আর জি কর আন্দোলনের সূচনাপর্বই বুঝিয়ে দেয় এই আন্দোলন এক অভূতপূর্ব ইতিহাস রচনা করতে চলেছে । ‘Reclaim the Night and Reclaim the Right’ – রাত দখল আর অধিকার প্রতিষ্ঠার আহবান ছড়িয়ে যায় শহর নগর গ্রামে গ্রামান্তরে । তীক্ষ্ণ, শক্তিশালী এই শ্লোগানের বৌদ্ধিক স্বত্ব নিয়ে যতই বিতর্ক থাক, বাজার-পত্রিকার সম্মান যতই যৌথতার শক্তি কে অগ্রাহ্য করে ব্যক্তিপুজার আয়োজন করুক, এই শ্লোগান এক অনন্য জনজোয়ারের জন্ম দিয়েছিল । মিছিলকে মানুষ খুঁজতে হয়নি, মানুষ মিছিল খুঁজেছে – এই বহুশ্রুত বাক্যটি বুঝিয়ে দেয় প্রাথমিক পর্বে আন্দোলনের ব্যাপ্তি।
স্বাস্থ্য ভবনে দশ দিনের অবস্থান ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিন জন আধিকারিকের অপসারণ (প্রকৃত অর্থে বদলি) এবং হাসপাতালে নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতির পর । প্রতিশ্রুতি না মেটায় অনশনে বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা । পরিকাঠামোগত পরিবর্তন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দশ দফা দাবি টেলিফোনে জেনে তখনই সমস্যার সমাধান করতে চাওয়ার চেষ্টা করেন সরকারমুখ্য। শুধু ষ্টার আনন্দর সান্ধ্য সভায় সরকার পক্ষের কৌঁসুলি রা ছাড়া এই প্রচেষ্টা কে আর কেউ ই সাধুবাদ জানাতে পারেনি একথা বলাই বাহুল্য। প্রবল চাপের মুখে সরকারপক্ষ মুখোমুখি বৈঠক ডাকতে বাধ্য হয় ।
মৌখিক ভাবে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি মেলে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত টাস্কফোর্স গঠনের কথা বলা হয়। ডিজিটাল বেড ভেকেন্সি আর কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা – সরকারের তথাকথিত পাইলট প্রজেক্ট অদূর ভবিষ্যতেই চালু হবে বলে জানানো হয়। ঘনিষ্ঠ দল অনুগামীদের লাগাতার দুর্নীতি এবং হুমকি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রবল আক্রমণের মুখে ‘অভিযোগ -অভিযুক্ত’র ব্যকরণ গুলিয়ে যাওয়া বা আর জি কর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কে কুরুচিকর ধমক – আপাত দৃষ্টি তে ছোটোখাটো এই সব বিষয়ে দুপক্ষের বিরোধ থেকে গেলেও অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
এই বৈঠক খুব তাৎপর্যপূর্ণ কারণ যে বিষয় গুলি নিয়ে জনসমাজে আলোড়ন চলছে সেই বিষয় বা সমস্যা গুলির প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি খুব স্পষ্ট হয়ে যায় । এখানে সরকারমুখ্য হুমকি সংস্কৃতির বাহকদের প্রতি খোলাখুলি ভাবে রক্ষণাত্মক মনোভাব দেখান। অন্যদিকে আর জি কর এবং উত্তরবঙ্গের কলেজ কাউন্সিলে সরকারি গ্রিভান্স রিড্রেসাল কমিটির সদস্যের উপস্থিতিতে নেয়া কলেজের সুস্থ পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত বেশ কিছু ছাত্রনেতার বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। লাইভ স্ট্রিমিং এ দেখা যায় এবং শোনা যায় তিনি স্বাস্থ্য সচিব কে জিজ্ঞেস করছেন ‘কলেজ কাউন্সিল মানে কারা’, ‘আমাদের জানিয়ে ছিল কি’ ইত্যাদি ইত্যাদি। ইউ জি সি র নিয়মানুসারে কোন প্রতিষ্ঠানের anti-ragging committee স্বাধিকার প্রাপ্ত। মেডিকেল কলেজ গুলি এই নিয়মের আওতায় পড়ে কি না সেই কূট আইনি তর্কে না ঢুকেও সাধারণ বুদ্ধি থেকে বলা যায় অধ্যক্ষ, কাউন্সিল সদস্য এবং গ্রিভান্স রিড্রেসাল কমিটির সদস্যের সম্মতি ক্রমে নেয়া সিদ্ধান্ত কে সরকারের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখানোর দৃষ্টান্ত সুস্থ গনতান্ত্রিকতার ইঙ্গিত বহন করে না। এই বৈঠকের ব্যর্থতা অনিবার্য ছিল কারণ দুই পক্ষের অবস্থান এবং লক্ষ্য একেবারে আলাদা সেটা শুরু থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ।
স্বাস্থ্য ভবনে অবস্থান এবাং ধর্মতলায় অনশন পর্যন্ত আন্দোলনের একটি বিশেষ পর্যায় যেখানে তিলোত্তমার বিচার এবং বিচারের দাবি তে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটানোএক ঝাঁক উজ্জ্বল, সমাজমনস্ক তরুণ তরুণী র জন্য শুধু শহর কলকাতা নয়, দূর দূরান্তের মানুষ হাজারে হাজারে লাখে লাখে মানুষ পথে নেমেছেন। ৭৮ তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে রাত দখলের ইতিহাস রচিত হয়েছে । এই পর্যায় কে আমরা জোয়ারের কাল বলতে পারি। একটা আন্দোলনে চিরকাল জোয়ারের তীব্রতা থাকা সম্ভব নয়। তরঙ্গের শীর্ষবিন্দু স্পর্শ করে গতি খানিক স্তিমিত। কিন্তু প্রতিবাদ থামেনি। অনশন উঠে গেলেও প্রতিবাদ চলতে থাকে। আর জি করে গন কনভেনশন, সোদপুর থেকে শ্যাম্ বাজার মশাল মিছিল, কলেজ স্ট্রিট থেকে মহামিছিল এবং জনতার চার্জশিট – এই কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও শহর কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে এবং শহরতলিতে প্রায় প্রতিদিন ই কোন না কোন প্রতিবাদী অনুষ্ঠান হচ্ছে । এই ভাঁটার কালে আরও বেঁধে বেঁধে থাকার জন্য জয়েন্ট প্লাটফরম অফ ডক্টরস এর উদ্যোগেএক ছাতার তলায় শতাধিক সংগঠন একত্রিত হয়ে গড়ে তুলেছে অভয়া মঞ্চ যার শিকড় একে একে শহর গ্রাম মফস্বলে ছড়াতে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যে অসংখ্য প্রমানিত অভিযোগ থাকলেও সরকারপ্রধানার কাছে যারা অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হলনা, তারা ভুল ব্যাকরণের ফোকর গলে একে একে স্বভুমি তে প্রত্যাবর্তন করেছে । উপনির্বাচনে প্রত্যাশিত হাফ ডজন গোল সরকারের আত্মবিশ্বাস কে দ্বিগুন করেছে। হাসপাতালে চরম দুর্নীতি আর খুনের মামলায় অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষের চার্জশিট এখনো কোর্টে পেশ করা যায়নি রাজ্য সরকারের ছাড়পত্র মেলেনি বলে ।
এই পর্বে বৌদ্ধিক অনুশীলন শুরু হয় আন্দোলনের চরিত্র নিয়ে। নামী সংবাদপত্র, সোশ্যাল মিডিয়াতে আন্দোলনের বিশ্লেষণ করেন খ্যাতনামা সমাজতাত্ত্বিক এবং অর্থনীতিবিদরা । প্রাক্তন বাম সমাজতাত্ত্বিক ‘ হোক কলরব’ আন্দোলনের সময় থেকেই নাগরিক ছাত্র আন্দোলনের ঘোর বিরোধী । সারবত্তাহীন নাগরিক এলিটদের স্বার্থবাহীআন্দোলন, যার সঙ্কীর্ণ পরিসরে নিম্নবর্গের মানুষের সংগ্রাম ও আশা আকাঙ্খা প্রতিফলিত হয়না – এই তত্ত্বের সঙ্গে হোক কলরবের সময় থেকেই আমরা পরিচিত । নাগরিক আন্দোলনের শ্লোগানে মেধার দীপ্তি, ভাষার শাণিত প্রয়োগ সম্পর্কে নেতিবাচকতা তাঁর লেখার চেনা বৈশিষ্ট্য – “The populist government representing the inarticulate lower classes could not cope with the clever eloquence of the educated class”. এতটাই চেনা বাক্য যে বিভ্রান্তি হয়, রনবীর সামাদ্দারের এ লেখা ২২ শে অক্টোবর ২০১৪ DNA কাগজে প্রকাশিত ‘হোক কলরব’ আন্দোলনবিরোধী রচনা না কি ২৮ শে অক্টোবর ২০২৪ এ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত অভয়া আন্দোলন বিষয়ক প্রবন্ধ ‘কোন নাগরিক কোন জনতা’! ২০১৪ তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর যৌনহেনস্থা সরকারঘনিষ্ঠ সমাজবিদ কে ভাবায়নি, ২০২৪ এ আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন ও তাঁকে বিচলিত করতে পারেনি। গ্রামে গঞ্জের দরিদ্রমানুষের চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতির জন্য সেন্ট্রাল রেফেরাল বা ডিজিটাল ভেকেন্সি চালু করার দাবিকে তিনি সামাজিক তাৎপর্যহীন মনে করেন। গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত ছাত্র সংসদের দাবি তাঁর কাছে বাতুলতা মাত্র। বহু স্বরকে মান্যতা দিয়ে ৩৫ টি মেডিকেল কলেজের প্রতিনিধি দের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সারারাত ব্যাপী বৈঠক গণবিছিন্ন স্বার্থকেন্দ্রিক আন্দোলনের প্রমাণ হিসাবে চিহ্নিত হয়। জুনিয়র চিকিৎসক দের ধর্মঘটের সময় সিনিয়র চিকিৎসক দের প্রাণপাত পরিশ্রম , অভয়া ক্লিনিক, বন্যা ত্রাণ – কোন কিছুই আন্দোলনের জনবিরোধী তকমা কে দূর করতে পারেনা। সরকারি তোতা কাহিনীর ভাষ্যে জুনিয়র চিকিৎসকদের গণশত্রু বানানোর নিরন্তর চেষ্টা চললেও তথ্য দিয়ে প্রমাণ করা যায়নি । ধর্মঘটরত চিকিৎসকদের অবস্থানে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষের উপস্থিতি অন্য সামাজিক আবেগের পরিচয় দেয়।
‘সঙ্কীর্ণ নাগরিক আন্দোলন’ ছেড়ে ‘জনবাদী’ সরকারের বৃহত্তর নিম্নবর্গীয় সামাজিক ব্যাপ্তির জায়গা টা দেখা যাক। অভয়া কাণ্ডে সরকার যাকে তড়িঘড়ি দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসি দিতে ছেয়েছিল, সেই সঞ্জয় রাই সামাজিক শ্রেণীগত ভাবে উচ্চ বর্গীয় নয় । কিন্তু আন্দোলনকারী রা প্রথম দিন থেকে যাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে তারা সমাজের সুবিধাভোগী ক্ষমতাবান শ্রেণীর সদস্য, যারা ক্ষমতা কে ব্যবহার করে দুর্নীতি আর সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে । সারদা-নারদা-মুকুল-মদন-পার্থ-জ্যোতিপ্রিয় কেলেঙ্কারির পর, সন্দীপ ঘোষ-আশিস পাণ্ডে- অভীক-বীরুপাক্ষ –টালা থানার ওসি অভিজিত মণ্ডল নাট্য চক্রের পরেও সবার নিচে সবার পিছে সবহারাদের প্রতিনিধিত্বের অধিকার ‘জনবাদী’ সরকারের থাকছে শুধুমাত্র কালীঘাটের রাজনৈতিক নেত্রীর ব্যক্তিগত লড়াই এবং উল্লম্ব সামাজিক উল্লম্ফনের জন্য ? তাহলে গেরুয়াবাদী রাও জনবাদী। ওনাদের সুপ্রিমো