“আর খুব একটা আশা দেখছি না। মিঃ গুহ, আপনি বরং কয়েকটা দিন ওকে ঘুরিয়ে আনুন। শেষ ক’টা দিন একটু আনন্দে কাটাক।”
ডাক্তারবাবুর কথা শুনে অপ্রতিম তাজপুরে একটা রিসোর্ট বুক করেছিল। আজ দুপুরেই ওরা চেক-ইন করে সী-বীচে ঘুরতে বেরিয়েছে। বালির উপর দিয়ে হাঁটার সময় মাঝেমাঝেই সমুদ্রের জল এসে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছিল সুদেষ্ণার পা দু’টো। পড়ন্ত বিকেলে এই দিকটা বেশ নিরিবিলি। এমন সময় একটা বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে কাছাকাছি। হাঁটুর উপরে শাড়ি গুটিয়ে নেয় সুদেষ্ণা। অপ্রতিমের বড়ো ভালো লাগে এই দৃশ্য।
হাঁটতে হাঁটতে ওরা পৌঁছে যায় মোহনার কাছে। তিনটে ছেলে লাল কাঁকড়ার দাঁড়ায় সুতো বেঁধে খেলা করছিল। ওদের দেখতে পেয়েই ছেলেগুলো বলে উঠল, “দিদি, দিদি, কাঁকড়া নেবে?” সুদেষ্ণা ওদের কাছ থেকে একটা কাঁকড়া হাতে নিয়ে দেখতে থাকে। হঠাৎ সুতোর বাঁধন ঢিলে হয়ে যায়। দাঁড়া ফাঁক করে কাঁকড়া নড়েচড়ে ওঠে।
“ফেলে দাও সুদেষ্ণা! কামড়ে দেবে।”…. চেঁচিয়ে ওঠে অপ্রতিম। তারপর রোগা ছেলেটাকে ধমক দিয়ে বলে, “দাঁড়াগুলো ভালো করে বাঁধতে পারিস না?”
“ওকে বকো না। ওর কী দোষ বলো? আমার শরীরে যে কাঁকড়া বাসা বেঁধেছে তার দাঁড়াও তো তোমরা বাঁধতে পারো নি। তুমি চিন্তা কোরো না অপ্র। এই কাঁকড়া যদি কামড়েও দেয় আমার একটুও ব্যথা লাগবে না।”…. হাতের তালুর উপর কাঁকড়াটাকে রেখে পরম মমতায় তার দিকে তাকিয়ে থাকে সুদেষ্ণা। এরপর অস্তগামী সূর্যের শেষ আভাটা সুদেষ্ণার দু’চোখের পাতা ছুঁয়ে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে গেল।
#WorldCancerDay2023