নেচার পত্রিকায় (২৪ জুন, ২০২১) একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে “World Bank grants for global vaccination – why so slow?” শিরোনামে। লেখক জাস্টিন স্যান্ডেফার কয়েকটি প্রণিধানযোগ্য কথা বলেছেন এ প্রবন্ধে – (১) “International financial institutions say that vaccines are the highest-return investment on Earth”, (২) কোন একদিন আমার নাতি-নাতনিরা পড়বে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯-এর ভ্যাক্সিন একবছরের মধ্যে তৈরি করেছিল, কিন্তু আরেকটি বিয়োগান্তক কাহিনীও পড়বে যে বাজারে ভ্যাক্সিন আসার পরেও নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের কোটি কোটি মানুষ মারা গেছে ভ্যাক্সিন না পেয়ে, (৩) ভ্যাক্সিনের সর্বোচ্চ সুফল পেতে হলে ভ্যাক্সিনকে সমস্ত ব্যক্তির জন্য বিনামূল্যে দিতে হবে।
জার্নাল অফ আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (JAMA)-এ একটি মূল্যায়ন প্রকাশিত হয়েছে “Restoring Vaccine Diplomacy” (জুন ১৫, ২০২১)। এ প্রতিবেদনে বলা হল – “To decisively control the pandemic will require confronting the monumental task of providing 4 billion to 5 billion doses of COVID-19 vaccine to the world’s low-income and low-resource populations. This will not happen without strategic vaccine diplomacy.”
কেন প্রয়োজন এই ভ্যাক্সিন ডিপ্লোম্যাসির? GAVI (Global Alliance for Vaccines and Immunization)-র হিসেব দেখিয়েছে – (১) ভ্যাক্সিন ছাড়া বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বছরে ৩.১৪ ট্রিলিয়ন ডলার, ভ্যাক্সিনের বিষম বন্টন হলে ক্ষতির পরিমাণ ১.২ ট্রিলিয়ন ডলার, (২) উচ্চ আয়ের ধনী দেশগুলো যদি ভ্যাক্সিনের জন্য ১ ডলার খরচ করে তাহলে এরা ফিরে পাবে ৪.৮ ডলার, (৩) যদি শুধু দরিদ্র দেশগুলো ভ্যাক্সিনের সুবিধে থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে পৃথিবীর জিডিপি ঘাটতি হবে বছরে ১৫৩ বিলিয়ন ডলার।
এ মুহূর্তে পৃথিবীতে ১৯৭টি ভ্যাক্সিন নিয়ে ট্রায়াল চলছে। এর মধ্যে ৭৭টি রয়েছে প্রি-ক্লিনিক্যাল ফেজে অর্থাৎ ল্যাবরেটরির স্তরে, ৯৩টির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে, ১৬টি অনুমোদিত হয়েছে বা সীমিত ব্যবহারের ছাড়পত্র পেয়েছে, ৪টি ভ্যাক্সিন পরিত্যক্ত হয়েছে। ফেজ ১ ট্রায়ালে রয়েছে ৫৭টি, ফেজ ২-তে ৩৭টি এবং ফেজ ৩ ট্রায়ালে ৩১টি ভ্যাক্সিন রয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র “Much More Required” শিরোনামের সম্পাদকীয়তে (২৩.০৬.২১) বলা হয়েছে – “সরকারকে মানুষের কাছে ভ্যাক্সিন পৌঁছে দিতে হবে, ছোট প্রাইভেট গোষ্ঠীকে সংযুক্ত করতে হবে এবং যথাসময়ের ব্যবধানে কতটা সরবরাহ করা হল সে বিষয়ে স্বচ্ছ ও স্পষ্ট তথ্য উন্মুক্ত করতে হবে।” এ বক্তব্য থেকে বুঝতে অসুবিধে হয় না যে ভারতে সবার জন্য ভ্যাক্সিনের ব্যবস্থা করা কেবলমাত্র জনস্বাস্থ্যের অঞ্চলে নেই – সরকারের সদিচ্ছা এবং স্বচ্ছ ও স্পষ্ট তথ্যকে সবার সামনে খুলে দেবার মতো রাজনৈতিক বিষয়ও এর অংশ। অন্যভাবে বললে, ভ্যাক্সিন স্বাস্থ্যের গণ্ডি অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে “ভ্যাক্সিন ন্যাশনালিজম” বা ভ্যাক্সিন জাতীয়তাবাদ। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্য আয়ের দেশগুলো।
নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদপত্রে “Pfizer Reaps Hundreds of Millions in Profits From Covid Vaccine” (মে ৪, ২০২১) শিরোনামে প্রকাশিত খবরে কতকগুলো বিষয়ের প্রতি পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে – (১) ২০১২-এর প্রথম তিন মাসে ফাইজার কোম্পানি এর কোভিড-১৯-এর প্রতিরোধী ভ্যাক্সিন বিক্রী করে ৩.৯ বিলিয়ন ডলার লাভের মুখ দেখেছে, (২) “As of mid-April, wealthy countries had secured more than 87 percent of the more than 700 million doses of Covid-19 vaccines dispensed worldwide, while poor countries had received only 0.2 percent”, (৩) যেখানে ধনী দেশগুলোতে ৪ জনের ১ জন মানুষ ভ্যাক্সিন পেয়েছে দরিদ্র দেশে এ সংখ্যাটা প্রতি ৫০০ জনে ১ জন, (৪) ফাইজার যে ২৫০ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন তৈরি করেছে তার মাত্র ২% COVAX প্রোগ্রাম মারফত গরীব দেশগুলোর কাছে পৌঁছনোর জন্য বরাদ্দ রেখেছে।
গার্ডিয়ান সংবাদপত্রের একটি খবর অনুযায়ী (“From Pfizer to Moderna: who’s making billions from Covid-19 vaccines”, 6 March, 2021) মডার্নার বিষয়টি আরও খাসা। ১১ বছর আগে কোম্পানিটি তৈরি হয়েছিল। ১১ বছর ধরে কোনরককম লাভের মুখ দেখেনি। প্রাক-অতিমারি সময়ে ৮৩০ জন কর্মচারী নিয়ে চলছিল। এখন ভ্যাক্সিন বিক্রি করে ১৮ বিলিয়ন লাভের মুখ দেখছে। গার্ডিয়ান সংবাদপত্রের আরেকটি খবর হল “Vaccine nationalism is killing us. We need an international approach” (১৭.০৬.২১)। এ সংবাদে সদ্যসমাপ্ত জি-৭ বৈঠক নিয়ে সখেদে বলা হয়েছে – “The G7 has proven unwilling and incapable of delivering on this promise. The central banks of the world’s major economies mobilized roughly $9tn to respond to the economic shock of the Covid-19 pandemic, acting swiftly and decisively to protect the interests of their investors.” অর্থাৎ, পৃথিবীর বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে অত্যন্ত দ্রুত এবং নিশ্চয়াত্মকভাবে ৯ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য দিয়েছে অতিমারি জনিত মন্দা কাটিয়ে ওঠার জন্য। পৃথিবীর মানুষকে সুরক্ষিত রাখার জন্য টিকাকরণের জন্য কোন অর্থ বরাদ্দ নেই।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এর মতো মান্য পত্রিকায় “From Vaccine Nationalism to Vaccine Equity – Finding a Path Forward” (এপ্রিল ৮, ২০২১) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে – “বহুসংখ্যক দরিদ্রতম দেশে ভ্যাক্সিনের সরবরাহের কোন অস্তিত্বই নেই, এবং বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন কম-সম্পদ সম্পন্ন ৮০% দেশে এ বছর (২০২১) একটিও ভ্যাক্সিন পাবেনা।” বলা হয়েছে (এপ্রিল, ২০২১), বর্তমানে যে হারে টিকাকরণ চলছে (মোটামুটি দিনে ৬৭ লক্ষ ডোজ) তাতে দুটি ডোজ ভ্যাক্সিন নিয়ে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে অনুমিত ৪.৬ বছর লাগবে।
প্রায় একই কথা বলা হয়েছে ল্যান্সেট-এর একটি দীর্ঘ গবেষণাপত্রে – “Challenges in ensuring global access to COVID-19 vaccines: production, affordability, allocation, and deployment” (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১)। বলা হয়েছে – “ The COVID-19 pandemic is unlikely to end until there is global roll-out of vaccines that protect against severe disease and preferably drive herd immunity.” অস্যার্থ, হার্ড ইমিউনিটির লক্ষ্যে ভ্যাক্সিনের উপযুক্ত সরবরাহ ছাড়া এই অতিমারিকে শেষ করা যাবে না।