সাফ কথা সাফ বলেন। জনমোহিনী খেলায় দ্বৈরথে নামে ‘দিদির দরবার’, ‘দিদি বলো’ বনাম দাদার ‘মন কি বাত’। তথাকথিত নগণ্য বিক্রেতা থেকে আসমুদ্র-হিমাচলের অধীশ্বর। জনসম্ভাষণে শিক্ষা বা মেধার দ্যুতির অপবাদ নিন্দুকে রাও দিতে পারবেনা। কিন্তু শুধু এই টুকু তেই কি জনবাদের তত্ত্ব আটকে থাকবে? ২৬ শে নভেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত অমিতাভ গুপ্ত র লেখা ‘দল নয় সরকার’ প্রবন্ধে জনবাদের প্রধান চরিত্র তথা শক্তি সঠিক ভাবে চিহ্নিত – খাজনা তোলার সার্বজনীন আধিকার, দুর্নীতির অনুভূমিক বিস্তার।
১৮ই নভেম্বর The Wire পত্রিকায় বিদগ্ধ সমাজতত্ত্ববিদ জনবাদের ভিত্তি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। সতের পাতার প্রবন্ধের নির্যাস গত কয়েক মাসের এই সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্তৃত্ব পরায়ণ সরকারের বিরুদ্ধে নাগরিক জীবন মূল্যবোধ আর অধিকার রক্ষার লড়াই নয় । নারী বা প্রান্তিক যৌনতার মানুষের লড়াই ও নয়। এ লড়াই মধ্যবিত্তের ক্ষমতা দখলের লড়াই শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসাদ বঞ্চিত বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে, যারা নয়া উদারনীতির সুবিধাভোগী মধ্যবিত্তদের দ্বারা শোষিত কিন্তু মধ্যবিত্তদের উপরেই নির্ভরশীল প্রতি পদে। তাঁর মতে এক সামাজিক গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে যার এক দিকে ‘সাংস্কৃতিক রসদে বলীয়ান মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত নাগরিক সমাজ, অন্য দিকে সাংস্কৃতিক রসদহীন প্রান্তিক জনসাধারন’। সুবিধাহীনরা সরাসরি নয়া অর্থনীতির চাকরি বাজারের সুযোগ নিতে অপারগ তাই তারা তৈরি করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতির বাইরে এক সমান্তরাল অর্থনীতি – চিট ফান্ড, চোরা চালান, বেআইনি খনি, তোলাবাজি, বালি সিমেন্টের দালালি, বেআইনি নির্মাণ, ফুটপাথ বেআইনি দখল করে হকারি, – এই সব আইন বহির্ভূত পথেই ক্ষমতায়ন হয়েছে প্রান্তিক শ্রেণীর । আর এই প্রান্তিক জন গোষ্ঠীর সমর্থনেই ক্ষমতায় এসেছে ‘জনবাদী সরকার, তাই আইন ভাঙ্গা এই সরকারের গঠনতন্ত্রেই। গ্রামশির তত্ত্ব অনায়াসে ব্যবহৃত হয় । একশ বছর আগে গ্রামশি স্বপ্ন দেখেছিলেন নেপলস এর বুদ্ধিজীবী এবং শ্রমিক পার্টির নেতৃত্বে দিশাহীন প্রলেতারিয়াতদের রূপান্তর ঘটানোর। সমাজতত্ত্ববিদের মতে নয়া উদারনীতিবাদী অর্থনীতি তে এই সম্ভাবনা নেই তাই তিনি স্বপ্ন দেখলেন জনবাদী পার্টি কে নিয়ে, যারা এগিয়ে এসেছে নিম্ন বর্গের মানুষের সমাজ বহির্ভূত , আইন বিরোধী শক্তি কে হাতিয়ার করে। এই প্রান্তিক জনসাধারণ নির্দেশক ছাতা টা খুব ই চিত্তাকর্ষক। ছাতার নিচে ফুটপাথ দখলকারী হকারের সঙ্গে এক হয়ে যায় বেআইনি সিন্ডিকেট রাজ, তোলাবাজ, টালা থানার ওসি অভিজিত মণ্ডল,সন্দীপ’ ঘোষ, অভীক, বিরূপাক্ষ, যাদের সঙ্গত কারণেই অভিযুক্ত, দোষী কিছুই বলা যায়না, যারা পাহাড় প্রমাণ অভিযোগ মাথায় নিয়ে ও একে একে প্রত্যাবর্তন করছে স্ব স্ব স্থানে!
