“কেমন বুঝছেন?”
“এমনিতে তো সব ঠিকই আছে”
“কোনো ভয় নেই তো ডাক্তারবাবু?”
ব্যাস! অনিমেষ ডাক্তার একদম বোল্ড আউট। যে প্রশ্নটাকে আজকাল সবচেয়ে ভয় পায়, সেটাই টেবিলের উল্টোদিকে বসা লোকটা ছুঁড়ে দিল।
কী বলবে অনিমেষ ডাক্তার! আজ থেকে দশ-পনেরো বছর আগে হলেও অবলীলায় বলে দিত, অতো ভয়ের কী আছে? আমরা তো আছি না কি!
কিন্তু আজ প্রশ্নটা শুনলেই পেটের মধ্যে কেমন গুড়গুড় করে। যাবতীয় কম্প্লিকেশন মাথার মধ্যে বিজবিজ করে।
মনে পড়ে ফার্মাকোলজির স্মৃতিসম্পদ স্যারের কথা। সব ওষুধের কন্ট্রাইন্ডিকেশন আর সাইড এফেক্ট পড়িয়ে যখন বলতেন, এগুলো বেশি মনে পড়লে পরে হাত দিয়ে আর ওষুধই লেখা যাবে না।
ললিত স্মৃতি হোস্টেলে পার্থজিৎ ওদের ঘরে এসে প্রায়ই চমকে দিত সব অপারেশনের রিমোট কম্প্লিকেশন বলে। অনিমেষরা ভয় পেত, এখনো কতো পড়া বাকি। নার্ভাস লাগত। মজাটা পরে বুঝল, ও কম্লিকেশন স্পেশালিস্ট। শুধু ওগুলো পড়েই চমকে দিত।
অনিমেষ একদিন সিজারের কম্প্লিকেশন বলতে ‘অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এমবলিজম’ বলে স্যারের কাছে কি ধমকই না খেয়েছিল–‘আরে ,ওসব আনকমন কম্প্লিকেশন ভাবিস কেন?’
আর আজ অনিমেষ ডাক্তারের চোখের সামনে শুধুই কম্প্লিকেশন! হোক না রেয়ার বা রিমোট চান্স, একটাই সব কিছু নিমেষে শেষ করে দেবার পক্ষে যথেষ্ট।
কোথায় যেন একটা খুব ভালো লেখা দেখেছিল অনিমেষ ডাক্তার। ‘ডাক্তার অনেকটা গোলকিপারের মতো। কতগুলো সেভ করেছো বড় কথা নয়, একটা গোল খেলেই তুমি শেষ।’
“কী হলো ডাক্তারবাবু ভয় নেই তো?”
আছে, আছে –শুধুই ভয়। চারিদিকে ভয়!
এর মধ্যেই রোগ আছে, রুগী আছে, ডাক্তার আছে।।
আর মজা দেখছে বাকি সব।।