বিগত ৫ অক্টোবর কুলতলীতে কৃপাখালি গ্রামে মাত্র নয় বছরের এক বালিকার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে! তা আমরা সকলেই জানি। এই ঘটনা আমাদের এই রাজ্যে প্রায় রোজ হয়ে চলা, ক্রমাগত ঘটে চলা একটি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র’, যা আমাদের শঙ্কিত করে তুলেছে।
প্রতিটি ঘটনার মতো এই ঘটনাতেও পুলিশ তার কাজে গড়িমসি করেছিল। বাচ্চাটি নিখোঁজ হবার পরে বাবা মা থানায় গেলে রিপোর্ট নেবার বদলে, তাকে খোঁজার বদলে বাবা মাকে অন্য পুলিশ থানায় গিয়ে রিপোর্ট করার পরামর্শ দেয়। গড়িয়ে যায় মূল্যবান চারটি ঘন্টা। অবশেষে গ্রামবাসীদের চেষ্টায় দুষ্কৃতী ধরা পরে। ততক্ষণে আমাদের ‘মা লক্ষ্মী’ তাঁর মা বাবার কোল ছেড়ে চলে গেছে। নৃশংস ভাবে ধর্ষণ ও খুন করা হয়।
অধিকাংশ ঘটনাই আমাদের জানা। কৃপাখালির কাছে মহিষমারীর হাটে ‘মা লক্ষ্মী’র সঠিক বিচারের দাবীতে আজ দুপুর তিনটের সময় স্থানীয় গ্রামবাসীদের পরিচালনায়, ‘মা লক্ষ্ণী বিচার মঞ্চ’ স্থাপন করে একটি বিশাল জনসভার আযোজন করা হয়েছিল। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন বহু গণ সংগীত শিল্পী, এই অনুষ্ঠানে তাঁরা তাদের প্রতিবাদ গানের মাধ্যমে মানুষের কাছে তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন বহু অঙ্কণ শিল্পী, উপস্থিত ছিলেন নাট্যকর্মী চন্দন সেন। উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ কান্তি গাঙ্গুলী, সুজন চক্রবর্তীর মতো ব্যক্তিত্ব।
আমি আজ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের তরফ থেকে কুলতলীতে, মহিষমারীর হাটে উপস্থিত ছিলাম। সেখানে উপস্থিত থেকে জানতে পারি পুলিশ শুধু সেই দিনই তাদের কাজে গড়িমসি করেছিল। অথচ তার পর থেকে সরকারের অঙ্গুলিহেলনে সমস্তরকম প্রতিবাদী আন্দোলনকে চাপা দিতে চাইছে। গ্রামবাসীদের আর্তনাদ আমরা শহরে থেকে জানতে পারি না। গ্রামবাসীদের উপর প্রতি মুহূর্তে শাসকদলের সমর্থক এবং পুলিশ প্রশাসন হামলা চালাচ্ছে। যে যেখানে প্রতিবাদ করছে থানায় ডেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাবা মায়ের উপর ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছে। বাবা মা’র পুলিশ প্রশাসনের এবং এই সরকারের উপর আস্থা নেই। তাঁরা, তাদের ‘মা লক্ষ্মী’র বিচার চাইছে।
আজ গ্রাম আর শহর এক সাথে আওয়াজ তুলছে। বিচারের। আকাশে আজ কেবল মানুষের কণ্ঠস্বর, ‘বিচার চাই’…