এবারের পয়লা বৈশাখে সবাই এত ‘একলা’ বৈশাখ বলে কান্নাকাটি করছে কেন বলুন তো! একলা কোথায় মশাই? ভেবে দেখুন, এত অন্যের কথা শেষ কবে ভেবেছেন!
সকালে ঘর ঝাঁট দিতে দিতে কাজের লোকের কথা ভেবেছেন, পেঁয়াজ কাটার সময় রান্নার লোকের কথা ভেবে কি চোখে জল আসেনি?
মাছের বাজারে গিয়ে একবারও মনে হয়েছে আপনি একলা? আসলে মাছের বাজার করোনা ছড়ায় না, লোককে দার্শনিক করে দেয়। জীবন মানে যে জলের মধ্যে খাবি খাওয়া, বরফের মধ্যে শুয়ে থাকা যে আমাদের ভবিতব্য, ইলিশ, কই বা পুঁটি, বাজারের থলের মধ্যে সবাই সমান এত মাছের বাজার আমাদের শিখিয়েছে!
সবজিওয়ালার কাছে গিয়ে যখন আপন মনে ‘যত পারো তত ভরো’ প্রতিযোগিতা্য় অংশ নিয়েছেন, কখনও মনে হয়েছে একলা?
যে ফুটপাথের ঝুপড়িগুলোর দিকে কখনওই চোখ যেত না এখন কিন্তু আপনি তাদের কথাও ভাবেন- যদি একবার ওদের করোনা হয় তাহলে!
যে পুলিশগুলোকে শুধু ঘুষখোর মনে হোত এখন তাদের দেখে আপনার বুকে বল আসে!
কসাইগুলো আজ দেবদূত! তাদের অসুস্থতার কথা ভেবে মন খারাপ হয়। কারণ ওঁরা অসুস্থ হলে আপনার (ঈশ্বর না করুন) শরীর খারাপ হলে কে দেখবে সেই চিন্তা আপনাকে নিজের অজান্তেই তাঁর পরিবারের একজন করে দেয়!
যে সেলিব্রিটি বুদ্ধিজীবীদের পোস্টে পটাপট লাইক মারতেন এখন তাদের কথাও ভাবেন, চিন্তা করেন, আর গুনগুন করেন ‘ তোমার দেখা নাই রে তোমার দেখা নাই ‘।
আপনি ‘একলা’ এই বিলাস ভাবনা ছাড়ুন। ‘ভয়’ আমাদের সবাইকে ‘এক’ করে দিয়েছে। আসলে নিজেকে ‘ভালো’ বা নিরাপদে রাখতে গেলে আমাদের অন্যদের কথা ভাবতে হয়, যেমন অন্যেরাও আপনার কথা ভাবছে। এই মহামারী আপনাকে শিখিয়ে দিয়েছে মারামারি করে লাভ নাই।তাই এবারের পয়লা বৈশাখটা সত্যিই অন্যরকম। এটা আমাদের ‘একলা’ করেনি ‘এক’ করেছে।
সুস্থ থাকুন।সুস্থ রাখুন।