ভারতে, ঋতুস্রাবের সময় সব মহিলা স্বাস্থ্যসম্মত,পরিষ্কার স্যানিটারি প্যাডই জোগাড় করতে পারেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে কেচে রোদে শুকিয়ে পুরনো কাপড়ের টুকরো ভাঁজ করে ব্যবহার করেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়েরা।
যাঁরা Tampon নিয়মিত ব্যবহার করেন, তাঁরা এটি নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট। প্যাডের থেকে জামাকাপড়ে দাগ লেগে যাওয়া থেকে শুরু করে, রক্তের কটু গন্ধ, টেম্পুুুনের ব্যবহার এ সমস্ত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এথলিটরা খেলার সময় ব্যবহার করেন। Tampon শরীরের ভেতরে থাকা অবস্থাতেও দিব্যি মল মূত্রত্যাগ করা যায়। যেহেতু টেম্পুন যোনিপথেই রক্ত শুষে নেয় , ঋতুস্রাবের ব্যপ্তিও প্রায় ২৪ ঘন্টা কমে যায়।
ভারতে নাগরিক জীবনেও Tampon এর ব্যবহার সীমিত। মাত্র ৫% ভারতীয় মহিলা এটি ব্যবহার করেন।
কয়েকটি কারণ ঃ-
১) ভারতীয় সংস্কার অনুযায়ী অবিবাহিত মেয়ের কুমারীত্ব নষ্ট হবার আশংকা। Tampon, যোনির পর্দা ( Hymen) সামান্য সরিয়েই কোন রকম আঘাত বা কাটা ছেঁড়া ছাড়াই যোনিপথে ঢোকানো যায়।
২) অনভিজ্ঞতা। পরিণত বয়েসের অনেক ভারতীয় মহিলার এখনো এই ধারণাই নেই যে প্রস্রাবের ছিদ্র ও জন্মদ্বারের ছিদ্র আলাদা।
৩) ধার্মিক বাধ্যবাধকতা ও ঋতুস্রাব সংক্রান্ত সমস্ত অজস্র ভূল ধারণা।
তবুও দিনকাল পাল্টাচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজস্থানের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন Tampon বিক্রি হচ্ছে ।
জেনে নেওয়া যাক Tampon ব্যবহারের কিছু নিয়ম।
১) Tampon শরীরের ভেতরে থাকতে পারে ৪-৮ ঘন্টা। তার বেশী থাকলে সংক্রমণ হয়ে Toxic Shock Syndrome হবার সম্ভাবনা থাকে। এটি হয় প্রধাণতঃ Staphylococcus ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে। যদিও সংখ্যা টি অত্যন্ত নগণ্য।
২)” Super-absorbent” উপাদানের Tampon বিদেশে নিষিদ্ধ। এদেশে এখনো বিক্রি হয়। কিন্তু সুতির বা রেয়নের Tampon ব্যবহার করতে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন।
৩) কখন, Tampon ব্যবহার করবেন না –
• Vaginal dryness বা অত্যধিক discharge সংক্রান্ত সমস্যায়
• যদি Vaginal Antifungal cream ব্যবহার করছেন।
• অন্তঃসত্ত্বা ( Pregnant) অবস্থায়।
• প্রসবের পর থেকে ৬ সপ্তাহ অবধি।
• কোন Vaginal/ Cervical অপারেশনের পর
• যে অবস্থায় মনে হচ্ছে টানা ৮ ঘন্টার বেশী কাটাতে হতে পারে একই Tampon এ। যেমন, ছুটির দিনে বেলা করে ঘুম থেকে ওঠার পরিকল্পনা থাকলে, রাতে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করুন।
• আগে কখনো Toxic Shock Syndrome হয়ে থাকলে।
ঋতুস্রাব অত্যন্ত স্বাভাবিক, শারীরিক ও প্রাকৃতিক নিয়ম। এই সময়ে সহজ, সাধারণ পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা উচিত। অহেতুক আচার বিচার , খাদ্য পানীয়ের কড়াকড়ির শেকলে একে যত বেঁধে রাখা হবে, তত এদেশের মেয়েরা নিজেদের স্বাস্থ্য ও স্বচ্ছতা সম্বন্ধে অজ্ঞ থেকে যাবে।