Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

একটি হৃদয়হীন গল্প

IMG_20210214_170050
Smaran Mazumder

Smaran Mazumder

Radiologist, medical teacher
My Other Posts
  • February 15, 2021
  • 9:13 am
  • No Comments

এখন মহাসমারোহে চলছে প্রেমের সপ্তাহ! সাত দিন, সাত রঙ। রামধনুর মতোই পর পর এক একটি দিন। আজব প্রেমোৎসব বটে! যদিও এভাবেই আজকাল পেমটেম হয় বটে, তবে সত্যিকারের হৃদয় নিয়ে যে প্রেম হয়, সেটি কোনকালে এভাবে হয় বলে শুনিনি বা দেখিনি।

ব্যাপারটা হৃদয়ঘটিত হলে, সত্যিই কি সে অপেক্ষা করে- কবে শুক্কুর বার গোলাপ দেবে, তারপর দিন‌ এসে বলবে- লাবুউউ- তারপর দিন- লে টেডি বিয়ার- তারপর মঙ্গল শেষে বুধের ঊষা কালে বলবে- চল এবার পালাই?

কি জানি! আমি তো শুনেছি- সাত দিন রাত দিন কখন কোথা দিয়ে কেটে যায়, নাওয়া খাওয়া ভুলে বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড়ের শঙ্করের মতো অবস্থা হয়। তারপর কেউ কেউ ফিরে আসে- একখণ্ড হীরে নিয়ে। কেউ কেউ আফ্রিকার জঙ্গলেই চাঁদের পাহাড় খুঁজতে থাকে সারাজীবন, পথ হারিয়ে ফেলে বারবার!

হাত নিশপিশ করছে। কি যে লিখি! সবাই এতো সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে সব বলতে পারে, লিখতে পারে। আর আমি কিছুই পারি না!

তবুও শুরুতেই একটু নিজের ঢাক নিজেই পিটিয়ে নিই।

আমার অগুণতি দোষের মধ্যে একটি দোষ- শেষ সময়ে তাড়াহুড়ো করে যদিও বা সবকিছু ঠিকঠাক গুছিয়ে আনার চেষ্টা করি, হঠাৎ কলেজের নাটকে অভিনয় করার মতো স্টেজ এ মেরে দেব- এইরকম ভাব ধরে রাখি, শেষে নিশ্চিত গোল পাকিয়ে, যাকে বলে ছড়িয়ে ফেলি।

যথারীতি পরীক্ষার আগে এটি সবচেয়ে বেশি বার করেছি। ফলতঃ বিচারপতির কথায় স্রেফ …

ধরা যাক, একটি কাল্পনিক সিন। কলেজের মাঠে ছেলে মেয়ে সবাই আছে। গাছের ছায়ায় জমা হচ্ছে সব ঝগড়াঝাঁটি, ভাব ভালোবাসা। বন্ধুদের তরফে আমাকে বলা হলো- যা, ওই মেয়েটি তোকে ভালোবাসে। একবার মাত্র বলার অপেক্ষা। তাহলেই হ্যাঁ বলে দেবে।

হয়তো আমিও জানি সেটা।

বন্ধুদের কথামতো হয়তো আমি তাঁর কাছে
যাবোও। বুকের ভেতর থেকে সব শক্তি এক করে ঠোঁটে এনে বলতেও চাইবো- তোকে আমার খুব ভালো লাগে!

কিন্ত সেটি হবে না! আমি নিশ্চিত ভাবে যেটা বলবো সেটা হলো- তোকে আমার খুব কালো লাগে! (দয়া করে কেউ বর্ণবৈষম্য দেখবেন না!)

অতঃপর যা হবে- শুধু আমার ভুলে অকারণে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি-র একজন খরিদ্দার বেড়ে যাবে। আর সেই খরিদ্দারের জন্য তখন অন্যরা আমাকেই ল্যাঙ মারবে!

ভ এর বদলে ক বলে ফেলে এই যে কেলোর কীর্তি করে ফেলা, এটাই আমি!

