বেহালা শুনতে পাও?
করুণ মুর্ছনায় জনগণমন বুঝে বিষাদ-প্রসূতি না,
যে সুর স্বার্থপর নিজেতে মগ্ন থাকে নগ্ন আত্মরতিতে
সহমর্মিতা বিনা,
সে সুর শুনতে পাও?
আর্ত’র চিৎকার, হাহাকারে শেষ শ্বাসে কেউ তো বাঁচাও..
সেই সব স্বর চাপা পড়ে যাতে কানে,
সেই হেতু যে বেহালা বেজে ওঠে ‘ আল ইইজ ওয়েল’এর বিকৃত ভানে,
তাকে কি শুনতে পাও?
জিজ্ঞেস করা বৃথা, সে সুর বাজছে আজ অলিতে গলিতে,
উৎসব না কমে সামান্য প্রজাদের শবের বলিতে,
ক’লাখ দিলেই যেটা সামলানো যাবে,
শুনতে চাও কী না চাও তাতে যায় আসে না,
চ্যানেলে চ্যানেলে সেই বাজনা শোনাবে।
এ বেহালা এক সুরে বেজে গেছে আদিতম সাম্রাজ্য থেকে,
বন্যা অনাবৃষ্টি দুর্ভিক্ষ মারী বা বিদেশী আক্রমণে
দূউর থেকে প্রজাদের লাশ-ঢিবি দেখে
সিংহাসন আড়মোড়া ভেঙে
নির্বিকার মন দেন বেসুরো সে বেহালার ছড়ে বরাবর,
শহরে আগুন জ্বলে, গ্রাম খায় আগ্রাসী বৃষ্টি বা নদী,
তছনছ করে যায় সংসার ঝড়,
রাজার আমোদে তাতে ছেদ পড়ে না তো,
নাচাগানা চলে ঠিক আগেকার মতো,
নগর ধ্বস্ত হলে কী আসে যায়, প্রাসাদ প্রমোদে মেতে থাকে অবিরত।
ভোটে যারা জিতে যান, তাঁরাও তো রাজা,
গণের তন্ত্র স্রেফ ভোটের বকুনি,
উৎসবী বেহালাটি তাই বেজে চলে,
যতই শবের খোঁজে উড়ুক শকুনি।
অগত্যা চোখে জল , বুকে হাহাকার নিয়ে,
বাধ্যত জনগণ সে বেহালা শুনি।