নেচার-তুল্য জার্নালে প্রকাশিত এ ডায়াগ্রাম থেকে সহজেই বোঝা যায় আন্তর্জাতিকভাবে মোট ভ্যাক্সিনের শেয়ার ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে কি বিপুল বৈষম্য তৈরি করেছে। নেচার-এ গ্যাভিন ইয়ামি (যিনি ডারহাম ইউনিভার্সিটি, নর্থ ক্যারোলাইনার সেন্টার ফর পলিসি ইম্প্যাক্ট অন গ্লোবাল হেলথ-এর ডিরেক্টর) “Rich countries should tithe their vaccines” (২৫.০২.২০২১) শিরোনামে একটি প্রবন্ধে যে বিষয়গুলোর ওপরে জোর দিলেন সেগুলো হল – (১) কোভিড-১৯ প্রতিরোধের লক্ষ্যে ১৯ কোটির বেশি ডোজ দেওয়া হয়েছে (জনস হপকিন্স সেন্টার-এর ২.০৩.২০২১-এর হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ২৫ কোটি টিকা দেওয়া হয়েছে যা গত এক সপ্তাহে ১৭% বৃদ্ধি পেয়েছে), (২) এর ৩/৪ অংশ দেওয়া হয়েছে মাত্র ১০টি ধনী দেশে, (৩) এই ১০টি ধনী দেশের জিডিপি পৃথিবীর মোট জিডিপির ৬০%, (৪) ২৫০ কোটি জনসংখ্যার ১৩০টি দেশে একটিও ভ্যাক্সিনের ডোজ দেওয়া হয়নি, (৬) উচ্চ আয়ের দেশ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৬%, কিন্তু এরা অর্ধেকের বেশি ভ্যাক্সিন কিনে নিয়েছে। তিনি মন্তব্য করেছেন – “When SARS-CoV-2 transmission is wildly uncontrolled, the virus has more scope to evolve into dangerous variants.” অবহেলিত দেশগুলোর কাছে ভ্যাক্সিন পৌঁছে দেবার জন্য COVAX (GAVI, CEPI এবং WHO-র যৌথ উদ্যোগ) এগিয়ে এসেছে। ১৯০টির কাছাকাছি দেশ COVAX-এ যোগদান করেছে। কোভ্যাক্স আশা করছে ২০২১-এর শেষাশেষি ২০০ কোটি ডোজ কিনতে পারবে। কিন্তু ধনী দেশগুলো ইতিমধ্যেই ৫৮০ কোটির বেশি ডোজ কিনে নিয়েছে ভ্যাক্সিন উৎপাদক সংস্থাগুলোর সাথে সরাসরি চুক্তি করে।
প্রবন্ধ লেখকের আশঙ্কা যদি পৃথিবীর সব দেশে টিকাকরণ প্রক্রিয়া ঠিকমতো না হয় তাহলে এই অতিমারি আরও ৭ বছর প্রলম্বিত হবে। এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতি হয়তো ৯ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইয়ামির সিদ্ধান্ত – “It is in everybody’s interests to act collectively to boost vaccinations. It is self-defeating to act otherwise.”
২১.০৬.২১ পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী – পৃথিবীর ২১.৮% মানুষ কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছে। বিশ্বজুড়ে ২৭০০ কোটি ডোজ এখনো অব্দি দেওয়া হয়েছে। এখন প্রতিদিন গড়ে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ ডোজ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দরিদ্র দেশগুলোর মাত্র ০.৯% মানুষ অন্তত ১টি ডোজ ভ্যাক্সিন পেয়েছে।
COVID-19 vaccine doses administered per 100 people, Jun 19, 2021
United Arab Emirates 145.89
Israel 122.94
Bahrain 113.57
United Kingdom 108.66 (Jun 18, 2021)
United States 94.82
Germany 78.46 (Jun 18, 2021)
Italy 75.39
France 70.62 (Jun 18, 2021)
China 70.21
Brazil 40.68
India 19.63 (World 33.63I)
নীচের ছবিটি আরও ভালোভাবে বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করবে। এবং এটাও বোঝা যাবে যে ভারতের অবস্থান ঠিক কোথায় – প্রচুর ঢক্কানিনাদ এবং “বিশ্বগুরু” হবার প্রবল আয়োজনের পরেও।
এরকম বিপুল বৈষম্যের একটি প্রধান কারণ হল ভ্যাক্সিন তৈরির আগেই ধনী দেশগুলো ভ্যাক্সিন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির সাথে চুক্তি করে নিজেদের দেশের জন্য যা প্রয়োজন তার অনেক বেশি কিনে রেখেছে।
ভ্যাক্সিন না নিলে দেশের মোট জাতীয় আয় বা জিডিপিতে ক্ষতি কি হবে?