এরপর নিজেকে ভ আর ক দিয়ে যত গালাগালি হয়, একনাগাড়ে দিয়ে ফেলি।

তো এই আমার দ্বারা যে কাল্পনিক উপাখ্যান, ভূতের গল্পের মতোই প্রেমের গল্প লেখা হবে না, সেটি নিশ্চিত। অন্ততঃ তথাকথিত সফল পাঠযোগ্য কোন গল্প যে আমি লিখতে পারবো না- এটা আমি বুঝে গেছি। অবশ্য আমাকে লেখার জন্য কেউ মাথার দিব্যিও দেয়নি! অতএব, ঢাক পিটিয়ে টাক ফাটিয়ে – শেষ অব্দি তেমন কিছু নাও লিখতে পারি!! হে হে …

ডাক্তার হবার পরও, ডাক্তারি করতে গিয়েও এরকম বহু কীর্তি করেছি।সে সব নিয়ে পরে কখনো লিখবো। আপাতত যেটি নিয়ে লিখবো- সেটি একটি হৃদয়হীন গল্প!

যদিও ঘটনা নির্দয় সত্যি, সেটি বললে লোকে খাবে না! এই চালাকি ফেসবুকের দৌলতে এতোদিনে শিখে গেছি। অতএব, গল্প বলেই চালিয়ে দিতে হবে।
দু’লাইনের উপর দিয়ে যদি ট্রেন চলে যেতে পারে, সত্যিটাকে গল্প বলে কয়েক লাইনের উপর দিয়ে আমিও চালিয়ে দেব‌। জয় মাক্কালী।

তার আগে আবার একটু ঢাকের বাদ্যি – ডাক্তারি পড়তে ঢোকার আগে থেকেই, একটা অদ্ভুত চিন্তা মাথায় ছিল। মাধ্যমিক থেকেই জীববিদ্যায় মগজ বা হৃৎপিণ্ডের প্রাথমিক পাঠের পরই প্রশ্নটা ঘুরঘুর করতো- মন কি জিনিস? সেটি থাকে কোথায়?

মগজে কোথাও নেই। হৃৎপিণ্ডেও নেই। তাহলে কোথায়? মনজিনিস-এর দোকানে?

তখনকার বয়সে যেহেতু এই মন ব্যাপারটা খুব মারাত্মক ভাবে পেয়ে বসে, তাই তার একটি কল্পিত বাসস্থান আমাদের হৃৎপিণ্ড- এমনটাই ধরে নিয়েছিলাম। বলাই বাহুল্য, অ্যানাটমির নলেজ মতে সেটি ভুল ছিল।

যখন ডাক্তারিতে ঢুকে পড়লাম, তখন আমার একটা সুপ্ত ইচ্ছে ছিল- যে করেই হোক, মন কোথায় আছে জানতে হবে! সত্যি বলতে – সর্বসমক্ষে অপদস্থ হবার ভয়ে , ক্লাসে এই প্রশ্নটি কাউকে করা হয়ে ওঠেনি।

এবার অ্যানাটমি বই ঘেঁটে, হৃৎপিণ্ডের ও শিরা উপশিরা ধমনী অব্দি মুখস্থ করে, বছর শেষে গান ধরলাম- তোমার দেখা নাই রে … তোমার দেখা নাই!

খুলির ভেতরে পড়ে রইলো মগজ, হাতে পড়ে থাকলো পেন্সিল থুড়ি হৃৎপিণ্ডের স্পেসিমেন।
মগজের ব্যাপার খুব জটিল বলে, মনকে অতএব হৃদয়ে পুনর্বাসন দিলাম।

এবার সে মন ভরা হৃদয়েরও আবার নানান রকম সমস্যা! অজস্র অসুখ। একটুখানি এদিক ওদিক হলেই হয় চুপ করে যেতে চায়, নয়তো অকারণে ধড়ফড় করে। আরো ভয়ানক – মানব শরীরে তার পজিশন ও সবার এক নয়!

ততদিনে শরদিন্দুর ‘সজারুর কাঁটা’ পড়ে ফেলেছি।
সেরকমই হৃৎপিণ্ডের সামনে নানা জিনিস ঢাল করে, এদিক ওদিক নাচিয়ে, সফল হয়ে, ব্যর্থ হয়ে, হৃৎপিণ্ডকে উত্তেজিত করে, হাসিয়ে কাঁদিয়ে, বিষাদে ভরিয়ে স্রেফ এমবিবিএস শেষ করলাম।

একদিন সে আমার অবৈধ অত্যাচার সহ্য করলো না। বদ মতলব আছে বুঝতে পেরে বললো- মগজ রানীকে জিজ্ঞেস কর, পড়াশোনায় কত ফাঁকি দিয়েছিস! তোর মতো ফাঁকিবাজদের এইসব প্রাপ্তির হিসেব আমি রাখি না!

