Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

মেডিসিনে বরফের ব্যবহার, বরফের বাণিজ্য এবং ১৮৩০-এর দশকের কলকাতা

IMG_20220913_154654
Dr. Jayanta Bhattacharya

Dr. Jayanta Bhattacharya

General physician
My Other Posts
  • September 14, 2022
  • 9:15 am
  • 12 Comments

উনিশ শতকের বিখ্যাত সমাচার দর্পণ পত্রিকায় ১৮ মাঘ, ১২৪২ তথা ৩০ জানুয়ারি, ১৮৩৬-এ একটি ছোট্ট সংবাদ প্রকাশিত হয় “চুঁচুড়ায় বরফ” শিরোনামে। সে সংবাদে বলা হয় – “স্কট সাহেবের গেজেটে প্রকাশিত এক পত্রে দৃষ্ট হইতেছে যে জানুআরি মাসের প্রথম ২০ দিবসপর্য্যন্ত চুঁচুড়ায় বরফকুণ্ডে ২১৮৬ মোন বরফ উৎপন্ন হইয়াছে এবং ঐ বরফ মোন করা ১০ টাকা অবধি ১৩ টাকা পর্য্যন্ত বিক্রয় হইয়াছে।” (ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সংবাদপত্রে সেকালের কথা, দ্বিতীয় খণ্ড ১৮৩০-১৮৪০, পৃঃ ৩৫৭)

স্থানীয় পদ্ধতিতে কিভাবে তৈরি হত বরফ? প্রায় ১২০ ফিট লম্বা, ২০ ফিট চওড়া এবং গভীরতায় ২ ফিট একটি গর্ত খোঁড়া হত। গর্তটির ভেতরে এবং চারপাশ যতদূর সম্ভব মসৃণ করা হত। সূর্যের তাপে যখন মাটি শুকিয়ে যেত তখন খড় দিয়ে ঠেসে ১ ফুট ভরে দেওয়া হত। এর উপরে আরও ৬ ইঞ্চি আলগা খড় দিয়ে তার ওপরে ছোট কড়াইয়ের মতো যে পাত্রগুলিতে বরফ তৈরি করা হবে সেগুলো পরপর বসানো হত। এর ওপরে আবার খড় দেওয়া হত। এভাবে কয়েকদিন রেখে দিলে বরফ তৈরি হত। (“Ice-Making in Bengal”, Penny Magazine of the Society for Diffusion of Useful Knowledge, May 27, 1837, পৃঃ ১৯৮)

কৌতূহলী পাঠকেরা জানতে চাইবেন – হঠাৎ ১৮৩৬ সালে চুঁচুড়ায় বরফ তৈরি এবং বিক্রীর খবর সমাচার দর্পণ-এ প্রকাশিত হচ্ছে কেন? ১৮৩৬-এ খবর হিসেবে প্রকাশিত হবার অর্থ হল আরও কিছুদিন আগে থেকে এর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কেন? এজন্য ১৮৩০-এর দশকের কলকাতার এক ইতিহাস আমাদের জেনে নিতে হবে। কৌতূহলোদ্দীপক সে ইতিহাস।

প্রসঙ্গত বলে রাখা দরকার, ১৮৩৪ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বরফের সরবরাহ নির্ভর করত “on the whims of certain speculative individuals at Hooghly, who manufactured as much as they thought fit, whenever weather permitted it.” (H. E. A. Cotton, Calcutta Old and New: A Historical & Descriptive Handbook to the City, 1907, পৃঃ ১৮৭। আমি এই তথ্যসূত্রের জন্য আমার বন্ধু ঐতিহাসিক ইন্দিরা চৌধুরীর কাছে ঋণী।)

আমেরিকান ব্যবসায়ী তথা উদ্যোগপতি ফ্রেডেরিক টিউডরের রপ্তানি করা বরফ কলকাতায় আসার আগে অব্দি চুঁচুড়ায় তৈরি বরফই কলকাতার বরফের একমাত্র সরবরাহ ছিল। প্রথম দিকে এই বরফের প্রধান ব্যবহার ছিল ব্রিটিশ রাজপুরুষ এবং বাঙ্গালি বাবুদের “claret wine” ঠাণ্ডা রাখার কাজে। ফ্রেডেরিক টিউডর দুটি নিষ্প্রয়োজনীয় বস্তু যেমন বস্টনের পুকুরে জমা বরফ এবং মাইন (Maine) অঞ্চলের কাঠের মিহি গুঁড়োকে জুড়ে “created a major New England industry with significant exports.” (Marc W. Herold, “Ice in the Tropics: the Export of ‘Crystal Blocks of Yankee Coldness’ to India and Brazil”, Revista Espaco Academico, No. 142 (March 2012), পৃঃ ১৬২-১৭৭)

