শেকড় কেটে ঘর ভাসিয়ে দেশকে ছেড়ে বেরোয় কে আর
তবুও জীবন নিরুদ্দেশের লক্ষ্যে নেওয়ার মানুষ দেদার,
জন্মভূমি জন্ম থেকেই ভিত করে দেয় চোরাবালি,
ঘর বলে স্রেফ খড়কুটো পায়, পুড়তে লাগে মিনিট
খালি,
আবছা ভীষণ মাতৃভূমি কিংবা দেশ-এর কী হয় মানে,
হয়তো সে দেশ আর না সে দেশ , অতীত থেকে যে দেশ জানে,
সংখ্যাগুরুর নজর গেছে সংখ্যালঘুর সংখ্যা হ্রাসে,
দেশের শাসক এবং পুলিশ মদত জোগান সে সন্ত্রাসে,
তবেই মানুষ ছাড়তে পারে চেনা পাড়া, মাঠ ও নদী,
ঠিক করে ভিড় দেশান্তরীর অনেক দূরের রাজার গদি,
ছোট্ট থেকে থাকার ভূমি হঠাৎ করেই নথির দোষে,
বৃদ্ধকালে পড়তে পারে খেদিয়ে দেওয়া রাষ্ট্র-রোষে,
বাধ্য হয়েই বাঁধাছাঁদা, সময় যখন বাধ্য না আর
থাকার যতই করুক না মন, মরলে তো সেই ইচ্ছে বেকার
নিজের মতো আরেকজনের দেখলে পরে লাশ দুয়ারে
ভীষণ পড়ে আতান্তরে মানুষ তখন বাস্তু ছাড়ে।
এসব মানুষ যেইখানে যায়, চায় না তাকে সেই ভূমিও,
ফিরবে না দেশ যেই বিদেশী, কোনো দেশেই নয় সে প্রিয়,
কিন্তু তারও নেই যে উপায়, ফেরার সেতু সবই পোড়া,
কাঁটাতারের এপার ওপার আমরা সে নয়, শুধুই ‘ওরা’,
রোজ খোয়ানো সম্মানে তার শিরদাঁড়াটি নুইয়ে বাঁচা,
জাল নথিতে অতীত ঢেকে ভবিষ্যৎও খুইয়ে বাঁচা,
আজ ছাড়া তার কিচ্ছুটি নেই, স্বপ্ন আশার শূন্য থলি,
লজ্জা-শরম সব খেতে চায় রাবণ-চিতা পাকস্থলী,
সেই নারীকে মাংস ভেবে সহজে কেউ শরীর লোটে,
সেই পুরুষের নেই-সুযোগে খুব খাটাবে কেউ ফোকটে,
পর্দানশীন পরিচয়ে ছায়াও দেখা অবিশ্বাসে,
ভয়ের থিতু আবাস মনে, কখন দোরে পুলিশ আসে।
চরৈবেতির মন্ত্র ভালো , ফেরার যদি সাকিন জানা,
ঘর ভেঙে যে দেশ ছেড়েছে, তার কাছে ভুল মন্ত্রখানা।
সারা জীবন ঘর খোঁজে সে, ঠাঁইনড়া নয় যেই ঠিকানা।