কিন্তু এই খানে এক মস্ত গরমিল হয়ে গেল। ঘুন ধরা সমাজের পরিবর্তনে প্রান্তিক মানুষের সমাজ ও আইনবিরোধী শক্তি রাষ্ট্রের কাছে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে । লেখক নবারুণ ভট্টাচার্য সৃষ্ট ফ্যাতাড়ু রা সেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষ যারা বিশ্বায়নের অর্থনীতির স্রোতে প্রান্তিক, সুবিধা ও সম্মান বঞ্চিত। এরা সরকারের বন্ধু নয়। কেন্দ্র ও রাজ্যের ‘মান্যবর সরকার’ কে এরা হুশিয়ারি দেয়
“ মানুষ উড়িতেছে …এক প্রলয়াত্মক সংঘাত ক্রমেই নিকটবর্তী হচ্ছে। কাহারো ক্ষমতা নেই এই লড়াই ঠেকায়“। এই ফ্যাতাড়ু রা সরকার এবং রাষ্ট্র বিরোধী । জনবাদী সরকারের শক্তির উৎস এরা নয়। জনবাদীদের সমর্থক ‘প্রান্তজনেরা’ ‘বিষ্ণু র একাদশ অবতার ‘ যারা বলে “পার্টি আমাদের হাতায়, একেবারে হাতের মুঠোয়, অথবা বলা ভাল যখন যে পার্টি রুল করে তারাই আমাদের হাতে রাখে , রাখতেই হয় ; এটা দস্তুর । সব বলে রেখেছি… সিগনাল ওপেন দিচ্ছি… থানা ফানা আমরা দেকে নেব ।“(স্বপন পাণ্ডা, সিটি বুলেটিন) । এক দিকে সুবিধাভোগী উচ্চাভিলাষী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত , অন্য দিকে তথাকথিত সরস্বতীর প্রসাদ বঞ্চিত নিম্ন বিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত – ‘খাজনা আদায়ের’ অবাধ সুবিধা থাকায় এই দুই শ্রেনিরই দ্রুত দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে। উচ্চমধ্যবিত্ত নিম্নবিত্তের লড়াই – এই সরল বাইনারি র বাইরে বেরিয়ে এক একটি সামাজিক শ্রেণীর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দকে বোঝা দরকার। আন্দোলনের অভিমুখ দুর্বৃত্তহীন, সন্ত্রা্সমুক্ত সমাজের দিকে।
The Wire পাত্রিকায় প্রকাশিত ‘5 Lessons from R G Kar Movement’ প্রবন্ধে উদ্দেশ্য বিধেয় সবই খুব স্পষ্ট । সহজ কথাকে গুলিয়ে দিয়ে সুবিধা মত রাজনৈতিক ব্যাখ্যা- “Educated reasoning went further: There must be a correlation between incidence of rape and the extent of this parallel economy. Frustrated, unemployed, angry men rape women…If a member of the civic police force has raped a woman, then hospitals cannot have civic police as part of the protection force. In this way, a new criminal race was born in front of our eyes in the past two months…all agreed that civic police cannot be entrusted with the duty of protecting public health facilities”
সিভিক পুলিশ কে নিয়ে আন্দোলনকারী দের অভিযোগ অনেক কিন্তু এই ধর্ষণের ঘটনায় সিভিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রাজ্যসরকার ছাড়া আর কেউ ই নিঃসন্দেহ নয়। সিভিক পুলিশ কে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করে ফাঁসি তে চড়ানোর দাবি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর, আন্দোলনকারী দের নয়। আন্দোলনকারীরা এই খুন ও ধর্ষণের মুল অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেন উপর তলা কে, কোন হতাশগ্রস্ত বেকার যুবক কে নয়। সিভিক পুলিশ কে অস্বাভাবিক দ্রুততায় গ্রেফতার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের এনকাউন্টারে মেরে ফেলার বিধান – ঘটনার আকস্মিকতা স্তম্ভিত করে আন্দোলনকারীদের । এটা বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার কে বাঁচাতে পুলিশ কমিশনার, ডি