বিল জমা দেয়ার পরে সরকারি অফিস থেকে তার পেমেন্ট পেতে কি পরিমাণ ঝক্কি ঝামেলার সেটা ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন। যাঁরা ঝামেলা করেন সেই ঝামেলাবাজদের নিয়েই গল্প।
গল্পের কুশীলব তিনজন– একাউন্টস বিভাগের বড় কর্তা মোটামুটি ধার্মিক মানুষ, মানে ওই ঘর থেকে বেরোনোর আগে দুগ্গা দুগ্গা বলে কপালে হাত ঠেকানো টাইপ। তিনি গত বুধবার থেকে বলে আসছেন, ড: সেনগুপ্ত, সাবিরের বিলটা যেন পেমেন্ট হয়ে যায়। ওদের ঈদ আছে কিন্তু। দ্বিতীয় চরিত্র একাউন্টেন্ট যে আবার পুরোপুরি ধার্মিক ভক্ত মানুষ দীক্ষা নেওয়া টাইপ। সেও বলেছে, স্যার আপনি থাকবেন তো? শুক্রবার কিন্তু শেষ ওয়ার্কিং ডে। সাবিরের বিল বাকি আছে কিন্তু। তৃতীয় চরিত্র আপনাদের খুব চেনা এক পাষণ্ড নাস্তিক স্বাস্থ্য আধিকারিক।
সব শেষের চরিত্র সাবির আলী। ছোট দুটো গাড়ি ভাড়ায় খাটায়। হাসিমুখ রাতে ভিতে ডাকলেও বিরক্তি নেই। দুর্জয় সাহস, কোভিডের কাজ করে অনায়াসে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা। গোটা অফিস নিঝুম। কম্পিউটারের সামনে শুধু তিন জন। সার্ভার ফেল। ওটিপি আসছে না। ঘন ঘন মোবাইল দেখা চলছে। সাড়ে সাতটা। আটটা। সাড়ে আটটা। অবশেষে সেই ওটিপি এলো নাস্তিক অফিসারের মোবাইলে।
সাবির আলীর সামান্য টাকার পেমেন্ট ঢুকছে তার ব্যাংকে। তার পরিশ্রমের ফসল। সেই দিয়ে সাবির উদযাপন করবে তার খুশির ঈদ। ছোট ভাঁড়ে লাল চা এনে খাওয়াচ্ছে সাবির। স্যার যা করলেন।
কিছুই করিনি সাবির। তোমার হকের টাকা তোমার হাতে সময়ে তুলে দিতে পেরেছি মাত্র।
দুই চুমুকে ভাঁড়ের চা শেষ হয়। সন্ধে শেষে মেস বাড়ির দিকে রওনা দেয় একে একে তিন ভারতীয় – ধার্মিক, ভক্ত আর অধার্মিক। ঈদের চাঁদ আকাশে উঠতে বেশি দেরি নেই। এই তো আমাদের ভারতবর্ষ।
ক্লাসিক লেখাটা।😍