ঈশ্বর, ধর্ম, লোকায়ত সংস্কার, ধর্মাচরণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে বিদ্যাসাগরের আচরণ ও মতামত আমাদের বুঝতে সাহায্য করতে পারে যে বিদ্যাসাগর সত্যিই নাস্তিক ছিলেন কিনা, বা নাস্তিক হয়ে থাকলে কতদূর নাস্তিক ছিলেন কারণ উনি নিজ কণ্ঠে কোনোদিন স্বীকার না চিৎকৃত ঘোষণা করে যান নি যে উনি ঈশ্বর বিশ্বাসের দিক থেকে ঠিক কোন অবস্থানে ছিলেন। তাই অনুমান করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
সুধী পাঠক, বেদের যুগে নাস্তিক শব্দের অর্থ যেমনি থাক আসুন দেখে নি একটিবার অর্থ টি কি। নাস্তিক = ন+অস্তি+ইক। ন = নঞর্থক, নাই, প্রয়োজন হয় নাই। অস্তি = অস্তিত্ব, ভৌত জগত, প্রকৃতি ইত্যাদি। ইক = মতবাদী, মতবাদ পোষণকারী। একেবারে শাব্দিক অর্থের বিশ্লেষণে নাস্তিক বলতে এমন মতবাদে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের বুঝায় যারা মনে করেন এই ভৌত জগত বা প্রকৃতিকে ‘অস্তিতে’ আসবার ‘প্রয়োজনই’ হয় নাই। নাস্তিক কথার আসল অর্থ হচ্ছে এমন ব্যক্তি যিনি মনে করেন ঈশ্বরের অস্তিত্ব থাকারই কোনো প্রয়োজন নাই যখন প্রকৃতি নিজেই সয়ম্ভূ। আমরা আমাদের এই আলোচনায় তাই নিরীশ্বরবাদী’র বদলে নাস্তিক শব্দটি ব্যবহার করেছি।
আক্ষেপের আলোচনাটা বিদ্যাসাগরের সেকালের এক জীবনীকার বিহারিলাল সরকারকে দিয়েই শুরু করা যাক। টি টোয়েন্টি ম্যাচে ইনিংস এর শুরুতে অফ স্ট্যাম্প এর বাইরে ভুবনেশ্বর কুমারের জেন্টল কিছু আউট সুইঙ্গার। প্রতি বলের সাথে দর্শককুলের আক্ষেপ, ইস, আরেকটু হলেই আউট। কিন্তু হচ্ছে না।
খেদের সাথে বিহারীলাল লিখছেন “অধ্যাপক বংশে জন্ম লইয়া ব্রাহ্মণ পন্ডিতের সন্তান হইয়া, হৃদয়ে অসাধারণ দয়া, পরদুঃখকাতরতা প্রবৃত্তি পোষণ করিয়া হিন্দুশাস্ত্রের প্রতি, হিন্দু ধর্মের প্রতি তিনি আন্তরিক দৃষ্টি রাখলেন না কেন ?”
