আমেরিকায় প্রচুর করোনা আক্রান্তের ‘স্ট্রোক‘ এর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাহলে কি করোনার নতুন কোন লক্ষণ সামনে আসতে চলেছে?
চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য দিয়েছেন আমেরিকার কিছু ডাক্তার। করোনা আক্রমণের পর প্রাণঘাতী ‘স্ট্রোক‘ এ মারা যাচ্ছেন সেখানকার মানুষ। এমনকি বেশ কিছু কম বয়সী মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা গেছে যা রীতিমতো আশঙ্কাজনক। ডাক্তাররাও হতবাক কমবয়সীদের মধ্যে এরকম প্রাণঘাতী লক্ষণ দেখে।
তথ্য বলছে শুধু আমেরিকা না, চীন থেকেও এরকম খবর পাওয়া গেছে যে কোভিড-১৯ রুগীদের মধ্যে কিছু স্নায়বিক সমস্যা দেখা গেছে। বহুক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কথাও শোনা গেছে।
মনে করা হচ্ছে, ভাইরাসের প্রভাব কোনোভাবে রক্তনালিকার ওপরে পড়ছে। যার ফলে রক্তনালীর মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধছে ও সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যার ফলেই হচ্ছে এই প্রাণঘাতী অবস্থা। এতদিন শোনা যাচ্ছিল, এই ভাইরাসের প্রভাবে ফুসফুসে আক্রমণ হয়েই মারা যাচ্ছে মানুষ। কিন্তু এই তথ্যের পর মনে করা হচ্ছে এর পিছনে রক্ত জমাট বাঁধার তথ্যটিও দায়ী হতে পারে। কারণ সেক্ষেত্রেও ফুসফুসে অক্সিজিনের ঘাটতি তৈরি হতে পারে। এমন এই রক্ত জমাট থেকে হৃদযন্ত্রও বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কিভাবে এই ভাইরাসটি রক্তনালীর ওপর প্রভাব তৈরি করছে, সেটা সকলের অজানা।
তবে অনেক বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন এর সঙ্গে ইমিউন সিস্টেম বা অনাক্রম্যতার কোন যোগসূত্র আছে। মানবদেহে সাইটোকাইন নামের একটি রাসায়নিক বার্তাবাহক থাকে। এর কাজ শরীরে কোন শত্রু ঢুকলে ইমিউন সিস্টেমকে সজাগ করে তোলা যাতে সে সেই শত্রুর সাথে লড়তে পারে। কিন্তু কখনো কখনো সেই সাইটোকাইন বিগড়ে গিয়ে এমন মাত্রায় অতিসক্রিয় হয়ে যায়, যে কে শত্রু আর কে বন্ধু যাছাই করে না। মানবশরীরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে, মূলত আঘাত হানে রক্তনালীকে। এই ঘটনাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘সাইটোকাইন ঝড়’ বলে। মনে করা হচ্ছে, করোনার এই সাইটোকাইন ঝড় তোলার ক্ষমতা আছে।
তবে অনেক চিকিৎসক মনে করছেন এর পিছনে কোন অজ্ঞাত কারণও দায়ী থাকতে পারে যা এখনও অজানা।
সে যাই হোক, এটুকু বোঝা গেছে লড়াইটা বেশ কঠিন। তবে মানবতার ওপর ভরসা রাখুন। জানবেন এরকম মহামারী বারবার এসেছে, আঘাত করেছে। আবার মানুষের কাছেই পরাজিতের তকমা পেয়েছে। লড়াইটা ঠিকই জিতে যাবে একদিন সকলে। ততদিন ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর মনের যত্ন নিন। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাবেন না।