মগজ আবার হৃদয়ের আদরের সতীন। মানে যাকে বলে- একেবারে ক্লাসিক্যাল চুলোচুলি করা সতীন!

আর এদের মাঝে পড়ে প্রায়ই যে দশা হয় আমার সেটি হলো- দুই সতীনের যুদ্ধ, উলুখাগড়ার প্রাণান্ত!
সে বললো – তুই ব্যাটা হাড়হাভাতে হতচ্ছাড়া কপাল পোড়া রক্তমুখী নাচনেওয়ালী হৃদয়কে নিয়ে পড়ে থাক! যেদিন লোকে বলবে হৃদয়ের পাল্লায় পড়ে গোল্লায় গেছিস, স্রেফ এমবিবিএস হয়ে থেকেছিস আর ন্যাকা কান্না কেঁদে বালিশ ভিজিয়েছিস, সেদিন বুঝবি কত ধানে কত তুষ!

তুষের আগুন জ্বলতে লাগলো। বললাম- ঠিক আছে। দেখা যাক। কাকে জেতাবো, সে ভবিষ্যৎই বলবে!

অতঃপর, ফের পড়াশোনা। এক্ষেত্রে মগজ রানী জিতে গেল। ফের শুরু – ডাক্তারির পাগলা ঘোড়ার মতো (PG) ট্রেনিং।

তারপর তিন বছর পর নিজের কাজ। এইবারে আমার হাতে এলো অস্ত্র। না, কালাশনিকভ রাইফেল নয়, ইউএসজি মেশিনের প্রোব।

মগজ থেকে হৃদয়, মাথার চুল থেকে পায়ের নখ, সরু থেকে মোটা চামড়া- সবাইকে দেখার দায়িত্ব।

লাভ হলো- এইবার মগজ, হৃদয় সব চোখের সামনে দৃশ্যমান। কার কোথায় কিসের ব্যথা – সে সব বোঝার পালা। শুধু নিজেরটা বাদ দিয়ে! ওটির জন্য সময় মেলে না!

সে আবার শুধু হেঁটে চলে বেড়ানো, রাজনীতি করা, গান গাওয়া, অভিনয় করা, গালাগালি করা, ভালোবাসাবাসি করা, চুমু খাওয়া, হিংসা করা, ঘৃণা করা মানুষের নয়, মায়ের পেটের সন্তানেরও!

তো এমনই এক গর্ভবতী মায়ের পেটের ছবি করছিলাম। উদ্দেশ্য সন্তানের কোন রকম শারীরিক সমস্যা আছে কিনা দেখা। একে আমাদের ভাষায় বলি – অ্যানোম্যালি স্ক্যান।

কঠিন পরীক্ষা। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবকিছু দেখতে হয়। প্রায় ধুরন্ধর গোয়েন্দাদের মতোই কাজ।
একটা ক্লু পেলেই খুঁজতে হবে হাজারো ক্লু।
তারপর পৌঁছাতে হবে হাজার হাজার অপরাধী অসুখের মধ্যে একটি অসুখের নাম ঠিকানায়।

কিন্ত সেদিন হঠাৎ করে লাগলো চমক। মায়ের পেটে সন্তান কোথায়?? জল, মানে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের মধ্যে তো পড়ে আছে একটি মাথা!! না, আর কিছুই নেই তার!

হাত পা, পেট, লিভার, প্লীহা, কিডনি, মূত্রাশয়, মেরুদন্ড- কিছুই নেই! বেঢপ একটি মাথার খুলি, তার ভেতরে শুধু মাত্র ব্রেন!