আক্ষেপের দ্বিতীয় উদাহরণ। সেকালের আরেক বিখ্যাত জীবনীকার চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখছেন, “এমন কৃতি ছাত্র যখন সাহিত্য শ্রেনীর ছাত্র তখন সন্ধ্যাদির নিত্যকর্ম ভুলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যার ক্রম গুলি এরূপ ভাবে দেখাইতেন যেন সন্ধ্যা করিতেছেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সন্ধ্যা তাঁহার স্মরণে ছিল না এবং সন্ধ্যা করিতেন না। সন্দেহ প্রযুক্ত খুল্লতাত কালিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বালক ঈশ্বর চন্দ্র কে সমস্ত সন্ধ্যার আবৃত্তি করিতে বলিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র মহাসংকটে পড়িলেন। ধরা পড়িয়া পিতার নিকট অত্যন্ত পীড়িত হইলেন।” আমরা জানি যে মানুষ যা মনে রাখতে চায় না সেটাই ভুলে যায়, নতুবা বিদ্যাসাগরের মতো বিষ্ময়কর মেধার মানুষের পক্ষে সন্ধ্যা মন্ত্র ভুলে যাওয়া অসম্ভব।
আক্ষেপের তৃতীয় উদাহরণ। বিহারীলাল লিখছেন, “বিদ্যাসাগর কালের লোক। কালধর্মই তিনি পালন করিয়া গিয়েছেন। ইহাতে হিন্দুর অনিষ্ট হইয়াছে; হিন্দুধর্মে আঘাত লাগিয়েছে। .. নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ এর বংশধর বিদ্যাসাগর উপনয়নের পর অভ্যাস করিয়াও ব্রাহ্মণ এর জীবনসর্বস্ব গায়ত্রী পর্যন্ত ভুলিয়া গিয়েছিলেন”।
এই বার প্রক্ষেপ। স্লগ ওভার চলে যাচ্ছে। রান তেমন উঠছে না। শর্মা জি কে বেটা অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। চালিয়ে ব্যাট করতে হবে।
প্রক্ষেপের প্রথম উদাহরণ। রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদী অত্যন্ত মোলায়েম ভাষায় বিদ্যাসাগরের ধর্মমত সম্পর্কে সমর্থন করতে গিয়ে বলছেন, ” বিদ্যাসাগর সেই শাক্যমুনি-প্রদর্শিত বৈরাগ্য মার্গের ও কর্মপথের পথিক ছিলেন। তিনি যে মার্গে চলিতেন, তাহা আর্যশাস্ত্রসম্মত, মানবশাস্ত্রসম্মত সনাতন ধর্মমার্গ।” কভার দিয়ে জেন্টল পুশ। দু রান।
প্রক্ষেপ এর দ্বিতীয় উদাহরণ। রামেন্দ্রসুন্দরের তুলনায় কিঞ্চিৎ খোলামেলা। বিদ্যাসাগরের স্নেহস্পদ ও সুহৃদ কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য এর কথায়, “বিদ্যাসাগর নাস্তিক ছিলেন, এ কথা বোধহয় তোমরা জান না, যাঁহারা জানিতেন, তাঁহারাও কিন্তু সে বিষয় লইয়া তাঁহার সহিত কখনও বাদানুবাদে প্রবৃত্ত হইতেন না। … পাশ্চাত্য সাহিত্যের ভাব বন্যায় এদেশের ছাত্রের ধর্মবিশ্বাস টলিল, চিরকাল পোষিত হিন্দুর ভগবান সেই বন্যায় ভাসিয়া গেলেন, বিদ্যাসাগরও নাস্তিক হইবেন, তাহাতে আর বিচিত্র কি?” এক্সট্রা কভার দিয়ে ড্রাইভ। চার রান।
