NEET UG ২০২৪ নিয়ে তোমার লেখা আগামীকাল ডক্টরস ডায়লগে বেরোবে বলে বসানো আছে। ১ লা জুলাই তোমার নতুন ভিডিও বেরোবে, বেরোলেই নেবো ঠিক করে রেখেছি। আর আজ সকালেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলে তুমি। যাওয়ার সময় তো হয়নি, মাত্র ৩৭ টা বছর কাটিয়েছিল এই পৃথিবীতে…
তোমার আওয়াজের সঙ্গে পরিচয় অরুণাচল দত্ত চৌধুরীর সাসপেনশন বিরোধী মিছিলে। প্রমোদের লেখা প্যারোডি ‘ভিনদেশী মশা’ গাইছিলে তুমি। তারপর দেখেছি বিধান রায়ের বাড়ির সামনে অবস্থানে। ২০১৯ এ কলকাতা প্রেসক্লাবের সামনে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা যখন ধরনায়, তখন শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের চিকিৎসা দলে তুমি আসতে নিয়মিত। সে সময় তোমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হলো অনির্বাণ।
একসঙ্গে মেডিকেল ক্যাম্প করেছি রেজাউলের মায়ের নামাঙ্কিত স্কুলে ২০২০- তে কোভিডের ঠিক আগে। ২০২২-র ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে শ্রুতি নাটক ‘তাহার নামটি রঞ্জনা’ করার কথা ছিল দীপঙ্কর (ঘোষ), চিন্ময় (নাথ) ও তোমার। শেষ হতে রাত হবে, আমার বাড়িতে থাকার কথা হল। বিশেষ কারণে নাটকটি করা যায়নি। তুমি রাতের ট্রেন ধরে বহরমপুর ফিরে গেলে।
একসঙ্গে আরো কাজ করার কথা ছিল। করা হয়নি। আর হবেও না।
_________________
অনির্বাণ দত্তের বেড়ে ওঠা মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদীঘিতে। স্কুলের পড়া সাগরদীঘি এস এন। উচ্চ মাধ্যমিক বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন থেকে। এমবিবিএস পাস নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ থেকে। এরপর সরকারি চাকরিতে যোগদান। ২০১৫ তে প্যাথলজি এম ডি-তে ভর্তি হন রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে। ২০১৮ এ এমডি করে বন্ড পোস্টিং মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। তারপর সেখানেই শিক্ষকতা করা।
কেবলই ডাক্তারী নয়, ছাত্র জীবন থেকেই গান লেখা, গানে সুর দেওয়া, গান গাওয়ার মধ্যে ছিল অনির্বাণ। গানের মধ্যে দিয়ে সামাজিক সমস্যা গুলোও ফুটিয়ে তুলতো সে। তার প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছিল অনির্বাণ দত্ত এন্টারটেইনমেন্ট।।
কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের মর্যাদা এবং সুরক্ষার জন্য গড়ে তোলা সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের কার্যকারিণীর অন্যতম সদস্য ছিল অনির্বাণ।
অনির্বাণের স্মৃতি অনির্বাণ দীপশিখা হয়ে থাকবে আমাদের কাছে।
২৫ শে জুন, ২০২৪