Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

চিমা ওকোরি, লিনাস পলিং। ভিটামিন! ভিটামিন!!(তৃতীয় পর্ব)

IMG-20200216-WA0003
Dr. Bishan Basu

Dr. Bishan Basu

Cancer specialist
My Other Posts
  • February 17, 2020
  • 9:53 am
  • 14 Comments

১৯৬৬ সাল। মার্চ মাস। লিনাস পলিং-এর বয়স তখন পঁয়ষট্টি। বিশ্বের ছোটবড় সব পুরস্কার-সম্মাননা, কোনোটিই পেতে বাকি নেই আর – আগেই তো বলেছি, দু-দুখানা নোবেল পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে – দুটিই এককভাবে। গবেষণা তো আছেই, তার সাথে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিজম – সেসময়ে এই গ্রহের সবচেয়ে পরিচিত পাব্লিক ফিগারদের অন্যতম তিনি। অত্যন্ত সম্মানের কার্ল নিউবার্গ মেডেল সেবার তুলে দেওয়া হবে তাঁর হাতে – নিউ ইয়র্ক শহরে।

বলতে উঠলেন পলিং – একসময় বললেন – দেখতে দেখতে এতগুলো বছর কেটে গেল, কত কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে, কত কাজ এখনও ধরাই হল না – আরো কিছু বছর বাঁচতে চাই, না, শুধু বেঁচে থাকা নয়, আরো কয়েকটা বছর এরকমই কাজ করে যেতে চাই – বিজ্ঞানের যেসব গবেষণা চলছে এখন পুরোদমে, সেগুলো শেষমেশ কী দাঁড়ালো, যদি দেখে যেতে পারতাম – খুব বেশীদিন নয়, আরো পঁচিশ বছর যদি সক্রিয় থাকতে পারি এভাবেই…

বাড়ি ফিরে কদিন বাদে একখানা চিঠি পেলেন – চিঠির প্রেরক জনৈক আরউউন স্টোন – পলিং-এর সেদিনের বক্তব্য শুনেছেন তিনি – হাজির ছিলেন অডিটোরিয়ামে – কিন্তু, পলিং-এর পাশে ভিড়ভাট্টায় পৌঁছাতে পারেন নি। চিঠির মূল কথা – হ্যাঁ, পলিং অবশ্যই আরো পঁচিশ বছর বেঁচে থাকতে পারেন, পঁচিশ কেন, তার চেয়ে ঢের বেশীদিন অব্দি বেঁচে থাকতে পারেন – যদি তিনি নিয়মিত ভিটামিন সি ট্যাবলেট খেতে থাকেন।

চমৎকৃত হলেন পলিং – যুগন্ধর বিজ্ঞানীরাও শেষমেশ আমার-আপনারই মতো মানুষ মাত্র – ভিটামিন ক্যাপসুল খেয়ে দীর্ঘ নীরোগ সক্রিয় জীবনের প্রলোভন তাঁদেরও টানে – আর ভিটামিন যে খুব উপকারী জিনিস, এ তো সবাই জানে!!

অতএব, ভিটামিন সি খেতে শুরু করলেন তিনি – দিনে পাঁচশো কি ছশো মিলিগ্রাম। মাথায় রাখুন, আমাদের খাবারে প্রাত্যহিক ভিটামিন সি-এর উপস্থিত থাকার প্রয়োজনীয়তা (আরডিএ অর্থাৎ রেকমেন্ডেড ডায়েটারি এলাউয়েন্স) মাত্র ষাট মিলিগ্রাম। অর্থাৎ শরীরের রোজকার প্রয়োজন তার চাইতে কিছু কম – বেশ কিছু মার্জিন রেখে ওই আরডিএ-র হিসেব।

কিন্তু, যেটুকু দরকার বা যেটুকু খাওয়ার কথা, শুধু সেটুকুনি খেলে বাড়তি উপকার হবে কোত্থেকে – বেশী বেশী উপকার পেতে হলে বেশী বেশী খেতে হবে – আর ভিটামিন তো উপকারী জিনিস, বেশী খেলে ক্ষতি নেই – কাজেই, ওই ধার্যমাত্রা ধরে খেলে চলবে না, পলিং-কে খেতে হবে দৈনিক ধার্যমাত্রার কয়েকগুণ বেশী – যাকে বলে মেগাডোজ – পলিং-কে অন্তত এমনটাই বোঝালেন আরউইন স্টোন।