নিজের মগজে খোঁচা মারতে লাগলাম।
হ্যাঁ – মনে পড়ছে। এরকম সন্তান হয়- এ কথা সমুদ্রের মতো বিশাল ডাক্তারি শাস্ত্রে লেখা আছে।
তবে এতোটাই বিরল যে, কস্মিনকালেও চর্মচক্ষে দেখিনি।

না, ঢপ মারবো না। বই খাতা খুলে বসে পড়তে হয়েছে বাকি সব কিছু শিখে রাখার জন্য। এটা অপরিবর্তনশীল নয়। ডাক্তারিতে একবার শিখে নিয়ে সারাজীবন তো দূরের কথা, কয়েকটি বছরও চলে না !! অন্যদের মতো স্রেফ একটা কিছু বলে দিলাম বা লিখে দিলাম – এমনটা হয় না!

শেষে সবকিছু লিখলাম রিপোর্ট-এ। Acardiac twin, বাংলা করলে দাঁড়ায়- হৃদয়হীন যমজ! (যমজ বললামই যখন, একটুখানি বলে রাখি, এইসব ক্ষেত্রে দু’টো বাচ্চাই তৈরি হয় প্রাথমিক ভাবে। একটি নষ্ট হয়ে যায়। অন্যটিও এমনি নানা রকম সমস্যা নিয়ে কিছুদিন বাঁচতেও পারে, নাও পারে।)

নানা রকম সমস্যার মধ্যে একটি হলো- রক্তনালী-গুলো সোজাসুজি ঢুকে যায় ব্রেনে। ফুসফুস অলিন্দ নিলয়ের গল্পই নেই।

এসব ডাক্তারির কচকচানি থাক। চোখ বন্ধ করে ভাবছিলাম- কি ভয়ানক দৃশ্য হতে পারে, যদি এমন কেউ জীবিত অবস্থায় জন্ম নেয়!

এবার সমস্যা হলো- কোন রোগীকেই যখন আমরা বেশি সময় নিয়ে দেখি, যে কারণেই হোক, তাদের মনে হয়- সমস্যা ঘোরতর।

সত্যি ভাবারও কথা। তবে সবসময় তেমনটা নাও হতে পারে। আমরা এমনিই দেখতে চাইতে পারি।

এক্ষেত্রে যেহেতু সমস্যা ছিলই, এবং আমার এই হৃদয়হীন বাচ্চাটিকে বেশ সময় দিয়ে দেখতে হয়েছিল, গর্ভবতী মহিলা চিন্তিত হয়ে পড়লেন।
– ডাক্তারবাবু, কিছু সমস্যা?

এবার শুরু হলো আমার বুক ধুকপুক। আরে বাপরে … আমি তো কোনদিন এমন রোগী পাইনি!
মগজ ছাড়া অনেক পেয়েছি (চারপাশের বহু মানুষের মতোই- তাঁরা যথারীতি বেঁচেও থাকে বা আছে আশেপাশে!), কিন্ত হৃদয় ছাড়া তো কখনো পাইনি!!

কি বলে যে রোগীকে বোঝাই! একটু এদিক ওদিক বলে রেফারিং চিকিৎসকের কাছে ফেরত পাঠালেই ভালো হয়। তিনি ভালো করে বুঝিয়ে দেবেন।

কিন্ত রোগীর যেহেতু সব কিছু জানার অধিকার আছে, আমারও চেষ্টা করা উচিত কিছু বলার।
এদিকে গ্রামের মহিলা। কতটা ইংরেজী ল্যাটিন গ্রীক ভাষা বুঝবেন কে জানে! বলতে হবে চলতি বাংলায়।

চিন্তিত মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে, আমার ভেতরের সেই ক এ ক্যাবলা, ভ এ ভোম্বল গোঁসাই হঠাৎ বলে ফেললো- তোমার পেটের বাচ্চাটি হৃদয়হীন!

মহিলা এমন করে আঁতকে উঠলেন যে, আমি আর কোন কথা বলতে পারলাম না। বুঝলাম, সেই ব্যাটা খচ্চর মনটা কেমন যেন বিদঘুটে হাসছে। খ্যাঁক খ্যাঁক খ্যাঁক …

– অ্যাঁ! আপনি কি সব বলছেন? এইরকম হয় নাকি? আপনি দেখুন! দেখুন আবার। হায় ভগবান, এটা আবার কি রকম কথা!

