Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

বস্তারে রাষ্ট্রীয় দমন

development_genocide
Pubali Rana

Pubali Rana

Social activist
My Other Posts
  • May 27, 2025
  • 6:05 am
  • No Comments

হিমাংশু কুমারের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ১৮ ই মে  যখন আমি এই প্রতিবেদন লিখছি,তখনও সাতাশ জন মাওবাদী কর্মী সহ মাওবাদী নেতা নম্বলা কেশব রাও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা  ভুঁয়ো এনকাউন্টারে নিহত হননি। তাঁকে লাল সেলাম জানিয়ে আমি এখানে মানবাধিকার কর্মী হিমাংশু কুমারের বক্তব্যের সারাংশ তুলে ধরব।

রাষ্ট্রের দমননীতির বিরুদ্ধে হিমাংশু কুমার প্রত্যয়ী কন্ঠে জানিয়েছেন, ছত্তিশগড়ের বস্তার অঞ্চলে পরিচালিত সামরিক অভিযান নির্বিচারে  আদিবাসী নিধনের  এক নির্মম অধ্যায় ‘অপারেশন কাগার’। এই অভিযানের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী হিমাংশু কুমার। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এই অভিযান মূলত আদিবাসী জনগণের উপর দমনমূলক পদক্ষেপ হিসেবে পরিচালিত হয়েছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট উদাহরণ।

হিমাংশু কুমার অভিযোগ করেছেন, ‘অপারেশন কাগার’-এর আওতায় সেনা অভিযানে বহু নিরীহ আদিবাসী গ্রামবাসী প্রাণ হারিয়েছেন এবং গ্রাম উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “রাষ্ট্র যখন নিজের নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তখন তা শুধু অমানবিক নয়, বরং সংবিধানবিরোধীও।” তাঁর মতে, উন্নয়নের নামে কর্পোরেট স্বার্থরক্ষাই এই অভিযানের প্রকৃত উদ্দেশ্য।

বস্তারের আক্রমণটা গোটা দেশের মানুষের ওপর আক্রমণ বলেছেন হিমাংশু কুমার।

গত ১৮ ই মে, কলকাতার সূর্যসেন ভবনে … আয়োজিত এক সভায় বক্তৃতা করেন গান্ধীবাদী ও মানবতাদের পক্ষে প্রথম সারির আন্দোলক হিমাংশু কুমার। তাঁর বলার বিষয় ছিল, “সাম্প্রতিক বাস্তার ও মানবাধিকার।” এখানে সেই বক্তৃতার একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হল।

হিমাংশু বলছেন এক হাড় হিম করা কাহিনি। না, গল্প কথা নয়। দেশে ঘটমান বাস্তবের কথা, হিমাংশু বর্ণনা করেছেন। আপাত নিরাবেগ, নির্লিপ্ত তাঁর কণ্ঠস্বর, যে নির্লিপ্তি আসলে এক ভিন্নতর প্রতিবাদের ভঙ্গী, যন্ত্রণাকে আড়ালে রেখে যন্ত্রণাকে তুলে ধরা। হামলা হচ্ছে আদিবাসীদের ওপর, দেশের নানা প্রান্তে, তার মধ্যে ছত্তিশগড়ের আদিবাসীরা বিশেষভাবে আক্রমণের লক্ষ্য । তাদের হত্যা করা হচ্ছে। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।  ২০০৫ সালে ছত্তিসগড়ে  বিজেপি সরকার আসার সঙ্গে সঙ্গেই একশটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে, কর্পোরেটদের হাতে জমি হস্তান্তর করার জন্য। সালওয়া জুডুমের সময় যেমন লক্ষ লক্ষ আদিবাসিকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, এ ঠিক তেমনি। সরকার বলছে, মাওবাদী এবং নকশালবাদীরা সংবিধান বিরোধী। তাই মাওবাদী দমন করার প্রক্রিয়া চলছে সাধারণ মানুষের শান্তির জন্য। হিমাংশু বলছেন, যেখানে নকশাল নেই, মাওবাদী নেই সেখানে কি জনসাধারণের ওপর হামলা হয় না? দেশের অন্য প্রান্তে যেখানে নকশালদের চিহ্নমাত্র নেই, সেখানে কী দমনপীড়ন হচ্ছে না? সিআরপিএফ, পুলিশ, বাকি যে আধা-সামরিক বাহিনী আছে, সেগুলি শুধু মাওবাদীদের জন্য বানানো হয়েছে? সারা দেশজুড়েই যেখানে রাষ্ট্রীয় হামলা জারি আছে আদিবাসীদের ওপর, সেখানে নকশালবাদীদের ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া কি অসততা নয়? বরং দেখা যাচ্ছে যে এলাকা মাওবাদী-শূন্য সেখানেও জনগণের ওপর রাষ্ট্রের হিংসার প্রভাব সমানভাবে প্রকট।

