সল্টলেক করুণাময়ীতে এসেছি। হেমন্ত বাতাসে শিশিরকণা মোটেই নেই। কটকটে রোদ্দুর। তবু তার মধ্যেই প্রচণ্ড শান্তি শান্তি ভাব। পুলিশ বাবু আর বিবিরা দিব্য পরিদৃশ্যমান। একটাও বেয়াদবকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত আছে এমন দেখা যাচ্ছে না। সত্যি বলতে কী আমি ওদের দেখতে আসিওনি। আমি এসেছি কৌশিক বাবুর সঙ্গে দেখা করতে। ওই যে শিক্ষা-ইয়ের বন্ধু ঝানু কৌশিক নোভোট্টু আছেন না! উনি সপরিবারে এখানে এসেছেন। উনি, ওনার ছেলে আর ছেলে বউ। ভাগ্যিস তিনজন। তাই হ্যান্ডশেক করা যাবে। মানে ১৪৪ জারি তো! চার অবধি অ্যালাউড। চারের বেশি হলেই ক্যাচ কট কট, রাষ্ট্র বিরোধী!
সেন বাবুর কাছে বিস্কুট থাকবে, শুনেছি ভালো দোকানের দরবেশও থাকবে। দু একটা কী দেবেন না আমায়? এই সব সাত পাঁচ ভেবে ইতিউতি তাকাচ্ছি এমন সময় কে যেন তেড়ে এসে কলার ধরল। পুলিশ বাবাকে বললাম, স্যার আমি তো মানে একশ চুয়াল্লিশ ভা… এই অবধি বলেছি কী বলিনি, সে রুল উঠিয়ে আমায় মা মাসি করতে শুরু করল। ডিএ না পেয়ে তার মেজাজ দেখি ভারি গরম।
★
এই অবধি দেখেছি, এমন সময় ঘুমটা ভাঙল। আসলেই সকালে একটু ঝিমুনি এসেছিল। রাত্রে টিভিতে গণতান্ত্রিক অভিযান দেখতে গিয়ে ঘুম ভালো হয়নি। ঘড়িতে… সব্বোনাশ… ন’টা। আমাকে যে এক্ষুনি বেরুতে হবে। মেডিক্যাল কাউন্সিলের জালি ব্যালটের খেলা দেখার নেমন্তন্ন! কতকগুলো অবুঝ ডাক্তার, জাল ব্যালট, ছাপ্পা ভোট, রিটার্নিং ইয়ের বদমায়েশি এই সবের পরেও নাকি শেষ দেখে ছাড়বে। কে বোঝাবে এদের, ডেমোক্রেসি বাবু যে মারা গেছে আর তার আদ্যশ্রাদ্ধও হয়ে গেছে, যথাবিধি।
★
বেরুচ্ছি, অবুঝ খোকাদের সঙ্গ দিতে। গিন্নির প্রবল আপত্তি, তবুও যাচ্ছি। প্রেয়সী চোখ পাকিয়ে বললেন, ‘পুলিশ কিম্বা ঘেসো দেখলে ছায়া মাড়াবে না। আর করুণাময়ীর দিকে ঘেঁসবে না মোটে, মাথার দিব্যি রইল!’
হায় নাটক সেন বাবু, তোমার সঙ্গে আজও দেখা হল না। তবু, হোক না স্বপ্নে, এসেছিলে তো!