প্রক্ষেপের তৃতীয় উদাহরণ। বক্তা যেহেতু বিদ্যাসাগর স্বয়ং সেহেতু খোলামেলা মন্তব্য। শিবনাথ শাস্ত্রী এর পিতা হারান ভট্টাচার্য বিদ্যাসাগরের সহপাঠী ও বিশেষ বন্ধু ছিলেন। পরিণত বয়সে তিনি প্রথা অনুযায়ী কাশীবাসী হয়েছিলেন। কোনো এক কাজে তিনি একবার কলকাতায় এসে আবাল্য বন্ধু বিদ্যাসাগরের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। প্রথম সাক্ষাতেই ঈশ্বরচন্দ্র বন্ধুকে প্রশ্ন করলেন – “কী হে হারান, কাশীতে গাঁজা-টাজা টানতে শিখেছ তো ?” হারান বাবু হকচকিয়ে গিয়ে এই অদ্ভুত প্রশ্নের কারণ জানতে চাইলেন। বিদ্যাসাগর বললেন, – “কাশীতে মরলে শিবত্ব প্রাপ্ত হওয়া যায় এই আশায় কাশীবাসী হয়েছ তো ? কিন্তু জান তো শিব একজন কুখ্যাত গঞ্জিকা সেবী। কাজেই আগে থেকে অভ্যাস না থাকলে পরে চোখের জলে নাকের জলে হতে হবে।” স্লগ সুইপ। চার।
প্রক্ষেপের তৃতীয় উদাহরণ। হিন্দু ধর্মের বৈশিষ্ট্যপূর্ন অঙ্গাঙ্গি অংশ পরলোক সম্বন্ধে বিদ্যাসাগরের মন্তব্য খেয়াল করুন। রামপ্রসাদ রায় এর পুত্র রাধাপ্রসাদ রায়ের দৌহিত্র ললিতমোহন চট্টোপাধ্যায় এর সাথে তার আলোচনার নমুনা দেয়া যাক। (প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো যে ললিতমোহন যোগমার্গ সাধনে অনেকদূর পর্যন্ত গিয়েছিলেন।) বিদ্যাসাগর মজা করে ললিতকে বলছেন, “হ্যাঁ রে ললিত, আমারও পরকাল আছে নাকি ?” ললিত বললেন, “আছে বৈকি, আপনার এত দান, এত দয়া, আপনার পরকাল থাকিবে না, ত’ থাকিবে কার ?” মিড উইকেট দিয়ে লিফট। ছয়।
প্রক্ষেপের পঞ্চম উদাহরণ। এটা একেবারেই চাঁচাছোলা। একবার পুরীর সমুদ্রে স্টিমার ডুবির ফলে প্রায় সাত-আটশ নরনারী বাল-বৃদ্ধ মারা জাগ। এ সংবাদে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিদ্যাসাগর এর মন্তব্য খেয়াল করে দেখার মত, “দুনিয়ার মালিক কি আমাদের চেয়ে নিষ্ঠুর যে, নানা দেশের নানা স্থানের অসংখ্য লোককে একত্রে ডুবাইলেন ! আমি যাহা পারিনা, তিনি পরম কারুনিক মঙ্গলময় হইয়া কেমন করিয়া ৭০০-৮০০ লোককে একত্রে ডুবাইয়া ঘরে ঘরে শোকের আগুন জ্বালিয়ে দেন।” হেলিকপ্টার শট। ছয়।।
সুধী পাঠক যদি ভেবে থাকেন যে একবারে নিরুপদ্রবে বিদ্যাসাগর তাঁর নাস্তিকতার চর্চা করা গেছেন তাহলে ভুল করবেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক তাঁকে নিয়ে বিক্ষেপ এর আয়োজনগুলি।
বিক্ষেপের প্রথম উদাহরণ একজন নাম না জানা হিন্দু পুরোহিত। বিদ্যাসাগরের অনুজ শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন এর লেখাতে এর উল্লেখ পাচ্ছি, ” .. এজন্য উক্ত পুরোহিত, পিতৃদেবকে (অর্থাৎ বিদ্যাসাগরের পিতাকে) নির্জনে বিস্তর উপদেশ দিয়া বলিলেন, “তোমার পত্নী ও পুত্রগণ বাটি প্রস্থান করুন। তীর্থস্থানে (অর্থাৎ কাশী) স্ত্রী-পুত্র লইয়া গৃহী হইয়া অবস্থিতি করা অতি অকর্তব্য। তুমি আমার বাটিতে নিশ্চিত হইয়া যেমন অবস্থিতি করিতেছ, সেইরূপই থাক। তোমার পুত্রগণ (অর্থাৎ ঈশ্বরচন্দ্ররা) নাস্তিক, উহাদের সংশ্রবে থাকা উচিত নয়”। থার্ড আম্পায়ারের কাছে আপিল।।
