইলে ফালতু কেস দিয়ে দিতে পারে।

আর কথা না বাড়িয়ে সকলে বেরিয়ে পড়ল। এবং বিনা সমস্যায় পৌঁছে গেল কলকাতা।

শুভ্র গেল সটান টালিগঞ্জ থানায়। ওসিকে গিয়ে বলল, জানেন, গাড়ি পেয়ে গেছি।

ওসি বললেন, তাই? কোথায়?

কোথায় শুনে পুলিশের চোখ কপালে। বললেন, একেবারে নিয়ে এসেছেন?

শুভ্র বলল, কী করব? দিয়ে দিল তো। বাইরেই পার্ক করা আছে।

ওসি বললেন, তাই? ভারি ভালো কথা! বেশ বেশ। বলে হাঁকলেন, দরোয়াজা!

দরজায় দাঁড়ানো সান্ত্রী এসে সেলাম করল।

ওসি বললেন, ডাক্তারবাবু এসেছেন, কফি আনো। আর শোনো, ভূদেবকে বলো, ডাক্তারবাবুর গাড়ি চুরির ফাইলটা আনতে। গাড়ি পাওয়া গেছে।

সান্ত্রী চলে গেল। কফির আগেই এলো ফাইল। ওসি ফাইল নিয়ে অধস্তন কর্মচারীকে বললেন, ভূদেব, ডাক্তারবাবুর গাড়ি পাওয়া গেছে।

ভূদেব বললেন, বাঃ, তাহলে ক্লোজ?

ওসি বললেন, হ্যাঁ, দাও। বলে ফাইল নিয়ে তার শেষ পাতায় ঘষ ঘষ করে কী লিখে, সই করে, দড়াম করে স্ট্যাম্প লাগিয়ে বললেন, ক্লোজড। নিয়ে যাও।

অবাক শুভ্র বলল, ক্লোজড মানে কী?

আরও অবাক হয়ে ওসি বললেন, আরে, গাড়ি চুরি হয়েছিল, পাওয়া গেছে। সলভড। সুতরাং কেস ক্লোজড।

শুভ্র বলল, আরে কিন্তু গাড়ি কী করে সেখানে গেল, আপনারা তদন্ত করবেন না?

ওসি বললেন, আরে পাওয়া গেছে, সেটাই তো আসল। তাই না? খুশি খুশি গাড়ি নিয়ে যান, পাওয়ার আনন্দে একদিন না হয় স্টাফদের মিষ্টি খাইয়ে দেবেন।

হতভম্ব শুভ্রর তখন আর একটা ব্যাপার খেয়াল হলো। বলল, কিন্তু গাড়ি কি আমি নিয়ে যেতে পারি? ওর দাম, বা ইনশিওরেন্স ক্লেম তো ইনশিওরেন্স কম্পানি দিয়ে দিয়েছে। তাহলে কি গাড়ি ওদের দেওয়া উচিত?

ভুরু কুঁচকে ওসি বললেন, এটা বলতে পারবো না, স্যার। আপনি বরং ইনশিওরেন্স কম্পানির সঙ্গে কথা বলুন।

পরদিন শুভ্র গাড়ি নিয়ে হাজির হলো ইনশিওরেন্স কম্পানির অফিসে। ক্লার্ক একগাল হেসে বললেন, কী? আবার গাড়ি চুরি?

শুভ্র বলল, না! বরং উলটো। চুরি যাওয়া গাড়ি পাওয়া গেছে।

ক্লার্কের চশমা নাক থেকে গোঁফের ওপর নেমে এল। শিথিল হাত থেকে কলম খসে পড়ল সামনের খোলা ফাইলে। বললেন, সেকি! সে কিরকম?

শুভ্র খুলে বলল সব কথা। সে কাহিনী শেষ হতে হতে ক্লার্কের টাক ঘামে চকচক করছে। বললেন, গাড়ি নিয়ে এসেছেন!

শুভ্র বলল, নইলে কী করব?

ক্লার্ক কাঁপা হাতে দরজা দেখিয়ে বললেন, চলে যান, চলে যান এক্ষুণি! আপনি তো সাংঘাতিক মানুষ মশাই! ডাক্তার, না খুনি! চুরি হওয়া গাড়ি, তার ইনশিওরেন্স পেমেন্ট হয়ে গেছে, সে গাড়ি খুঁজে নিয়ে এসেছেন? কেন?

শুভ্র বলল, নইলে কী করি? গাড়ির মালিক তো ইনশিওরেন্স কম্পানি! আপনারা আমাকে টাকা দিয়ে দিয়েছেন, আমি নতুন গাড়ি কিনেছি। এটা এখানে রেখে যাই?

ক্লার্ক চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লেন, বললেন, হরগিজ নেহি! গাড়ি চুরি হয়েছে রিপোর্ট হয়েছে। পুলিশ বলেছে উদ্ধার করা যায়নি। ইনশিওরেন্স কম্পানি পেমেন্ট করে দিয়েছে। ফাইল ক্লোজড। এখন সে ফাইল খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। শ্রেডেড হয়ে গেছে। সে গাড়ি নিয়ে আমি করব কী? ইনশিওরেন্স কম্পানি কি গাড়ি বিক্রি করবে? নিয়ে যান গাড়ি।

শুভ্র এবার ঘাবড়ে গেছে। এমন জানলে কে যেত বানর সেনা নিয়ে সীতা উদ্ধার করতে! বলল, কিন্তু গাড়ি তো আমার না!

