Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

স্বপ্নবকুল

received_365481121209535
Dr. Aniruddha Deb

Dr. Aniruddha Deb

Psychiatrist, Writer
My Other Posts
  • September 11, 2022
  • 6:52 am
  • No Comments
শম্পা আবার স্বপ্নে দেখেছে বকুলগাছটা। কী আশ্চর্য! কতদিন পরে ফিরে এল গাছটা। সেই ছোটোবেলায় দেখা গাছটা। মামাবাড়ির গায়ে লাগা তিনতলা বাড়ির চেয়েও উঁচু গাছটা। পুজোয় মামাবাড়ি গেলে ওরা সব মামাতো-মাসতুতো ভাইবোনরা যে ঘরে ঘুমোত, সেই ঘরের জানলার বাইরের আকাশটা ঢেকে দাঁড়িয়ে থাকত। ছোটোবেলায় শম্পার অবাক লাগত — দিনের বেলা যে গাছটা যেরকম জীবন্ত একটা ডালপালা-মেলা হাজার প্রাণীর আশ্রয়, সন্ধে নামলেই সে কেমন জবুথবু জুজুবুড়ি। রাতে আলো নিভলে তো ছোটোবেলায় রীতিমতো ভয় করত। রাত্তিরে মাঝে মাঝে গাছটা থেকে একটা হু-হু, হু-হু শব্দ হত, বড়োমামার মেজো ছেলে মাম্পুদা — শম্পার চেয়ে ছ’ বছরের বড়ো — বলেছিল, “ওটা কী জানিস? এবাড়ির সব ভূতেদের কান্না। ওরা এই ঘরটাতেই থাকে কি না! এখন তোরা এসেছিস, ওরা থাকতে পারছে না বলে রাগে, দুঃখে কাঁদছে। একবার তোদেরকে হাতে পেলে দেবে ঘাড় মটকে।”
সেদিন রাতে শম্পা কিছুতেই সে ঘরে শোবে না। সে কী কান্না মেয়ের — মার কাছেই শোবে। কত আর বয়স? চার, না পাঁচ? সে বয়েসের একটা মেয়ে মায়ের কাছে শোবার আবদার করতেই পারে, কিন্তু সন্দেহ হয়েছিল ছোটোমামিমার। বাবা-বাছা বলে অনেক ভুলিয়ে-ভালিয়ে আসল কারণটা জানতে পেরেছিল। ফল হয়েছিল এই, যে মাম্পুদা এইসা বকুনি খেয়েছিল… আর বড়োমামা শম্পাকে কোলে নিয়ে রাত্তিরবেলা নিজের ঘরের জানলা দিয়ে দেখিয়েছিল ভূতের কান্নার আসল কারণটা।
“দেখলি? দেখতে পেলি?” বিরাট পাখিটা ডানা-মেলে নিঃশব্দে উড়ে যাবার পরে বড়োমামা বলেছিল। “ওটা কী জানিস? লক্ষ্মীপেঁচা। মা লক্ষ্মীর বাহন। দেখিসনি, দুর্গাপুজাে, লক্ষ্মীপুজোর সময়, মা লক্ষ্মীর পায়ের কাছে? লক্ষ্মীপ্যাঁচা সৌভাগ্যের লক্ষণ, জানিস? বড়োলোক হওয়া যায়।”
শম্পা গাছটার প্রেমে পড়ে গেছিল। শুরুতে কিছুটা বড়োলোক হবার খুশিতেও বটে, কিন্তু পরে, একটু বড়ো হতে বুঝেছিল ওটা গল্প। বড়োদের রূপকথা। কিন্তু গাছটা শুধু একটা লক্ষ্মীপেঁচা নয়, কত পাখির আশ্রয়! সন্ধে নামলেই ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে ওরা। কত রকম শালিক — মামা চিনিয়ে দেয় — ওটা শালিক, ওটা গুয়ে শালিক, ওই যে ঝুট-শালিক, ওর নাকের ওপর গণ্ডারের শিঙের মতো ঝুঁটি! তা ছাড়াও, বুলবুলি আসে, আসে চড়াইয়ের ঝাঁক। আসে কখনও বকের দল। সন্ধের অন্ধকার গাঢ় হবার আগে গাছের গায়ে সাদা সাদা ছোপ হয়ে রয়ে যায়। রাত বাড়লে, অন্ধকার হয়ে গেলে আর দেখা যায় না। একটু আগে অবধি হাজার পাখির কিচিরমিচির কাকলি থেমে সব নিস্তব্ধ হয়ে যায়। তখন কে বলবে অতগুলো প্রাণী ওখানে রয়েছে — রাত কাটার অপেক্ষায়! ভোর হতে না হতে আবার ওরা দল বেঁধে উড়ে যায় কোথায়। সারা দিন দেখা যায় না ওদের।