সি নর্থ, ডি সি সেন্ট্রাল, স্বাস্থ্য সচিব এবং বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন নি। সিভিক পুলিশের অপসারনের দাবি উঠেছে নিরাপত্তার বৃহত্তর প্রশ্নে। স্থায়ী পদ নয়, ঠিকার ভিত্তি তে নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীর উপরে ভরসা না থাকার মধ্যে কোন শ্রেণীবিদ্বেষ নেই, হাসপাতাল বা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্ব স্থায়ী নিরাপত্তা কর্মীর হাতেই থাকার কথা। এই ঠিকা পদ গুলিতে নিয়োগের পিছনে দলীয় আনুগত্য এবং উৎকোচের ভুমিকা অজ্ঞাত নয়। চাকরির স্থায়িত্ব না থাকায় দলীয় আনুগত্য কখনো প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে । তাই যতই ক্ষুরধার যুক্তি তে সমাজতত্ত্ববিদ সামাজিক শ্রেণী সংঘর্ষ তত্ত্বেরঅবতারণা করুন, এই সংঘর্ষ দুর্নীতি গ্রস্ত সরকার বনাম শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের।
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার ২২ শে নভেম্বরের আ বা প তে ‘কে ভাই কে দুশমন শীর্ষক প্রবন্ধে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন সরকারি অভিযুক্ত ছাড়া কাউকে এখনও খুনের চার্জশিট দেয়া যায়নি বলে। সরকার বিরোধী এই আন্দোলন কে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে তিনি ঘোষণা করেছেন এই আন্দোলন সরকারের ক্ষমতা কে কমানোর পরিবর্তে বাড়িয়েছে । শুরু থেকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা, জুনিয়র ডাক্তার দের চাপ এ পোস্টমর্টেম যা হাজার টা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয় হাসপাতালএবং পুলিশ প্রশাসনকে, খুন এর পরের দিন সকালে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ একাধিক চিকিৎসক, উকিল, এবং চিকিৎসা কর্মীর আর জি করে সেমিনার রুমে উপস্থিতি, সেমিনার রুম এর পাশে ঘর ভেঙ্গে ফেলে প্রমান লোপাটের চেষ্টা, রাত দখলের রাতে আর জি করে গুন্ডা বাহিনীর আক্রমন- এর পরেও অর্থনীতিবিদ লেখেন “
“এ কথা বলার আর উপায় রইল না যে কলকাতা পুলিশ আসল অপরাধী দের আড়াল করছে বা ইচ্ছে করে তদন্তে দেরি করছে। … সি বি আই এর তদন্ত থেকে এমন কোন তথ্য এখনও উঠে আসেনি যা থেকে বলা যায়- দুর্নীতি গ্রস্ত চিকিৎসকরা খুন ও ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গেও যুক্ত… এখন অবধি সি বি আই …কোন চিকিৎসক কে ধর্ষণ খুনের ঘটনায় জড়াতে পারেনি । দুর্নীতি ও খুনের মধ্যে যদি ভবিষ্যতে কোন যোগসূত্র পাওয়াও যায়, ততদিনে আন্দোলন তার গতি হারাবে” !
একনিষ্ঠ সরকার অনুগতর চেয়েও বেশি আনুগত্য দেখিয়ে অধ্যাপক সরকার বলেন “ সি বি আই বা সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধাচরণে রাতদখলকারীদের রুচি । তাঁদের শত্রু মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল”। সি বি আই এর সি জি ও কমপ্লেক্স এ একাধিকবার অবস্থান, সি বি আই এর দীর্ঘসূত্রিতার বিরুদ্ধে শ্লোগান, সুপ্রিম কোর্টের সুও মোটো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অজস্র লেখা, শিয়ালদা কোর্টের সামনে অবস্থান – এই কোন পরিকল্পনা বা কর্মসূচি অভিজ্ঞ অধ্যাপক কে ভাবাবে না কারণ তিনি ‘কে ভাই কে দুশমন’ নির্ধারিত করে নিয়েছেন অনেক আগেই ! বুঝতে একটুও অসুবিধা হয়না যে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ স্নেহধন্য দুর্নীতি চক্রের মাথা সন্দীপ ঘোষ এবংতাঁর বাহিনীর কেউ এখনো খুনের মামলা্র চার্জশিট পায়নি বলে দল এবং সরকারের শুভার্থী হিসাবে তিনি যারপরনাই আনন্দিত। আন্দোলনের গতি হারানোর আশায় দিন যাপন করছেন আরও অনেক মসীজীবী ।
