ঋজু শিরদাঁড়া এক অসুখবিশেষ।
নতজানু ভিড়ে তাকে বোঝা যায় বেশ,
চাঁদমারি অভ্যেসে বরাবর বসা হাঁস সে,
বশ্যতা মানবে না যে দাস্যে,
স্বীকার করে না হার যে অনড় জিদে,
তাকে চিনে নিলে শিকার করতে হয় ভীষণ সুবিধে।
তার প্রিয় লোক থাকে বিব্রত খুব।
বিপরীত স্রোতে চলা একলা বেকুব,
কত যে ঝামেলা বয়ে নিয়ে আসে ঘরে,
বন্ধু ও ব্যাঙ্ক থাকে বড় নড়বড়ে,
যে ঝোঁকে না সত্যের সম্মুখে ছাড়া,
যতই চিনুক তাকে একডাকে পাড়া,
গড্ডলিকার কাছে সে তো বিভীষিকা,
আঁধারে বারণ হলে প্রদীপের শিখা,
সেই লোকে পথে হাঁটে মশাল জ্বালিয়ে,
হুমকি ধমক খেয়ে যায় না পালিয়ে,
এমন মানুষ নয় ভালো কাছে রাখা,
রোজ যার অভ্যেস বিপদকে ডাকা।
সত্যি বলতে কি, এটা তো অসুখ!
বেঁচে থাকা যদি যায় না খুলে মুখ,
যদি ধন ও মান বাড়ে মোসায়েব হলে,
কেন কিছু লোক যায় বিপরীতে বলে,
দুরূহ তা বোঝা।
কি যে সুখ পাওয়া রেখে শিরদাঁড়া সোজা,
তালি কম পেয়ে যারা বেশি গালি খান,
বোঝেন না তাঁরা সব রাজা তালিবান,
বিরুদ্ধে কথা হলে কে আর চুপচাপ থাকে,
কোতল না পারে যদি,বোতলবন্দী তো করবেই তাকে,
প্রদীপের জ্বিন যদি স্বাধীনতা পায়,
লাখ আলাদিনকে সে স্বপ্ন দেখায়,
শেষ অবধি তাতে যদি উল্টায় গদি,
বেদখল হতে পারে নেপোদের দধি,
সুতরাং কোনোভাবে বাঁধ চাই
বিপরীতমুখে যাওয়া একলা সে স্রোতে,
প্রাণনাশ , মানহ্রাস.
প্রতি পদে দেওয়া বাঁশ,
সে উপায় যা খুশি পারে জেনো হতে।
কেন তবু কিছু বোকা, এরকম একরোখা,
হেরে যাবে জেনে তবু বিরুদ্ধে তাল ঠোকা,
কেন ভালো লাগে সেটা ভালো জানে তারা,
ইতিহাস শুধু জানে
সময় ঘোরে না মোড় তাদেরকে ছাড়া।
আর জানে ক্ষমতারা,
ভীষণ অসুখ ওই ঋজু শিরদাঁড়া।