An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

হাসপাতালের জার্নাল: ডাক্তার ও বেচুবাবু

IMG_20200117_084644
Dr. Arunachal Datta Choudhury

Dr. Arunachal Datta Choudhury

Medicine specialist
My Other Posts
  • January 17, 2020
  • 11:43 am
  • 3 Comments

মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের নিয়ে এক বই-এর নাম বেচুবাবু। সেই বই-এর সংবাদ শেয়ার করার সময়েই জানিয়েছিলাম এই ব্যাপারে আমিও কিছু জানাতে চাই।

একটু আগের থেকে শুরু করি। তখন আমরা মেডিকেল কলেজে ফার্স্ট ইয়ার। সদ্য গ্রাম থেকে আসা আমাদের প্রত্যেকের একটা বা বড় জোর দু’টো পেন। ডটপেনই। ফাউন্টেন পেনের যুগ প্রায় শেষ হব হব করছে। ইউজ অ্যান্ড থ্রো কনসেপ্ট আসতে দেরি আছে আরও কয়েক বছর। রিফিল ফুরিয়ে গেলে নতুন রিফিল কিনি। পেন হারিয়ে গেলে বা চুরি গেলে মন খারাপ হয় খুব। শুধু আমাদের সহপাঠী কেশবেরই অনেক পেন। দামী, কমদামী। আমাদের মত রিফিল কেনে না। একটার রিফিল ফুরোলে আর একটা নতুন পেন বার করে।

ব্যাপারটা কী? কেশবের দিদি জামাইবাবু উত্তরবঙ্গের খ্যাতনামা ডাক্তার দম্পতি। তাঁরাই কেশবের এই আনলিমিটেড পেন পাবার উৎস। তাঁরা ওষুধ কোম্পানির মানুষজনের কাছ থেকে এত পেন পান যে তা’ ফেলে ছড়িয়েও শেষ হতে চায় না।

কেশবের কাছ থেকেই জানতে পারি আরও কত কিছু পান তাঁরা। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ (এমআর) মানেই যেন তখন এক আলাদিন যাঁর ব্যাগের ভেতর আছে নিম্ন মধ্যবিত্ত ছেলেকে অবশ করে দেওয়া জিন। প্রাণে দয়া উপজিলে যে ঢেলে দেয় হরেক উপহার আর নানা ওষুধও।

ইতিমধ্যে কেটে গেছে আরও কয়েক বছর। এমারজেন্সি বা ওয়ার্ড সংলগ্ন স্যারেদের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার সময়, কোনও রিপ্রেজেন্টেটিভ দাদা হয় তো জুনিয়র ডাক্তার ভেবে ভুলের বশে দিয়েছেন একপাতা ওষুধ বা একটা কাগজের প্যাড। আনন্দে আটখানা হয়ে হোস্টেলে ফিরেছি সেই সম্পত্তি নিয়ে।

একদিন পাশ করে যাই শেষ পরীক্ষাও। ইন্টার্নশিপ তারপর হাউসস্টাফশিপ। রিপ্রেজেন্টেটিভ দাদাদের সাথে সখ্য বেড়েছে।

সাহসী কেউ কেউ তাঁদের ব্যাগেও হাত দিচ্ছি। ব্যাগ খুলে প্রেমিকার মাকে ইমপ্রেস করার জন্য বার করে নিচ্ছি টনিকের বোতল। কেউ কেউ আমাদের পাত্তা না দিয়ে স্যার আর সিনিয়রদের শুধু মিট করেন। আমরা সতৃষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাই। শিকে ছেঁড়ে না। আর কিছু রিপ্রেজেন্টেটিভ দাদার মন্ত্র ছিল ক্যাচ দেম ইয়ং। অফিসিয়ালি পেন আর অন্যান্য উপহার পাওয়া শুরু হল আমাদের।

এর পর চাকরি জীবন শুরু। সেই দূর গ্রামে পৌঁছে যেতেন অক্লান্ত তাঁরা। কত নতুন ওষুধ বেরোল তার পরে। এ’কথা বলতে কোনও দ্বিধা নেই, খুব পুরোন কিছু ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল অ্যান্টাসিড, মেট্রোনিডাজোল বা ডিজিট্যালিস এই রকমের কিছু ছাড়া যা কিছু ওষুধ এখন লিখি আমরা সবগুলোই এঁদের কাছ থেকে শোনা আর শেখা। নতুন অ্যান্টিবায়োটিক, নয়া বমির ওষুধ, ব্লাডপ্রেশারের ওষুধ, ডায়াবেটিসের ওষুধ বা অম্বলের ওষুধ সবেরই নাম প্রথমে জানিয়েছেন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভরা। জানিয়েছেন সেই সব ওষুধের কাজ করার পদ্ধতি। শুধু যে’টা তাঁরা বিশদে জানান না তা’ হল ক্ষতিকর দিকগুলো বা সাইড এফেক্ট। সে’ও ওই তাঁদের অন্নদাতা কোম্পানিরই নির্দেশে, ব্যবসায়িক কারণেই।