ক্যালকাটা মন্থলি জার্নাল পত্রিকায় (No. XXVII, 1st May, 1837) প্রকাশিত হল একটি বিশেষ সংবাদ “আমেরিকান আইস” শিরোনামে। এ সংবাদে বলা হল, আমেরিকার বস্টন শহরের ব্যবসায়ী ফ্রেডেরিক টিউডর (Frederick Tudor) কলকাতা শহরে বরফ রপ্তানি করতে চান। এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছিলন কলকাতার তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের নামী ব্যারিস্টার Lonouville Clarke। প্রসঙ্গত বলে রাখা দরকার, ১৭৭৪ সালে কলকাতায় সুপ্রিম কোর্ট স্থাপিত হয়। ১৮৬২ পর্যন্ত এর কাজ চলে। ১৮৬২ সালে হাই কোর্ট তৈরি হলে সুপ্রিম কোর্টের অবলুপ্তি ঘটে। ১৭৭৪-এ সুপ্রিম কোর্টের প্রথম বিচারপতি ছিলেন ইলাইজা ইম্পে (Elijah Impey) এবং শেষ বিচারপতি বার্নেস পীকক (Barnes Peacock), যিনি ১৮৬২ সালে কলকাতা হাই কোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি হন। মধ্যবর্তী সময়ে উইলিয়াম জোনস থেকে এডওয়ার্ড রায়ানের মতো ব্যক্তিত্বরা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সামলেছেন। এখানে একথাও জানানো প্রয়োজন, আলোচিত মিটিংয়ে হাভানাতে যে দীর্ঘদিন ধরে নিরুপদ্রবে বরফের সরবরাহ চলছে এ নিয়ে মত বিনিময় হয়।

আমরা আগের সংবাদে ফিরি। Lonouville Clarke-এর উদ্যোগে ১৮৩৬ সালে “আমেরিকান আইস কমিটি” তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা থেকে (বস্টন শহর) নিয়ে আসা বিপুল পরিমাণ বরফ রাখার স্থানের সংকুলান ছিলনা কলকাতায়। একটি ছোট ice house ছিল বটে – সম্ভবত ১৮৩২ সালে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এর আয়তন বৃদ্ধি না করলে কলকাতা শহরে বরফের চাহিদা এবং রফতানি করা বরফকে ঠিকমতো সংরক্ষণ করা যাবেনা, এই ছিল ক্লার্কের মূল প্রতিপাদ্য – “without this be done, there can be no certainty of a uniform supply of ice throughout the year”। (Calcutta Monthly Journal, No. XXVII, 1st May, 1837, পৃঃ ১১৮)

এ সংবাদটি ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৮৩৭-এর। এর আগে টিউডরের একটি চিঠি ক্লার্ককে লেখা হয়। সে চিঠিতে টিউডর লেখেন – “regular supplies cannot be expected to be established, until the consumption increases and the Ice House is extended to very considerable greater size.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৯, নজরটান মূল লেখায়) এরপরে “Ice Meeting”-এ সর্বসম্মতিক্রমে বরফ ঘরের আয়তন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

(১৮৩৩ সালে কলকাতার আইস হাউসের চিত্র। সৌঃ পুরনো কলকাতা)

টাউন হলের মিটিংয়ে (১২ ফেব্রুয়ারি, ১৮৩৭) সর্বসম্মতিক্রমে আইস হাউসের আয়তন বৃদ্ধির প্রস্তাব পাস হবার পরে সরকারের তরফে গঙ্গার ধারে জমি দেওয়া হয়, এবং কলকাতাবাসীরা ২৫,০০০ টাকা চাঁদা তোলে। একটি কমিটিও গড়া হয় – আগেই উল্লেখিত “আমেরিকান আইস কমিটি”। এতে পূর্বোল্লিখিত Lonouville Clarke ছাড়াও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ছিলেন ১৮৩৩-১৮৪৩ সালে পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এডোওয়ার্ড রায়ান, ইঞ্জিনিয়ার জেনারেল ফোর্বস, কলকাতা টাঁকশালের ডেপুটি অ্যাসে মাস্টার জেমস প্রিন্সেপ প্রমুখ। (Cotton, Calcutta Old and New, পৃঃ ১৮৯) এঁদের মধ্যে জেমস প্রিন্সেপ কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন এবং খরোষ্ঠী ও ব্রাহ্মী লিপির পাঠোদ্ধার করার মতো ঐতিহাসিক কাজ করেন।