গাছটা কত পুরোনো কেউ জানে না। বড়োমামা বলে, বাড়িটা তৈরি হবার সময় থেকেই ওটা রয়েছে। একসময় নিশ্চয়ই ছোটো গাছ ছিল। সে কথা আজ কেউ জানে না। দিদা বলে যখন বিয়ে করে প্রথম এসেছিল, তখনই ওটা তিনতলা ছুঁইছুঁই। দিদার বিয়ে হয়েছিল পঞ্চাশ বছরেরও আগে। তার মানে, কী আশ্চর্য! পঞ্চাশ বছরে একতলা পার করেছে? মামাবাড়িটা তিনতলা। এক-এক তলা পার করতে যদি পঞ্চাশ বছর লাগে, তাহলে গাছটা দেড়শো বছরেরও বেশি পুরোনো!
দেড়শো বছর আগে কে লাগিয়েছিল গাছটা? শম্পার দাদুর বাবা? না তাঁর বাবা? শম্পা ইতিহাস বই খুলে দেখেছে তখনও ভারতে ইংরেজরা শাসন করত। রানি ভিক্টোরিয়া তখন ভারতের সম্রাজ্ঞী হয়েছিলেন। ভাবত, হয়ত সেই উপলক্ষেই লাগানো হয়েছিল গাছটা? কে জানে, মামাবাড়ির জমিদারবংশ তো ইংরেজভক্ত ছিল, যদিও মামা বলেছে কী ভাবে মামার জ্যাঠামশাই আর কাকা তাদের বাবার শাসন আর চোখরাঙানি অগ্রাহ্য করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে অনুশীলন সমিতিতে নাম লিখিয়েছিল। মামার ঠাকুর্দা রেগে কাঁই! দুই ছেলেকে পত্রপাঠ ত্যাজ্যপুত্র করেছিলেন।
মামার ছোটোকাকা আর বাড়ি ফেরেনি। কোথায়, স্বাধীনতার কোন সংগ্রামে হারিয়ে গেছিল চিরদিনের জন্য, সে কেউ জানে না। তবে বড়োজ্যাঠা ফিরেছিল। তার বাবা বেঁচে থাকতেই। ঠাঁইও পেয়েছিল বাড়িতে। তখন জমিদারবাবুর আগের তেজ আর নেই। আর স্বাধীনতার পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যে মানুষটা গ্রামের লোকের শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছেলে ছোকরার কাঁধে চড়ে বাড়ি ফিরছে ঢাক ঢোল শঙ্খধ্বনির মধ্যে, তার বাড়িতে ঢোকা তো আটকানো যায় না।
তবে মামার জ্যাঠামশাই বাঁচেনি বেশিদিন। জেলের অনিয়ম অত্যাচারে স্বাস্থ্য ভেঙে গেছিল। কিছুদিনের মধ্যেই বিছানা নিয়েছিল। মামা বলে তখন গ্রামে ডাক্তার ছিল না। কবিরাজ বলেছিল সন্ন্যাস রোগ। বোধহয় স্ট্রোক। তখন মামারও বয়স কম। মায়ের তো সেই জ্যাঠামশাইয়ের কথা মনেই নেই — এত ছোটো। তবে গল্প শুনে শুনে মনে রেখেছিল। শম্পাদের বলত ছোটোবেলায়।
ঘরটা এখানও আছে। দেওয়ালে তাম্রপত্রটাও লাগানো আছে।
এ সব কত ঘটনার সাক্ষী বকুলগাছটা! দিদা বলত, “কত কী জানে ও, জানিস? কত কী দেখেছে। আমার বিয়ে দেখেছে, তোর মা-মাসি-মামাদের জন্ম দেখেছে… তোর দাদুকেও জন্মাতে দেখেছে — এমনকি হয়ত দাদুর বাবার জন্মও… ভাবতে পারিস, কত কিছু জানে! কথা বলতে পারলে কত কিছু জানা যেত!”
শম্পা ভাবত, গাছটা সত্যিই মহাজ্ঞানী। স্থবির। চুপ করে বসে রয়েছে, আর আকাশ পাতাল ভাবছে। মনে হত স্কুলের বইয়ের কবিতার মতো — গাছটার কেবল প্রাণ আছে, তা নয়, ওর রূপও বদলায়। দিনের বেলা যেমন সজীব জীবন্ত, রাতে তা নয়। সন্ধে নামলেই কেমন ভৌতিক। ঝড়ের হাওয়ায় ডালপালা নেড়ে যেন কত লড়াই করছে! ছোটোবেলায় ছোটোমামা সন্ধে হলে ওকে ডেকে কবিতাটা আবৃত্তি করতে বলত —
আবার হঠাৎ কখন
বনের মাথায় ঝিলিক মেরে চাঁদ উঠত যখন
ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত সে গরগর…