ট্রেনিংএর সময় কিন্তু তাঁদের জানানো হয় সবই। একটু সিনিয়ার হবার পর সেই ক্ষতির হদিশ দেওয়া গোপন কাগজ তাঁদের কারওর কাছে চেয়ে দেখেওছি কখনও।

হ্যাঁ, যা বলছিলাম সেই প্রথম চাকরি জীবনে দেখা এমআরদের কথা। কৃষ্ণনগরের রেস্ট হাউস থেকে সকাল সকাল বেরিয়ে কেউ বা দূরের বাড়ির ঠিকানা থেকে বাসে বা বাইকে চেপে বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছোতেন আমাদের কাছে। পারিবারক সম্পর্কের মত বাঁধন হয়ে যেত তাঁদের অনেকের সাথে। লৌহচৌধুরী পদবীর একজন আসতেন। অনেক সিনিয়ার। ক্লান্ত সেই দাদা আমার কোয়ার্টারে স্নান করে, খেয়ে, বিশ্রাম করে তারপর মিট করে ফিরতেন। আর একজন ভাই, তাড়া ছিল বলে ভীমপুরের এক কোয়াক ডাক্তারের বাইক চেয়ে আমার কাছে আসছিলেন। অনভ্যস্ত হাতে মধ্যপথে অ্যাকসিডেন্ট। সেই আমার কাছেই এলেন। হেড ইনজুরি। কনভালসন। বড় হাসপাতালে পাঠানোর আগেই শেষ।

তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছিল তাঁর কোম্পানি। তিনি প্রথমবার এসেই খুব সঙ্কুচিত ভাবে জানালেন -আপনার একটা প্রেশার কুকার এসে পড়ে রয়েছে। উনি দিয়ে যেতে পারেননি। জিনিসটা খুব ভারি বলে আজ …আন্দাজ করলাম কীর্তিটি আমার তৎকালীন এমওআইসি(এখন যাকে বলে বিএমওএইচ)এর। তিনি ওই কোম্পানির আয়রন টনিক লেখার সমানুপাতিক হারে ওই সব শর্ত দিতেন।

আসতেন এমআরদের সংগঠনের নেতারা। এফএমআরএআই বা অ্যাবস্রুর সমর্থক তাঁরা। তাঁদের অনেক পাওয়া না পাওয়ার দীর্ঘশ্বাস ভরা আলোচনা হত।

‘লিটাকা’র সুব্রত আসত। বলত ছেলেকে ডাক্তারি পড়াবে। তার ‘তখনও না জন্মানো’ সেই ছেলে পরে ডাক্তার হয়েছে সত্যিই। খবর পেয়েছি।

এর পর খড়দা’ সোদপুর অঞ্চলে চাকরি আর প্র্যাকটিশের সুবাদে অনেক অনেক রিপ্রেজেন্টেটিভের সাথে আলাপ হল। কেউ কেউ আমার প্রায় সমবয়সী হলেও অধিকাংশই অনেক অনেক ছোট। কেউ ছবি আঁকে, কেউ কবিতা লেখে। অনির্বাণের ছবি প্রদর্শনী দেখতে গেলাম সিমা গ্যালারিতে। সুমন চাটুজ্যেকে নিয়ে তুমুল আলোচনা সুমন-পাগল তমালের সাথে। রাজদীপ আনন্দবাজার রবিবাসরীয়তে বেরোনো আমার কবিতা বাঁধিয়ে নিয়ে চলে এল। আনন্দবাজারে লেখা ছাপা হয়েছে মানে যেন বা প্রায় নোবেল প্রাইজই পেয়ে গেছি আমি। রোগীরা বা চেম্বার মালিকেরা বিরক্ত হতেন কখনও। সত্যিই কোথায় চলে গেল… সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।
বলতে ভুলেছি, ইতিমধ্যে এই পেশায় দ্রুত প্রবেশ করছেন অত্যন্ত মেধাবিনী আমাদেরই বাড়ির মেয়েরা। আমার গৃহিনীর সাথে তাদের ভারি ভাব। মৌসুমি, সুজাতা… আরও কতজন।

