ছোট্ট তামান্নার নারকীয় খুন, ল কলেজে ধর্ষণ ইত্যাদি তৃণমূলীয় নানান সুকীর্তির খবরে এদের দুর্নীতির কীর্তি ম্লান। তবু একটা গুরুত্বপূর্ণ, মহান দুর্নীতির খবর না দিয়ে পারছি না। দুর্নীতি ঈশ্বরের উপাসনালয়কে ঘিরে। আমি ঈশ্বর বিশ্বাস করি না। তাই ঈশ্বরই এর বিচার করবেন এমন ভরসা নেই। এখন আপনারাই বিচার করুন।
দীঘাতে রাজ্য সরকার সরকারি টাকায় জগন্নাথ দেবের যে মন্দির নির্মাণ করেছেন, আইনত সেটা করা যায় না, সে কারনেই মন্দিরের নামের সঙ্গে একটা কালচারাল সেন্টার জুড়ে দিয়ে সেটাকে বৈধ করার চেষ্টা হয়েছে, একথা সবাই জানে। এখন তৃণমূলের আমলে কোটি কোটি টাকার কোন প্রকল্প হবে অথচ ঘাপলা হবে না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন ভারি। কিছু সন্দেহজনক কথা বাতাসে ঘুরছিল এবার কিছুটা প্রকাশ্যে এসেছে।
প্রথমত এ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সরকারি সংস্থা হিডকোকে মুখে মুখে, সম্পূর্ণ অলিখিতভাবে। হিডকো কেন জনগণের পয়সায় একটি ধর্মের উপাসনালয় নির্মাণ করেছে এর উত্তরে তাদের বক্তব্য এটা সরকারি সিদ্ধান্ত, অথচ তারা কাগজে কলমে কোনো সরকারি নির্দেশ দেখাতে পারেনি। যাই হোক পরের বিষয়টি আরও ভয়াবহ।
নানান হিসেবনিকেশ করে এই মন্দির নির্মাণের বাজেট ঠিক হয়েছিল ১১৩ কোটি টাকা। কিন্তু টেন্ডার ডেকে কোনো এক অজ্ঞাতকুলশীল ‘সুবীর কন্সট্রাকশন’ কোম্পানিকে বরাত দেওয়া হল ১৪৩ কোটি টাকায়। তার চেয়েও আশ্চর্যের বিষয় কাজ শুরুর কিছুকাল পরে সেটাকে বাড়িয়ে দেওয়া হল ২০৪ কোটি টাকায়। আরও আশ্চর্য কাজ শেষ হওয়ার মুখে সেই বাজেট বেড়ে হল ২৪২ কোটি টাকা। অথচ সরকারি নিয়্মমতে একবার কাউকে টেন্ডার ডেকে কোনো একটা নির্দিষ্ট টাকায় কাজের বরাত দেওয়া হলে সেই টাকা আর বাড়ানো যায় না। তাহলে এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে কোটি কোটি বেড়ে গেল কোন মন্ত্রবলে?
এই সকল প্রশ্ন করা হয়েছে হিডকোকে। প্রশ্ন করেছেন রাজ্যে সরকারেরই প্রিন্সিপাল অ্যাকাউনটেন্ট জেনারেল (অডিট ১)। হিডকো আজ পর্যন্ত কোনো উত্তর দেয়নি।
এই সম্পর্কে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছেন বরিষ্ঠ সাংবাদিক ও পত্রিকা সম্পাদক সুমন চট্টোপাধ্যায় তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে। দেখে নেবেন।
আমি শুধু ভাবি, একটা দলের রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য হল চুরি করে, দুর্নীতি করে যেন তেন প্রকারেন টাকা তোলা, সরকারি টাকার সামান্য কিছু ভগ্নাংশ জনগণের ভেতর বিলি করে ভোট কেনা এবং পুনর্নির্বাচিত হয়ে আবার চুরি করা।
আর কত চুরির গান লিখব আমি!
পুরোনো কয়েকটা চুরি গান যারা শোনেননি তাদের জন্য লিংক।










