সাথে সিতাংশু শেখর পাঁজা, আমাদের সবার পাঁজাদা। দাদা আর জি কর হাসপাতালে আমার ছোটমামার ব্যাচ মেট, তাই প্রথম দিন একটু কনফিউশন ছিল, কি বলে ডাকব। যাই হোক ইডেন হাসপাতালে সবাই হয় দাদা নয় দিদি, এক বড় একান্নবর্তী পরিবার – শম্ভুদা, নিরাপদদা, উজ্জ্বলদা, মান্নাদা, সুধীর অধিকারীদা, রেখাদি, শিবানীদি। অনেক কাজ ছিল, কিন্তু মজাও ছিল অনেক। সাথে ছিল মন্দিরা দাশগুপ্ত, মল্লিকা দাস, সৌমেন দাস, সব্যসাচী রায়, সুদীপ্ত হালদার, নয়ন সরকার, মানস চক্রবর্তী, মনু উত্তম, মহুয়া। আমার এখনও বিশ্বাস আমাদের সরকারি হাসপাতালের দিকে যদি সরকার নজর দেয় তাহলে সেগুলো পৃথিবীর যে কোনো ভালো হাসপাতালের সাথে পাল্লা দেবে। যে বাচ্চা বাচ্চা অসুর আর কসাইগুলো সারা দিন রাত কাজ করে, তারা যেকোনো দেবশিশুর থেকে বেশি পবিত্র। সেই দিনগুলো আজও সোনার খাঁচায় বন্দি।
বয়স হচ্ছে, তাই কথা শুরু করি এক ভেবে, চলে যাই অন্য কথায়। পাঁজাদার কাছে ২০০০ সালে শিখেছিলাম কি করে সিজার করতে হয়, ২০২০তেও সেই যুগলবন্দী চলছিল, তখনও ছাত্র ছিলাম। মাঝে মাঝেই বকুনি খেতে হতো, কিন্তু তার থেকেও বেশি ছিল প্রশ্রয় আর স্নেহ।
আমার প্রথম PPE পরাও ইডেন হাসপাতালে, HIV পজিটিভ রুগির নরমাল ডেলিভারি করাতে গিয়ে। সেটা ছিল শুধু দুটো গ্লাভস, একটা কাপড়ের মাস্ক আর একটা গাউন। করোনার সময় আবার আমরা একসাথে PPE পরলাম, সেই পোশাকে অনেকগুলো অপারেশন করলাম। পাঁজাদার হেঁট হতে অসুবিধে হতো বলে পায়ের লেগিংস পরিয়ে দিতাম। কিন্তু করোনা শিষ্যর কাছ থেকে গুরুকে কেড়ে নিল। সময় থেমে থাকেনা। অপারেশন করে চলি, মনে হয় হঠাৎ কেউ বলবে, ইন্দ্রনীল তাড়াহুড়ো করো না, সময় নিয়ে কাজ করো।
Always miss you Panjada।❤️❤️