ভালো কথা, মাত্র কয়েকজনেরই নাম উল্লেখ করেছি। সবার নাম দিতে গেলে এই লেখাটা ‘আপনার সন্তানের জন্য সুন্দর নামের তালিকা’ গোছের হয়ে যাবে। নাম করিনি যাঁদের তাঁরাও সবাই কিন্তু আছেন আজকের এই জার্নালে। সব্বাই… হ্যাঁ এক সাথেই।

আন্দাজ বছর কুড়ি আগে টের পেতে শুরু করি বড় একটা তফাত ঘটে যাচ্ছে। নাকি আজ নয়… আমাদের ছোটো থাকার সময়েও ছিল এমন রীতি। হয়তো আমি তত চালাক নই বলে টের পাইনি। হাসপাতাল খালি করে এমনকি ইন্টার্নদেরও নিয়ে যাওয়া শুরু হল প্রমোদভ্রমণে। মন্দারমনিতে… কিম্বা হেথা নয় হোথা নয় অন্য কোথা, অন্য কোন খানে। ঢালাও পান ভোজনের ব্যবস্থা থাকে সে’খানে। স্থানীয় ভাবেও পোড় খাওয়া ঝানু সিনিয়র জুনিয়রদের জন্য পানীয়বহুল পার্টির ব্যবস্থা করা শুরু হল। কেতাবি ভাষায় যার নাম ‘সেমিনার’ বা ‘সিএমই’… অবধারিত ভাবে ‘ফলোড বাই ককটেল ডিনার’। কখনও উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, ব্যাঙ্কক পাটায়া সিঙ্গাপুর ইউরোপ ইউএসএ মিডল ইস্ট সাউথ আফ্রিকায়। আরও কাঁহা কাঁহা সব মুলুকে। এই যে ডাক্তার দেখাতে গেলে প্রায়ই শুনতে হয় উনি বাইরে গেছেন, তা’ বহু ক্ষেত্রেই কনফারেন্স বা অন্য কোনও অজুহাতের প্রমোদভ্রমণ। ছোট মাপের ডাক্তার হলে কম বেশি খরচে দেশেই। আর অপেক্ষাকৃত বড় মাপের ডাক্তার হলে বিদেশে।

আমার এই লেখা কিন্তু চিকিৎসক বা এমআরএর পেশাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে নয়। কথাটা হচ্ছে, ডাক্তার বা এমআর দু’জনেই মধ্যবিত্ত বাড়ির মানুষ। এরা নষ্ট হলে ওষুধ কোম্পানির কিচ্ছুটি যায় আসে না। তার মুনাফা হলেই হল। ‘নষ্ট আদৌ হব কিনা’ সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে মানুষটিকেই।

একদিন এই প্রসঙ্গে তর্কাতর্কি হতে সুকুমারদা’ বললেন, – পকেটের পেনটা তো কোম্পানিরই। অত বড় বড় কথা বোলো না অরুণাচল।
বিনীত ভাবে তাঁকে বলেছিলাম, – ঠিক কথা দাদা। আমি শুধু বলছিলাম লেভেল অফ টলারেন্সের কথা। মানে বিবেকানন্দ বুক হাউস যদি দুশো টাকার বই কিনলে আমার স্কুল-পড়ুয়া ছেলেকে ক’টা নিজের নাম লেখার কাগজ দেয় ব্যবসার খাতিরে, সে’টা তত দোষের না। কিন্তু যদি লোভ দেখায় যে বাবাকে চাপ দিয়ে হাজার টাকার অপ্রয়োজনীয় বই কিনলে একটা পিন আঁটা পর্নোগ্রাফির বই উপহার দেওয়া হবে, সে’টা অমার্জনীয়। সুকুমারদা’ মাত্র মাসখানেক আগেই ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে ফ্রিজ উপঢৌকন নিয়েছেন। এমআরদের মুশকিলটা হল, অসাধু ডাক্তারেরা উপঢৌকন চাপ দিয়ে আদায় করার পরেই অন্য কোম্পানির কাছে দাদন খেতে ব্যগ্র হয়ে পড়েন। প্রতিশ্রুতি মতন ওষুধ আর লেখেন না। এমআরকে কোম্পানি ছাড়ে না। চাপে পড়ে যান বেচারারা। প্রতিষেধক ব্যবস্থাও আবিষ্কৃত হয়েছে তাই। ইএমআইএ কেনা হচ্ছে উপহার। ঠিকঠাক ওষুধ না লিখলে ইএমআই বন্ধ। কোম্পানি এসে গালাগালি দিয়ে মাল তুলে নিয়ে যাবে। কেলেঙ্কারির একশেষ। অবশ্য উঁচু লেভেলে কেলেঙ্কারিই তো ভূষণ। শুধু সেটিংটা ঠিক রাখতে হবে!

