হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি এবং কোভিড-১৯ এর মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে পার্থক্য আছে। যেমন।
সিভিয়ারিটি বা জটিলতার দিক থেকে এইচএমপিভি হালকা থেকে তীব্র মানের জটিলতা তৈরি করতে পারে। সাধারনত বাচ্চা এবং বয়স্ক ব্যক্তি যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের বেশি সমস্যা হয়। খুব কম ক্ষেত্রে জীবন সংশয় হতে পারে।
কোভিড-১৯ হালকা থেকে তীব্র আকার ধারণ করতে পারে, এমনকি সুস্বাস্থ্যের অধিকারীদেরও মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
মৃত্যুহার
এইচএমপিভির ক্ষেত্রে মৃত্যু হার খুবই কম। আগে থেকে কোনও সমস্যা থাকলে বা খুব কম ও বেশি বয়সীদের ছাড়া মৃত্যুর আশংকা প্রায় থাকে না।
কোভিড-১৯ এ মৃত্যুহার যে যথেষ্ট তা আমরা অতিমারীর সময় সবাই জেনে গেছি। যদিও টিকাকরণ এবং এবং ভাইরাসের গঠনের ওপর মৃত্যুহার কিছুটা নির্ভর করে।
হাসপাতালে ভর্তি
এইচএমপিভিতে হাসপাতালে ভর্তির হার খুব কম। বাচ্চা ও বয়স্ক ছাড়া ভর্তির দরকার পড়ে না।
কোভিড-১৯ এ ছেলেমেয়ে, কম বা বেশি বয়স নির্বিশেষে যে কাউকেই ভর্তি করার দরকার হতে পারে।
সংক্রমণের পদ্ধতি
হাঁচি-কাশি , নিকট সান্নিধ্য এবং সংক্রমিত জায়গার মাধ্যমে এইচএমপিভি সংক্রমণ ছড়ায়।
কোভিড-১৯ এও হাঁচি, কাশি, সংক্রমিত জায়গার থেকে ছড়ায়। তবে বাতাসেও এই ভাইরাস অনেক বেশি দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।
সংক্রমণ
এইচএমপিভির সংক্রমণ মাঝারি মানের।
কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের হার অনেক বেশি। তবে ভাইরাসের চরিত্র অর্থাৎ ডেল্টা নাকি ওমিক্রন তার ওপরেও কিছুটা নির্ভর করে।
সাধারণ উপসর্গ
এইচএমপিভির উপসর্গ হল জ্বর, কাশি, নাকবন্ধ, গলা ব্যথা, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট।
কোভিড-১৯ এর উপসর্গ হল জ্বর, কাশি, ক্লান্তি, মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাওয়া, কোনও কিছুর গন্ধ না পাওয়া, মাথার যন্ত্রণা।
জটিল উপসর্গ
এইচএমপিভির ক্ষেত্রে ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, শ্বাস নিতে না পারা।
কোভিড-১৯ এ দেখা দেয় জটিল আকারের নিউমোনিয়া, সাঙ্ঘাতিক রকমের শ্বাসকষ্ট, ব্লাড ক্লট এমনকী মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর।
স্বতন্ত্র বিশেষত্ব
এইচএমপিভিতে গন্ধ না পাওয়া এবং ব্রংকাইটিস, মূলত শিশুদের হয়।
কোভিড-১৯ এ স্বাদ, গন্ধ দুটোই পাওয়া যায় না। যদিও কিছুটা ভাইরাসের চরিত্রের ওপর নির্ভর করে।
অসুস্থতার স্থায়িত্ব
এইচএমপিভির থেকে পুরো সেরে উঠতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগে।
কোভিড-১৯ এ কোন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ তার ওপরে স্থায়িত্ব নির্ভর করে।
দীর্ঘস্থায়ী জটিলতা
খুব কম ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে সমস্যা হয় এইচএমপিভি সংক্রমণে।
কোভিড-১৯ এ পরবর্তীকালে হার্টের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, নার্ভের সমস্যা এমনকী ক্লান্তি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ফের সংক্রমণের আশংকা
এইচএমপিভির সংক্রমণ হতেই পারে।
কোভিড-১৯ এ ফের সংক্রমণের আশংকা থাকেই। যদিও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টের ওপর কিছুটা নির্ভর করে।
মোদ্দা কথা HMPV ভাইরাস নিয়ে অযথা ভয় পাবেন না।