বুঝতে হবে, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত সরকার পুঁজিপতিদের জন্য যে ভূমি অধিগ্রহণ করেছে, তার একটাও বিনা বন্দুকে নয়। হাজার হাজার আদিবাসীদের প্রাণের বিনিময়ে। এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়নি!

হিমাংশু বলছেন, ‘কাল রাতে আমার সাথী সোনি সুরির সঙ্গে কথা হয়েছে। সোনি বলেছেন, ২৫০০ সশস্ত্র সৈন্য ফোর্সেস দিয়ে আক্রমণ চালানো হয়েছে। ৩১ জন মাওবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। সোনি ঘটনা স্থলে গিয়ে মৃতদের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ৭ ই মে, যেদিন ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হল, ঠিক ওই দিনই ছত্তিসগড়ের আদিবাসীদের ওপর ভারত রাষ্টের হামলা হয়েছে। সোনি সোরি প্রকৃত সত্য প্রকাশ করেছেন: ছত্তিসগড়ের পুলিশ, সিআরপিএফ, কোবরা, আর তেলেঙ্গানার গ্রে হাউন্ড সামনাসামনি চলে আসে এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, বিভ্রান্তিবশত, একে অপরের উপর গুলি চালায়, ফলত: চার সেনা নিহত হয়। কোনো মাওবাদী হামলা চালায় নি। এরপরে এরা ৩১ জন গ্রামবাসীকে ঘেরাও করে এবং নৃশংসভাবে হত্যা করে।  গুলি করার আগে তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা হয়। মেয়েদের  আঁচড়ে কামড়ে স্তন কেটে নিয়ে, যৌন নির্যাতন করার পর গুলি করা হয়। শিশুদের আছাড় মেরে কিম্বা পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়। কোনো এনকাউন্টার হয়নি। ঠান্ডা মাথায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।  সোনি সোরি বলছেন, বস্তারের মহিলারা আমাকে বলেন— “সোনি দিদি, আমরা মরার ভয় করি না। আমাদের ওপর গুলি চালাও, আমরা প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের ধর্ষণ কোরো না। আমরা মরতে রাজি আছি, কিন্তু ধর্ষণের যন্ত্রণা সহ্য করতে রাজি নই। কারণ এখানে ধর্ষণই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জিনিস।”

এদের পরিবারকে মৃতদেহ দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে মৃতদেহে পচন ধরেছে। মৃতদেহের ওপরে পোকা জন্মে গেছে, ফলে   হাসপাতাল ছেড়ে অন্য রোগীরা পালাতে বাধ্য হয়েছে।  এক সপ্তাহ পরে ১২ই মে সোনি সোরি গ্রামবাসীদের নিয়ে আধিকারিকের কাছে বিক্ষোভ দেখালে মৃতদেহ পরিবারকে দেওয়া হয়।  মৃতদেহকে পোকার চাদর বিছিয়ে ফেরত দেওয়া হয় যাতে পরিবারের লোক তাদের  সনাক্ত করতে না পারে! আমরা এমন একটা দেশে বাস করছি যেখানে আত্মীয় পরিজনের মৃতদেহও লড়াই করে আদায় করতে হয়!   একটা নকল এনকাউন্টার করে নির্মমভাবে তাদের মারা হয়।

নকশাল সংবিধান মানে না, তাই সরকার নকশাল নিধন করে। হিমাংশু ঠান্ডা গলায় বলে চলেছেন,  সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন আপনারা ভারতের সংবিধানকে মানেন? সংবিধান বলে, বনাধিকার আইন অনুসারে, রাষ্ট্র আদিবাসীদের জমি গ্রাম সভার অনুমতি ব্যাতীত অধিগ্রহণ করতে পারে না। ছত্তিসগড় সরকার পাঁচ হাজার পুলিশকে রাইফেল দেয় (সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনী),  মাওবাদী দমন করার জন্য।

