রাত ৩ টে।
-স্যার ভাগ্য ভালো। এটাই লাস্ট বেড ছিল।
-‘ভাগ্য ভালো’ মানে? একে কোভিড পজিটিভ তার ওপর ব্লিডিং হচ্ছে।
-ওটিতে জানিয়েছিস?
-হ্যাঁ, আপনাকে ৭ টার মধ্যে ওটি ছেড়ে দিতে হবে। স্যানিটাইজ করতে হবে তো। এক ঘণ্টা লাগবে। ৮ টা থেকে ইলেকটিভ কেসগুলো শুরু হবে।
ভোর ৬ টা
পেশেন্ট ওটিতে। সিজার হবে। কোভিড পজিটিভ। ৩৯ সপ্তাহ। ব্লিডিং হচ্ছে। বাচ্চা বের করে দিতে হবে। ওটি তে মুখ দেখিয়ে এসেছি। রেডি হলে খবর দেবে।
পাশে বসে নাইট আরএমও দুটো বাচ্চা ছেলে গল্প করছে, ‘ওয়ার্কলোড খুব বেড়ে গেছে তাই কোপ করতে পারছে না।’ সত্যি, পুরো কোভিড ওয়ার্ড ভর্তি। ওদের প্রচুর কাজের চাপ।
– কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পেরেছিস?
– হ্যাঁ, স্যার।
– এই যে বলছিস কোপ করা যাচ্ছে না?
ওরা সকালের খবরের কাগজটা ধরিয়ে দিল। পাঁচের পাতা। সুরাটে মড়া পোড়ানোর চুল্লির সারাদিন এত ওয়ার্কলোড যে মেটেল স্ট্রাকচার গলে যাচ্ছে। ৩০টার জায়গায় ৯০-৯৫ টা বডি পোড়াতে হচ্ছে। এসিতে বসেও ঘামছি।
যাই হোক পিপিই পরে ঘামতে ঘামতে ওটি শেষ হল। মায়ের বুকে বাচ্চা। সেলাই করতে করতে নার্সের সঙ্গে গল্প চলছে। এক বছর আগে কোভিডে ওর দাদা মারা গেছে। ২ সপ্তাহ আগে বাবা। এদিকে ও কোভিড ডিউটি করে যাচ্ছে।
সব অগ্নিকন্যারা রাস্তার মোড়ে বক্তৃতা দেয় না।
আমারও ভয় কেটে গেল।
মা কোভিড পজিটিভ হলে বাবাকে হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তাই আমার ফোনে তোলা ছবিতেই বাবা প্রথম মেয়েকে দেখল। নিউ নরমাল।
সব অগ্নিকন্যারা রাস্তার মোড়ে বক্তৃতা দেন না। দারুণ দারুণ দারুণ।