‘চাকরি নিশ্চিত করবই’ শুনতে নিশ্চয় চাকরিহারা-রা যাননি? গিয়েছিলেন শুনতে, ‘কীভাবে?’ পুরো শুনতে পারিনি, ক্লাস ছিল। যতটা শুনেছি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, তাতে ‘কীভাবে’-র কোনো উত্তর নেই৷ আমি জানি না, চাকরিহারা যোগ্যরা কী ভাবছেন? কিন্তু এই দিশাহীন বক্তব্য শুনতেই কি তাঁরা ঠা ঠা রোদে গিয়েছিলেন? এমন কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যা শোনার জন্য জেলার পর জেলা উজিয়ে আসতে হবে? এ সব তো প্রেস কনফারেন্সেই বলা যেত। এসব না বলে চুপচাপ বসে থাকলেও কারও কিচ্ছুটি যেত আসত না৷
কী একটা কমিটি করেছেন! কী কাজ সেই কমিটির, তা বোঝা যাচ্ছে না। কী এমন কাজ তারা করবে যা গত একবছরে সরকার করতে পারেনি? স্টেডিয়াম ভাড়া করে একটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু হল না। সে তো তিনি একুশে জুলাইতেও বলেছিলেন, কারও চাকরি যাবে না! নতুন কী বললেন?
অন্যদিকে বিজেপি কালীঘাট দখল করে নিল বলে। আর তারাই নাকি চাকরি বহাল রাখবে। আর যদিও সত্যি কথা বলতে নেই, তবু আজকের খবরের কাগজে প্রকাশ (আনন্দবাজার পত্রিকা) যে, এবিটিএ আলিপুরদুয়ারের এক স্কুলে কেক কেটেছে সহকর্মীদের চাকরি যাওয়ায়। আর বিকাশবাবু বলেছেন, ‘দুর্নীতির আবার যোগ্য অযোগ্য কী?’ মানে, ধরুন আমি পরীক্ষা দিলাম। কিন্তু সরকার/ এসএসসি কটা জালি লোককে ঢোকাল। বা কীসব টেন্ডার-ফেন্ডার ডাকার সময় নিয়ম মানল না। তো তাহলে নাকি আমি বলতে পারব না, ‘এতে আমার কী দোষ? আমি তো যোগ্য!’ কারণ, কোথাও দুর্নীতি হয়েছে! আজব রাজনীতি চলছে।
আমাদের, সাধারণ মানুষের, সমস্যা হল, আজ সিপিএম পনের বছর আগের ‘বামবিদায়’ হেডলাইন দেখিয়ে যেমন ভালমানুষ সাজে, ঠিক তেমনই, তৃণমূল বিদায় হয়ে বিজেপি এসে, তারা আরও দুর্নীতি করার পর, একদিন অভিষেক ব্যানার্জীর কুচুপুচু সোনারা আমাদেরই ‘তৃণমূল বিদায়’ হেডলাইন দেখাবে এবং আমাদেরই দুষবে। মিষ্টি ব্যাপারস্যাপার।
সে যাই হোক, যাঁরা যাঁরা ‘যোগ্য অথচ চাকরিহারা’ বলে মনে করছেন নিজেদের, তাঁদের আর সরকারের প্রলোভনে পা দেওয়া উচিত হবে না। আর কোনো রাজনৈতিক দলকে পাত্তা না দিয়ে তাদের এখনই সর্বাত্মক গণ-আন্দোলনে যাওয়া উচিত।