বরফের বাণিজ্য

বরফ আনার এবং রাখার ঝক্কি নেহাত কম ছিলনা। প্রায় ১৩০ দিন সময় লাগত সমগ্র পথ অতিক্রম করতে। প্রায় ২০,০০০ মাইল সমুদ্র পথ পাড়ি দিয়ে বস্টন থেকে কলকাতায় আসার যাত্রায় জাহাজে ১৮০ টন বরফ ভরা হলে যাত্রা পথে ৬০ টনের বেশি নষ্ট হয়ে যেত, অর্থাৎ গলে যেত। এবং সাগর থেকে কলকাতা বন্দরে আসতে আরও ২০ টন নষ্ট হত। (“Ice-Making in Bengal”, Penny Magazine, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৯৯) ভারতে যে বরফ তৈরি হত তার ১ পাউন্ডের দাম পড়ত ৬ পেনি। কিন্তু আমদানি করা বরফের দাম ছিল ৩ পেনিতে ১ পাউন্ড। (পৃঃ ১৯৯)

Henry Spry তাঁর Modern India (Vol. 1, 1837) গ্রন্থে জানাচ্ছেন যে ১৮৩২ সালের শরৎ কালে হুগলি নদীতে প্রথম বরফবাহী জাহাজ এসে নোঙ্গর করে। (পৃঃ ১৯২) আইস হাউস প্রতিদিন ভোর ৩টের সময় খুলে যেত। যদি বস্টন থেকে ৩০০ টন বরফ পাঠানো হত তাহলে কলকাতায় এসে “of good serviceable ice” পৌঁছত ২৩৬ টন। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৯৩)

(বস্টন থেকে কলকাতার সমুদ্র পথ – সুয়েজ খাল খননের আগে)

এখানে টিউডরের বরফ-বাণিজ্যের কথা সংক্ষেপে বলে নেওয়া যায়। ফ্রেডেরিক টিউডর তাঁর ডায়ারিতে লিখেছিলেন যে তাঁর দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিল ভারতে বরফ রপ্তানি করা। পরে তাঁর সাথে বাণিজ্যিক পার্টনার হিসেবে অস্টিন এবং উইলিয়াম রজার্সের সাথে বন্ধুত্ব হয়। সফল হয় ভারতে বরফ রপ্তানি করার স্বপ্ন। অবশেষে Tuscany জাহাজে ভারতের জন্য প্রথম বরফ ভর্তি জাহাজ পাঠানো হল। (Gavin Weightman, The Frozen Water Trade, 2003, “A Cool Cargo for Calcutta”, Chapter 8)

নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদপত্রে (১ জুলাই, ১৯২৮) J. Milo Curci একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন “FIRST “ICE KING’S” ROUGH SLEDDING; Fredeick Tudor, a Century Ago, Worked Thirty Years Against Ridicule to Introduce “Yankee Coldness” A Surprise for Dickens. Start of Ice Business. Tropics Shrank From Ice. Cargoes Went to Far East” শিরোনামে। তিনি এ প্রবন্ধে বলেন – “অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো বাণিজ্যেও জনতাকে নতুন পণ্যের ব্যবহারে শিক্ষিত করে তুলতে হয়। পৃথিবীকে চিউয়িং গাম চিবোতে কিংবা ধূমপান করতে শেখাতে হয়েছে … অন্তত তিন দশক পরিশ্রম করার পরে তাঁর খ্যাতি কলকাতায় পৌছেছিল।”

(আমেরিকায় বরফ ভরার কাজ চলছে)