আমরা নীচের টেবিল থেকে এটা বুঝতে পারবো।
Detailed Change in GDP in Billions
Location | World without vaccine | Vaccine nations have access | All high-income and vaccine nations have access | All high- and middle-income plus vaccine nations have access |
World | -$3,449 | -$1,232 | -$292 | -$153 |
EU-27 | -$983 | -$311 | -$76 | -$40 |
USA | -$480 | -$127 | -$30 | -$16 |
China | -$356 | -$110 | -$27 | -$14 |
UK | -$145 | -$41 | -$10 | -$5 |
India | -$88 | -$26 | -$7 | -$3 |
Russia | -$52 | -$18 | -$5 | -$2 |
Other middle-income† | -$147 | -$65 | -$30 | -$6 |
Other low-income‡ | -$200 | -$82 | -$35 | -$28 |
দরিদ্র ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে ভ্যাক্সিন পৌঁছে দেবার জন্য COVAX নামে একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অভীপ্সা অত্যন্ত শুভ এবং মানুষের জন্য মঙ্গলজনক। কিন্তু একদিকে ভ্যাক্সিন সাম্রাজ্যবাদ, অন্যদিকে ভ্যাক্সিন জাতীয়তাবাদ এ কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়ো প্রতিবন্ধক। ল্যান্সেট-এ “A beautiful idea: how COVAX has fallen short” (জুন ১৯, ২০২১) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে – “COVAX has delivered over 72 million doses to 125 countries. But that is far less than 172 million it should have delivered by now. Of the 2.1 billion COVID-19 vaccine doses administered worldwide so far, COVAX has been responsible for less than 4%.” এটা কোন শ্লাঘার বিষয় নয় যে আফ্রিকা, এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার অতি দরিদ্র দেশগুলোতে যখন ভ্যাক্সিন পৌঁছে দেবার চেষ্টা করা হচ্ছে তখন লক্ষ্যমাত্রার ৪%-এরও কম পূরণ করা গেছে।
ল্যান্সেট-এর আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল (“A global compact to counter vaccine nationalism”, May 25, 2021) – “Vaccine nationalism threatens to turn the triumph of science to give the world vaccines against COVID-19 into tragedy.” পোলিও এবং স্মল পক্সের মতো কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রেও যতক্ষণ সবাই সুরক্ষিত না হচ্ছে ততক্ষণ কেউই সুরক্ষিত নয়।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল-এর পূর্বোল্লেখিত প্রবন্ধে বলা হয়েছিল – “These inequalities reveal a fundamentally flawed view of global health, and our global economy more broadly, in which vaccines and essential medications are treated as a market commodity rather than as a public good.”
ভারতবর্ষ সহ সবদেশেই, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর ক্ষেত্রে এখানে জনতার সংগঠিত দাবী এবং, এমনকি, স্বাস্থ্য আন্দোলনের প্রসঙ্গ আসে যেখানে সেখানে প্রশ্ন তুলতে হবে – পৃথিবীর মানুষকে বাঁচানোর জন্য ভ্যাক্সিন সর্বোচ্চ মুনাফাদায়ক পণ্য হবে কিংবা সবার প্রয়োজনে, সবার নাগালের মধ্যে থাকা পাবলিক গুড হবে? স্বাস্থ্য কি সবচেয়ে অবহেলিত রাষ্ট্রিক নীতি হয়েই থাকবে? কিংবা স্বাস্থ্য একটি মৌলিক সাংবিধানিক এবং মানবাধিকার বলে গৃহীত হবে। এই ভয়ংকর অতিমারি আমাদেরকে এরকম এক বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এই সুকঠিন বাস্তবের মোকাবিলা করার পূর্ণ দায়িত্ব আমাদের সবার।
পূর্বোল্লেখিত নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল-এর “ফ্রম ভ্যাক্সিন ন্যাশনালিজম টু ভ্যাক্সিন ইকুইটি” প্রবন্ধটির কথায় আসি। ওখানে বলা হয়েছিল – “Vaccinating the world is not only a moral obligation to protect our neighbors, it also serves our self-interest by protecting our security, health, and economy. These goals will not be accomplished by making the world wait for wealthy countries to be vaccinated first.” মূল কথা হল, সমগ্র বিশ্বের টিকাকরণ শুধুমাত্র একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা নয়, এ কাজটি আমাদের নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত করবে – নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে। ধনী দেশগুলোতে প্রথম টিকাকরণ করার পরে বাকী বিশ্বের সিদ্ধিলাভ হবে এমন ভাবার কোন কারণ নেই।
এ কথাগুলো কি আমরা ভাবছি? না ভেবে, উটের মতো বালুতে মুখ গুঁজে এড়িয়ে যাওয়া যাবে কি oo?