স্টোন-এর এমন বোঝানোয় অবাক হওয়ার কিছু নেই – কেননা, পলিং তাঁকে বায়োকেমিস্ট বলে উল্লেখ করলেও, উচ্চতর বিজ্ঞানশিক্ষা থেকে স্টোন ছিলেম বহুদূরে – কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যেটুকু পেয়েছিলেন বলে জানাতেন, তার পুরোটাই ছিল গোলমেলে – এমনকি, নামের পরে পিএইচডি বলে যেটা লিখতেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছিল অস্বীকৃত। এহেন আরউইন স্টোন ভুলভাল কথা বলতেই পারেন, কিন্তু লিনাস পলিং কী করে সেসবে বিশ্বাস করে বসলেন? আগের পর্বেই তো বলেছি, তিনি ঠিক কোন মাপের বিজ্ঞানী ছিলেন – এমন বিজ্ঞানীও ভিটামিন ক্যাপস্যুলের হাতছানিতে পথভ্রষ্ট হন! হতে পারেন!!

সে যা-ই হোক, পলিং ভিটামিন সি খেতে থাকলেন, খেয়েই চললেন – শুরু করলেন ধার্যমাত্রার দশগুণ বেশী দিয়ে, উত্তরোত্তর আরো বেশী বেশী পরিমাণে – ছশো দিয়ে শুরু, বাড়াতে বাড়াতে শেষে দিনে আঠারো হাজার মিলিগ্রাম – দৈনিক ধার্যমাত্রার তিনশোগুণ। এবং, আপনি বিশ্বাস করুন বা না-ই করুন, লিনাস পলিং, জিনিয়াস বিজ্ঞানী বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, এই বিপুল পরিমাণ ভিটামিন সি খেয়ে তিনি দিব্যি আছেন – তাঁর ভালো থাকার রহস্য, আর কিছুই নয়, স্রেফ এই ভিটামিন সি ট্যাবলেট। পলিং-এর নিজের কথায়, ভিটামিন সি খেয়ে এত ভালো বোধ করছি, এবং যতো বেশী পরিমাণে খাচ্ছি, ততোই ভালো – আগে বছরের মধ্যে বেশ কয়েকবার সর্দি-কাশি ঠাণ্ডা-লাগা লেগেই থাকত – সেসব স্রেফ ভ্যানিশ। এমনও বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, যে, বেশী বেশী ভিটামিন সি পৃথিবীর এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল থেকে, অন্তত প্রথম বিশ্ব থেকে তো বটেই, এই সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বর-কে স্রেফ ভ্যানিশ করে দিতে পারে।

লিনাস পলিং নিয়ে এত লম্বা কাহিনী ফেঁদে বসার জন্যে আপনি বিরক্ত হতেই পারেন। কিন্তু, আমার যুক্তিটাও জানিয়ে দিই। আমাদের ভিটামিন- মাল্টিভিটামিন-অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ক্যাপসুল প্রেমের ইতিহাসটি তেমন সরলরৈখিক নয় – তার ঘোলাটে ইতিহাসের মধ্যে মিশে আছে বহু বিভ্রান্তি, ইচ্ছাকৃত তথ্যবিকৃতি, বৃহৎ মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেট স্বার্থ। আর সেই ইতিহাসের সূচনাপর্বে জড়িয়ে গিয়েছে এই জিনিয়াস বিজ্ঞানীর নাম। মাল্টিভিটামিন-ম্যানিয়ার ইতিহাসের ধারাপথ খুঁজে দেখতে চাইলে পলিং-এর কাহিনী বোঝা জরুরী।