কবে ওই কবিতাটা না বলে শম্পা ঝড়ের সন্ধেয় ছাদে দাঁড়িয়ে গলা ছেড়ে আবৃত্তি করেছিল —
মহা-বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত…
ওর মনে নেই। কিন্তু শেষ করার পরে ছোটোমামা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেছিল, “যাঃ, তুইও বড়ো হয়ে গেলি।” কেন বলেছিল তখন বোঝেনি শম্পা। কিন্তু ছোটোমামার গলায় একটা বিষাদের সুর বেজেছিল, মনে আছে।
সেই যেবার পাগলাচণ্ডীতে বন্যা হলো, নদীর জল দুকূল ছাপিয়ে, মাঠ, ধানক্ষেত, গ্রাম, পুকুর ডুবিয়ে মামাবাড়ির দোরগোড়ায় প্রায় এসে পড়ে আর কী! সেবার আশপাশের গ্রামের লোকজন সবাই থাকতে এসেছিল মামাবাড়িতে। দিদা দরজা খুলে দিতে বলেছিল মামাদের। বলেছিল, যারা জায়গা পাবে, তারা বাড়ির ভেতর, আর বাকিরা, যারা ভেতরে জায়গা পাবে না, তারা ত্রিপল খাটিয়ে বাগানে থাকবে। বলেছিল, ডালে-ভাতে খিচুড়ি খেয়ে চালাবে সবাই। কপাল করে বেশিদিন ডুবে ছিল না গ্রাম। কয়েক দিন পরেই মানুষরা চলে গেছিল যে যার আস্তানায়। যায়নি পাখিরা। বিশাল বিশাল সারসের মতো পাখি — মস্তো ঠোঁটের ঠিক মাঝখানে চোখের মতো ফাঁক। ভেতর দিয়ে আকাশ দেখা যায়। কোথা থেকে এসেছিল কে জানে, ওদের বাসা বানানোর গাছগুলো হয়ত ডুবে গেছিল, বা ভেসে গেছিল বন্যার তোড়ে। বন্যার জল নেমে যেতে, পুজোর সময় শম্পারা যখন মামাবাড়ি এল, তখনও বেশ কয়েকটা বাসা রয়েছে গাছের মগডালে। ছাদে উঠে দেখতে পেয়েছিল ছোটো ছোটো বাচ্চা। মা-বাবা খাবার নিয়ে এসে খাওয়াচ্ছে। বড়োমামা বলেছিল, “শামুক খায়। ঠোঁটের ফাঁকটা দেখেছিস? যখন শামুক ঠোঁটে ধরে ভাঙে, তখন নিজে থেকেই ভেতরের মাংসটা চলে যায় পেটে, আর খোলসটা ওই ফাঁকটা দিয়ে বাইরে পড়ে যায়। কেমন ইঞ্জিনিয়ারিং, ভাব।” শম্পা নাকে কাপড় চাপা দিয়ে বলেছিল, “কী বিচ্ছিরি গন্ধ!” মামা বলেছিল, “চুপ, দিদা শুনতে পেলে খুব রাগ করবে। যখন পাখিগুলো প্রথম এল, তখন গাঁয়ের কিছু লোক বলতে এসেছিল, নোংরা করবে, গন্ধ হবে! দিদা তাদের তেড়ে ধমক দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। বলেছিল, ‘বন্যায় বেঘর হয়ে মানুষ যখন এসেছিল, তখন তারা বুঝি আমার ঘর দুয়োর ঝকঝকে পরিষ্কার রেখেছিল? ঘরহারা হয়ে কেষ্টর জীব এসেছে, থাকবে। গন্ধ দু’দিনে সয়ে যাবে।’”
সয়ে ঠিক যায়নি, তবে দশ দিন পরে ফেরার সময় প্রথম দিনের মতো অত খারাপ লাগছিল না, তা-ও ঠিক।
পাখিগুলো আর ফিরে আসেনি। মামা বলেছিল, হয় আগের বাসা বাঁধার জায়গা ফিরে পেয়েছিল, নয়ত নতুন কোথাও গেছে।
শম্পার কাছে ওই অতবড়ো বিশাল গাছটা তার কাণ্ডে, ডালে, পাতায়, ফুলে শ’য়ে শ’য়ে পাখি, গিরগিটি, ভাম, বেজি, হাজার হাজার পোকামাকড় নিয়ে এতই বিশাল একটা উপস্থিতি ছিল, যেন ও মামাবাড়িরই অংশ। মামাবাড়ির দেয়াল, দরজা, দেউড়ি, ছাদের মতোই। তাই যে দিন — তখন ও ক্লাস নাইনে পড়ে — পুজোর সময় মামাবাড়িতে গিয়ে ওদের শোবার ঘরে ঢুকে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে কেবল অবাধ বাগানের দৃশ্য দেখল, সেদিন মনে হয়েছিল বুঝি অজ্ঞান হয়ে যাবে। মা-ও পেছনে পেছনে ঘরে ঢুকে থমকে দাঁড়িয়ে, “দাদা!” বলে আর্তনাদ করে উঠেছিল। বড়োমামা গেছিল ওদের স্টেশন থেকে আনতে। আস্তে আস্তে ঘরে ঢুকে বলেছিল, “কোনও মতেই রাখতে পারলাম না রে।”