সিআরপিএফ, বিএসএফ, ছত্তিসগড় পুলিশ – এরা কর্পোরেটের জন্য জমি খালি করতে বলে। গ্রামে আক্রমণ শুরু করে।  আদিবাসীদের ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তারা প্রাণ ভয়ে পালাতে থাকে। যারা পালাতে পারে না, বিশেষ করে মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ – তাদের ওপর নেমে আসে পাশবিক অত্যাচার। নারীদের ধর্ষণ করা হয় বারবার। অনেকে মিলে। তারপর তাদের হত্যা করা হয়, শিশুদের আছাড় মেরে কিম্বা পাথর ছুড়ে হত্যা করা হয়। বয়ষ্কদেরও হত্যা করা হয়। গ্রামে আগুন লাগানো হয়। খেতের ফসল আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তাদের পানীয় জলের উৎসে বিষ দিয়ে দেওয়া হয়, যাতে সেই জল খেয়ে তাদের অবধারিত মৃত্যু হয়। মৃত্যু ভয়ে ভীত আদিবাসীরা কিছুদিন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকার পর যখন ভাবে আবার নতুন করে শুরু করার কথা, আবার তাদের ওপর ধেয়ে আসে রাষ্ট্রীয় হামলা। আবার নতুন নতুন লোকেদের হত্যা, আবার সবকিছু জ্বালিয়ে দেওয়। হিমাংশু বলছেন, এক একটা গ্রামে ২০ থেকে ৩০ বার হামলা হয়েছে। এভাবে ৬৫০ টি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইজরায়েল যেভাবে প্যালেস্টাইনে হত্যালীলা চালিয়েছে, ছত্তিসগড়ে বিজেপি সরকার একইভাবে হত্যালীলা চালায় প্রায় প্রতিদিন – মাওবাদী দমনের নামে।

ভারত সরকারের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে দেখা গেছে, কী ভাবে ১৬ জন আদিবাসী মহিলার ওপর (তারমধ্যে নাবালিকাও ছিল) অত্যাচার করেছে ভারতীয় সেনা; নিপীড়িতাদের তাদের শরীরের এমন কোনো জায়গা বাকি নেই যেখানে সেনাবাহিনীর লোকেরা আঘাত করেনি । সোনি সোরির কথায়, সুধার ঘটনাটা দেখুন— “তাঁকে আধাসামরিক বাহিনী তাঁর নিজের ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। গ্রামের অন্য মহিলারা কাঁদতে কাঁদতে তাঁদের অনুরোধ করেন— যদি অপরাধ করে থাকে তবে মামলা করুন, কিন্তু দয়া করে ওঁকে নিয়ে যাবেন না। কিন্তু তারা কিছুই শোনেনি।” তাঁকে বাড়ির খুব কাছের জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে, যতক্ষণ না তাঁর মৃত্যু হচ্ছে ততক্ষণ বারংবার ধর্ষণ করে যাওয়া হয়। একটা গুলিও ছোঁড়া হয়নি। যখন তাঁর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এল, তখন বলা হল— একজন নকশালকে এনকাউন্টার করা হয়েছে। ওঁর দেহটি দান্তেওয়াড়ার হাসপাতালে আনা হয়। আমাকে বলা হল, তাঁকে গুলি করে মারা হয়েছে। আমি কর্তব্যরত চিকিৎসককে বললাম, দেহটা দেখতে চাই। দেখলাম, দেহের কোথাও একটাও গুলির চিহ্ন নেই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “আপনারা বলছেন এটা এনকাউন্টার, তাহলে কোনও গুলির চিহ্ন নেই কেন?” উত্তর নেই।

আরও আছে, কোর্টে দ্ররষণের ফাইলে নিপীড়িতাদের দের নাম লেখা হয় না। লেখা হয় অভিযুক্ত বনাম রাষ্ট্র ¬– রাষ্ট্রই অভিযুক্ত রাষ্ট্রই ভক্ষক। যাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ছিল তারাই ধর্ষক।

