দুই মহাদেশ পেরিয়ে এসে ,
এই যে বিমান নামলো দেশে,
খাবার দেয়নি এগিয়ে হেসে কোনো বিমান-ক্রিউ,
হাতে শেকল পায়ে বেড়ি,
জন্তু যেন করছে ফেরি,
অ্যায় ওয়াতন, ওয়াতন মেরি, কুছ না বোলি কিঁউ?
তোমরা যারা দেশোয়ালি,
দিচ্ছো জানি গুচ্ছ গালি,
দুটো দেশের চোখের বালি আমরা ‘অ্যালিয়েন’
স্বপ্ন ভালো জীবন পাওয়ার,
পথ ধরেছি উল্টো হাওয়ার
চরৈবেতি’র বৈঠা বাওয়ার ‘ হোমো স্যাপিয়েন’।
দেশে কিছু ছিলো না কী,
সেই সওয়ালে বিরাট ফাঁকি,
‘আচ্ছা’ বলে যতই হাঁকি ‘ সারে জাঁহা সে’
ঘরের কোনো মেয়ে বা ছেলে
বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পেলে
সবাই ভাবে পাখনা মেলে উড়লো আকাশে।
সুখ-গগনের স্বপ্নচারী,
আমরাও তো অংশ তারই,
নয়তো কে আর নিজের বাড়ি ছাড়তে বলো চায়
দেশে থাকার মূল্য চড়া
ভীষণ শ্রমেও সুখ অধরা
রুজি রুটির নিত্য খরা ভ্যাঙচাতো আয়নায় ।
থিতু কিছু নেই বাড়িতে
কোনোক্রমে চাল হাঁড়িতে
তাই রাজি হই এই পাড়িতে বিকিয়ে দেনায় মাথা
যতই কেন দাও গালাগাল,
বেআইনিতেও নই ক্রিমিনাল,
স্বপ্নে সোনার আগামীকাল, হোক আজ ছেঁড়াকাঁথা।
সময় খেলে কুমীরডাঙা,
খোয়াবনামা রক্তে রাঙা,
ওড়ার দুটো ডানাই ভাঙা , সারাই অসম্ভব
কুড়িয়ে চলি গালি লোকের,
বিদেশ ভাবে কীট নরকের,
জন্মভূমির বিষ দুচোখের , ভাগ্য জরদগব।
নথিবিহীন ছিন্নমূলী,
হলাম না হয় চক্ষুশূলই,
কেমন করে তবু ভুলি ফেরতপাড়ি’র স্মৃতি
দাসপ্রথা ফিরলো যেন,
শেকল হাতে, পা আটকানো,
এমনভাবে আনবে কেন, ভুলে মানব-রীতি?
বিদেশ এমন করতে পারে,
স্বদেশ ফাটায় যে হুংকারে
দারুণ নাকি লড়তে পারে, সে বাঘ কেন মিঁউ,
বিশ্ব দেখে শ’ ইন্ডিয়ান,
বেঁধে ফেরায় মার্কিনী যান,
দেশের এতে কাটলো যে কান, বদলে গেলো ভিউ!
হাতে শেকল পায়ে বেড়ি,
জন্তু যেন করছে ফেরি,
অ্যায় ওয়াতন, ওয়াতন মেরি কুছ না বোলি কিঁউ?