মূলত ডাক্তারদেরই সমস্যা নিয়ে লিখেছি। তাঁদেরই পড়তে বলব। কিন্তু অচিকিৎসক বন্ধুরাও পড়ুন।
না, আমি বিষাণের সঙ্গে একমত নই।
চিকিৎসক পেশায় কিন্তু ভালো আর সৎ মানুষ অজস্র।
তাঁদের কেউ কেউ হয় তো সন্দিহান। হতেই পারেন।
গণতন্ত্রের যে কঙ্কালকাণ্ড চারিদিকে, সবাইই সন্দিহান। চিকিৎসকরাও। তাঁরা কেউ কেউ পুরোনো ক্ষোভে আর অভিমানে সিনিক।
আর মধ্যবিত্ত ধান্দাবাজ কে নয়? দেবালয় পুড়বে লোকালয় অক্ষত থাকবে, তা হয়?
এই হল টোটাল চিকিৎসক সমাজ। কিন্তু এরই মধ্যে যতটুকু পারা যায় নিজেদের আর সমাজেরও ভালো চাইতে হবে। এই আমাদের মধ্যবিত্ত বাঁচা।
আমাদের মানে চিকিৎসকদেরই ঠিক করতে হবে, আমরা অশান্তি নিরাময়ের রেট বেঁধে দেওয়া (পড়ুন ঘুষের রেট বেঁধে দেওয়া) কোনও কাউন্সিলের অধীনস্থ হব কী না!
একটা প্রিন্সিপাল নাকি তার অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ঘেসো ক্যন্ডিডেটদের জেতাবার মানসে তার অধীনে থাকা শিক্ষকদের মিটিংয়ে যেতে বলেছে। আহা বেচারার দোষ নেই। মারীচ সংবাদের সেই ডায়ালগটি মনে করুন পাঠক, যেখানে রাবন মারীচকে স্বর্ণহরিণ সাজবার নির্দেশের পর মনে করিয়ে দিচ্ছে,– তাছাড়া, মনে রাখিস্ তোর নামে কিন্তু দশখানা ফৌজদারি কেস রয়েছে!
আজ্ঞে হ্যাঁ, আপনি ডাক্তার মশাইও এই রকম নানান প্রফেশনাল সমস্যায় সদা বিব্রত। এর ওপরে আছে চাকরির জায়গায় নানান ঝামেলা, আর সমঝে দেবার হুমকি। শুনি নাকি গ্রাম থেকে শহরে আসারও রেট ঠিক করা আছে।
প্রতিকারের আশায় মারীচের মত আত্মসমর্পণ করলে, এবং গত বারে যেমন কর্ণধারবাবু আর গঙ্গাপতিবাবুকে নগদে আর বস্তুতে দিয়েছেন সেরকম এবার তার বদলে ঊদ্দীপ্ত বাবুকে নগদ দিয়ে আর চিকিৎসা-ভবনে নগদ আর তাঁবেদারি দিয়ে সেবা পাঠালে, আপনাকেও ওই মারীচেরই মত নিশ্চিত পরিণতির দিকে এগোতে হবে।
ডাক্তারবাবু, ওই সব মেরুদণ্ডটণ্ড জাতীয় গুজবে আবেগ থরোথরো হবার ব্যাপার নয় এটা। স্রেফ একজিস্টেন্সের প্রশ্ন।
আর ডাঃ পীতবরণ, আপনার নামের মানে বাংলা অভিধানে নেই। পীতবাস আছে পীতাম্বর আছে কিন্তু পীতবরণ? নাঃ, নেই। অনেক চেষ্টায় এর একটা মানে ঠিক করলাম, জন্ডিস। মানে শরীর চোখ পীত অর্থাৎ হলুদ। মানে মহাভারতে পাণ্ডু রাজার যেমন ছিল। না না পাণ্ডুই লিখেছি প-এর জায়গায় গ পড়ে বসবেন না।
খুব চাইছি আপনারও জন্ডিস সেরে যাক।
আপনি নিশ্চিতই ভয়ে কিম্বা অন্যতর কোনও লোভে এত পান্ডুর হয়ে রয়েছেন।
ভয় আর লোভের কি শেষ আছে নাকি মশাই, অর্থ… পোস্টিং… সুরা… নারী… পুত্রকলত্র… সংসার ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। হাজার ব্যাপারে ফেঁসে আছেন। তবু চাই আপনার জন্ডিস সেরে যাক।
আর আমার খুব স্নেহের এক ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো অভিমানী ডাক্তার ভাই Bishan Basuর লেখাটাও পড়ুন, প্লিজ।
ডাক্তার না হলেও পড়ুন। আপনার ডাক্তারের বিপদ কিন্তু আপনারও বিপদ।