আশির দশকে ডাক্তারদের দু’টি বড় আন্দোলন হয়- ১৯৮৩ আর ১৯৮৭। গণ আন্দোলনের ইতিহাসে সুচিকিৎসা আর স্বাস্থ্যের দাবিতে গড়ে ওঠা এই আন্দোলন গুলির বিশিষ্ট স্থান রয়েছে।
১৯৮৩ র আন্দোলন প্রথম একটা গণ আন্দোলন যেখানে ‘স্বাস্থ্য ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য অধিকার’ এই দাবি শোনা যায়। শুধু বেতন বৃদ্ধির লড়াই নয়, কর্মস্থলে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, চব্বিশ ঘণ্টা এক্স রে, ই সি জি, প্রতিটি হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্ক, শূন্য পদে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ- এই রকম গণমুখী দাবি নিয়ে প্রায় দেড় বছর প্রচার চালিয়ে সরকারের অনমনীয়তার প্রতিবাদে ডাক্তাররা প্রতিবাদে ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হন। প্রায় ছ মাসের বেশি চলা জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলনের দাবি দাওয়া মেনে নিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। বিনা মূল্যে বেড, দামি ওষুধ, বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা হাসপাতাল পরিষেবার মধ্যে চলে আসে এই আন্দোলনের পর। কিন্তু পরবর্তী কালে তার প্রয়োগ নিয়ে সন্তুষ্ট হন নি আন্দোলনকারীরা। বছর তিনেক পর আবার আন্দোলনে নামতে হয় জুনিয়র ডাক্তার দের । এর পর আবার আন্দোলন শুরু হয় ১৯৮৭ সালে। হাসপাতালে কাজের পারিস্থিতি, চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি, বেতন বৃদ্ধি, অ স্বাস্থ্যের অধিকারের প্রশ্নে জুনিয়র ডাক্তার রা রাস্তায় নামেন, সাঙ্গে সামিল হন সিনিয়র ডাক্তার রাও। সাত টি মেডিক্যাল কলেজের প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ চিকিৎসক এই আন্দোলনে যোগ দেন। নাগরিক সমাজের অনেকেই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ৪৩ দিন ধর্মঘট চলার পরে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে বৈঠক হয়, জ্যোতি বসু নীতিগত ভাবে দাবী গুল মেনে নেন এবং মনি ছেত্রী কমিটি গঠন করে হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের বিভিন্ন পরিকল্পনা চালু করেন।
২০২৪ এর আন্দোলনে সরকারি পক্ষের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে ৮০ র দশকের অনেক সাদৃশ্য, আবার কিছু বৈসাদৃশ্য। সরকারি পক্ষ থেকে ‘সরকার/দল বিরোধী রাজনৈতিক উস্কানি‘ প্রণোদিত আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করা এখনের মত তখনো ছিল। রাজনৈতিক দলের হুমকি, শাসানি, কটূক্তি এবং ধর্মঘট ভাঙ্গার অপকৌশল – এই সব কিছুই ছিল আগের দুটি আন্দোলনে ও । আগের দুটি আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরকার অনেক সংযত । কর্মবিরতি যে একটা অধিকার এটা আগের আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেছে। আগের দুটি আন্দোলনেই পুলিশ লাঠি চালনা করে যার প্রভাব নেতিবাচক হয়েছিল । এবার নানা ধরনের অসহযোগিতা করলেও লাঠি চালানোর সাহস দেখায়নি ।
