অ্যাঙ্কর (অ) : নমস্কার । “এবং এডিসে” আপনাকে স্বাগত ।
এডিস (এ) : (প্রতি নমস্কারের ভঙ্গিতে ডানা জড়ো করে) অনেক ধন্যবাদ। খুব ভালো লাগছে আপনাদের অনুষ্ঠানে আসতে পেরে।
অ : শীত পড়তে শুরু করেছিলো। ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবও কমছিলো। এরকম একটা সময়ে বৃষ্টি। কেমন লাগছে?
এ: ভ্যাপসা গরমে সেদ্ধ হয়ে যখন আপনারা একপশলা বৃষ্টি পান বা ধরুন এবারের পুজোতে বৃষ্টি। প্যান্ডাল হপিং না করতে পারার পরিস্থিতিতে হঠাৎ বৃষ্টি বন্ধ হলে যেমন লাগে অথবা অনেকদিন অনাহারে কাটানো জনগনের সামনে ত্রাণের প্যাকেট পড়লে যেমন লাগে কতকটা সেরকম। বলতে পারেন আমরা হালে পানি পেলাম।
অ : আপনার কাছে আবার আসবো তার আগে দেখে নেবো হাইকোর্ট রাজ্যের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে কি রায় দিলো, “রাজ্য সরকারের রিপোর্টে অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট। ডেঙ্গু নিয়ে রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা নেই ঠিক কতজন আক্রান্ত । সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে সংখ্যাটা ঠিক কতো। বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন কলকাতা হাইকোর্ট ”
অ : কি বলবেন?
এ : দেখুন ভুল নথি হোক আর তথ্য গোপন হোক আমাদের বিশেষ কিছু যায় আসে না। হ্যাঁ ! একটা কথা বলতে পারেন কিছুটা হতাশ লাগে বৈকি। ধরুন একজন কবি কিছু লিখলেন। সোস্যাল মিডিয়ায় লেখাটা ভাইরাল হলো । অথচ লেখক হিসেবে কবির নামটাই নেই। কেউ নিজের নামে বা কেউ সংগৃহীত লিখে ফরোয়ার্ড করছে। সেটা জানলে সেই কবির মনের অবস্থা কেমন হবে? খুবই সিম্পল !
অ : সেটা ঠিক ! খারাপ লাগারই কথা।
এ : ব্যাপারটা বোঝাতে পারলাম তো। কাজ করছি অথচ স্বীকৃতি নেই।
অ : আচ্ছা ম্যাডাম । এই যে গতকাল ডাক্তাররা পথে নামলো তার একটা বক্তব্য ছিলো আপনাদের স্বীকৃতি । কিভাবে দেখছেন?
এ : দেখুন ডাক্তার সমাজ আমাদের গনশত্রু তবে এই স্বীকৃতির ব্যাপারে আমরা ওনাদের ফরেই আছি। ওদের চলার পথ মোটেও কুসুমাস্তীর্ন নয় কিন্তু এই আন্দোলন বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনকি আমাদের সমাজেও একটা ইমপ্যাক্ট রেখেছে বলাবাহুল্য ।
অ : একটু ব্যাক্তিগত প্রসঙ্গে আসি। আপনাদের কখনও মনে হয়নি পুরুষরা দিব্যি গাছের রসে মজে আছে। আপনারাও রক্ত ছেড়ে রস খেয়ে থাকবেন।
এ : এটা সভিনিস্টদের মতো শোনাচ্ছে । তবুও বলছি এটা জেনেটিক্যালি প্রি ডিটারমাইন্ড। আপনাকে যদি বলি কালথেকে আপনি শুধু দুর্বাঘাস চিবিয়ে থাকবেন আপনি কি থাকতে পারবেন? এটা ফুডচেনের ব্যাপার । ফড়িঙ ঘাস খাবে, ব্যাঙ ফড়িঙ খাবে , সাপ ব্যাঙ খাবে। এখন যদি ইকোসিস্টেম বোঝাতে হয় তাহলে বলবো আরেকটা প্রোগ্রাম করুন। তবে আমাদের মিউটেশন হচ্ছে । আমরাও এখন সেই আদ্যিকালের খোলোস ছাড়ছি। আপডেটেড উত্তরসূরী আমরা জন্ম দিচ্ছি । তাছাড়া ট্রান্সওভারিয়ান ইনফেকসন নিয়ে আমরা বেশ চিন্তিত ।
অ : মাফ করবেন খামোকা আপনাকে উত্তেজিত করার জন্য । এই ট্রান্সওভারিয়ান ব্যাপারটা একটু যদি বলেন।
এ : মায়ের থেকে গর্ভস্থ বাচ্চার সংক্রমণ। মানে ডেঙ্গু রোগী থেকে আমরা ইনফেকটেড হচ্ছি এটা সবাই জানে। কিন্তু আমাদের থেকে আমাদের গর্ভস্থ সন্তানদেরও ইনফেকসন ট্রান্সমিট হচ্ছে ।
অ : এতো খুবই ভয়ংকর ব্যাপার
এ : দেখুন তো । বাচ্চা টা পৃথিবীর আলো দেখার আগে ভালো করে খেতে শেখার আগেই ইনফেকশন ক্যারি করছে। তবে আমরাও বদলাচ্ছি। সেটা আরো ভয়াবহ আপনাদের জন্যে
অ: বদলানোর ব্যাপার যখন উঠলো জানতে চাইব ইনফ্যাক্ট এটা দর্শকশ্রোতাদেরও জিজ্ঞাসা আপনাদের আঁতুড়ঘর কি বদলাচ্ছে ?
এ : নিশ্চয়ই । আমরা কোথায় ডিম পাড়ি সেটা মোটামুটি সবাই জেনে গেছে। তাই আমরা এখন আনইউসুয়াল জায়গা খুঁজছি । যেমন ধরুন নরম মাটিতে পায়ের ছাপে জমা জল। গরুর ক্ষুরের গর্তে জমা জল। কাটা বাঁশের অবশিষ্ট অংশে জমা জল। যেগুলো সহজে কেউ সন্দেহের চোখে দেখবে না( ইরররক্ ! বলে দিলাম যে। নির্ঘাত ফিরলে কর্তা খিস্তি করবে!) যাকগে। এরকম জায়গা আরকি।
অ : আমরা অনুষ্ঠানের একেবারেই শেষের দিকে। দর্শক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
এ : একটাই কথা বলার। সমাজে সবার গুরুত্ব আছে । কাউকেই ছোট করে দেখা উচিত নয়। প্রত্যেকের প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া উচিত। ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসা থেকে প্রতিরোধ বেশি জরুরি, যদিও প্রতিরোধ ব্যবস্থা আঁটসাঁট হলে আমাদের অস্তিত্ব সংকট তাহলেও আপনাদের কথা ভেবেই বলছি জ্বর হলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান।রক্ত পরীক্ষা করান। ডেঙ্গি বলে অন্যরোগ যেনো লেঙ্গি মেরে না যায়। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরো ভালো হোক। চিকিৎসকরা যাতে ভালো পরিবেশে কাজ করতে পারেন সে দিকে নজর দিতে হবে। চিকিৎসক নিগ্রহ করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হয় না বরং ভয়াবহ হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। সবাই খুব ভালো থাকুন।সুস্থ থাকুন ।
অ : অনেক ধন্যবাদ আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য ।
এ : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আমাকে বলতে দেওয়ার জন্য।