গত পরশু তিন ডাক্তার প্রফেসরের বিরুদ্ধে ছাত্র ছাত্রীদের ভয় দেখানো, জোর করে তৃণমূল করতে বাধ্য করা ইত্যাদি অভিযোগে সরগরম হয় মেডিকেল কলেজ! ছাত্র বিক্ষোভের মধ্যে পরে আপাতত কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে এই তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি বসাতে, ও আপাতত হোস্টেল সুপার পদ থেকে অব্যাহতি দিতে। কিন্তু তার মধ্যেই এই অভিযুক্ত একজন শিক্ষিকা পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে তার সাথে এক ইন্টার্ন নাকি misbehave করেছে! এবং রাতারাতি সেই ইন্টার্ন কে ‘summon’ করেছে enquiry committee যার মধ্যে রয়েছে যারা অভিযোগকারী তারাই 😂।
কিরকম ব্যাপারটা? দেখে নিই আমরা। এই summon এর নোটিশ (ছবি ১) অনুযায়ী তদন্ত কমিটির মার্ক করা সদস্যদের নামগুলো দেখুন, এবং মনে রাখুন।
এবার নাটকের পরের দৃশ্যে চোখ রাখুন।
IMA (Calcutta Branch) থেকে DME-এর কাছে একটি অভিযোগ করা হয়েছে ১০.০৬.২৪ তারিখে ( যদিও দাঁতভাঙা বানান ও গ্রামার এর উপদ্রবে ভালো করে পড়ে ওঠাই খুব চাপ! কে জানে বাবা IMA Calcutta Branch আজকাল ডাক্তারদের বদলে অশিক্ষিত মাথামোটা গুণ্ডাদের দিয়ে ডেপুটেশন লেখাচ্ছে কিনা!) যাই হোক মোটামুটি যা বোঝা যাচ্ছে মেডিকেল কলেজের একজন ইন্টার্ন-এর নামে একজন শিক্ষিকা (মনে রাখা জরুরি এই শিক্ষিকা নিজেই ছাত্র ছাত্রীদের উপর তৃণমূলী দাদাগিরি করার অভিযোগে অভিযুক্ত, ইতিমধ্যে তাদের মেয়েদের হোস্টেলের পদ থেকে আপাতত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে) অভিযোগ এনেছেন অভব্য আচরণের। তো সেই ‘miscreant’-এর বিরুদ্ধে IMA Calcutta Branch ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ ও জানিয়েছে ও শাস্তির দাবি করেছে!
এবার এখানেই আসল মজা! যে IMA Calcutta Branch স্বাস্থ্য ভবনে ডেপুটেশন পাঠাচ্ছে নিজেরাই সেই ইন্টার্নকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করে সেই IMA Calcutta Branch এর ভাইস প্রেসিডেন্ট-এর নামটা দেখুন আর এক্সকিউটিভ মেম্বারদের নামের লিস্ট দেখুন। দেখবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাক্তার মানব নন্দী ও এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী নিজেরাই ওই Enquiry committee-র সদস্য!
কী কিউট না?! তিনোমুল সত্যি বড়ই মিষ্টি! নিজেরাই অভিযোগ করছে। নিজেদেরই কাছে করছে! এবং ওমা কি আশ্চর্য নিজেরাই তদন্ত কমিটি বানিয়ে ‘summon’ করছে! এমন কি সেই তদন্ত কমিটিতে নির্বাচিত কোনো ছাত্র/ ছাত্রী প্রতিনিধিও রাখা হয়নি।
গত পরশু মেডিকেল কলেজের তিন ডাক্তার (!) – প্রফেসর(!) এর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে। তার পাল্টা হিসেবে ‘মাস্টার স্ট্রোক’ খেলেছে তিনু বুদ্ধিজীবিদের দল। প্রতিবাদী এক ইন্টার্ন ছাত্র-এর বিরুদ্ধে misbehave করার অভিযোগ সাজিয়ে নিজেরাই নিজেদের কাছে অভিযোগ করে নিজেরাই তদন্ত কমিটি বানিয়ে তাকে নাকি শাস্তি দিতে চায়! আহারে মাস্টার স্ট্রোক দেখে হাসব না কাঁদব সেটাই তো বুঝছি না! ভাই বুঝলাম ষড়যন্ত্র করছিস কিন্তু এমন ভাবে করিস না যাতে গোটা বিশ্বের কাছে সেটা এমন নগ্ন ভাবে প্রমাণিত হয়ে যায়।
এসব বালখিল্যপনা করে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের কাছে নিজেদের হাসির পাত্র করে তোলার কি যে ইচ্ছা এদের কে জানে! তবে ছাত্রছাত্রীরা কিন্তু তৈরি! মেডিকেল কলেজ শক্ত ঘাঁটি। অভিযোগ আসলে তদন্ত কমিটি হতেই পারে, অন্তত অভিযোগ যে ‘সাজানো’ সেটা প্রমাণিত হতে গেলেও কমিটি লাগবে! কিন্তু সেই কমিটিকে নিরপেক্ষ হতে হবে এবং তাতে নির্বাচিত ছাত্র/ ছাত্রী প্রতিনিধি রাখতে হবে এবং স্বচ্ছ ভাবে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত চালাতে হবে!
আপামর গণতন্ত্র প্রেমী মানুষ কে এই লড়াই-এ পাশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছে মেডিকেল কলেজ কলকাতার ছাত্রছাত্রী সমাজ! ✊🏽