যদিও হেনরি স্প্রাই বলেছেন, ১৮৩২-এর শরৎ কালে প্রথম বরফবাহী জাহাজ এসে পৌঁছয়। কিন্তু গেভিন ওয়েটম্যান জানাচ্ছেন – “All the interest, all the excitement as the ship with its historic cargo approached the Ganges delta in September 1833 was with the British community in Calcutta.” (প্রাগুক্ত) ওয়েটম্যান আরও জানাচ্ছেন – “The British in Calcutta were quite obsessed with keeping cool. Houses were sometimes built with underground sitting rooms, and with raised terraces where advantage could be taken of cool breezes. Wetted cloths were hung over windows to provide a crude form of air conditioning, and the air was stirred constantly by punkahs”। (প্রাগুক্ত)

কিন্তু শুধু স্বাচ্ছন্দ্য এবং বিলাসিতা দ্রব্য হিসেবে বরফের ব্যবহার সীমাবদ্ধ থাকলে বাণিজ্যিক দিক থেকে সেটা নিতান্তই অলাভজনক হবে। ফলে বরফের ব্যবহারের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ল মেডিসিন, যাতে ব্যবহারের ব্যাপ্তি এবং উপযোগিতা দুটোই বৃদ্ধি পায়।

উল্লেখ করার মতো বিষয় হল, এস নিকলসন নামে এক ডাক্তারের চিঠি থেকে ভিন্নধর্মী একটি বিষয় জানা যায় – “on the contrary, I have been credibly informed, that the greater number of purchasers of the first cargo of ice, were dirges (দর্জি, ভৃত্য বা নিম্ন শ্রেণীর মানুষ অর্থে ব্যবহৃত) who crowded to the ice house every afternoon, to provide themselves with a small portion, ere they commence their seven miles’ walk hours.” (Calcutta Monthly Journal, Third Series: Vol. IV, 1838, পৃঃ ২৭১)

সহজ কথায় বললে, দর্জি, ভৃত্য বা নিম্ন শ্রেণীর মানুষ ৭ মাইল পথ হেঁটে এসে প্রতিদিন বিকেলবেলায় আইস হাউসে বরফ কেনার জন্য লাইন দিত। এখানে সঙ্গত প্রশ্ন আসবে – কেন দিত? বরফ এদের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল কেন – বিশেষত ১৮৩৬-৩৮-এর কলকাতা শহরে? এ উত্তর আমার কাছে অজানা। হয়তো পুরনো কলকাতার বিশেষজ্ঞরা এর সমাধান করতে পারবেন।

যেদিন বরফের জাহাজ হুগলি নদীর মুখে এসে পৌছয় তখন তাপমাত্রা ছিল ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের আশেপাশে। বরফ কি করে গলে যাবার হাত থেকে বাঁচানো হবে এটাই ছিল প্রধান দুশ্চিন্তার কারণ। ইন্ডিয়া গেজেট পত্রিকায় বরফের ব্যবহার সম্পর্কে লেখা হয়েছিল – “যদি প্রয়োজনীয় কিংবা বিলাসিতার সামগ্রীও হয়, বরফের ব্যবহার কেবলমাত্র খাবার টেবিলে সীমাবদ্ধ নয়। একে অতিক্রম করে এর প্রবেশ ঘটেছে মেডিক্যাল প্র্যাকটিসে, চিকিৎসার সহায়ক হিসেবে, এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বহু ধরণের জ্বরের চিকিৎসার ক্ষেত্রে মূল চিকিৎসা হিসেবে কার্যকরী হয়েছে। এমনকি গরমের দেশের কিছু অ্যাকিউট রোগের ক্ষেত্রেও এটা কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে।” (Weightman, The Frozen Water Trade, প্রাগুক্ত)

উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ২২ নভেম্বর, ১৮৩৩-এ যারা জাহাজে করে বরফ নিয়ে এসেছিল তাদের নেতৃত্ব রজার্সকে রূপোর গিলটি করা কাপ দিয়েছিলেন।

টিউডর কলকাতায় প্রতি পাউন্ড বরফ ২.৫ সেন্ট মূল্যে বিক্রী করতেন। ১৮৩৪ সালে বরফ বিক্রী থেকে মুনাফা হয় “$13,552 in 1834 (worth in 2010 US $353,000) from which freight charges needed to be subtracted”। (Herold, “Ice in the Tropics”, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৬৬) এমনকি ১৮৫৫ সালের আগস্ট মাসে টিউডর হাওড়ায় গঙ্গার ধারে ৫,৮০০ টাকা মূল্যে জমিও কিনেছিলেন ব্যবসার সুবিধের জন্য। (David G. Dickason, “The Nineteenth-Century Indo-American Ice Trade: An Hyperborean Epic” Modern Asian Studies, Volume 25,‌ Issue 01, February 1991, pp. 53 – 89, পৃঃ ৬৩)

