কোভিড যত বাড়ছে তার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের ইনফেকটেড হওয়ার তালিকা। এতোদিন যে ভাবে হাসপাতালগুলো রান করে এসেছে সেই মডেলেই রান করতে থাকলে সেটা যে আরো বাড়তে থাকবে সে বিষয়েও সন্দেহ নেই। কাছের মানুষজনকে রোজ দেখছি ভর্তি হতে। একটা ভয়, একটা আতঙ্ক যেন শেষই হতে চাইছে না।
কোভিড ট্রিটমেন্টের জন্যে যে কোন হাসপাতালে কয়েকটা পার্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ক্রমশ। প্রথমে আসি আইসোলেশন ওয়ার্ড নিয়ে। কোভিড ছাড়াও জ্বর হয়,কাশি হয়,গা ম্যাজম্যাজ করে। এবার এরকম পেশেন্ট হাসপাতালে এলে টেস্ট না করিয়ে তাকে নরমাল বেডে দেওয়া হলে বাকি নন কোভিড পেশেন্টদের সমস্যা আর কোভিড ওয়ার্ডে দেওয়া হলে সেখান থেকে কোভিড না থাকলেও হাসপাতাল অ্যাকুয়ার্ড কোভিড হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। তাই সব হাসপাতালে থাকতে হবে আইসোলেশন ওয়ার্ড, সেটাকে হয় দুরত্ব মেনে বা ছোট ছোট কেবিন মত করে দিতে হবে।
কোভিডে ম্যাক্সিমাম পেশেন্ট যেহেতু সিম্পটম নিয়ে আসছেন না তাই অন্য রোগের পেশেন্টকেও এই ওয়ার্ডে রেখে টেস্ট করিয়ে তারপর রিপোর্ট এলে সেই অনুযায়ী কোভিড বেড বা নন কোভিড সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্ট ট্রান্সফার করতে হবে। সমস্ত হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড, কোভিড ওয়ার্ড এবং তার সাথে সাথে নন কোভিড চিকিৎসা একসাথে চালাতে হবে এবার।
প্রসঙ্গত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ও প্রস্তাব মেনে মেডিকেল কলেজে চালু হল, কোভিড স্টেটাস জানা নেই, এমন এমার্জেন্সি রোগীদের ট্রায়াজের জন্য ওয়ার্ড। অর্থাৎ যে কোনো আপতকালীন রোগী ভর্তির মতো অবস্থায় থাকলে তার ভর্তির জন্য ৯ টি কেবিনের ‘স্টেটাস আননোন’ ট্রায়াজিং ওয়ার্ড হিসেবে ফাংশনিং থাকবে ER Obs. (Emergency Observation) ওয়ার্ড৷ সেখানে রোগীর চিকিৎসা চলবে এবং রোগীর কোভিড টেস্ট হবে, পজিটিভ হলে মেডিকেল কলেজের কোভিড ব্লকের বিল্ডিং গুলিতে তার শয্যা স্থানান্তরিত হবে, আর নেগেটিভ হলে নন-কোভিড ব্লকে তিনি স্থানান্তরিত করা হবে।
এরকম ওয়ার্ড প্রতিটি হাসপাতালে বানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে একই সাথে হাসপাতাল অ্যাকুয়ার্ড কোভিড হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে আর তার সাথে সাথে বাড়বে স্বাস্থ্যকর্মীদের ইনফেকটেড হওয়ার সম্ভাবনা। একেবারে সামনের সারিতে যারা আছেন সেই ডাক্তার, নার্স,স্বাস্থ্যকর্মী যারা রোজ ইনফেক্টেড হচ্ছেন তাদের প্রতি সরকারের আরো বেশি দায়িত্ববান হওয়া উচিৎ।
সব ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতালগুলোতে অন্তত একটা করে উইং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যে ডেডিকেটেডলি ফাঁকা রাখতে হবে যাতে দরকার হলে সাথে সাথে তারা ভর্তি হতে পারেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় তারা ইনফেক্টেড হলে সেই হাসপাতালে কোভিড উইং নেই বলে কোথায় যাবেন, কোথায় ভর্তি হবেন এই সমস্যায় পড়ছেন। এটা সামনের সারির যোদ্ধারা ডিসার্ভ করেন না। যুদ্ধের সময় যোদ্ধারাই যদি না থাকেন তাহলে যুদ্ধটা করবে কে?
সঠিক বক্তব্যে।