নতুন বদলি হয়ে এসেছেন। প্রচন্ড মুখ খারাপ। ভীষণ চিৎকার করে কথা বলেন। মুখের ভাষা, শারীরিক অঙ্গভঙ্গি কোনোকিছুই পোস্টের সাথে খাপ খায় না। অফিসের সবাই খুব বিরক্ত, হতাশও বটে।
চেম্বারে ফাইল নিয়ে গিয়ে সই করাতে গিয়ে সদ্য যোগদান করা যুবকের এক ছোট্ট ভুলে চিৎকার করে বলে ওঠেন: “হারামির বাচ্চা”….
ছেলেটি চুপ করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে।বসের সামনে ল্যাপটপে আড়চোখে দেখলো sbi নেট ব্যাঙ্কিং খোলা, নতুন পাসওয়ার্ড চাইছে।
ফাইল সই সবুদের পর ঘর থেকে বেরোবার সময় বসের নিজের মুখে বিড়বিড় করে কথাগুলো কানে আসলো “এটাই পাসওয়ার্ড করে দেই”….
কদিন পরে বসের ঘরে খুব চিৎকার, চেঁচামেচি। একটা বিরাট অঙ্কের টাকা তখনই পাঠাতে হবে ক্লায়েন্টকে, কিন্তু পাসওয়ার্ড মনে পড়ছে না বসের।
ছেলেটি অন্য এক ফাইল নিয়ে ঘরে ঢুকে সবটা শুনে আলতো স্বরে বলে ওঠে “হারামির বাচ্চা”
আনন্দে নেচে ওঠেন বস। ঠিক। এটাই করেছিলাম। তোকে দেখে বলেছিলাম। মুখের বিশ্রী হাসিটা যুবকের কোথাও যেন লাগলো।
“বল কি চাই তোর, এখনই উপহার দেবো।”
“চেয়ারটা….”
“মানে!”
“আপনার চেয়ারটা। নড়বড়ে হয়ে গেছে স্যার, নতুনটা এসে গ্যাছে। আজই আপনার ঘরে দেবে। এই চেয়ারটা দেবেন স্যার?”
“নিশ্চিন্তে, শালা এটা কোনো উপহার হলো! জাতে উঠতে পারলো না এরা?” হ্যা হ্যা করে হেসে উঠলেন বস।
কিছুদিন পরে সেই যুবকের বাড়িতে তার ছেলের অন্নপ্রাশন। বাড়ি ভর্তি লোকজন। অফিসের সবাই এসেছে। বস সহ।
বাথরুমে গিয়ে বস দ্যাখেন….চেয়ারটায় মাঝখানে একটা গর্ত করা। কমোডের মত করা অনেকটা।
একটু অবাক, কিছুটা বিহ্বল হয়েই বেরিয়ে এসে: “ওই চেয়ারটা বাথরুমে দেখলাম যেন!”
‘হ্যাঁ স্যার, বাবার হাঁটু ব্যথা। বসতে পারেন না। ওই চেয়ারটা ব্যবহার করেন।”
বসের ব্যবহারে আমূল পরিবর্তন। বস আর মুখ খারাপ করেন না কারোর সাথে।