নিক্ষেপের দ্বিতীয় উদাহরণ ব্রাহ্মধর্ম এর অন্যতম প্রচারক। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এশিয়াটিক সোসাইটির ‘পেপার কমিটি’ এর অনুকরণে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর তত্ত্ববোধিনী সভার একটি উপসমিতি গঠন করেন যার নাম ছিল গ্রন্থাধ্যক্ষ সভা। অক্ষয়কুমার দত্তের প্রস্তাবে এই উপসমিতির অন্যতম সভ্য ছিলেন বিদ্যাসাগর। এর কাজ ছিল কোনো বই বা প্রবন্ধ মুদ্রণের জন্য অনুমোদন দেওয়া। বিদ্যাসাগর ও অক্ষয় তাঁদের বুদ্ধি বিবেচনা প্রয়োগ করতেন অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে। স্বভাবতই বেশ কিছু প্রগতিশীল যুক্তিবাদী প্রকাশনা স্থান পেতে থাকে যেগুলো দেবেন্দ্রনাথ এর মতো ধার্মিক মানুষের পছন্দ ছিল না। একটি বিশেষ প্রবন্ধ প্রকাশ নাকচ হওয়াতে দেবেন্দ্রনাথের রাগ চরমে ওঠে। তিনি রাজনারায়ণ বসুকে এক চিঠিতে লেখেন ক্ষিপ্ত হয়ে, “কিন্তু আশর্য্য এই যে তত্ত্ববোধিনী সভার গ্রন্থাধ্যক্ষ এরা ইহা পত্রিকাতে প্রকাশযোগ্য বোধ করলেন না। কতক গুলান নাস্তিক গ্রন্থাধ্যক্ষ হইয়াছে; ইহদিগকে এ পদ হইতে বহিষ্কৃত না করিয়া দিলে আর ব্রহ্ম্যধর্ম প্রচারের সুবিধা নাই। ” নাম না করে অক্ষয় ও বিদ্যাসাগরকে নাস্তিকতার দায়ে বের করে দেওয়া। ম্যাচ রেফারি এর কাছে আপিল। ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার হুমকি।।
নিক্ষেপের তৃতীয় উদাহরণ একজন খ্রিস্টান ধর্মযাজক। রেভারেন্ড মার্ডক। চেম্বার্স এর প্রকাশিত The Rudiments of Knowledge” অনুসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বোধোদয় নামে একটি বই লিখেছিলেন (নিছক অনুবাদ নয়)। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিখছেন, “এটা খুব অনুতাপের বিষয় যে বাংলার অন্যতম বিশিষ্ট লেখক, সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ এমন একখানি পুস্তুক প্রস্তুত করলেন যেটা আবার সারাদেশে বহুল প্রচলিত হয়ে গেছে। বইটি মিশন স্কুলগুলির পাঠ্যতালিকা থেকে বাতিল করা হোক এই ঐকান্তিক আশা রাখছি।”
রেভারেন্ড সাহেবের এত রাগের কারণ হল বইতে একজায়গায় বিদ্যাসাগর বলেছেন যে “ইন্দ্রিয় জ্ঞানের দ্বার স্বরূপ; অর্থাৎ ইন্দ্রিয় দ্বারা সর্বপ্রকার জ্ঞান জন্মে। ইন্দ্রিয় না থাকিলে আমরা কোন বিষয়ে কিছু মাত্র জানিতে পারিতাম না। …. ইত্যাদি, ইত্যাদি। ” এসব পড়ে সাহেবের ধারণা হয়েছে যে ওই বিদ্যাসাগর একটি আদ্যন্ত মেটেরিয়ালিসটিক বা বস্তুবাদী। শুধু তাই নয় সাহেব আরো একধাপ এগিয়ে বিদ্যাসাগরকে সেকুলারিস্ট বলে গাল দিয়েছিলেন। ওনার ভাষায়, “The writer [মানে বিদ্যাসাগর] described the above books, not simply as prepared by a Secularist, but as Secularist.” ম্যাচ থেকে, টুর্নামেন্ট থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়ার হুমকি।
আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নাস্তিক হওয়ার অমার্জনীয় অপরাধে একজন হিন্দু পুরোহিত বিদ্যাসাগরকে পরিবার থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত করার নিদান দিচ্ছেন, একজন ব্রাহ্মধর্ম প্রচারক নিদান নয়, তাঁকে পদ থেকে নিক্ষিপ্ত করেই দিয়েছেন। আর একজন খ্রিষ্টান ধর্ম যাজক এর বাসনা তাঁর লেখা বই নিষিদ্ধ করে তাঁকে উপার্জনের ক্ষেত্র থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া। সত্যিই, ঈশ্বরের কী অপার মহিমা।
সুধী পাঠক, ধর্মের কারবারিদের আক্রমণের কথা ছাড়ুন। একালের প্রগতিশীল জীবনীকার স্বপন বসু কিম্বা বিনয় ঘোষ এর মতো বিদগ্ধ মানুষজন বিদ্যাসাগরের নাস্তিকতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। শ্রী ঘোষের ভাষায়, “স্বর্গলোক, পরলোক ইত্যাদি সম্পর্কে এই ধরনের কঠোর ব্যাঙ্গক্তি বিদ্যাসাগর কথা প্রসঙ্গে মাঝে মধ্যে করতেন। তা থেকে এটুকু বোঝা যায় যে তিনি ইহলোক ছাড়া আর অন্য কোনো লোকে বিশ্বাস করতেন না। কিন্তু তাতেও তার নাস্তিকতা প্রমাণ হয় না।” এর পরেই শ্রী ঘোষের নিক্ষেপ, “সারা জীবন তিনি চিঠিপত্রের শিরোনামে ‘শ্রী শ্রীদুর্গা শরণং, ‘শ্রী শ্রী হরি হরি শরণং’ লিখেছেন। নিতান্ত লোকাচারের দাস হয়ে, তিনি তাঁর বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যে এ কথা লিখেছেন, তো মনে হয় না। সুতরাং তাঁকে নাস্তিক বলা যায় না।” সুধী পাঠক, সত্যিই তো, কি বা উত্তর আছে এই নিক্ষেপের ? বুমারহ এর বিষাক্ত ইন সুইং ইয়র্কার এর?
মুখ পুস্তকের পক্ষে দীর্ঘ এই লেখা এইবার শেষ করার সময় এসেছে। আমাদের শেষ প্রক্ষেপ। ইনিংস এর শেষ বল। বিহারীলাল সরকার এর লেখায়, ” কোনো এক সময়ে তিনি (বিদ্যাসাগর) একবার সুকিয়া স্ট্রিট নিবাসী ডাক্তার চন্দ্রমোহন ঘোষের বাড়িতে বসিয়া পাইকপাড়ার রাজবাটি তে এক পত্র লিখিয়াছিলেন। পত্র লেখা হইলে পর চন্দ্রমোহন বাবু একবার পত্রখানি দেখিতে চাহিলেন। ইহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয় হাস্য করিয়া বলিলেন, – ‘তুমি যাহা ভাবিতেছ তাহা নহে, এই দেখ শ্রী শ্রী হরি সহায় লিখিয়াছি।’ ইহাতে মনে হয়, তিনি যে কারণে চটি জুতা পায়ে দিতেন, থান ধুতি, মোটা চাদর পরিতেন (বিদ্যাসাগরের উপার্জনের নিরিখে বলা যায় চোগা চাপকান বা স্যুট বুট হ্যাট পরে ঘোরা’র সামর্থ্য তাঁর ছিল) …. সেই কারণেই পত্রের শিরোভাগে ঐ রুপ লিখিতেন।” ইহাকে হয়তো তিনি বাঙালির জাতীয়ত্বের একটা অঙ্গ মনে করিতেন”। শর্মা জি এর ব্যাটা জানে ইয়র্কার বস্তুটা কি। তাই আগে ভাগেই ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে এসে ইয়র্কারটাকে ফুলটস বানিয়ে স্ট্রেট ড্রাইভে চার।
ম্যাচ জিতিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাচ্ছেন শ্রী ঈশ্বর চন্দ্র দেবশর্মন। শর্মা জি কা বেটা। যুগ যুগ জিও।