ক্লার্ক বলল, আলবত আপনার। আপনি গাড়ি কিনেছেন, মালিকানার কাগজে আপনার নাম এখনও আছে, বদলায়নি। আপনার গাড়ি। নিয়ে যান। এখানে রেখে যাবেন না যেন।

বাড়ি গিয়ে শুভ্র আবার বন্ধুদের ফোন করল। কী করা যায় বলতো? গাড়ি রেখে দেবো?

এক জনের মাথায় বুদ্ধি এল। বলল, হ্যাঁ রে, গাড়ি পরের বছর ইনশিওর করবি কী করে? কেউ যদি বলে, ডাক্তারবাবু গাড়ি লুকিয়ে রেখে চুরি হয়ে গেছে বলে ইনশিওরেন্স ক্লেম মেরে দিয়ে আবার সেই গাড়িই চালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তখন কী করবি?

শুভ্রর কাঁদো কাঁদো অবস্থা। বলল, কী করব তাহলে?

বন্ধু বলল, বেচে দে। আমার ভালো দালাল জানা আছে।

তাই হলো। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল। এক বেচারা পুলিশ অফিসারের পাঁচটা নতুন টায়ারের দামের ফিফটি পার্সেন্ট গচ্চা গেল!

২১ মার্চ, ২০১৬, কলকাতা

PrevPreviousএকটি ল্যাম্প পোস্ট এবং ৬২৩টি মেয়ে
Nextসারা বাংলার ভাতাপ্রাপ্ত ডাক্তার ও ডাক্তারী-ছাত্রদের ১৯৭৩-এর আন্দোলনের রিপোর্টNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
MAYURAKSHI DAS
MAYURAKSHI DAS
1 year ago

ডাক্তারবাবু, আপনার কাছে আমার শাশুড়ীমাকে দেখাতে চাই। আপনি কী একমাত্র ক্রিস্টাল মাইন্ডসেই রোগী দেখেন? একটু জানাবেন অনুগ্রহ করে।

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

আজ যত যুদ্ধবাজ

May 13, 2025 1 Comment

যুদ্ধ বিরতিতে আমা হেন আদার ব্যাপারির খুব বেশি আসে যায় না। শুধু মেগা সিরিয়াল না দেখে যুদ্ধ-ভিডিও দেখছিলাম। সেটা একটু ব্যাহত হল। মূল্যবৃদ্ধি? আমি প্রতিদিনের

মাদারিকা খেল

May 13, 2025 No Comments

দৃশ্য এক: বৃহস্পতি বার, ৮ই মে, ২০২৫: খবরে প্রকাশ ভারতের প্যাটেন্ট, ডিজাইন এবং ট্রেড মার্কস এর কন্ট্রোলার জেনারেল এর অফিসে চার খানা দরখাস্ত জমা পড়েছে

স্কুলের গল্প: ঐতিহাসিক ইতিহাস পরীক্ষা

May 13, 2025 No Comments

যখন নিয়মিত স্কুল হতো সেই যুগের গল্প।💖 শীতলবাবুর হাতের লিকলিকে বেতটা টেবিলের উপর আছড়ে পড়ল। ‘চুপ, কেউ একটা কথা বললেই খাতা নিয়ে বাইরে বার করে

চরক-সংহিতা-র অভ্যন্তরে – সূত্রস্থান ১-৩০ অধ্যায়

May 12, 2025 1 Comment

(পাঠকদের সুবিধের জন্য এ লেখাটির ১ম অংশের লিংক দেওয়া থাকলো – https://thedoctorsdialogue.com/ino-the-depth-of-charak-samhita-1/) শুরুর কথা আমরা আগের সংখ্যায় আয়ুর্বেদের প্রধান ভিত্তি “ত্রিদোষতত্ত্ব” নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এবং,

প্রকৃতি, তিনটি বৃক্ষ ও বুদ্ধ

May 12, 2025 8 Comments

শাক্য রাজপ্রাসাদে আজ খুশির লহর ব‌ইছে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও রাজা শুদ্ধোদন বসেছেন রাজসভায়। এমন সময় সন্দেশ এলো – মহারাজকে একবার অন্তঃপুরে যেতে হবে, তলব এসেছে।

সাম্প্রতিক পোস্ট

আজ যত যুদ্ধবাজ

Dr. Arunachal Datta Choudhury May 13, 2025

মাদারিকা খেল

Dr. Samudra Sengupta May 13, 2025

স্কুলের গল্প: ঐতিহাসিক ইতিহাস পরীক্ষা

Dr. Aindril Bhowmik May 13, 2025

চরক-সংহিতা-র অভ্যন্তরে – সূত্রস্থান ১-৩০ অধ্যায়

Dr. Jayanta Bhattacharya May 12, 2025

প্রকৃতি, তিনটি বৃক্ষ ও বুদ্ধ

Somnath Mukhopadhyay May 12, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

554160
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]