যাক সে কথা, আপাতত মূল গল্পে ফিরি। না, পলিং-এর ভিটামিন-প্রেমের পিছনে বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ ছিল না একেবারেই। ষাটের দশকের শেষাংশ, যেসময় পলিং উচ্চস্বরে ভিটামিন সি ট্যাবলেটের গুণকীর্তন করছেন, তার চেয়ে অনেক আগে থেকেই ভিটামিন সি খেলে ঠাণ্ডা-লাগা সারে, এমন ধারণা চালু ছিল (আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন, এখনও সে ধারণা রয়ে গেছে) – কিন্তু, পলিং-এর বিভ্রান্তির পঁচিশ-তিরিশ বছর আগেই রীতিমতো বড় স্কেলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রমাণ করে দেওয়া গিয়েছিল, যে, না, ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্টের সাথে ঠাণ্ডা-লাগা বাড়াকমার কোনো যোগাযোগ নেই। কিন্তু,,পলিং-কে আটকে রাখে কে!! তিনি তখন ভিটামিন সি খাচ্ছেন, সবাইকে খেতে উদবুদ্ধ করছেন – নিজের পরিচিতির পুরোটাই ব্যবহার করছেন ভিটামিন সি-র গুণাগুণ প্রচারের কাজে।

১৯৭০ সালে প্রকাশিত হল লিনাস পলিং-এর বই, ভিটামিন সি ও ঠাণ্ডা-লাগা (ভিটামিন সি অ্যান্ড কমন কোল্ড) – প্রকাশিত হওয়ামাত্রই বেস্টসেলার। এমন জগদবিখ্যাত বিজ্ঞানী, এত পরিচিত ব্যক্তিত্ব – আর এমন বিরক্তিকর অসুখের এত সরল সমাধান – দিনে ৩০০০ মিগ্রা ভিটামিন সি ট্যাবলেট – ব্যাস, ঠাণ্ডা-লাগা সর্দি-কাশি-জ্বর স্রেফ ভ্যানিশ!! এই বইয়ের কাটতি রোখে কে!!

হুড়হুড় করে বাড়ল ভিটামিন সি ট্যাবলেটের বিক্রি – বই প্রকাশের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাজারে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্টের বিক্রি বাড়ল দ্বিগুণেরও বেশী – দোকানদারেরা ওষুধ জোগান দিয়ে উঠতে পারছিলেন না – কয়েকবছরের মধ্যে বিক্রি বেড়ে হল প্রায় চারগুণ – উল্লসিত ভিটামিন প্রস্তুতকারক কোম্পানিরা এই পরিস্থিতিকে নাম দিলেন ‘দ্য লিনাস পলিং এফেক্ট’ – বইপ্রকাশের বছরদুয়েকের মধ্যেই দেখা গেল, প্রায় পাঁচ কোটি মার্কিনী ভিটামিন সি ট্যাবলেট খাচ্ছেন – দেশের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ – প্রতি চারজনে একজন। পাল্লা দিয়ে বাড়ল বইয়ের বিক্কিরিও – তিনবছরের মধ্যে পলিং-এর বই ছাপা হল চারবার – পরিবর্ধিত সংস্করণে পলিং আর নিজেকে শুধুমাত্র সর্দি-কাশি-জ্বরে সীমাবদ্ধ রাখলেন না – জানালেন, বিশ্বজুড়ে যে ফ্লু-তে লোকজন বেঘোরে মারা যাচ্ছে, তারও সুরাহা মিলতে পারে, হ্যাঁ, ওই বেশী বেশী ভিটামিন সি ট্যাবলেটেই।