বাড়ির সবাই কেমন শোকে মুহ্যমান, দিদা, মামারা, মামীমারা মাসি, দাদা দিদি ভাই বোন সকলেই। দিদা তো ভালো করে কথা-ই বলতে পারছিল না।
বড়োমামা বলেছিল, “তোদের আর ফোনে জানাইনি। ভেবেছিলাম এসে তো দেখবিই। এখন মনে হচ্ছে জানানোই উচিত ছিল। তোদের রিঅ্যাকশনে আবার সারা বাড়িটাই শোকে ডুবল।”
“কী হয়েছিল?” জানতে চাইল শম্পা। “বুড়ো হয়ে…”
মাথা নাড়ল বড়োমামা। বলল, “না রে, তাহলে তবু কিছু বলার থাকত না। তা নয়। কেটে ফেলতে হলো।”
খাবার টেবিলের চারিধারে সকলে কেমন শিউরে উঠল যেন। মা জিজ্ঞেস করল, “কেন রে? কী হয়েছিল?”
মামা হাত নেড়ে বলল, “বাড়িটা মেরামত করতে গিয়ে সিভিল ইনজিনিয়ার বলল, এত বড়ো গাছ বাড়ির এত কাছে কেন? এর শেকড় নিশ্চয়ই বাড়ির ক্ষতি করছে। বলে মাটি খুঁড়ে যা দেখা গেল তাতে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ! এইখান থেকে নিয়ে ও-ই প্রায় শেষ পর্যন্ত — গাছের শেকড় একেবারে বাড়ির ভিতটা জড়িয়ে ফেলেছে। এর পর ভিত দুর্বল হয়ে গেলে বাড়িটাই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে একদিন। ফলে কেটে ফেলা ছাড়া গতি ছিল না। জানতে চেয়েছিলাম একদিকের শেকড় একেবারে কেটে নিশ্চিহ্ন করে ফেললে চলবে? কিন্তু তারপরে গাছটা যদি পড়ে, তাহলে তো বাড়ির ওপরেই এসে পড়বে… অগত্যা…”
মামাবাড়ির বহুদিনের কাজের মাসি অন্নদা ওদের খেতে দিতে দিতে শুনছিল সব কথা। বলল, “ঘরের শত্রুরে রাখতে নাই। ও গাছ ছিল বাস্তুগাছ। যখন শত্রু হইছে, তারে শ্যাষ করাই উচিত। কাটাই ঠিক হইছে।”
তখন রোজ রাতে শম্পা গাছটার স্বপ্ন দেখত। ছোটোমামা বলেছিল, “ও তোর স্বপ্নে বেঁচে থাকবে। ও তোর স্বপ্নবকুল।” শম্পার ভাবতে ভালো লাগত — গাছটা ওর আপন হয়ে রয়ে গেছে।
কিন্তু সে কবেকার কথা। আজ, এই বয়সে এসে আবার কেন ফিরে এল সেই স্বপ্ন? শম্পা ভাবে আর হাসে। ভাবে, স্বপ্নবকুল আবার ফিরে আসতে চাইছে। তুষার বলল, “কী, মিটমিট করে হাসছ যে?”
শম্পা বলল, “নতুন জমি যেদিন দেখতে যাব, সেদিন রাস্তায় একটা নার্সারি থেকে একটা বকুলের চারা নেব? ওখানে লাগাব।”
তুষার অবাক হয়ে বলল, “বকুল? নিশ্চয়ই। কিন্তু বকুল কেন?”
শম্পা শুধু বলল, “আমার অনেক দিনের সখ।”
যেদিন বকুলচারাটা লাগানো হচ্ছে, সেদিনও তুষার অবাক হলো। বলল, “বাড়ি কিন্তু হবে ওইখানে। এত দূরে লাগাবে গাছ? বাড়ির কাছে হলে দেখতে পাবে, ছায়া দেবে।”
শম্পা বলল, “থাক, বেশি কাছে লাগিয়ে কাজ নেই।”
ত্বিষা বলল, “এটা কী গাছ, মা?”
শম্পা বলল, “এটা বকুল গাছ। তবে এই গাছটার নাম স্বপ্নবকুল।”
PrevPreviousসাপের কামড়? ‘রুল অফ ১০০’ জানলেই বাঁচা সম্ভব
Nextস্মৃতি নিয়ে বলছি-৯Next
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

