মানব শরীরের ইমিউনিটি তথা অনাক্রম্যতা বজায় রাখতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে অ্যান্টিবডি। শরীর যখন আক্রান্ত হয় তখন শরীরের অনাক্রম্যতা বারবার চেষ্টা করে আক্রমণকারী শত্রুদের পরাজিত করতে আর এই যুদ্ধে শরীরে উৎপন্ন হয় বিশেষ রাসায়নিক যাকে অ্যান্টিবডি বলে। রোগ আক্রমণকারী আলাদা আলাদা শত্রুর জন্য আলাদা আলাদা অ্যান্টিবডি শরীরে তৈরি হয়। বিজ্ঞানের এইসব তাত্ত্বিক জটিলতা আসলে প্রকৃতির অবদান। তাই বিজ্ঞান বোঝার অনেক অনেক আগেই সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষ এই পদ্ধতিকেই হাতিয়ার করেছিল। কোন রোগ আক্রমণ করলে যেসব মানুষ প্রাকৃতিক নিয়মে নিজের অনাক্রম্যতা কে হাতিয়ার করে সুস্থ হয়ে উঠতো, তাদের রক্তই পরবর্তী আক্রান্তের শরীরে ঢুকিয়ে চিকিৎসা চলত। ফলাফল মিলত বেশ কিছু ক্ষেত্রে।
আর সেই চিকিৎসা পদ্ধতিকে করোনা ১৯-এর বিরুদ্ধে হাতিয়ার করার লক্ষ্যে রয়েছেন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা – করোনা আক্রমণ প্রতিরোধে। যে সমস্ত করোনা আক্রান্ত মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাঁদের রক্তের প্লাজমা (রক্তের তরল অংশ যেখানে অ্যান্টিবডি বিরাজ করে) সংগ্রহ করে পরবর্তী আক্রান্তের শরীরে প্রবেশ করানো হবে। তাতে আক্রান্ত রোগীর অনাক্রম্যতা হবে করোনার বিরুদ্ধে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওষুধ ও প্রতিষেধকের বিষয়ে যতদিন না নিশ্চিত কিছু সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে ততদিন এই পদ্ধতি বেশ খানিক ফলদায়ক হবে। এর আগেও মামস, হাম, বসন্ত, ইনফ্লুয়েঞ্জাতে এইরকম চিকিৎসা কিছুটা কাজে দিয়েছিল, পরবর্তীতে ওষুধ প্রতিষেধক তৈরি হলে সেসব বাতিল হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অন্তিম দশায় গোটা বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ ত্রাসের পাশাপাশি এক ভয়ঙ্কর মহামারী ছড়িয়ে গিয়েছিল ১৯১৮-এ স্প্যানিশ ফ্লু যা গোটা বিশ্বজুড়ে লক্ষ্য লক্ষ্য প্রাণহানি ঘটিয়েছিল। সেক্ষেত্রেও এই ধরনের চিকিৎসা যথেষ্ট সাড়া দিয়েছিল।
এরপর ১৯৩৪ সালে পেনসিলভেনিয়ার একটি বোর্ডিং স্কুলে হামের প্রকোপ দেখা যায়। সেক্ষেত্রেও তখনকার স্থানীয় চিকিৎসক এই পদ্ধতিই অবলম্বন করেন। হাম থেকে সদ্য সেরে ওঠা এক ছাত্রের রক্ত সকলকে দেওয়া হয় এবং অবিশ্বাস্য ফলাফল পাওয়া যায়। তিন জন ছাত্র বাদে সকলে হামের আক্রমণ থেকে বেঁচে যায়।
Spanish Flu নাকি আদৌ স্পেন থেকে আসেনি, জার্মানি, France থেকে এসেছিলো, Spain এর Newspaper এ এটা প্রথম ছাপা হয়েছিল, সেই থেকে নাকি এই নাম দেওয়া হয়েছিল??
একদম তাই। স্প্যানিশ ফ্লু স্পেন থেকে আসে নি। গোটা দুনিয়া যখন যুদ্ধের গরম খবর নিয়ে ব্যস্ত, কোনো মিডিয়া কভার করছিল না, তখন স্পেনের মিডিয়া সেই খবর প্রচার করে প্রথম। তাই নাম স্প্যানিশ ফ্লু।
লেখা খুব ভালো লাগলো।
সাধুভাষা এড়িয়ে চলতে।