অধ্যাপিকা অনুরাধা রায় ২৭ শে নভেম্বর আ.বা.প. তে আন্দোলনের স্বাস্থ্য পরিষেবার দাবি নিয়ে অত্যন্ত জরুরি কিছু বিষয় আলোচনা করেছেন, যাকে এই আন্দোলনের গঠনমূলক সমালোচনা বলা যেতে পারে। আশির দশকের আন্দোলনের দাবি গুলির সঙ্গে তুলনা করে ২০২৪ এর আন্দোলনের দাবিগুলিকে স্বাস্থ্যসংস্কার চিন্তার দিক থেকে তাঁর সঙ্কীর্ণ মনে হয়েছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আজকের আন্দোলনকারীদের পূর্বসূরিরা অনেক বেশি সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছিলেন। সেন্ট্রাল রেফেরাল এর দাবির পাশাপাশি স্বাস্থ্যপরিকাঠামোর বিকেন্দ্রীকরণের দাবি ছিল যা এই আন্দোলনে এখনো উঠে আসেনি। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির মানবসম্পদ ও পরিকাঠামোর উন্নয়নের প্রস্তাব লিখিত দশ দফা দাবির অন্তর্ভুক্ত হয়নি, যদিও আন্দোলনের নেতাদের মুখে গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়নের কথা শোনা গেছে। পূর্ববর্তী আন্দোলনে নামকরা মেডিকেল কলেজের মোহ কাটিয়ে শহরে গ্রামে ছোট ছোট হাসপাতাল গড়ে তোলার প্রস্তাব আসে। ১৯৮৫ তে স্বাস্থ্যসংস্কারের দাবির সূত্রে স্বাস্থ্য সচিব সঙ্গে এক বৈঠকে রবীন্দ্রনাথের স্বাস্থ্য সমবায় প্রচেষ্টা, চিনের দৃষ্টান্ত, বিকল্প মডেল হিসেবে ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, দাতব্য কমিউনিটি হাসপাতাল প্রভৃতি নানা বিষয় উঠে আসে আলোচনায়। রোগ নিরাময় এবং নিরোধকের তুলনামুলক আলোচনা সহ preventive measures নিয়ে ভাবনা উঠে আসে।
আশির দশকের দাবির সামাজিক বিস্তার ২০২৪ এর চেয়ে বেশি ছিল এ কথা ঠিক। সেই বিস্তারের লক্ষ্যে না এগোলে এই আন্দোলন সফল হবেনা। কিন্তু সামাজিক গণ আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অভয়া আন্দোলনের ব্যাপ্তি আশির দশকের চিকিৎসক আন্দোলনের থেকে অনেক বেশি। পূর্ববর্তী চিকিৎসক আন্দোলন এবং তেভাগা-তেলেঙ্গানা, খাদ্য আন্দোলনের মত বৃহৎ গণ আন্দোলন গুলির থেকে পাঠ নিতে হবে । নগরকেন্দ্রিকতাকে অতিক্রম করে গ্রাম অভিমুখী না করলে এ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নেই। আন্দোলনকারীরা অনেকেই এটা স্বীকার করছেন। যে স্বনির্ভরতায় এই আন্দোলন শুরু হয়েছে, যে স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ, পরিণত বুদ্ধি এবং যৌথ শক্তি আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, তা এই লড়াইকে থামতে দেবে বলে মনে হয়না। মনে রাখতে হবে আমরা এক মুমূর্ষু সমাজ, ফাঁপা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি । এই প্রজন্ম বড় হয়েছে গত কয়েক দশকের রাজনীতিতে শুধু নেতাদের কেনা বেচা দেখে। এই প্রজন্ম বড় হয়েছে নম্বরের দৌড়ে সবাই কে পিছনে ফেলে প্রথম হবার সামাজিক আবহে যখন চারপাশে শুধু ‘hollow men, stuffed men’, যাদের অর্থহীন শব্দরাশি হারিয়ে যায় বাতাসের মর্মরে । এই অন্তঃসারশূন্য সময়ে যারা স্বপ্ন দেখতে পারছে, স্বপ্ন সঞ্চারিত করতে পারছে, তারা পথ চলতে চলতে ভুল করবে, চলার পথেই ভুল ঠিক করে নেবে। আন্দোলন কখনো স্তিমিত হবে, সেই সুযোগে সেটিং হবে, সন্দীপ ঘোষ রা জামিনে ছাড়া পাবে, আবার গর্জে উঠবে প্রতিবাদ। কোনদিন হয়তো আমরাও বলতে পারবো
“It was the best of times, it was the worst of times”
বিপ্লব সেই ফিনিক্স পাখি, যে ধ্বংস হয়েও বার বার ফিরে ফিরে আসে ।।
—————————————————————————-
তথ্য-ঋণ : ডঃ পুণ্যব্রত গুণ
ডঃ অমিতাভ চক্রবর্তী
অধ্যাপক অমিত ভট্টাচার্য
অধ্যাপিকা অনুরাধা রায়
লেখিকা গুরুদাস কলেজে ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপিকা।
একদম তথ্য সমৃদ্ধ।