ক্যালকাটা মন্থলি জার্নাল-এর আরেকটি সংখ্যায় বরফের দাম কমানো এবং সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের কাছে “remission of port duties”-এর আবেদন করা হয়। (“American Ice”, Calcutta Monthly Journal, Third Series, Vol. IV, 1838, পৃঃ ১১৮)

(কলকাতায় বরফ নামানোর প্রক্রিয়া)

মেডিসিনে বরফের ব্যবহার

“American Ice” শিরোনামে বেশ বড়ো একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল ক্যালকাটা মন্থলি জার্নাল-এ (Calcutta Monthly Journal, Third Series: Vol. IV, 1838, পৃঃ ২৭০-২৭৫)। এর আগেই বলেছি, কলকাতায় “আমেরিকান আইস কমিটি” তৈরি হয়েছিল, যার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন Lonouville Clarke। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। এই কমিটির ১৮৩৭-এর জুলাই মাসের সভায় ৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল – সরকার যদি “remission of port duties” করে (যেমনটা হাভানায় হয়েছে) তাহলে বরফের চাহিদা আরও বাড়বে।

দ্বিতীয়টি হল – মেডিক্যাল পেশার সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা বরফের “vast importance to the public health, especially in cases of fever so incidental to this climate”-এর কথা বলেছেন।

তৃতীয় সিদ্ধান্ত – কলকাতা শহরের বেশ কিছু সংখ্যক প্রথমসারির চিকিৎসক পাবলিক হেলথের ক্ষেত্রে বরফের বিপুল গুরুত্বের কথা লিখিতভাবে কমিটিকে জানিয়েছেন। এবং তাঁদের চিঠিগুলো কমিটির মিটিংয়ে পেশ করা হয়েছিল।
মোট ২২ জন খ্যাতনামা এবং উচ্চপদস্থ চিকিৎসকের চিঠি কমিটির মিটিংয়ে পেশ করা হয়। এঁরা হলেন – (১) জন গ্র্যান্ট, যিনি ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল সায়ান্স-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন (D. G. Crawford, Roll of the Indian Medical Service: 1615-1930, Vol. 1, 1930, পৃঃ ৭০), (২) প্রেসিডেন্সি সার্জেন আলেক্সান্ডার হ্যালিডে, (৩) জেনারেল হাসপাতালের সার্জেন এস নিকলসন, (৪) গ্যারিসন সার্জেন ফ্রেডেরিক করবিন (Frederick Corbyn), (৫) আলেক্সান্ডার গার্ডেন, (৬) মেরিন সার্জেন H. S. Mercks, (৭) জেমস রানাল্ড মার্টিন, যিনি তাঁর The Influence of tropical climates on European constitutions (১৮৫৬) পুস্তকের জন্য বিখ্যাত, (৮) প্রেসিডেন্সি সার্জেন উইলিয়াম ক্যামেরন, (৯) Officiating Army Hospital Corps আলেক্সান্ডার রাসেল জ্যাকসন, (১০) চব্বিশ পরগনার সিভিল সার্জেন Francis Pemble Strong (Crawford, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৮), (১১) চার্লস সি এগার্টন, যিনি পরে ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি এবং ক্লিনিকাল সার্জারির প্রফেসর হয়েছিলেন, (১২) সার্জেন জর্জ ক্রেইগ, (১৩) ডানকান স্টুয়ার্ট, পরে মেডিক্যাল কলেজের ধাত্রীবিদ্যা বিভাগের প্রধান এবং অধ্যাপক হয়েছিলেন, (১৪) ফ্রেডেরিক হ্যারিংটন ব্রেট, যাঁর সুবিদিত গ্রন্থ হচ্ছে A practical essay on some of the principal surgical diseases of India (১৮৪০), (১৫) অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জেন জে টি প্যাটারসন, (১৬) জেনারেল হাসপাতালের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জেন ওয়াল্টার র‍্যালে, (১৭) মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর অফ অ্যানাটমি ও মেডিসিন হেনরি গুডিভ, (১৮) মেডিক্যাল কলেজের কেমিস্ট্রির অধ্যাপক, কলেরার চিকিৎসায় ইন্ট্রাভেনাস স্যালাইন ইঞ্জেকশনের যুগান্তকারী আবিষ্কারক এবং গাঁজা তথা ক্যানাবিসের মেডিক্যাল ব্যবহারের উদ্ভাবক উইলিয়াম ব্রুক ও’শনেসি, (১৯) ২৬ নম্বর রেজিমেন্টের সার্জেন উইলিয়াম বেল, (২০) উইলিয়াম গ্রাহাম, (২১) সার্জেন জে ম্যাক্সটন, এবং (২২) রিচার্ড ও’শনেসি, মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক এবং যাঁর বিখ্যাত পুস্তক  On Diseases of the Jaws, with a brief outline of their surgical anatomy (১৮৪৪)।
এঁদের বরফ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রধান যুক্তিগুলো ছিল এরকম – (১) জ্বর কমাতে বিশেষ সাহায্যকারী, বিশেষ করে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল যখন বেড়ে যায় তখন সেটা কমাতে সাহায্য করে, (২) শিশুদের দাঁত ওঠার সময়ের জ্বরে কার্যকরী, (৩) “internal inflammation”-এর ক্ষেত্রে ফলদায়ক, (৪) “soothes the sense of rending pain in the brain”, (৫) “strangulated hernia”, (৬) “in various disorders, both surgical and medical”, (৭) “most valuable in certain cases of mania … in cases of uterine hemorrhage”, (৮) উইলিয়াম ব্রুক ও’শনেসির মতো গবেষকের অভিমত এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য – “Considering ice solely as a medical substance, I would deem all the subscriptions we have made and all the support you may now seek to encourage the importation, as well and cheaply bestowed.” (Calcutta Monthly Journal, Third Series: Vol. IV, 1838, পৃঃ ২৭৪)
১৮৫২ সালে মেডিক্যাল কলেজের কৃতী ছাত্র সুর্য গুডিভ চক্রবর্তী এপিলেপসি নিয়ে তাঁর একটি গবেষণাপত্রে বলেন – “I only hope that my professional brethren will see from the perusal of this case the reasonableness of applying ice in similar instances.”  (“A Singular Case of Epilepsy”, Medical Times and Gazette, 5 (New Series, 1852), pp. 406-408, পৃঃ ৪০৮) তিনি নিজে এপিলেপসির ক্ষেত্রে বরফের ব্যবহার করে ইতিবাচক ফল পেয়েছিলেন। ফলে অন্যান্যদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তাঁদের অভিজ্ঞতা কি জানায়।