পলিং-এর একের পর এক চাঞ্চল্যকর দাবী, ভিটামিন নিয়ে দেশজোড়া আলোড়ন – চিকিৎসক-গবেষকরা বারবার বললেন, এর পেছনে কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই, কিন্তু সেকথা শুনছে কে!! অগত্যা গবেষকরা নতুন করে পরীক্ষা করলেন – মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মোক্ষম পরীক্ষা – দুদল স্বেচ্ছাসেবক – একদল পলিং-এর কথামতো ভিটামিন সি ট্যাবলেট খেতে থাকলেন, আরেকদল একইরকম দেখতে চিনি দেওয়া ট্যাবলেট – দুদলকেই সর্দি-জ্বর ভাইরাসের মধ্যে ফেলা হল – শেষমেশ দেখা গেল, যা ভাবা গিয়েছিল, তা-ই – সর্দি-জ্বর ঠেকানো বা সারানো, কোনো ক্ষেত্রেই ভিটামিন সি ট্যাবলেটের কোনো ভূমিকা নেই। কিন্তু, পলিং মানলে তো!! সাধারণ সর্দি-জ্বর থেকে শুরু করে তিনি পৌঁছেছেন বিপজ্জনক ফ্লু-তে, সেখান থেকে যাবতীয় সংক্রামক ও জীবাণুঘটিত ব্যাধি – যক্ষ্মা কিম্বা সিফিলিস বা কুষ্ঠ – সবকিছু ঠেকাতেই তাঁর পথ একটাই – ভিটামিন সি মেগাডোজ। এত কিছুর সমাধান এই পথে – আর যে অসুখের সমাধান কেউই গুছিয়ে দিতে পারছে না, সে অসুখ? তাহলে কি ক্যানসারের উত্তরও ভিটামিন সি-তেই মিলবে? ব্যাপারটা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবছিলেন লিনাস পলিং – ভাববেন না-ই বা কেন – জিনিয়াস আর পাগলামোর মাঝের সীমারেখাটা যে ঠিক কোনখানে!! পাগলামি বা মতিভ্রম বাদ দিয়ে আর কী-ই বা বলা যেতে পারে এই আচরণকে – বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম বিজ্ঞানী যখন বিজ্ঞাননির্ভর তথ্যপ্রমাণের তোয়াক্কা না করেই অনর্গল বলে যেতে থাকেন স্রেফ নিজের অনুভবসঞ্জাত সিদ্ধান্তের কথা, আর সেই অনুভবের পেছনে পেশ করেন এমন কিছু এদিকসেদিক থেকে জোগাড় করা জোড়াতালি দেওয়া তথ্য, যার একটিও তেমনভাবে যাচাই করা নয়?

অতএব, পলিং, ১৯৭১ সালে দাঁড়িয়ে যখন ঘোষণা করলেন, যে, শুধুমাত্র ভিটামিন সি-এর মেগাডোজই (অর্থাৎ রোজকার ধার্য মাত্রার চাইতে বেশী, অনেক বেশী) ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা একধাক্কায় দশ শতাংশ কমিয়ে ফেলতে পারে, তার পেছনেও বিজ্ঞান বা তথ্যপ্রমাণ ছিল না – ছিল তাঁর নিজের ভরসা, এবং সেই ভরসাকে ঠেকনা দেওয়ার জন্যে এদিক-ওদিক থেকে খামচে জোগাড় করা গোলমেলে অর্ধসত্য। বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীমহলে দ্রুত শ্রদ্ধা আর সম্মানের আসন হারাচ্ছিলেন পলিং – কিন্তু, তিনি তখন প্রায় ভিটামিন প্রেমে মাতোয়ারা রাধার পর্যায়ে – তুচ্ছ কলঙ্কের তোয়াক্কা করেন না।

১৯৭১ সালেই লিনাস পলিং পেলেন এক চিঠি – প্রেরক জনৈক স্কটিশ ডাক্তার – ইউয়ান ক্যামেরন – গ্লাসগোর কাছে ছোট্ট এক হাসপাতালের সাথে যুক্ত। দাবী রীতিমতো চাঞ্চল্যকর – ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের দিনে দশ গ্রাম (দশ গ্রাম, অর্থাৎ দশ হাজার মিলিগ্রাম – মনে করিয়ে দেওয়া যাক, দৈনিক ধার্যমাত্রা ষাট মিলিগ্রাম) করে ভিটামিন সি ট্যাবলেট দিলে চমকপ্রদ কাজ হচ্ছে। পলিং প্রায় লাফিয়ে উঠলেন – নিজের পক্ষে প্রমাণ হাজির করার এ তো সুবর্ণ সুযোগ। তিনি স্থির করলেন, এই তথ্য নামী বিজ্ঞানের জার্নালে প্রকাশ করবেন – স্রেফ ক্যামেরনের নাম যদি যথেষ্ট ওজনদার না হয়, জুড়ে দেবেন নিজের নামটিও। হ্যাঁ, তিনি বাছলেন ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসের নিজস্ব জার্নালটিকেই – প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস – বিশ্বের অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল সেটি।

