বেস্ট অফ লাক মা।
থ্যাংক ইউ।
মেয়ের পরীক্ষা। এই দু লাইনেই খেলা শেষ। সে গাড়ি থেকে নেমে গেলো।
ফ্ল্যাশব্যাক। আমার অ্যানুয়াল পরীক্ষা। তখন পরীক্ষা হতো শীতকালে। চৌবাচ্চার ঠান্ডা জলে চান করে স্কুলের জামাকাপড় পরো। তারপর ঠাকুর ঘরে। সব ঠাকুরের ছবিতে প্রণাম করা, সরস্বতী ঠাকুরকে একটু বেশী। তারপর একটা কাগজে ঠাকুরের পায়ের ফুল নেওয়া। পেন্সিল বক্সে রাখবো। ঠাকুর ঘর থেকে বেরোবার আগে বড়মা মাথায় হাত রেখে গুরু মন্ত্র জপ করে দিত। এবার নিচে নেমে খাওয়া। খেতে বসার আগে কপালে একটা দইয়ের ফোঁটা। টক দই হলে ভালো, না পেলে মিষ্টি দই। মেজদা একটু কম পড়তো, তাই ওর ভক্তি পরীক্ষার সময় একটু বেশি। পাশের শীতলা মন্দির থেকে মন্ত্র পড়া পেন আনতো। ঠাকুরমশাই মন্ত্র পড়ে পেনের ওপর দুটি ফুঁ দিতো, তার পর মায়ের পায়ে ঠেকিয়ে দিতো। ৫০ পয়সা দক্ষিণা। সেই পয়সাটা আবার জেঠুর পকেট থেকে না বলে নেওয়া। অন্য সময় ওর ভক্তি তলানিতে। ঠাকুর ঘরে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে, জানলা খুলে দিয়ে সিগারেট খেত। একদিন জেঠু দেখলো ঠাকুর ঘরের জানলা দিয়ে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ছাদে এসে দেখে ঠাকুর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। উনি বাইরে থেকে ছিটকিনি দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন। পরের বারো ঘণ্টা দাদার ছিলো নির্জলা উপোস।
পরীক্ষার আগে বড়দের প্রণাম করে যেতে হতো। ঠাকুমা চুমু খেয়ে বলতো, আমার নাতি ফাস্ট হবে। নাতির মন তখন কোথায় কোন চোতা আছে সেদিকে। তারপর স্কুলে ঢোকা। ততক্ষনে দইয়ের টিপ গায়েব। তিন ঘণ্টা অনেক পাপ করতাম। কিন্ত শেষ পাতে একটু পুণ্য করা চাই। তাই কাগজে মোড়া ঠাকুরের ফুল পরীক্ষার খাতায় বুলিয়ে দিতাম, যদি কিছু নম্বর বাড়ে। পরীক্ষার শেষে আবার ঠাকুর ঘরে। ওখানেই লুকানো থাকতো আমাদের ঘুড়ি, লাটাই, গুলি। পরের পরীক্ষা অবধি ঠাকুরদের আর বিরক্ত করতাম না।