এই ‘ও ভগবান’, ‘হায় ভগবান’ এর মধ্যে আমি নিরুত্তর থাকলাম খানিক।

বুঝলাম, যতই হৃদয়হীন মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাক, কাউকে হঠাৎ হৃদয়হীন বললে বড্ড ধক্ করে লাগে! সে হয় হৃদয়ের খোঁজে নেমে পড়ে চুপচাপ, না হয় হল্লা করতে করতে ঠিক প্রমাণ করেই ছাড়ে যে সে সত্যিই হৃদয়হীন!

এক্ষেত্রে পাঠকের জন্য আমার একটি শব্দ নিয়ে লেখা উচিত। হৃদয় কি পুংলিঙ্গ নাকি স্ত্রীলিঙ্গ? জানি না। কেউ কেউ হৃদয়হীনা শব্দটিও ব্যবহার করেন। আমি করি না। হৃদয় নেই – মানে হৃদয়হীনই! সে যেই হোক! ব্যাকরণ মানি না।

শেষে মাথা ঠাণ্ডা করে বুঝিয়ে বললাম – দেখুন, আমি যা বলেছি, তাই আছে। বাচ্চার শুধুমাত্র মাথা আছে। আর কিছু নেই। এবং সত্যি সত্যিই হৃদয়হীন।

মহিলা আমার গলার স্বর শুনে বুঝলেন – আমি মোটেই মজা করছি না। গলাটা যতই হৃদয়হীন লাগুক শুনতে, আমি আসলে তখন মগজের দ্বারা চালিত।

মহিলা আস্তে আস্তে বেরিয়ে গেলেন রিপোর্ট নিয়ে।

আমি ততক্ষণে বুঝতে পারলাম- হোক না সে পেটের বাচ্চা, তবু হৃদয়হীন বলাটা কি ঠিক হলো?

কিন্ত সত্যি কথাটা না বললেও তো নয়! শাঁখের করাত!

যাকগে। এমন কি আর পাপ হবে?

দিন চারেক পরের ঘটনা। অজানা নাম্বার থেকে ফোন এলো একটা। ধরলাম।

ওপাশ থেকে- আমি অমুক ডাক্তার। থ্যাংকস ডক্টর। Acardiac twin রোগীর রিপোর্টটা একদম ঠিক ছিল। বিরলতম কেস। আমি ভাবছি, রিপোর্ট করবো। আপনার নাম দেয়া যাবে কি??

কোনরকমে হ্যাঁ বলে দিলাম। শেষে আবার ভাবলাম- এটাও হৃদয়হীন কাজ হয়ে গেল!
তবু কখনো কখনো হৃদয়হীন এরকম গল্প ভবিষ্যৎ -এর জন্য হয়তো লেখা উচিত।

বেশ কয়েক মাস পরের ঘটনা গত সপ্তাহে। ফের সেই একই মহিলা। গর্ভবতী। কবে থাকবো সে সব জেনেশুনে ফের এসেছেন আমার কাছে – অ্যানোম্যালি স্ক্যান করাতে।

এসেই পুরানো ঘটনা বললেন। আমার ও মনে পড়লো। সব দেখে বললাম – এবারে যতদূর দেখলাম সব ঠিক আছে।

শেষে মহিলা নিজে থেকেই বললেন- জানেন ডাক্তার বাবু, ওই বাচ্চার সত্যিই হৃদয় বলে কিছু ছিল না!

– আপনি দেখেছিলেন?

– না ডাক্তার বাবু। সাহসে কুলোয়নি। হৃদয় নেই, এমন কোন মানুষ কি বীভৎস হতে পারে, কল্পনাও করতে পারছি না। গাইনির ডাক্তার বাবুই বলেছেন।

– হুম। না দেখেই ভালো করেছেন।

আর কিছু বলতে পারলাম না। সবার সব কিছু সহ্য করার ক্ষমতা এক হয় না। যতই হোক সন্তানের মা, আজো, এই মানবিকতার চরম বিপর্যয়ের দিনেও, কোন মা বোধহয় ভুল করে ও চাইবে না, তার বাচ্চা হৃদয়হীন হোক!

বরং চাইবে – সুন্দর সুন্দর গুণাবলী ভরা একটি বিশাল হৃদয় থাকুক সব সন্তানের।

শুধু একবার মনে হলো – হৃদয়হীন যে বাচ্চাটিকে বাধ্য হয়েই নষ্ট করে ফেলতে হলো, তার তো মগজ ছিল ! সে কি আমাদের সবাইকেই হৃদয়হীন ভেবেছিল?? জানা হলো না আর। ভাবলে ভাবুক।

আবার এই যে আমি প্রেমের সপ্তাহে একটি হৃদয়হীন গল্প লিখে ও ফেললাম, সত্যিই কেউ আমাকে হৃদয়হীন ভাবলে কি হবে??