হিমাংশু বলেছেন, আমার সাথী সোনি সোরি ওপর অকথ্য অত্যাচার চালায় ছত্তিসগড় পুলিশ।

সোনি সোরি। মানবাধিকার কর্মী। ছত্তিসগড়ের নিপিড়ীত  আদিবাসীদের জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে যিনি লড়াই করছেন। সহযোদ্ধা সোনি সোরি। তাঁকে কোর্টে না নিয়ে সরাসরি জেলে ভরা হয়েছিল। সোনি সোরিকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁর যৌনাঙ্গে পাথর ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তাঁকে দু বছর বিনা বিচারে কারাবন্দী করে রাখা হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে তিনি নানা ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হন।  সেই সময়ের জেলা পুলিশ কর্তা অঙ্কিত গর্গ তার ওপরে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ।  পরে এই অঙ্কিত গর্গ ‘প্রেসিডেন্টস পুলিশ মেডেল ফর গ্যালান্ট্রি’ পুরষ্কার পায়।

হিমাংশু কুমার বলছেন, সোনি সোরি  আমাকে চিঠিতে জানিয়েছেন,  তিনি জেলের মধ্যে ভেবেছিলেন, আত্মহত্যা করবেন। তখন জেলবন্দী কিছু আদিবাসী মেয়ে এসে সোনিকে ব্লাউজ খুলে দেখিয়ে বলে,  “দিদি আমাদের অবস্থা দেখুন। পুলিশ আমাদেরকে যৌন নির্যাতনের পর স্তনবৃন্ত কেটে দিয়েছে। ইলেকট্রিক শকে যৌনাঙ্গ ঝলসে দিয়েছে। তবু আমরা প্রতিদিন বাঁচছি। আপনি লেখাপড়া করা শিক্ষিত দিদি। আপনি আত্মহত্যার কথা ভাববেন কেন?”

তাদের যৌনাঙ্গে ইলেক্ট্রিক শকের চিহ্ন আছে। নাবালিকা মেয়েদের ওপর পুরো পুলিশ স্টেশন  দিনের পর দিন গণ ধর্ষণ চালিয়েছে। হিমাংশু কুমার যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যালেঞ্জ করে এই লেখা পোস্ট করেন, তখন এক মহিলা জেলর তাঁর লেখার সত্যতা স্বীকার করে মন্তব্য করেছিলেন, “আমি যখন বাস্তারে ছিলাম, আমি এরকম মেয়েদের দেখেছি, আপনি ঠিক বলেছেন।”

তার পরের দিন মাওবাদী তকমা দিয়ে সেই জেলরকে সাসপেন্ড করা হয়। মজার কথা হল, মাওবাদী হবার অভিযোগ ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রশের উপরেও ছিল। দুনিয়ার যেকোনো জেলে ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রশ যেতে পারে কিন্তু ভারতের ছত্তিসগড়ে জেলে তাদের প্রবেশাধিকার নেই। এমনকি নন্দিনী সুন্দরের কেসে সুপ্রিম কোর্টকে মাওবাদী বলে দেগে দিতেও ছত্তিসগড় সরকার ছাড়েনি। জাতিসংঘ থেকে বাস্তারে আদিবাসীদের সঙ্গে দেখা করতে এলে বিজেপির মুখপাত্র বলে জাতিসংঘের সঙ্গে মাওবাদী যোগ আছে। যখন ছত্তিসগড় জ্বলছে, চারিদিকে হত্যালীলা হচ্ছে, তখন হত্যা মামলায় তদন্ত করতে কালেক্টর ঢুকতেই তার বুকে পিস্তল ঠেকানো হল। সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে যখন সিবিআই তদন্তে গেল, তখন সিবিআইয়ের ওপর আক্রমণ চালানো হল। সিআরপিএফ সিবিআই কে বাঁচাতে এলে সিআরপিএফ এর ব্যারাকে ছত্তিসগড়ের পুলিশ বোমা ফেলে।  ছত্তিসগড়ের সিকিউরিটি ফোর্স পুঁজিপতিদের খাস-পেয়াদা হিসেবে আজ্ঞা বহন করে।

