এটাই, এবিপি-আনন্দে আজকের প্যানেল ডিসকাশন এর বিষয়বস্তু ছিল।
আবহাওয়া দপ্তর এক সপ্তাহ ধরে অতি -বৃষ্টির কথা বললেও , রাজ্য প্রশাসন কোন রকম প্রস্তুতি না নেওয়ায় সরকারি মতে আজ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৩; এ ছাড়া গবাদি পশুর এবং অসংখ্য বণ্য প্রাণীর মৃত্যু, এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি তো আছেই।
প্রশ্ন উঠেছে বেশ কিছু। তার মধ্যে দুটো খুব গুরুত্বপূর্ণ ।
১। এই অবস্থায় দুর্গা পুজার কার্নিভাল কেন বাতিল করা হোল না?
উত্তরঃ অনেক বিদেশি বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের আসার কথা। তাই অনুষ্ঠান বাতিল করা যাই নি।
কুচুটে প্রশ্ন ঃ সহি বাত; কিন্তু ওঁরা কি মুখ্যমন্ত্রীর এই অসাধরন নৃত্তশৈলীও দেখতে এসেছিলেন? তার জন্যই কি মুখ্যমন্ত্রী প্রচণ্ড মনকষ্টের মধ্যেও নিজেকে নিয়ন্ত্রন রেখে তাঁর নৃত্ত পরিবেশন করলেন?
২। দক্ষিণবঙ্গ থেকে রাজনৈতিক ভিআইপি- দের, বিশেষ করে বিজেপি এবং তৃণমুলের সব রাস্তা এখন এক দিকে। জাতীয় কংগ্রেসও সাথ দিয়েছে। সবাই চলেছেন গাড়ির কনভয় নিয়ে উত্তরবঙ্গে। এদের আতিথেয়তা এবং নিরাপত্তার জন্য কি কি করতে হবে, তার জন্য জেলার প্রশাসনের কাছে মোটা মোটা বই আছে। একটু এদিক -ওদিক হলেই , চাকরি হাওয়া হয়ে যাবে । অতএব উদ্ধার এবং ত্রানের কাজ ছেড়ে ডিএম, এস পি দের এখন এদের সেবাই নিয়োজিত হতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী তো গেছেন -ই। তবে দুদিন পর ।
কুচুটে প্রশ্নঃ যে মমতা ব্যানার্জি শব্দের চেয়েও দ্রুত গতিতে ঘটনাস্থলে হাজিরা দিতেন, তাঁর এতো সময় লাগলো কেন?
আহা, এতো অমানবিক প্রশ্ন করলে কি করে হবে? ওনার কি বয়েস হয় না? আর তা ছাড়া এই বয়েসে , ওই রকম নাচের একটা ধকল আছে না?
উনি অবশ্য একটা উত্তর দিয়েছেন এই দেরি হওয়ার জন্য। বলেছেন – মোটামুটি দুদিনের মধ্যে জেলা প্রশাসন প্রাথমিক বিপদটা সামলে নিতে পারে। আমি গেলেই ওরা আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে । তাতে উদ্ধার এবং ত্রানের কাজ ব্যহত হবে।
কথাটা কার মাডাম? এই কথাতো একজন -ই বলতেন। তিনি হলেন- জ্যোতি বসু। এই নিয়ে কাগজওয়ালা থেকে জনগণের এক অংশের প্রচুর কটূক্তি ওনাকে শুনতে হয়েছে। কিন্তু উনি সেই সব গায়ে না নিয়ে বিপদ্গ্রস্থ মানুষের কথাই বেশি করে ভেবেছেন। আপানদের সঙ্গে ওনার তফাৎটা বোঝা গেল?
এই সব হাবিজাবি লিখতে গিয়ে, সুনীলের একটা কবিতা আর সাইনাথের সেই বিখ্যাত বইটার কথা মনে পড়ে গেল। কবিতাটার নাম- ‘ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি’; শেষ স্তবকটা ঃ “মাঝে মাঝে দ্বীপের মতন বাড়িও কান্ডহীন গাছের পল্লবিত মাথা
ইন্দিরা, তখন সেই বন্যার দৃশ্য দেখেও একদিন তোমার মুখ ফস্কে বেরিয়ে যেতে পারে, বাঃ, কী সুন্দর।” আর সাইনাথের বই-টার নাম- Everybody Loves a Good Drought.