ডাক্তারির দৌলতে নিত্য নতুন অনেক মানুষের সাথে যোগাযোগ হয়। কখনও সেটা রোগ ওষুধেই শেষ হয়, কখন তারপরও কিছুটা কথোপকথন চলে। উপদেশ দিয়ে প্রেসক্রিপসান হাতে ধরিয়ে দেবার পরের অংশটা যেমন কখনও পাকা পাকা কথা শোনার বা ছড়া শোনার অনাবিল আনন্দ দিয়ে যায়, আবার কখনও কিন্তু মনটাকে কাঁদিয়ে দিয়েও যায়। নিমেষে যেন ডাক্তারি খোলসটা কোথাও উধাও হয়ে গিয়ে, একজন মানুষ হিসাবে আর একজন মানুষের অসহায়তা, চোখের জল,স্বজন হারানোর যন্ত্রণা, নিদারুণ জীবন যুদ্ধ -গলাটা একদম ভারি করে দেয়।
নিজের ক্ষমতা মত যতটা করা যায় তার অনুপ্রেরণা তো আসেই। সাথে ক্ষমতায় বাইরে গিয়েও যদি ওদের পাশে থাকা যায় তার বাসনা জাগে। আমার চোখে দেখা এমন এক শিশুর মায়ের চোখের জল আর অসহায়তা যে এভাবে সংবাদ প্রতিদিনের সহৃদয় সাংবাদিক বন্ধু, চিফ-এডিটর আর ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহাত্মাদের ছুঁয়ে যাবে তা সত্যিই বড় উৎসাহের। মানবিকতা মাথা উচুঁ করে এখনও দিব্যি বেঁচে আছে।
করোনা যে শিশুদের বাবা, মা বা দুজনকেই কেড়ে নিল তাদের পরিবারের কি অবস্থা হচ্ছে তা হয়তো আমাদের ধারণারও অতীত। কোনো শিশু জন্মে জানতেই পারলো না বাবা কি? কারো বা চোখ ফুটে দেখলো বাবাকে কেবল ছবিতে। কারো জন্যে আবার মা বা বাবার বুকে মাথা দিয়ে চুপ করে আদর খাওয়া জীবনের মত ঘুচল। শুধুই তাদের মানসিক লড়াইতে কোনো ভাবেই হয়তো আমরা কিছু করে উঠতে পারবো না। কিন্তু খাওয়া, পরা, থাকা,লেখা পড়া এগুলোর জন্যে হয়তো কয়েকটা হাত এগিয়ে এলে ওদের জীবনের ডুবন্ত নৌকাগুলো এ যাত্রায় রক্ষা পেলেও পেতে পারে।
কয়েক সেকেন্ডের জন্যেও যদি নিজেকে ওদের জায়গায় রাখা যায় শিউরে উঠতে হয়। কিছুটা হলেও অনুভব হয় ওদের অসহায়তার।
আসুন না একজন মানুষ হিসাবে একটু চেষ্টা করি ওই শিশুদের একটু আদর করে বুকে টেনে নি। যে যে ভাবে পারেন ওদের জন্যে একটু ভালোবাসা মাখা হাতটা বাড়িয়ে দিন।
https://epaper.sangbadpratidin.in/epaper/m/548656/611b09766417b