তুমি কি একজন দূরদর্শী এই লেখাটায় তার যথেষ্ট প্রমাণ।
তুমি যে একজন দূরদর্শী এই লেখাটায় তার যথেষ্ট প্রমাণ।
Excellent! Informative!
আমরা যতোই বলি নো কেন, বৈষম্য চিরকালই মানব জাতির সংগে আছে ….করোনাকালে সেটা আরও প্রকট – লেখক কিছু সম্ভাব্য সমাধানের পথ দেখালে ভাল হত
ভাইরাস সত্য, মানুষ বাঁচানোর ভ্যাক্সিনের প্রয়োজন সত্য, ভ্যাক্সিন আবিষ্কারে বৈজ্ঞানিকরা সফল সত্য। কিন্তু সমস্যা হোল যাদের প্রয়োজনে ভ্যাক্সিন আবিষ্কার তাদের কাছে পৌঁছুবে কি করে? বহুজাতিক রাঘব বোয়ালরা তাদের বিশাল অর্থোপার্জনের এই সুযোগ ছাড়বে কেন। আর রাষ্ট্র্যযন্ত্র তো তাদের সাথে আপোষ করতেই অভ্যস্ত। মানুষের থেকে তারা বেশী মূল্যবান। অধিকাংশ দেশেই একই চিত্র।
ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্যর লেখা এইজন্য ভাল লাগে যে কঠিন সত্য উনি সহজভাবে স্পষ্ট করে তথ্যসহ পেশ করেন।
Very very informative…?
Dr. J Bhattacharjee মহাশয় তার মূল্যবান তথ্য ভিত্তিক লেখাটির মধ্য দিয়ে যা স্পষ্ট করতে চেয়েছেন তা হল—- ” Covid –19 ” অতিমারি যেহেতু সমগ্র মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার সমস্যা সেহেতু এই অতিমারি সংকট কালে দেশ–রাষ্ট্র রাষ্ট্র নায়ক সহ সমস্ত শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকেই সবধরনের nepotism ও self– fulfillment- র ঊর্ধ্বে উঠে সমগ্র মানব জাতির স্বার্থের পক্ষে সওয়াল করতে হবে। আজকের এই সংকট কালে এটাই দস্তুর।
পরিসংখ্যানের এই সংখ্যাটি মুদ্রণ বিভ্রাট হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী—” বিশ্বজুড়ে ২৭০০ কোটি ডোজ এখনও অব্দি দেওয়া হয়েছে। ”
ডাক্তার ভট্টাচার্য মহাশয়ের এই লেখাটির মতামত বিভাগে Mr. Panigrahi মহাশয় বলেছেন: ” আমরা যতই বলিনা কেন, ———— সমাধানের পথ দেখালে ভাল হত। ” বিষয়টা হল, “বৈষম্য ” আর দখলদারি বা বঞ্চনার মধ্যে পার্থক্য আছে। পেশাগত কারণে কিঞ্চিত বৈষম্যের একটা মান্যতা আছে। কিন্তু অন্য কারও বিলাসিতার কারণে আমি বঞ্চিত হব কেন? এই ” কেন ” কে কেন্দ্র করেই এই বিশ্ব সভ্য ও সুষ্ঠু সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের দিকে এগোতে থাকে। মার্ক্সবাদকে কেন্দ্র করে মানব মুখী রাষ্ট্র গঠনের ও পরীক্ষা -নিরীক্ষা হয়েছে। তার “বাস্তব অবস্থার বাস্তব বিশ্লেষণ ” নিশ্চয়ই চলছে। গবেষণাগারের সাময়িক অসফলতার কারণে বিজ্ঞানের কোন তত্ত্ব মিথ্যা প্রমাণিত হয় না। তাত্ত্বিক সংস্কারের পথ ধরেই সে যে আবার মানুষের জয়গান গাইবে এটাই সত্যি ।
Very informative.
Sir, excellent information