এভাবে সুদূর আমেরিকা থেকে রপ্তানি করা বরফ কলকাতায় পৌঁছে চিকিৎসা এবং পাবলিক হেলথ তথা জনস্বাস্থ্যের একটি কার্যকরী হাতিয়ার হয়ে উঠল ১৮৩৩ থেকে ১৮৫২ সালের মধ্যে। এ এক কম জানা, চিত্তাকর্ষক ইতিহাস।

PrevPreviousআয়নামতি
Nextসভ্যতাNext
4.3 3 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
12 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Dipankar Ghosh
Dipankar Ghosh
4 months ago

অজানা অধ‍্যায়

0
Reply
Jishnu Dasgupta
Jishnu Dasgupta
4 months ago

খুবই interesting লেখা। ইতিহাসের ছাত্র হলেও এই কাহিনী জানা ছিল না।

0
Reply
Sudipta Basu
Sudipta Basu
4 months ago

বরফ সংক্রান্ত মূল্যবান অনেক অজানা তথ্য জানলাম, ধন্যবাদ স্যার

0
Reply
Rajib Banerjee
Rajib Banerjee
4 months ago

লেখাটা জয়ন্ত দা আপনার অন্যান্য লেখাগুলোর মতনই informative। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই ইতিহাস সকলেরই জানা দরকার। চালিয়ে যান দাদা।

0
Reply
BARUN BHATTACHARYYA
BARUN BHATTACHARYYA
4 months ago

এটা প্রথম পর্যায় বলে ধরছি। তারপরে কীভাবে বরফ অপরিহার্য বস্তু হয়ে উঠলো যা নিয়ে লেখককে আলোকপাত করতে অনুরোধ করছি। খুব ভাল লাগল।

0
Reply
Soumya Chakraborty
Soumya Chakraborty
4 months ago

Khub sunder sir. Onek ojana bisoi samparke jante parlam.