প্রশ্নটা মেডিকেল এথিক্সের

February 1, 2023 No Comments

সম্প্রতি আরজিকর মেডিকেল কলেজের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ থেকে কিছু ‘বেওয়ারিশ লাশ’ পাঠানো হয়েছিল সেই হাসপাতালেরই নাক-কান-গলা বিভাগে, যে শবদেহ এসেছিল ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগে পোস্ট-মর্টেম পরীক্ষার

পদ্মপ্রাপ্তি

January 31, 2023 No Comments

আপনার কাছে প্রশান্ত মহলানবীশের ফোন নাম্বার আছে? রাত ন’টার একটু পর একটি চ্যানেল থেকে ফোন এলো। একটা সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিলাম। আচমকা এই প্রশ্নে বিলকুল ভেবড়ে

Two Anatomies and the Two Systems of Medical Knowledge: Dissection with or without Knife and Anatomist*

January 30, 2023 No Comments

Introduction “The definition of life is to be sought for in abstraction; it will be found, I believe, in this general perception: life is the

ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল: নির্বাচনের বদলে মনোনয়ন?

January 29, 2023 No Comments

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮ টায় ফেসবুক লাইভে প্রচারিত।

রোজনামচা হাবিজাবি ১

January 28, 2023 1 Comment

কীভাবে ডাক্তারি করবো, সে বিষয়ে নিজের ভাবনাচিন্তাগুলো কেবলই বদলে যাচ্ছে। মোটামুটিভাবে পড়াশোনা আর শিক্ষানবিশি শেষ করার পর ভেবেছিলাম চুটিয়ে প্র‍্যাক্টিস শুরু করবো। কিছুদিন করতে শুরুও

সাম্প্রতিক পোস্ট

প্রশ্নটা মেডিকেল এথিক্সের

Dr. Bishan Basu February 1, 2023

পদ্মপ্রাপ্তি

Dr. Koushik Lahiri January 31, 2023

Two Anatomies and the Two Systems of Medical Knowledge: Dissection with or without Knife and Anatomist*

Dr. Jayanta Bhattacharya January 30, 2023

ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল: নির্বাচনের বদলে মনোনয়ন?

Doctors' Dialogue January 29, 2023

রোজনামচা হাবিজাবি ১

Dr. Soumyakanti Panda January 28, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

423717
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।