আমি সুপ্রিম কোর্টে একটার পর একটা মামলা করেছি। এই মুহূর্তে ৫৭২ টি মামলা লড়ছি। আদিবাসীদের পক্ষ থেকে NALSA  র মাধ্যমে। আদিবাসীরা যখন প্রথম মামলা শুর করে বিজেপির প্রথম বুলডোজার এক্সপেরিমেন্ট আমাদের ওপর হয়েছে। বিন্দু বিন্দু রক্ত ঘাম দিয়ে তিল তিল করে  তৈরি করা ১৮ বছরের পুরনো আশ্রম ১৮ মিনিটের মধ্যে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়।   তাদের বোঝানোর চেষ্টা করতাম, লোক আদালত কী,  আইনি অধিকার কী। রাষ্ট্র তার প্রতিদানে দু হাজার ফৌজ নিয়ে এসে আমার আশ্রম বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আজ আপনারা যে বুলডোজার রাজ দেখছেন তার সূচনা হয়েছিল ছত্রিশগড়ে আমার আশ্রম গুড়িয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে।

হিমাংশু কুমার মাওবাদে বিশ্বাসী নন। আপাদমস্তক গান্ধীবাদী। হিমাংশু কুমারের বাবা বিনোবা ভাবের শিষ্য ছিলেন। খুব অল্প কিছুদিনের জন্য উত্তরপ্রদেশে ভূমি সংস্কার দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি তাঁর বাবার মুখে শুনেছিলেন,  মহাত্মা গান্ধীর বলা কথা: “যুবকদের গ্রামে গিয়ে কাজ করা উচিত। নাহলে গনতন্ত্র গুন্ডাতন্ত্রে পরিণত হবে।”

হিমাংশু বলছেন, আমি বিয়ের ২০ দিন পরেই দিল্লি থেকে নববধূকে নিয়ে ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া গ্রামে একটা গাছের নীচে বাসা বেঁধে থাকতে শুরু করি। ধীরে ধীরে সেখানে একটি আশ্রম গড়ে তুলেছিলাম আমরা। আমরা আদিবাসীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পঞ্চায়েতি রাজ, আইনি অধিকারের পাঠ শেখাতাম। সেই হিমাংশু কুমারের গান্ধীবাদী আশ্রম অশোক স্তম্ভ লাগানো ইউনিফর্ম পরে আমাদের রাষ্ট্রের পুলিশ গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

সূর্য সেন ভবনের মঞ্চে সারি দেওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দিকে তাকিয়ে হিমাংশু বলছেন,  হয়তো এই শহীদেরা ভাবছেন এই স্বাধীনতার জন্যই কি আমরা  ফাঁসির দড়ি বরণ করে নিয়েছিলাম?

হিমাংশু কুমার বলে চলেছেন, আপনারা ভাবছেন এই লড়াইটা মাওবাদীদের সঙ্গে, এই লড়াইটা শুধু  বাস্তারে। ভুল। এই লড়াইটা ক্রমশ বাড়বে।  কর্পোরেটের আগামী লক্ষ্য গোটা কৃষির উপর দখল নেওয়া। সুতরাং বাস্তারের আক্রমণটা কেবলমাত্র বাস্তারে আটকে থাকবে না।

হিমাংশু কুমার গান্ধীবাদী হওয়া সত্ত্বেও মাওবাদীদের জমি বাঁচানোর নৈতিক লড়াইকে সমর্থন করেন। একদা এক সরকারি আধিকারিক তাঁকে বলেছিলেন, মাওবাদী মুক্ত মানেই সেখানে শান্তি আছে। তিনি বলেছিলেন,  যদি কোনো এলাকায় ন্যায় না থাকে তাহলে সেখানে শান্তি থাকার প্রশ্ন কোথায়? আমরা শান্তির জন্য কাজ করছি না। আমাদের লড়াই ন্যায্যতার জন্য। যেখানে অন্যায়  চলে এবং প্রতিবাদ না থাকে তাহলে সেটা শান্তি আছে মনে হতে পারে। কিন্তু সেটা আসলে শান্তি নয়। শাসকের চাপিয়ে দেওয়া নীরবতা।

সংযত গলায় হিমাংশু কুমার বলেন, রাষ্ট্র পঁচিশ হাজার সেনা নামিয়ে পাহাড়  জঙ্গল ঘিরে ফেলার পরও যখন হিভমাকে ধরতে পারে না, তখন বুঝতে হবে রাষ্ট্র পরাজিত হচ্ছে। প্রতিরোধ জয়ী হচ্ছে।