0
Reply
বর্ণালী দত্ত
বর্ণালী দত্ত
4 months ago

তথ্যে পরিপূর্ণ লেখা।

0
Reply
মণীশ
মণীশ
4 months ago

বরফের এই অজানা ইতিহাস নিয়ে তথ্যপূর্ণ এবং মনোগ্রাহী লেহাটিত জন্য ডঃভট্টাচার্য্যকে ধন্যবাদ!

0
Reply
Soumya Panigrahi
Soumya Panigrahi
4 months ago

Very interesting to know

0
Reply
সৈকত মিস্ত্রী
সৈকত মিস্ত্রী
3 months ago

লেখাটা পড়লাম। বিলম্ব হল।বস্টন থেকে টিউডরের কলকাতায় বরফ রপ্তানি, আবার চুচড়ায় বরফ তৈরির স্থানীয় পদ্ধতি, ২০০০০ মাইল পথ পারকরে মার্কিনি বরফের কলকাতায় যাত্রার এই ইতিহাস লেখায় তুলে আনলেন।জ্বর কমানো, শিশুর দাঁত ওঠার সময় ব্যবহার থেকে অ্যাকিউট রোগ সারাতে বরফ কিভাবে ব্যবহৃত হয়েছে তার ইঙ্গিত এই লেখাকে সমৃদ্ধ করেছে।নানা রেফারেন্স সন্ধানী মানুষের কৌতূহলকে উৎসকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এমন লেখা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ায় আপনাকে কুর্নিশ, সেলাম।

0
Reply
সুকুমার ভট্টাচার্য্য
সুকুমার ভট্টাচার্য্য
2 months ago

চিকিৎসাবিজ্ঞানে বরফের ব্যবহার নিয়ে অসামান্য চর্চা। বরফ ও পরবর্তীকালে শীততাপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্র চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সাধারণ মানবিক জীবনে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে গিয়েছে।
ধন্যবাদ আপনাকে, ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য।

0
Reply
Soumya Chakraborty
Soumya Chakraborty
1 month ago

Khub valo laglo sir. Ekdam ojana chilo.

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

পদ্মপ্রাপ্তি

January 31, 2023 No Comments

আপনার কাছে প্রশান্ত মহলানবীশের ফোন নাম্বার আছে? রাত ন’টার একটু পর একটি চ্যানেল থেকে ফোন এলো। একটা সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিলাম। আচমকা এই প্রশ্নে বিলকুল ভেবড়ে

Two Anatomies and the Two Systems of Medical Knowledge: Dissection with or without Knife and Anatomist*

January 30, 2023 No Comments

Introduction “The definition of life is to be sought for in abstraction; it will be found, I believe, in this general perception: life is the

ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল: নির্বাচনের বদলে মনোনয়ন?

January 29, 2023 No Comments

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮ টায় ফেসবুক লাইভে প্রচারিত।

রোজনামচা হাবিজাবি ১

January 28, 2023 1 Comment

কীভাবে ডাক্তারি করবো, সে বিষয়ে নিজের ভাবনাচিন্তাগুলো কেবলই বদলে যাচ্ছে। মোটামুটিভাবে পড়াশোনা আর শিক্ষানবিশি শেষ করার পর ভেবেছিলাম চুটিয়ে প্র‍্যাক্টিস শুরু করবো। কিছুদিন করতে শুরুও

নাস্তিক

January 27, 2023 No Comments

সকালের দিকে মাথা ভালো কাজ করে না। সামান্য ঘটনাই হতভম্ব করে দেয়। তাই সাত সকালে বাইক বের করে যখন দেখলাম পেছনের চাকায় হাওয়া নেই, কিছুক্ষণ

সাম্প্রতিক পোস্ট

পদ্মপ্রাপ্তি

Dr. Koushik Lahiri January 31, 2023

Two Anatomies and the Two Systems of Medical Knowledge: Dissection with or without Knife and Anatomist*

Dr. Jayanta Bhattacharya January 30, 2023

ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল: নির্বাচনের বদলে মনোনয়ন?

Doctors' Dialogue January 29, 2023

রোজনামচা হাবিজাবি ১

Dr. Soumyakanti Panda January 28, 2023

নাস্তিক

Dr. Aindril Bhowmik January 27, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

423545
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।