রাজা বললেন, চাষা!
এই নে তোকে আইন দিলাম খাসা।
রোজের কাঁদন বন্ধ এবার,
দাদন পাবি ধনীর দেদার,
পুরবে রে তোর ভরাপেটে পাকা বাসার আশা,
জীবন জুড়ে এখন শুধু হাসা।
থাক গে সুখে, এই নে তোকে আইন দিলাম খাসা।
চাষী বলেন হুজুর,
পেশ করি এক ছোট্ট দাবী, হয় যদি মঞ্জুর।
দাদন মানেই বাঁধন দেওয়া,
আমার জমি ধনীর মেওয়া,
অমন তেলে সুখের গাড়ি যায় না বহুদূর,
ইতিহাসে সেই ঘটনা রয়েছে ভরপুর।
তাই করি আজ ছোট্ট দাবী, হয় যদি মঞ্জুর।
রাজা বলেন, বটে!
নিজের কথা নিজেই রলার বুদ্ধি রাখিস ঘটে?
বলছে যখন রাজা স্বয়ং,
সন্দেহ তাও, এতই অহং,
এই কারণেই দেশ জুড়ে আজ দ্রোহের গুজব রটে,
যা বলবার বলিস ভেবে, মেজাজটা না চটে।
চুমড়ে দাড়ি রাজা বলেন, বুদ্ধি এত ঘটে!
বললো চাষী, ছোট্ট নিবেদনই,
রাজামশাই ঠিক করে দিন কত দেবেন ধনী।
বাবুরা সব ব্যবসা বোঝেন,
লাভ বাড়াবার উপায় খোঁজেন,
থাকনা যতই সোনা হীরের খনি,
ওঁদের কাছে আমরা বোকা বনি।
বলেন চাষী, ঠিক করে দিন দেবেন কত ধনী।
রাজা বললেন রেগে,
জানিস না কি আমার মুখে ওঁদের মাখন লেগে?
আমার ভাবিস যেসব কথা,
বস্তুত তা ওঁদের চোতা,
বললে ওঁরা চোখ বুজে নিই, বললে উঠি জেগে।
দাদন-দামে নাক গলালে আমিই যাবো ভেগে।
বলেন রাজা, ভীষণ ভীষণ রেগে।
বলেন চাষী, ধুত্তোর!
দাস হওয়া কি ভাগ্যে তবে এবার ভূমিপুত্র’র?
এই ভয়ানক দাদন খেলে,
জীবন যাবে লাঙল ঠেলে,
বলবে মালিক এই ফসলে অমুক আছে খুঁত তোর।
আমার এতে কী লাভ হবে কোথায় পাবো উত্তর?
চাষী বলেন, চাকর হওয়াই ভাগ্যে ভূমিপুত্র’র।
রাজা বলেন, ছাড় তো!
ধনী ছাড়া সেনসেক্স কি সেক্সি অমন বাড়তো?
তোকে দিয়ে চলবে না দেশ,
ওরাই শুরু, মধ্য ও শেষ,
একটা কিছু মূল্য দিবি তার তো !
রক্ষা তোকে করবে ওঁরা, কেন চেঁচাস আর্ত।
বলেন রাজা, ছাড় তো!
চাষী হাঁকেন, ধর্ণা!
কোথায় গেলি ভাইবোনেরা, আয় না পাশে, লড় না!
কাল যাতে না দুঃখে ভোগে,
আজ তাই যাক অসহযোগে,
একগালে চড় পড়লে মোটে উল্টিয়ে এক চড় না।
আজ থেকে দিন পথেই কাটুক, শয্যা কারো ঘর না।
চাষী হাঁকেন, ভাইবোন আয়, লড় না!
তখন থেকেই চলছে।
দুপক্ষতেই পক্ষ নিয়ে নানান মুনি বলছে।
গঙ্গা দিয়ে বইছে পানি,
জ্বর করে লাখ জীবনহানি,
সমস্যাটা তারই মাঝে দেশের বুকে জ্বলছে।
যুযুধানের মধ্যে পড়ে অর্থনীতি টলছে।
চলছে লড়াই, চলছে।
চাষীরা নয় মোটেই রাজি বদলাতে খোল নলচে,
বুঝেও সেটা রাজার মনের বরফ কি আর গলছে।