কালবুর্গী, গোবিন্দ পানসারে, গৌরী লংকেশ, স্ট্যান স্বামী জেলের ভেতরে অথবা বাইরে খুন হয়ে যান। তবুও অকুতোভয় হিমাংশু কুমার, সোনি সোরিরা বাস্তার থেকে কলকাতা মানুষের অধিকারের কথা বলে চলেন। কারণ লড়াইটা ন্যায্যতার জন্য। ভবিষ্যতের ফ্যাসিবাদকে রুখতে এরকম অনেক অনেক হিমাংশু কুমারদের প্রয়োজন আমাদের।

পুনশ্চ : নম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু সিপিআই ( মাওবাদী) র সাধারণ সম্পাদক ২১ শে মে’ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা নকল এনকাউন্টারে নিহত হয়েছেন আরও ২৭ জন মাওবাদী কর্মীসহ ছত্তিসগড়ের অবুঝ মারে। এই এনকাউন্টারের পরেই খনিজ সম্পদ লুটের জন্য কর্পোরেটদের ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী, এই অনুমোদনের ফলে ৯৩৭ হেক্টর বনভূমি অপসারণ এবং ১.২৩ লক্ষ গাছকাটার পথ প্রশস্ত হবে।( তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস) এবার অঙ্কটা মেলানোর দায়িত্ব আপনাদের ওপর, ছেড়ে দিলাম।

PrevPreviousডা. দেবাশিস হালদারকে তাঁর নির্ধারিত মেরিটলিস্ট অনুযায়ী পাওয়া পদে নিয়মমাফিক পুনর্বহাল করা হোক।
Nextঊর্মিমুখর: তৃতীয় পরিচ্ছেদNext
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

হীরক রানীর রাজ্য

October 7, 2025 No Comments

আপনি একজন নাগরিক। মিছিল, মিটিং,সভা করার আপনার আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। এমনকি একথাও স্বীকৃত বিষয় জনজীবন ব্যহত বা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত না করে কোনো প্রতিবাদ করলে পুলিশ

BNSS 170 used to curb Abhaya Struggle

October 7, 2025 No Comments

October 5, 2025 Press Release Today, October 5, 2025, three active members of Abhaya Manch—Swapan Mondal, Sutapa Bhattacharya, and Debjyoti Dasgupta—arrived near the gate of

বৃহত্তর কলকাতার জলযন্ত্রণা: কিছুই কি করার নেই?

October 6, 2025 No Comments

কথারম্ভঃ অতীতে আমরা পরিবেশ দূষণ জনিত (Environmental Pollution) পাহাড় ও সমতলে মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি (Cloud Burst) ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস (Tidal Waves) বৃদ্ধি; সিকিম ও দার্জিলিং পাহাড়ের

ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারার অপপ্রয়োগে গ্রেপ্তার দুই প্রতিবাদী

October 6, 2025 No Comments

প্রেস বিজ্ঞপ্তি আজ ৫ই অক্টোবর ২০২৫, অভয়া মঞ্চের তিনজন সক্রিয় সদস্য, স্বপন মণ্ডল, সুতপা ভট্টাচার্য এবং দেবজ্যোতি দাশগুপ্ত, পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনের কার্ণিভাল

৪০টি নৌযান এবং ৬২৩টি মেয়ে

October 6, 2025 No Comments

পাশের বাড়ির বৌদি, বিগত যৌবনা হলেও সাজগোজ করতে কিঞ্চিৎ ভালোবাসেন। আপনি আড় চোখে দেখেন আর পাড়ার চায়ের ঠেকের খাপ পঞ্চায়েতে তাকে আখ্যা দেন ঢলানি মেয়েছেলে

সাম্প্রতিক পোস্ট

হীরক রানীর রাজ্য

Kushal Debnath October 7, 2025

BNSS 170 used to curb Abhaya Struggle

Abhaya Mancha October 7, 2025

বৃহত্তর কলকাতার জলযন্ত্রণা: কিছুই কি করার নেই?

Bappaditya Roy October 6, 2025

ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারার অপপ্রয়োগে গ্রেপ্তার দুই প্রতিবাদী

Abhaya Mancha October 6, 2025

৪০টি নৌযান এবং ৬২৩টি মেয়ে

Dr. Samudra Sengupta October 6, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

581786
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]