আগে বলতে ভুলেছি, এমআররা সবাই যে বড় ছোট নানা কোম্পানিতে কাজ করেন তা’ না। ব্যাগধারী আরও কিছু মানুষ ঘোরাফেরা করেন হাসপাতালে চেম্বারে। এঁরা হচ্ছেন পিডি বা প্রোমোশন ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির লোক। নানা রকম শর্তে এঁরা ওষুধ বিক্রির সাথে জড়িত থাকেন। কখনও মোট বিক্রির ওপর শতকরা কমিশনে, কখনও অন্যতর শর্তে।

পানিহাটি হাসপাতালে কাজ করি তখন। ফালু(আসল নামটা না হয় উহ্যই থাক) বলে একজন ছিলেন একটা পিডি কোম্পানির। আমার সহকর্মী ডাক্তার, দেবেশ বলত ফালু হচ্ছে আমাদের পোষা মুরগি। ডাক্তারদের সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন -এর অ্যানুয়াল জিবি। কে সামলাবে? কেন, ফালু আছে তো। খালি টাকা দেওয়া নয়। আক্ষরিক অর্থেই বডি ফেলে দিত ফালু। হল ভাড়া করা থেকে গিফটের ব্যবস্থা মায় ব্রেকফাস্ট লাঞ্চ অবধি হত ফালুর তদারকিতে। সাথে থাকত টুটুল মানে দেবব্রত আরও দু’একজন। তারা অবশ্য বড় কোম্পানিরই এমআর।

ফালুর সাথে ওর কোম্পানির শর্ত ছিল এ’রকম… একলাখ টাকা প্রিন্ট প্রাইসের ওষুধ ও পেত ধরুন ষাট কি পঁয়ষট্টি হাজার টাকায়। এই বার এই চল্লিশ বা পঁয়ত্রিশ হাজার টাকার ওষুধের মধ্যে ও কতটা স্যাম্পলিং করবে বা কতটা বিক্রি করে নিজের সংসার চালাবে নাকি ডাক্তারকে দেবার গিফট কিনবে কিম্বা ডাক্তারকে নগদেই দেবে এ একান্তই তার সিদ্ধান্ত।

সেই ফালু একদিন খুব মানসিক কষ্ট দিয়েছিল আমাকে। পানিহাটি হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে সে’দিন নাইট করছি আমি আর শঙ্করদা’। রাত বারোটা নাগাদ ফালু হাজির। দু’প্যাকেট বিরিয়ানি প্রায় ছুঁড়ে দিল টেবিলে। -নিন স্যার, খেয়ে নিন। এই ঠাণ্ডা বিরিয়ানি বাড়িতে ছোঁবেও না।

সপ্রশ্ন চোখে তাকাতে বিশদ হল ক্লান্ত ফালু,
-অমুক মেডিক্যাল কলেজের ক’টা হাউসস্টাফকে খাওয়াতে হল আজ। শালারা সবাই এমন হুইস্কি টানল, তুমুল বমি আর বাকিগুলো বিরিয়ানি খেতেই পারল না। বেলচা দিয়ে মালগুলোকে ট্যাক্সিতে চাপিয়ে এই ফিরছি স্যার।

এই পেশায় আসার আগে ফালু স্থানীয় সিনেমায় গেট ম্যান ছিল।

তবে লোক নিয়োগের ব্যাপারে তিরিশ বছর আগের থেকে এখন কোম্পানিরা অনেক বেশি বাস্তবজ্ঞানের পরিচয় দিচ্ছে। আগে তারা খুঁজত ঘটকদা’র মত মানুষকে।

কেমিস্ট্রির পণ্ডিত মানুষ। শুনেছি কলেজে পড়াতেন। তাঁর যৌবন বয়সে কলেজের মাইনে কম আর সাংসারিক চাপ বেশি বলে এমআর হয়েছিলেন এক বড় ওষুধ কোম্পানির।