পলিং ছিলেন ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য – আর সেখানকার জার্নালে সদস্যদের পেপার সচরাচর রিজেক্ট করা হত না – একাডেমির অর্ধশতকের চেয়েও দীর্ঘ ইতিহাসে তেমন প্রত্যাখ্যানের ঘটনা ঘটেছিল মাত্র তিনবার – লিনাস পলিং-এর নাম চতুর্থ প্রত্যাখ্যানের ঘটনার সাথে যুক্ত হয়ে গেল। বিশ্বের বিজ্ঞানীমহলের সামনে পলিং-এর বেইজ্জতির চূড়ান্ত হল – তবুও, তিনি থামলেন না।

অবশ্য, একদিকে যেমন চূড়ান্ত উদ্ভাবনী শক্তি আর গভীর গবেষণা ছিল পলিং-এর বিশেষত্ব – আরেকদিকে, অর্ধপক্ক চিন্তাভাবনা তেমন গভীর অন্বেষণের পূর্বেই প্রকাশ্যে এনে ফেলে নিজের বিচারশক্তির বিষয়ে সবাইকে সন্দিহান করে তোলা – এ ছিল তাঁর চরিত্রের এক আশ্চর্য বৈপরীত্য।

কাজেই, এইবারের মতো না হলেও, বিজ্ঞানীমহলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ার অভিজ্ঞতা লিনাস পলিং-এর আগেও হয়েছিল – এবং ভিটামিন সি-এর নামগন্ধও যুক্ত ছিল না সে ঘটনায়।

(চলবে)

PrevPreviousনিরীহাসুরের নিশ্চিন্দিপুর
Nextসাতচল্লিশঃ আর্যতীর্থের কবিতাNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
14 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
AffiliateLabz
AffiliateLabz
5 years ago

Great content! Super high-quality! Keep it up! 🙂

0
Reply
বিষাণ বসু
বিষাণ বসু
Reply to  AffiliateLabz
5 years ago

অনেক অনেএএএক ধন্যবাদ।

পরবর্তী পর্বগুলোও পড়বেন, প্লীজ।

0
Reply
Arunachal Dutta Choudhury
Arunachal Dutta Choudhury
5 years ago

‘স্টোন-এর এমন বোঝানোয় অবাক হওয়ার কিছু নেই – কেননা, পলিং তাঁকে বায়োকেমিস্ট বলে উল্লেখ করলেও, উচ্চতর বিজ্ঞানশিক্ষা থেকে স্টোন ছিলেম বহুদূরে – কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যেটুকু পেয়েছিলেন বলে জানাতেন, তার পুরোটাই ছিল গোলমেলে – এমনকি, নামের পরে পিএইচডি বলে যেটা লিখতেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছিল অস্বীকৃত। এহেন আরউইন স্টোন ভুলভাল কথা বলতেই পারেন’

এই অংশটুকু কেমন চেনা চেনা লাগছে না?
আর ওই ভুয়ো পিএইচডি-ধারীর কথায় কিছু বিদ্বজ্জনের নাচানাচি দেখে পলিং-সুলভ মনে হচ্ছে। সত্যিই ইতিহাস এমনকী ছোট অকিঞ্চিৎকর ফ্রেমেও দিব্যি পুনরাবৃত্ত হয়!

0
Reply
বিষাণ বসু
বিষাণ বসু
Reply to  Arunachal Dutta Choudhury
5 years ago

একদম।

এজন্যেই তো ফলাও করে গল্পটা বলছি।

বিজ্ঞান, ভুয়ো বিজ্ঞান, বিজ্ঞান নিয়ে অন্ধবিশ্বাসকে ব্যবহার করা, কর্পোরেট মুনাফার লোভ – সবই মিলেমিশে আছে এই গল্পে – আর প্রাসঙ্গিকতায় সমকালীনও।

0
Reply
পরমেশ
পরমেশ
Reply to  Arunachal Dutta Choudhury
5 years ago

আবার? ???

