ঘটনা-১
ডাক্তারঃ আপনার রিপোর্ট বলছে, আপনার কোনো শুক্রাণু নেই। আর অপারেশন করে শুক্তাণু পাওয়ারও সম্ভাবনা নেই। আপনাদের অপশনস হল, ডোনার স্পার্ম ব্যবহার করা বা দত্তক নেওয়া।
স্ত্রীঃ দত্তক নিলে বচ্চাটা তো তাহলে আমাদের হল না।
স্বামীঃ আমরা দত্তকই নেব, কত লোকই তো নিচ্ছে। কী ঠিক বলেছি তো? আর আমাদের বাচ্চা তোমাকেই তো মা বলে ডাকবে। স্ত্রী মুখ নিচু করে ঘাড় নাড়লো। হ্যাঁ কি না ঠিক বোঝা গেল না।
ঘটনা-২
ডাক্তারঃ আপনার প্রিম্যাচিওর ওভারিয়ান ফেলিওর হয়েছে। মানে ডিম্বাশয়ে আর ডিম্বাণু অবশিষ্ট নেই। অন্য কোনো কম বয়সী মহিলার ডিম্বাণুর সঙ্গে আপনার স্বামীর শুক্রাণু মিলিয়ে ভ্রূণ তৈরি করতে হবে। এতে আপত্তি থাকলে দত্তক নিতেও পারেন।
স্ত্রীঃ ডোনার নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। আমাদের একজনের জিন তো আমাদের সন্তানের মধ্যে থাকবে।
স্বামী এক দৃষ্টিতে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছে। এ চোখের ভাষা বোঝার মতো কোনো চ্যাপ্টার আমাদের ডাক্তারি পড়ার সিলেবাসে নেই।
ঘটনা-৩
স্ত্রীঃ ডাক্তারবাবু আমি ১৫ বছরের একমাত্র মেয়েকে হারিয়েছি। এ শোক কোনোদিন ভোলার নয়। তবু যদি একবার মা হতে পারতাম!
ডাক্তারঃ এই বয়সে মা হলে আপনার জীবনের ঝুঁকি আছে। ভদ্রলোক উঠে দাঁড়ালেন। তাঁর শরীরের ভাষা বলছে, তিনি আর কাউকে হারাতে রাজি নন।
ঘটনা-৪
ডাক্তারঃ স্যরি, এবারও রেজাল্ট নেগেটিভ। পরের বার…
স্বামীঃ ডাক্তার তুমি অনেক করেছো। আর পরের বার নয়। একটা জায়গায় থামতেই হবে।
স্ত্রীঃ ঠিকই দাদা, আমরা দুজনেই দুজনকে নিয়ে খুব খুশিতে আছি। কিছু আশপাশের লোকজন আমাদের এই ভালো থাকাটা ঠিক বুঝতে পারে না। আমাদের নয়, অনাদের চিকিৎসার প্রয়োজন।
সবকিছু কেন আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখি।
ঘটনা-৫
শাশুড়িঃ আমি জানি দোষ আমার ছেলের মধ্যে। কিন্তু তুমি আমার বউমার চিকিৎসা কেন করছো না ডাক্তার?
ডাক্তারঃ আপনার ছেলের অনুমতি ও সই ছাড়া আমরা এ ধরনের চিকিৎসা করতে পারি না।
শাশুড়িঃ মা তো ও অন্যভাবেও হতে পারতো। একটা মেয়ের সন্তান না হওয়ার যন্ত্রণা দূর করার থেকে তোমার কাছে আইন বড় হল?
কিন্তু আইনের যে কোনো ফাঁক নেই!
এই সব চরিত্র আমারই আশপাশে আছে। ওদের কথা শুনি, আনন্দ-দুহখ-হতাশা ভাগ করে নিই, ওরা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেও আলাপচারিতার রেশ রেখে যায়-অল্প কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিজের মধ্যে নিজেকে হাতড়ে বেড়াই, কাছের মানুষদের নতুনভাবে চিনতে শিখি।