আজ সক্কালে ঘুম থেকে উঠে আবিষ্কার করলাম, ‘সায়েন্টিফিলিয়া’ বলে একটা গ্রুপ, যেখানে আমি মেম্বার ছিলাম তো বটেই, এমনকি প্রমোশন পেয়ে পেয়ে অ্যাডমিন অবধি হয়েছিলাম, সেখান থেকে আমি বিতাড়িত হয়েছি।
এই রকম বিতাড়নের অভিজ্ঞতা পারিবারিক ভাবেই অর্জিত।
অনেক আগে যেখান থেকে বিতাড়িত হয়েছিলাম, আমার বাপ পিতামোর সেই দ্যাশের ভাষায় হাহাকার করে বলাই যেতো, ‘আমারে খ্যাদাইয়া দেসে!’
না, সেই হাহাকারটি করব না। আজ সকালেই Amitava Pramanik , অন্য একটা গ্রুপ, যার নাম Evolution, আমাকে সেখানে অ্যাডমিন করে নিয়েছে। না চাইতেই।আমার এই হতভাগা জীবন এক হাতে কেড়ে নেয়, অন্য হাতে আবার দিয়ে ভাসিয়েও দেয়।
যে জন্য বলা, সেই সায়েন্টিফিলিয়া গ্রুপে অনেককে নেমন্তন্ন করেছিলাম তো বটেই, আমার অনেক বন্ধু স্বজন নিয়মিত দামী দামী পোস্ট সেখানে নিয়মিত দেন। তা আর পড়তে পারব না। তাঁদের কাছে নিবেদন তাঁরা যদি সেই পোস্ট নিজেদের ওয়ালেও দেন, দয়া করে আমাকে সেগুলোয় ট্যাগ করে দেবেন। প্লিজ্!
প্লিজ্ বললাম কিন্তু।
জীবনের এই দেওয়া নেওয়া নিয়ে দুটো অভিজ্ঞতার কথা বলি।
★
সে ধরুন বছর পঞ্চাশেক আগের কথা। হোস্টেলে পাশের রুমের অসিতদাকে রাস্তার কুকুর কামড়ালো। তখনকার দিনে এখনের মত এই ভ্যাক্সিন পাওয়া যেত না। সেই পেট ফুটো করে চোদ্দোখানা বিকট ইঞ্জেকশন। ইনঞ্জেকশন নেওয়া শুরু। তবু ডবল শিয়োর হওয়ার জন্য অসিত দা কায়দা করে কুকুরটাকে ধরল। তখনকার দিনের চালু ডিক্টম ছিল, কুকুর যদি কামড়াবার পর দশদিন বাঁচে তবে আর তার থেকে জলাতঙ্ক হবার ভয় নেই।
অসিতদা সেই কুকুরের গলায় দড়ি বেঁধে তিনতলায় নিজের ঘরের কড়ায় বেঁধে রাখল তারপর। এলাহি খাবার দাবার এল তার জন্য পরের দশ দিন।
দশদিন পরও কুকুরটা বেঁচে রইল। অসিতদা কুকুরের গলার বকলশ খুলে অতঃপর পেছনে তিন লাথি মেরে তিনতলা থেকে তাড়ালো।
কেঁউ কেঁউ করতে করতে তার সেই পলায়ন দৃশ্য আজও মনে পড়ে।
পালাবার সময়ে সেই হতভাগাও নিশ্চয়ই ভাবছিল, এই দশদিন জামাই আদর করলই বা কেন, আজ লাথি মেরে তাড়ালই বা কেন?
★
এবার দ্বিতীয় কাহিনি।
দুদিন আগে বালিগঞ্জ থেকে ফিরছি সন্ধ্যের মুখে। ফলওয়ালি এক মেয়ের থেকে আতা কিনলাম। ওই বুনো ফল (আমার ছোটোবেলায় বনে ঝোপে থাকত ওই ফলবতী গাছ!) এখন মহার্ঘ। যাই হোক, সেই মেয়ে যেটা বেছে দিল, পাথরের মত শক্ত। তাকে বললাম, ‘হ্যাঁ গো মা, এই একেবারে কাঁচা ফলটা দিলে? একটু পাকা দেখে দিলে হত না?’
সরাসরি উত্তর না দিয়ে সে শুধোলো ‘বাড়ি কোথায়? রেলেই ফিরবে?’
গন্তব্য জানালাম, বনগাঁ লোকালে হৃদয়পুর!
সে একটা একদম পাকা আতা আমার হাতে দিয়ে বলল, ‘নেবে এটা? তোমার ওই টেরেনে আর ইস্টিশনে নামার ভিড়ে কিন্তু পুরো মণ্ড হয়ে যাবে!’
শিউরে বললাম, ‘থাকগে মা, যা দিয়েছো ওটাই দাও।’
হাতের পাকা আতাটা ফেরত দেবার জন্য তার দিকে বাড়াতেই ঝাঁঝিয়ে উঠল, ‘ওটা তুমি এখানেই দাঁড়িয়ে খাও দিকিনি। দাম দিতে হবে নে! যেটা নে যাচ্চো ওটা কালপরশুই পাকবে খনে’!
নির্দেশ মত খেতে হল ওই ফুটপাতে দাঁড়িয়েই।
★
তাই বলছিলাম,
আমি অকৃতি অধম, তাই বলে তুমি…
কম করে কিছু দাওনি!
★
আবার তোমার সঙ্গে দেখা হবে এই শুক্রবার, সকালে।