রাজনীতিতে আপনার যে রংই হোক আর ফুটবলে আপনি যে ক্লাবকেই সমর্থন করুন না কেন, মুখে, মাথায় সর্বাঙ্গে দোলের রং মাখার সময় সে সব খেয়াল থাকেনা !
লাল-হলুদ-সবুজ-নীল-গেরুয়া সব মিলিয়ে যে ব্যাপারটা হয় সেটা হলো আনন্দ ! আপনারা আনন্দ করেন আর আতঙ্কে থাকি আমরা ডাক্তাররা বা আরো নির্দিষ্ট করে বললে ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞরা ! কেন ? কারণ দোলের পরের দিন গুলোতে রং মেখে হওয়া কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের সুনামি সামলাতে হয় আমাদের ! আসলে, দোলের রঙে থাকে নানা রকমের রাসায়নিক। তার কোনটায় কার এলার্জি বলা মুশকিল। যদি তীব্র অম্ল বা ক্ষার জাতীয রাসায়নিক থাকে তাহলে সাথে সাথে বোঝা যাবে। একে বলে ইরিট্যান্ট কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস । আবার কারো যদি রঙের কোনো উপাদান থেকে এলার্জি থাকে যেমন পারফিউম বা সুগন্ধি থেকে বা রং থেকে তাহলে হতে পারে এলার্জিক কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস । এটা যে সবার হবেই তার কোনো মানে নেই। যার যে উপাদানে এলার্জি রঙে যদি সেই উপাদান টি থাকে তাহলে হবে। আর ক্ষতি হতে পারে রং থেকেও ! লাল রঙে থাকে কঙ্গো রেড, ক্রোসিন স্কারলেট, বা রোজামিন । হলুদ রঙে থাকে মেটানিল ইয়েলো, লেড ক্রমেট বাঁদুরে মেটালিক রঙ মারাত্মক । এতে থাকে নানারকম ধাতুচুর্ণ । এর থেকে কিডনি বা লিভারের অসুখ এমনকি ক্যানসার এর সম্ভাবনাও থাকে। কি করবেন আর কি করবেন না ? গোলা রং নয়, বাঁদুরে বা মেটালিক রং তো একেবারেই নয় ! বরং ভেষজ আবির দিয়ে খেলুন। খুব ছোটদের নিয়ে রং খেলবেন না । খেলার আগে চুলে আর গায়ে তেল মেখে নিতে পারেন, তাতে রং গায়ে বসবে না । কনট্যাক্ট লেন্স নয় সানগ্লাস পরে রং খেলুন ।আর টুপি। খেলার পর, ধুয়ে ফেলুন চট করে। বার বার জলের ঝাপটা দিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে ফেলুন । তবে, খুব বেশি ঘষাঘষি নয়। তাতেও ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। একবারে রং না উঠলে ক্রিম বা লোশন লাগিয়ে রাখুন। দু-এক ঘন্টা পরে আবার ধুয়ে ফেলুন। একদিনে রং না উঠলে উতলা হবার কিছু নেই ! অনেক সময় রং তুলতে গিয়ে রগড়ারগড়ি করতে গিয়েই স্কিনের ক্ষতি হয়ে যায় রং খেলার পরে চুলে ভালো করে শ্যাম্পু দিতেই হবে।দরকার হলে পরপর দিন তিনচার ।আর রং খেলার পর কোনো র্যাশ, ফুসকুড়ি বা চুলকানি হলে অবহেলা না করে সটান চলে যান ডাক্তারবাবুর কাছে ।
প্রাকৃতিক আবির দিয়ে খেলাই ভালো। আজকাল কিনতে পাওয়া যায়। বাড়িতেও কিন্তু বানিয়ে নিতে পারেন এই আবির ! কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি। আবিরের বেস তৈরী হবে, আটা, ময়দা,ট্যালকম পাউডার, বেসন বা এরারুট দিয়ে ।
1. এক কাপ বেসে এক চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরী করা যায় হলুদ আবির 2. হলুদের বদলে একচামচ হেনা পাউডার মেশালে পাওয়া যাবে সবুজ আবির 3. আর রক্তচন্দনের গুঁড়ো মেশালে লাল আবির 4. আবার বিভিন্ন ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে, গুঁড়ো করেও বানিয়ে ফেলা যায় বিভিন্ন রঙের আবির। যেমন গাঁদা, অমলতাস, চন্দ্রমল্লিকা থেকে হলুদ,পলাশ বা শিমূল থেকে গেরুয়া,লাল জবা বা মাদার ফুল থেকে লাল, নীল জবা বা জ্যাকারান্ডা থেকে নীল 5. সুগন্ধি আবির বানাতে বেস হিসেবে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যায়
আবির নয়, পিচকারি দিয়ে রং খেলার ইচ্ছে ? বেশ ! 1. বিট কেটে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন, সুন্দর ম্যাজেন্টা রং তৈরী হয়ে যাবে 2. টোম্যাটো বা গাজর থেকে লাল রং পাওয়া যেতে পারে 3. পুদিনা, পালংশাক বা ধনেপাতা মিহি করে বেটে জল মেশালে সবুজ রং তৈরী ! 4. পলাশ বা শিমূল ফুল জলে ফুটিয়ে বা গিরিমাটি জলে গুলে গেরুয়া রং পাওয়া যাবে 5. নীল জবা, অপরাজিতা বা জ্যাকারান্ডা থেকে নীল রং তৈরী করাই যায়
নিরাপদে রং খেলার যে নিয়মগুলি মেনে চলতে হতো এতদিন এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে কোভিড ১৯ বা নোভেল কোরোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ! অযথা আতঙ্ক না ছড়িয়ে সচেতন হোন, আর নিরাপদে রং খেলুন ! 1. হাঁচি, কাশি বা জ্বর হয়েছে এমন মানুষের সঙ্গে রং খেলবেন না, তাঁকেও বলুন ডাক্তার দেখাতে 2. রং খেলার সময় পরিচ্ছন্ন জলের ব্যবস্থা রাখুন, বার বার হাত মুখ ধুয়ে নিন, প্রতিবার অন্তত কুড়ি সেকেন্ড ধরে 3. খুব ভিড়ের মধ্যে রং না খেলাই ভালো 4. ভেষজ আবির দিয়ে রং খেলুন 5. চাইনিজ আবির বা মুরগি থেকে কোভিড ১৯ ছড়াচ্ছে না, ওটা গুজব ! 6. অচেনা মানুষের সঙ্গে হ্যান্ডশেক বা বুকে জড়িয়ে না ধরে নমস্কার করুন 7. শুধু কোভিড ১৯ ই নয় এই সময়ে জল বসন্ত, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা অন্য ভাইরাস জনিত অসুখও হয়, তাই সাবধানের মার নেই ! |
ওষুধ-ব্যবসার এই রোগ সারবে কোন উপায়ে?
নির্বাচনী বন্ড নিয়ে তুমুল হইচইয়ের মধ্যে একটা কথা অনেকেরই নজর এড়িয়ে যেতে পারে — রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে টাকা ঢালা শিল্প সংস্থাগুলোর মধ্যে একাধিক ঔষধি নির্মাতা
Thnx for the informations….