আমি তখন বলরাম হাসপাতালে। সহকর্মী তথা সহপাঠী আশিস ঘোষ আর এক পথভোলা পথিক। আইআইটি ছেড়ে এসেছিল ডাক্তারি পড়তে। ঘটকদা এসেছেন সদ্য বেরোনো অম্বলের ওষুধ এইচ-টু-ব্লকার (আজ্ঞে হ্যাঁ, যা লিখে মহান আর এখনও সর্বজনমান্য এক ডাক্তার সেই কালে কোম্পানির কাছ থেকে লাল মারুতি বাগিয়েছিলেন) বোঝাতে। ঘটকদা’ ওই সব মারুতি টারুতি বোঝেন না। যা বোঝেন, তাই দিয়েই আশিস পেড়ে ফেলল ওঁকে। -আচ্ছা ঘটকদা’ এই খানে এই হাইড্রক্সিল গ্রুপটা যদি লাগানো যেত আর পাশের রিংএর ওইখানটায় যদি একটা মিথাইল গ্রুপ তাহলে কি অ্যাসিড সিক্রিশন আর একটু কমত? ব্যাস, ঘটকদা’ খাতা পেন খুলে রিয়্যাকশন বোঝাতে বসে পড়লেন। সকাল গড়িয়ে বিকেল। ধার্য আরও পাঁচটা ডাক্তারের মিট বাকি। বলরাম হাসপাতালের প্রায়ান্ধকার ঘরে দুই পণ্ডিতের লড়াই চলছে।

এখন কোম্পানিরা ঘটকদা’র মত পিএইচডি খোঁজে না, তারা খোঁজে মার্কেটিংএ এমবিএ, সাদা বাংলায় ডাক্তার কেনার বাজার সরকার।

সবিনয়ে বলি তাঁদের মধ্যে এখনও ঘটকদা’র মত সাবজেক্ট জানা লোক বিরল নন। তাঁদেরকে শ্রদ্ধা আর গর্বের নমস্কার জানাই।

PrevPreviousজরায়ু মুখের ক্যান্সার থেকে দূরে থাকতে পারেন টিকার মাধ্যমে
Nextব্রেস্ট ক‍্যানসার – কিছু প্রশ্ন – কিছু উত্তরNext

3 Responses

  1. Tanmay Chakraborty says:
    January 17, 2020 at 4:43 pm

    ভালো

    Reply
  2. 8637808864 says:
    January 17, 2020 at 7:10 pm

    দারুণ লেখা, আরো চাই

    Reply
  3. Pradip Pal says:
    January 18, 2020 at 10:52 pm

    খুব ভালো লাগলো ।একজন চিকৎসকের কাছ থেকে এরকম পোস্ট পেলাম।আপনাকে ধন্যবাদ।

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

যদি নির্বাসন দাও

April 19, 2021 No Comments

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা

Existing resource-এর optimum utilization সবচেয়ে জরুরী

April 19, 2021 No Comments

ভারতে করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, প্রবল ও দ্রুত গোষ্ঠী সংক্রমণ ও তার ফলে বহুসংখ্যক পজিটিভ রোগী ও হাসপাতালে বেডের অভাব। এই পরিস্থিতিতে existing resource-এর

আপনি আপনার সন্তানের মৃত‍্যুপরোয়ানা স‌ই করছেন

April 19, 2021 No Comments

ট্রিয়াজ একটি পদ্ধতির নাম এক গুলঞ্চসন্ধ‍্যায় আমাদের হাতুড়ে ফটাশের বোতলে চুমুক দিচ্ছিলেন। ফটাশ দক্ষিণ বঙ্গের ট্রেনে বিক্রি হতো। এটায় শুধুমাত্র সোডা থাকে। এখন পেটের দায়ে

অসুস্থ বোধ করছি খুব

April 18, 2021 No Comments

‘কেউ বাড়াবাড়ি করলে, জায়গায় জায়গায় শীতলখুচি হবে’-র বক্তা পার পেয়ে গেলেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। এক মহিলা নেত্রীকে টোন কেটে ব্যঙ্গ সম্বোধন করা প্রধানমন্ত্রী পার পেয়ে

ওয়ার্ক লোড

April 18, 2021 No Comments

রাত ৩ টে। -স্যার ভাগ্য ভালো। এটাই লাস্ট বেড ছিল। -‘ভাগ্য ভালো’ মানে? একে কোভিড পজিটিভ তার ওপর ব্লিডিং হচ্ছে। -ওটিতে জানিয়েছিস? -হ্যাঁ, আপনাকে ৭

সাম্প্রতিক পোস্ট

যদি নির্বাসন দাও

Dr. Chinmay Nath April 19, 2021

Existing resource-এর optimum utilization সবচেয়ে জরুরী

Dr. Tathagata Ghosh April 19, 2021

আপনি আপনার সন্তানের মৃত‍্যুপরোয়ানা স‌ই করছেন

Dr. Dipankar Ghosh April 19, 2021

অসুস্থ বোধ করছি খুব

Dr. Sukanya Bandopadhyay April 18, 2021

ওয়ার্ক লোড

Dr. Indranil Saha April 18, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

312150
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।