অভিভাবকরা সবসময় শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভাবেন। তাদের ছোট থেকে শিক্ষা দেওয়া হয় গরম জিনিসে হাত দেবে না, রাস্তা পারাপার করার সময় দুদিক দেখে নেবে, রাস্তার বাঁ দিক ধরে হাঁটবে। কিন্তু একটু বেশি বয়স না হলে শরীরের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও কিছু শেখানো হয় না। কিন্তু ততদিনে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ১৮ বছরের নীচে বয়স এমন মেয়েদের প্রতি চারজনে একজন আর ছেলেদের প্রতি ৬ জনে একজন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। আর বেশিরভাগ সময় এই অঘটন ঘটায় শিশুর নিকটাত্মীয়রা। ফলে সে মুখ ফুটে কাউকে জানাতেও পারে না। আবার বললেও মা, বাবা তা শুনতে চায় না। তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। ছোটবেলার এই মানসিক আঘাত পরবর্তীকালে বড়সড় সমস্যা ডেকে আনতে পারে। তাই ছোটবেলা থেকেই বাবা, মায়ের সচেতন থাকতে হবে বাচ্চা কোনোরকম শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে কিনা তা খেয়াল রাখতে হবে।
শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে যা যা করা দরকারঃ
- ·আপনার শিশু যে আশপাশের লোকের দ্বারা নির্যাতিত হতে পারে সেকথা হজম করতে অসুবিধা হলেও এটা বাস্তব। প্রতিবেশী, আত্মীয় বন্ধুদের পুরোপুরি বিশ্বাস না করাই ভাল। কাজেই শিশুকে কোনটা ভাল আর কোনটা খারাপ সেই বিষয়ে ছোট থেকেই শিক্ষা দিতে হবে।
- শিশুকে শরীরের প্রতিটা অঙ্গের ঠিক নাম শেখাতে হবে। অন্য নাম বললে শিশুর সঙ্গে কোনও অঘটন ঘটলে সে ঠিকভাবে তা নাও বোঝাতে পারে।
- শিশুর একান্ত ব্যক্তিগত অঙ্গ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া দরকার। বোঝানো দরকার সেই সব অঙ্গ বাবা, মা ছাড়া কেউ যেন না দেখা বা হাত দেয়। ডাক্তারের কাছে গেলে তা দেখানো যেতে পারে কারণ তখন বাবা, মা উপস্থিত থাকে।
- শিশুকে শেখানো দরকার কেউ যদি তার শরীরের ব্যক্তিগত জায়গায় হাত দেয় এবং তাকে সেকথা কাউকে বলতে বারণ করে বা ভয় দেখায় তাহলেও সে যেন তার কথা না শুনে বাবা, মাকে সব জানায়। সে চুপ করে থাকলে সেই দুষ্টু লোক আরও ক্ষতি করতে পারে। তাই প্রথমেই বাড়িতে জানাতে হবে।
- শিশুর ব্যক্তিগত জায়গার ছবি যেন কেউ না তোলে সে বিষয়েও তাকে শিক্ষা দিতে হবে।
- অনেক বাচ্চা ভয় পায় তার সঙ্গে হওয়া খারাপ ঘটনার কথা মা, বাবাকে জানালে তারা আবার যদি বকাঝকা করে। কাজেই তাদের সেভাবে বোঝাতে হবে যাতে সে নির্ভয়ে মন খুলে সব কথা বলতে পারে।
শিশু কোনোরকম শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার কিনা তা বোঝা যায় শিশুর কিছু আচরনের পরিবর্তন হলে। যেমন
- যে শিশু খুব চঞ্চল সে হঠাত করে খুব চুপচাপ হয়ে যাওয়া
- কোনও বিশেষ জায়গায় বা কোনও চেনাজানা ব্যক্তির কাছে যেতে অস্বীকার করা
- মাঝে মধ্যেই ভয় পেয়ে বা চমকে ওঠা
- যৌনাঙ্গে ব্যথার কথা বলা
- কোনও কাজে বা লেখাপড়ায় মন দিতে না পারা