আমার কপালে কি তাহলে … হৃদয় রানীকে জিজ্ঞেস করে নেব দরকার হলে।

মগজ না থাকলে যদিও বা মানা যায়, হৃদয় না থাকলে, হৃদয়ের পাল্লায় পড়ে আমার মতো গোল্লায় যেতে না শিখলে, তাঁকে এই মহান প্রেমোৎসব উদযাপনের সপ্তাহে আমি অন্ততঃ আই লাবুউউউ বা আই ল্যাবু বলবো না! কিছুতেই না!

ডাক্তারি করতে গিয়ে যা করি, এক্ষেত্রেও
সোজা মগজ রানীকে রিপোর্ট করে দেব যে – এই সাজুগুজু করা গদগদ নতুন প্রেমিকাটি হৃদয়হীন!
ভালো নয়, কুচকুচে কালো!

চোখে চোখ রেখে সোজা বাংলায় জিজ্ঞেস করে বসবো- শরীর! শরীর! তোমার মন নাই কুসুম?

ছবিসূত্র: ফেসবুক।

PrevPreviousতোমরা আমায় রক্ত নয়, স্বাধীনতা দাও
Nextনব-জাতকNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

নাগরাকাটা গ্যাং

May 24, 2022 No Comments

ঘড়িতে তখন ঠিক দুপুর বারোটা। শেষ সিগারেটটা শেষ করার আগেই ব্যস্ত হয়ে পড়লাম সিগারেটের খোঁজে। এই সব বিপদের সময়ে আমার মুস্কিল আসান আমার অর্থাৎ এসিস্টেন্ট

আহা উত্তাপ কত সুন্দর তুই থার্মোমিটারে মাপলে

May 24, 2022 No Comments

– বাচ্চাটার আঠারো ঘন্টার বেশি জ্বর হয়ে গেল। আপনি অ্যান্টিবায়োটিক না দিয়েই ছেড়ে দিচ্ছেন? বেশ ঝাঁঝের সাথেই কথাটা বললেন মাঝবয়েসী ভদ্রলোক। এসব চিৎকার-চেঁচামেচি, বিরক্তি প্রকাশ

রোগী কল্যাণ সমিতি কি রোগীর কল্যাণ করে?

May 24, 2022 No Comments

ডক্টরস ডায়ালগের ফেসবুক লাইভে ২০শে মে ২০২২ প্রচারিত।

Cardio-Pulmonary Resuscitation বা হৃৎশ্বাস পুনরুজ্জীবন

May 23, 2022 No Comments

প্রায় ১৫ বছর আগে এই ভিডিওটি নির্মাণ করেছিলেন ডা সুব্রত গোস্বামী, যিনি কলকাতায় ইন্টেন্সিভ কেয়ারের পুরোধাদের অন্যতম। তারপর আমাদের জানা-বোঝায় কিছু পরিবর্তন এসেছে–এখন মুখে ফুঁ

Calcutta Medical College (CMC) in the Making of ‘Modern’ Citizenry and Navya-Ayurveda

May 23, 2022 No Comments

Setting the Theme Following the French Revolution health was added to the rights of people and was assumed that health citizenship should be a characteristic

সাম্প্রতিক পোস্ট

নাগরাকাটা গ্যাং

Dr. Samudra Sengupta May 24, 2022

আহা উত্তাপ কত সুন্দর তুই থার্মোমিটারে মাপলে

Dr. Soumyakanti Panda May 24, 2022

রোগী কল্যাণ সমিতি কি রোগীর কল্যাণ করে?

Doctors' Dialogue May 24, 2022

Cardio-Pulmonary Resuscitation বা হৃৎশ্বাস পুনরুজ্জীবন

Dr. Subrata Goswami May 23, 2022

Calcutta Medical College (CMC) in the Making of ‘Modern’ Citizenry and Navya-Ayurveda

Dr. Jayanta Bhattacharya May 23, 2022

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

395541
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।