0
Reply
বিষাণ বসু
বিষাণ বসু
Reply to  পরমেশ
5 years ago

????/

0
Reply
বিভাস সাহা
বিভাস সাহা
5 years ago

থ্রিলার কেও হার মানায়,আগ্রাসী ক্ষুধা নিয়ে পড়ছি, ভিটামিন প্রেমিকের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এত সুখপাঠ্য যে কোন বিষেষনই প্রযোজ্য নয়। আপনার লেখাগুলি সংকলিতকরে একটা বই প্রকাশ করুন বিষান বাবু, আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার নেই।

0
Reply
বিষাণ বসু
বিষাণ বসু
Reply to  বিভাস সাহা
5 years ago

অনেক অনেএএক ধন্যবাদ, আর ভালোবাসা।

এই লেখাটা অনেকগুলো পর্বে করার কথা ভেবেছি – আপাতত সেটা কীভাবে করা যাবে, তাই নিয়েই ব্যতিব্যস্ত – বইটইয়ের কথা মাথায় নেই এখুনি।

0
Reply
ASIT HALDER
ASIT HALDER
5 years ago

ভালো লাগছে। আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি পরবর্তী কিস্তির।

0
Reply
বিষাণ বসু
বিষাণ বসু
Reply to  ASIT HALDER
5 years ago

ধন্যবাদ।

আগামী সোমবারেই, আশা করছি…

0
Reply
দীপঙ্কর ঘোষ
দীপঙ্কর ঘোষ
5 years ago

বিববাবু আপনার লেখনীতে যথা পূর্বং তথা পরং মন্ত্রমুগ্ধ ।

0
Reply
বিষাণ বসু
বিষাণ বসু
Reply to  দীপঙ্কর ঘোষ
5 years ago

দীপঙ্করদা,

মন্ত্রমুগ্ধ করার মতো লেখনী তোমার – যেকোনো বিষয় স্রেফ লেখার গুণেই আচ্ছন্ন করতে পারে। সেই গুণ আমার নেই। সিরিয়াসলি বললাম।

0
Reply
ปั้มไลค์
ปั้มไลค์
5 years ago

Like!! Great article post.Really thank you! Really Cool.

0
Reply
เบอร์สวย
เบอร์สวย
5 years ago

I like this website very much, Its a very nice office to read and incur information.

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

সাধ

October 17, 2025 No Comments

আজ রাত্রে টের পেলাম, রসবেত্তা হয়ে উঠেছি, নিছক বারটেন্ডার নই, আমাকে নিপুণ কনোস্যেয়ার বা সুচারু মিক্সোলজিস্টও বলতে পারো দারুণ ককটেল এক, সোডিয়াম ভেপারের মাঝে কিছুটা

পাঞ্জাব –সাম্প্রতিক বন্যা ও কৃষির ভবিষ্যৎ

October 17, 2025 No Comments

খুব সম্প্রতি একটি সরকারি প্রকল্পের কথা কানে এলো – জিসদা খেত,উসদি রেত। কথাগুলো গুরুমুখী ভাষায় বলা হয়েছে তার মানে পঞ্জাব রাজ্য সরকারের ঘোষণা। এর অর্থ

৬ অক্টোবর কালা-দিবসে পঙ্কজ দত্তের ওপর পুলিশি হেনস্থা ও মানসিক অত্যাচারকে ধিক্কার

October 17, 2025 No Comments

আমরা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার চাই

October 16, 2025 No Comments

ফেসবুক লাইভে ১৩ অক্টোবর ২০২৫ প্রচারিত।

দাবিটা হওয়ার কথা ছিল – স্বাস্থ্য নাগরিকের মৌলিক অধিকার

October 16, 2025 No Comments

দাবিটা হওয়ার কথা ছিল – স্বাস্থ্য নাগরিকের মৌলিক অধিকার। অসুস্থ হলে সুচিকিৎসা পাওয়াটা – জাতি/ধর্ম/সামাজিক অবস্থান/আর্থিক ক্ষমতা-নির্বিশেষে – নাগরিকের মৌলিক অধিকার। অথচ আমাদের বোঝানো হলো

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাধ

Dr. Arunachal Datta Choudhury October 17, 2025

পাঞ্জাব –সাম্প্রতিক বন্যা ও কৃষির ভবিষ্যৎ

Somnath Mukhopadhyay October 17, 2025

৬ অক্টোবর কালা-দিবসে পঙ্কজ দত্তের ওপর পুলিশি হেনস্থা ও মানসিক অত্যাচারকে ধিক্কার

Abhaya Mancha October 17, 2025

আমরা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার চাই

Doctors' Dialogue October 16, 2025

দাবিটা হওয়ার কথা ছিল – স্বাস্থ্য নাগরিকের মৌলিক অধিকার

Dr. Bishan Basu October 16, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

583193
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]