১২ জুলাই, ২০২০
অমিতাভ বচ্চনের পর তাঁর পুত্রবধূ করোনা আক্রান্ত।
এই খবর মিডিয়ার জন্য সংবেদী। হু হু করে বাড়বে অনলাইন নিউজ পোর্টালের ভিউ। কাল আরও বাড়বে প্রিন্ট মিডিয়ার বিক্রিবাটা।
হ্যাঁ, আপামর ভারতীয়র মতো আমি, আপনিও দুঃখিত। মনেপ্রাণে চাই ওঁরা সেরে উঠুন। বিশেষত শিশুটি। কারণ শিশুরা আমাদের ভবিষ্যত।
কিন্তু যে গণতন্ত্রের এত জয়গান করে আপনি চায়ের পেয়ালায় তুফান তুলে দেন, একবার ভেবে দেখেছেন , আপনি করোনাক্রান্ত হলে অমন রাজকীয় শয্যা পাবেন ? রাজকীয় ছাড়ুন, ন্যূনতম চিকিৎসা?
অমিতাভ বচ্চনের শিল্পীসত্বায় মুগ্ধ আমরা। কিন্তু ভাইরাস সাচ্চা গণতান্ত্রিক। তার কাছে ধনী দরিদ্র, খ্যাত অখ্যাতর কোনো ফারাক নেই।
ভাইরাসের থেকে কিছু শিখলেন?
সেদিনের সেই ইয়ং অ্যাংগরি ম্যানকেও, শাহেনশাকেও আজ রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে কোভিড।
বলা যায় না দাউদ ইব্রাহিমকেও দেখাবে কিনা!
রাজা, রানি সব কুপোকাত। দু হাজার বিশ আমাদের আরও কত কী শেখায়, দেখুন।
কোভিড হলে আপনি আমি বাঁচব কিনা একমাত্র বলতে পারে ডারউইনের SURVIVAL OF FITTEST থিওরি।
পাতি বাংলায় ভাবানুবাদ করলে ওটা মা সারদার বাণী -‘যে সয় , সে রয়।’
এই সয়ে নেওয়া মুখ বুজে রাজা রানির পুজো করে সয়ে নেওয়া নয়। এটা আমার আপনার স্বাস্থ্যের অধিকার। যাতে অসুখ হলে আমরাও / আমাদের সন্তানরাও বেড পেতে পারি, চিকিৎসার অধিকার পেতে পারি।
দোহাই, বলে বসবেন না, চিকিৎসকদের দোষ। এদেশে জনগণের মতোই চিকিৎসকরাও দাবার বোড়ে। নিয়মনীতি কোনওটাই তাঁরা তৈরি করেন না। পেটের দায়ে বাধ্য হন মেনে নিতে।
তা এবার একটু পজিটিভ হোন না হয় ভাইরাসের মতো। সংক্রামক হোক ‘সাধারণের স্বাস্থ্যের দাবি’। না, কোনও রাজনৈতিক প্রচার করছি না। সমালোচনাও নয়। এটা আমাদের ভারতীয় সংবিধানে থাকা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আমরা ভেড়া বলেই ভুলে যাই দাবি আদায় করতে। আমাদের সফট টার্গেট স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তাররা। আমরা লাখ লাখ লোক হিরোর বাংলোর সামনে জড়ো হই। কিন্তু ভুলে যাই আমাদের অসুখবিসুখে এঁরা আমাদের দেখবেন না।
জীবনে কোনটা বেশি প্রয়োজনীয়? স্বাস্থ্য না বিনোদন?
কোভিডের থেকে শিখে নিন গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হয়। পৃথিবীর এতগুলো দেশের সিস্টেমে ঢুকে পড়েছে সমানভাবে।
তা আমরা কী করব ?
মিম, জোকস, রান্নাবান্নার ছবি শেয়ার করব নয়তো বাঙালির জাতীয় খেলা- আয় ভাই টেনে নামাই।
কে যেন সেদিন বললেন, There is no DEMOCRACY & PRIVACY in today’s tech savvy world.
কোভিড ভাইরাসকে দেখে কথাটার প্রথম অংশটা বিশ্বাস করতে পারছি না। গণতন্ত্র আছে। থাকবে। জিত হবেই ।
আপনি কী বলেন?