সেক্স, না না ওসব ব্যাপার আমাদের বাড়িতে হয় না। আমি মেয়েকে চোখে চোখে রাখি। ছেলেকেও বখাটে ছেলেদের সাথে মিশতে দিই না। ওদের বাবাও খুব কড়া। বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত পরিবারে তাই ধারণা। সেক্স ট্যাবু।
সেপ্টেম্বর হল যৌন স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাস। এখন বেশিরভাগ লোকের কাছে যৌন শিক্ষা হল সবচেয়ে অবান্তর শিক্ষা। ছেলেমেয়েদের গোল্লায় যাওয়ার পথ দেখানো। তাঁদের মত হল, সময় হলে সবাই সব এমনিই জেনে যাবে। তার জন্য অত ঘটা করে জানানোর কী আছে? আমাদের বাবা, মায়েরা তো কোনদিন কোনও কিছু শেখায়নি। তাতে করে আমরা কি বিয়ে করে ছেলেপুলে নিয়ে সংসার করছি না! যত্ত সব বাড়াবাড়ি… আর ঠিক এখানেই সমস্যার শুরু।
ছেলেমেয়েরা কিশোর বয়সে কিংবা তার আগেও অনেক কিছু জেনে যায়, যার অনেকটাই ভুল। প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞতা বা ঠিক তথ্য না জানা জন্যই তাঁরা ভুল পথে যায়। অনেক সময় নিজেদের সেক্স্যুয়াল ওরিয়েন্টেশন বুঝতে না পেরে মানসিক অবসাদে ভোগে। কার কাছে গেলে সঠিক দিশা পাবে বুঝতে পরে না।
কিশোর বয়সের ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে নানাভাবে হিংসা থেকে যৌন হেনস্তার শিকার হয়। বিভিন্ন বয়সে বিশেষ ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার। পিরিয়ড থেকে শুরু করে প্রজনন, কনট্রাসেপশন, প্রেগন্যান্সি, সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিসেবল ইনফেকশন।
ওই বয়সে ভুল হয়। একটা ভুল ঢাকতে তারা যেন আরো বড় ভুল না করে। তারা যেন বাবা মা বিশ্বাসভাজন কোনো বড়র সাহায্য চায়।এই ধারণার বা ভরসার অভাবে কত কিশোর-কিশোরী অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয় বা বেঁচে থাকলেও বিরাট ক্ষতের জ্বালা বয়ে বেড়ায় তার কোনও হিসেব নেই। তাই প্রত্যেকের যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানার অধিকার আছে। তাঁদের জানাতে হবে, ছেলে বা মেয়ের শরীরের কোনও তফাৎ নেই। সবারই আনন্দ পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু আনন্দ পাওয়ার সঙ্গে যেন নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা হয়। কন্ট্রাসেপশন বা অ্যাবরসন যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একেবারে নিজস্ব। যৌন স্বাস্থ্য ও প্রজনন বিষয়ে প্রত্যেকের জানা দরকার। ভার্জিনিটি বা কুমারীত্ব একটা ধারণা মাত্র।
কাজেই নিজের সন্তানকে প্রথম থেকেই তার বয়স অনুযায়ী যৌন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলুন, যাতে ভবিষ্যতে তাকে ও আপনাকে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়।